২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫
`
মানববন্ধনে অভিযোগ

নারী নির্যাতন আইনের অপব্যবহারে নিরীহ পুরুষ হয়রানির শিকার হচ্ছে

- সংগৃহীত

নারী নির্যাতন আইনের সংশোধনের দাবি করে মেন’স রাইটস ফাউন্ডেশনের ব্যানারে নেতৃবৃন্দ বলেছেন, এ আইনের অপব্যবহারের দ্বারা নিরীহ পুরুষ ও তার পরিবারের লোকদেরকে নির্যাতন ও হয়রানীর শিকার হতে হচ্ছে। শনিবার “নারী নির্যাতন আইনের অপব্যবহার ব্ন্ধ ও সংশোধন”-এর দাবীতে সংগঠনটির উদ্যোগে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে এক মানববন্ধনে বক্তারা এসব কথা বলেন।

নেতৃবৃন্দ বলেন, নারী উন্নয়ন ছাড়া কোন রাষ্ট্রের উন্নয়নের কথা কল্পনাও করা যায় না। উন্নত রাষ্ট্রগুলো নারী অধিকার প্রতিষ্ঠিত করে যেমন এগিয়ে যাচ্ছে। বাংলাদেশও তেমনি নারী অধিকার স্বীকৃতির মাধ্যমে নারী উন্নয়নের প্রসার ঘটিয়েছে। সংবিধানেও ২৮ ও ২৯ নং অনুচ্ছেদে নারী অধিকারের কথা বলা আছে। এছাড়াও নারীদের সুরক্ষার জন্য দেশে একাধিক আইন আছে- এর মধ্যে নারী ও শিশু নির্যাতন (দমন) আইন ২০০০ -এ নারী ও শিশু সম্পর্কীত অপরাধগুলোকে চিহ্নিত করে তা প্রতিকারের বিধি-বিধান প্রণীত আছে, যা নিঃসন্দেহে প্রশংসার দাবি রাখে। কিন্তু নারী ও শিশু অধিকারের এ বিধানগুলো নিয়ে অন্যকে ঘায়েল করার মাত্রা প্রকট আকার ধারণ করেছে।

এ প্রসঙ্গে সংগঠনের মহাসচিব প্রকৌশলী ফারুক শাজেদ বলেন, তাদের সংগঠনের ২১ দফা দাবীর ২য় ও অন্যতম দাবী হলো নারী নির্যাতন আইনের সংশোধন। কারণ এ আইনের অপব্যবহারের দ্বারা নিরীহ পুরুষ ও তার পরিবারের লোকদেরকে নির্যাতন ও হয়রানীর শিকার হতে হচ্ছে। এছাড়াও মিথ্যা নারী নির্যাতন মামলার কারণে ভুক্তভোগী ব্যক্তি সামাজিক, মানসিক ও আর্থিক ক্ষতিগ্রস্থের শিকার হন। কারোও সামাজিক মর্যাদা নষ্ট হলে তা আর ফিরিয়ে আনা সম্ভব নয়। তাই অভিযোগ প্রমাণ না হওয়া পর্যন্ত অভিযুক্তের ছবি মিডিয়াতে প্রচার না করার ব্যবস্থা করতে হবে। ভুক্তভোগী ব্যক্তিটিকে উপযুক্ত ক্ষতিপূরণের ব্যবস্থা করতে হবে।

তিনি এর অপপ্রয়োগ বন্ধে নারী নির্যাতন দমন আইনকে সংশোধনের মাধ্যমে আরোও যুগোপযোগী করার জন্য বিভিন্ন প্রস্তাবনা পেশ করেন। তিনি বলেন, নারী নির্যাতন মামলা মিথ্যা প্রমাণিত হলে আইন অনুযায়ী মামলা করতে গেলে আদালতের অনুমতি লাগে। তাই ভুক্তভোগীরা হয়রানীর ভয়ে বাদীর বিরুদ্ধে মামলা করতে চান না। তাই ভুক্তভোগীর আবেদন ব্যতিত যা ১৭(২) ধারা মোতাবেক লিখিত হওয়া বাঞ্ছনীয়, তা উঠিয়ে দিয়ে বিচারক রায়ে মিথ্যা মামলাকারীকে চিহ্ণিত করে তার বিরুদ্ধে আইনের প্রয়োগ করা গেলে মিথ্যা মামলা নিঃসন্দেহে কমে যাবে।

এছাড়াও সুষ্ঠু তদন্ত ব্যতিত কাউকে যেন গ্রেফতার করা না হয়। তাই ১৮ ধারাকে সংশোধনে মাধ্যমে তদন্তে অবহেলাকে অসদাচরণ হিসেবে গণ্য ও মিথ্যা মামলায় সহায়তাকারীকে জবাবদিহিতার আওতায় নিয়ে বিধি অনুযায়ী তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা গ্রহণ করার দাবী জানান। তিনি বলেন, যৌবনকাল প্রতিটি মাণুষের গুরুত্বপূর্ণ সময়। তাই নারী নির্যাতন মামলা দ্রুততর সময়ের মধ্যে নিষ্পত্তি করতে হবে।

মানববন্ধনে সভাপতিত্ব করেন সংগঠনের চেয়ারম্যান শেখ খায়রুল আলম। তিনি বলেন, নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন একটি গুরুত্বপূর্ণ আইন। তাই আইনটিকে আরো যুগোপযোগী করার প্রয়োজন রয়েছে। নারী অধিকার প্রতিষ্ঠিত করতে গিয়ে যাতে কারো অধিকার বিঘ্নিত না হয় সে দিকেও দৃষ্টি রাখা জরুরী। এছাড়াও আইন প্রয়োগের শিথিলতা যেমন পুরো আইনটিকে অকার্যকর করে, তেমনি প্রয়োজনীয় সংশোধনীর অভাবেও তা প্রণয়নের উদ্দেশ্যকে ব্যাহত করে দিতে পারে বলে তিনি মনে করেন।

মানববন্ধনে আরো উপস্থিত ছিলেন- ঢাকা মহানগর কমিটির আহ্বায়ক তাইফুর রহমান, যুগ্ম-আহ্বায়ক আল-আমিন, যুগ্ম-আহ্বায়ক আশরাফুল আলম ওরফে হিরো আলম, ডা. মহিউদ্দিন খোকন, কণ্ঠশিল্পী নজরুল ইসলাম দয়া, লিটন গাজী, সদস্য সচিব মাজেদ ইবনে আজাদ, বাংলাদেশ মেন’স রাইটস ফাউন্ডেশনের ঢাকা মহানগরীর সদস্য লিটন গাজী, মাজেদ ইবনে আজাদ, কেন্দীয় কমিটির সদস্য মোঃ আনোয়ার হোসেনসহ আরো অনেকে।


আরো সংবাদ



premium cement