২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫
`

ধর্ষণ-নির্যাতন ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে : মহিলা ফোরাম

- নয়া দিগন্ত

সমাজতান্ত্রিক মহিলা ফোরামের নেতৃবৃন্দ বলেছেন, নারী নির্যাতন-ধর্ষণ-হত্যা তো কমেইনি বরং ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। ধর্ষণ, গণধর্ষণ, পিটিয়ে হত্যা, যৌতুকের দাবিতে হত্যা, এসিডে ঝলসে দেয়া, ইন্টারনেটে ছবি ছড়িয়ে ব্ল্যাকমেইল করা- ইত্যাদি নির্যাতনের ধরণ বেড়েছে, দীর্ঘ হয়েছে নির্যাতিতদের মিছিল। তবে চুপ করে ঘরে বসে থাকলে কিংবা হা-পিত্যেশ করলে এইসব অন্যায়-নিপীড়ন-নির্যাতনের হাত থেকে কেউই রক্ষা পাবে না। জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে সমাবেশে মহিলা ফোরাম নেতৃবৃন্দ এসব কথা বলেন।

সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন সমাজতান্ত্রিক মহিলা ফোরামের সাধারণ সম্পাদক শম্পা বসু এবং পরিচালনা করেন সংগঠনের ঢাকা নগর শাখার সদস্য রুখসানা আফরোজ আশা। সভায় বক্তব্য রাখেন সমাজতান্ত্রিক মহিলা ফোরামের ঢাকা নগর শাখার সদস্য পারভীন আক্তার, সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্টের আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক ডা. মনীষা চক্রবর্তী, ঢাকা নগর শাখার সভাপতি মুক্তা বাড়ৈ, সুলতানা আক্তার।

সমাবেশে নেতৃবৃন্দ আরো বলেন, ছয় বছরের শিশু থেকে ষাট বছরের বৃদ্ধা, শিক্ষিত-অশিক্ষিত, ধনী-দরিদ্র, সমতল বা পাহাড়ের আদিবাসী, সংখ্যালঘু-সংখ্যাগুরু কেউই রেহাই পাচ্ছেন না। ঘরে-বাইরে, পথে-ঘাটে, কর্মক্ষেত্রে সর্বত্রই শারীরিক-মানসিকভাবে চলছে এই নির্যাতন। পত্রিকায় প্রকাশিত খবর অনুযায়ী- বাংলাদেশে এ বছরের প্রথম ৬ মাসে ২ হাজারের বেশি নারী-শিশু নির্যাতনের ঘটনা ঘটেছে। এর মধ্যে ধর্ষণের শিকার হয়েছেন ৭৩১ জন। গণধর্ষণ, ধর্ষণের পরে হত্যাসহ অন্যান্য নির্যাতনের হারও অন্য সময়ের চেয়ে বেশি। ফলে উৎকণ্ঠা-আতঙ্কের বাইরে স্বাভাবিক জীবনযাপন করতে পারাটাই যেন এদেশের নারী-শিশুদের কাছে কল্পনাতিত!

বক্তারা আরো বলেন, প্রকৃতপক্ষে যত ধর্ষণের ঘটনা ঘটে তার বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই মামলা হয় না। যে সব ক্ষেত্রে মামলা হয় সেগুলোও বছরের পর বছর ঝুলতে থাকে। সহজে নিষ্পত্তি হয় না। দেখা যায়, যে মামলাগুলোর নিষ্পত্তি হয়েছে তার মাত্র ৩ শতাংশের সাজা হয়েছে। নারী-শিশু নির্যাতন-ধর্ষণ-হত্যা এসব অপরাধের বিচার না হওয়ার ক্ষেত্রে একটি বড় কারণ ক্ষমতাকেন্দ্রিক শাসকদলের রাজনৈতিক আশ্রয়-প্রশ্রয় ও সংশ্লিষ্টতা। ক্ষমতাসীন গোষ্ঠী হল দখল, হাট-মাঠ দখল, নদী-নালা-খাল-বিল দখল, বন-পাহাড় দখল, ব্যাংক দখল- পুরো দেশই প্রায় দখলে নিয়ে ফেলেছে।

তারা বলেন, নারী-শিশু নির্যাতনের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ সমাজিক প্রতিরোধ প্রয়োজন। এই সামাজিক প্রতিরোধ আন্দোলনই বিচার প্রক্রিয়াকে সুষ্ঠুভাবে ত্বরান্বিত করতে সরকারকে বাধ্য করতে পারে এবং সাথে সাথে সামাজিক প্রতিরোধের কারণে অপরাধী কোনঠাসা হয়ে পড়বে; সে আইন বা সমাজ কোথাও আশ্রয় পাবে না। সমাবেশ থেকে নারী-শিশু নির্যাতক-ধর্ষক-হত্যাকারীদের শাস্তি নিশ্চিত করার দাবি ও ধর্ষণ-যৌন নিপীড়নের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ আন্দোলন গড়ে তোলার আহ্বান জানানো হয়।


আরো সংবাদ



premium cement