১৯ মার্চ ২০২৪, ০৫ চৈত্র ১৪২৯, ০৮ রমজান ১৪৪৫
`

নীতিনৈতিকতার পরাজয়

- প্রতীকী ছবি

নীতি ও নৈতিকতা দু’টি শব্দ ব্যাপক অর্থ বহন করে। ব্যক্তি, পরিবার, সমাজে নীতি ও নৈতিকতা থাকা অত্যাবশ্যক। ব্যক্তি, পরিবার, প্রতিষ্ঠান ও সমাজে আদর্শিকভাবে নীতি আর নৈতিকতা বিলুপ্ত হলে সেসব প্রতিষ্ঠান রোগাক্রান্ত হয়ে যায়। নৈতিক আদর্শ না থাকলে প্রতিষ্ঠান সমাজ বা রাষ্ট্র টিকে থাকা কঠিন হয়ে যায়। আমরা যে দেশে বসবাস করছি সে দেশের ব্যক্তি-পরিবার-সমাজে কী পরিমাণ নীতিনৈতিকতা লালন পালন করছি- সে বিষয়ে আলোকপাত করতে যাচ্ছি।

আমরা বই-পুস্তকে মনীষীদের লেখায় নৈতিক মূল্যবোধ, চরিত্র, আলোকিত আদর্শের কথা পড়েছি। সে নীতিনৈতিকতা এখন পুস্তকেই শোভা পাচ্ছে। যারা এসব বিষয় শিক্ষার্থীদের রপ্ত করাবেন তাদের কাছেও ওই সব বিষয় অনুপস্থিত। একজন শিক্ষার্থী নৈতিক মূল্যবোধের শিক্ষা গ্রহণের উদ্দেশ্যে প্রতিষ্ঠানে পদচারণা করলেও বাস্তবে শিক্ষার্থী শিক্ষকের কাছ থেকে সে শিক্ষা পাচ্ছে না। ক্ষেত্রবিশেষে অনৈতিক কর্মকাণ্ড ও চরিত্র ধারণ করে পশুর আচরণ নিয়ে শিক্ষাজীবন শেষ করছে। ফলে তার জীবন ধ্বংস, সে সাথে পরিবার, সমাজ ও রাষ্ট্রকে করছে কলুষিত। এভাবে সমাজের প্রতিটি শাখা-প্রশাখা এখন নৈতিকতার পরাজয়ের শেষ প্রান্তে পৌঁছেছে। সমাজের কোনো সেক্টরেই নীতি-আদর্শ-মূল্যবোধের অবস্থান নেই বলা যায়।

দোকান থেকে বাজার, মার্কেটের ক্রেতা-বিক্রেতাদের নেই কোনো ভালোবাসা আর আদর্শিক নৈতিকতা। কে কাকে কী পরিমাণ ঠকিয়ে ধোঁকা দিয়ে মিথ্যা ছলচাতুরীর মাধ্যমে অর্থ উপার্জন করা যায়, সেটিই এখন আমাদের অন্যতম চরিত্র হিসেবে দেখা যাচ্ছে। একটা পণ্যের কী পরিমাণ ন্যায্যমূল্য সেটি কম-বেশি সব ক্রেতার ধারণা থাকে। দেখা যায়, বিক্রেতা এক শ’ টাকার একটা পণ্যের মূল্য হাঁকাল এক হাজার টাকা। তাহলে এটাকে পণ্যের ন্যায্যমূল্য হিসেবে আখ্যায়িত করবেন, নাকি ডাকাতি বলবেন। এভাবে সব মানুষ কোনো-না-কোনো জায়গায় অনৈতিকভাবে প্রতারণার শিকার। সমাজের কোথাও অথবা কোনো সেক্টরে নীতিনৈতিকতার আদর্শ খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। কে

কার চেয়ে বেশি টাকা আয় করবে- সেটিই এখন আমাদের অন্যতম টার্গেট। বৈধ, অবৈধ, হালাল, হারাম কোনো পার্থক্য খুঁজে পাচ্ছি না।
মাদক উৎপাদন, মাদক পাচার, বেচা-বিক্রি তো সবারই জানা অবৈধ ও অনৈতিক কর্মকাণ্ড। একটি সমাজ ও জাতিকে ধ্বংস করতে মাদকই যথেষ্ট। সেটি জানার পরও যারা এসব কর্মকাণ্ডের সাথে সম্পৃক্ত তাদের কী পরিণতি, আর কী ধরনের বিচার ও শাস্তি- সেটি রাষ্ট্রীয় আইনেই বলা আছে। আমাদের কথা হচ্ছে, এসব অনৈতিক কর্মকাণ্ডে যারা জড়িত তাদের পরিচয় দেখলে পাওয়া যায়, তারা একটি নির্দিষ্ট ধর্মের লেবাস ব্যবহার করে এসব অনৈতিক কর্মকাণ্ডে জড়িয়ে পড়ছে। এসব লোক ধর্ম-কর্মে এগিয়ে থাকতে দেখা যায়। ধর্মের আবরণে অবৈধ, অনৈতিক অপকর্ম করাটা, সেটি যেন অভ্যাসে পরিণত। ধর্ম যেখানে নীতিনৈতিকতার প্রশিক্ষণ দেয়ার কথা ছিল, সেখানে উল্টোটা সমাজ দেখছে। যাদের থেকে ধর্মীয় মূল্যবোধ নীতিনৈতিকতা গ্রহণ করার কথা ছিল তাদের কারো কারো অনৈতিক কর্মকাণ্ডে স্বয়ং ধর্ম পর্যন্ত এখন প্রশ্নবিদ্ধ।

আমাদের স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশ জন্মের অর্ধশত বছর অতিক্রান্ত হলেও সামাজিক ও রাষ্ট্রীয় মূল্যবোধের কোনো অগ্রগতি দেখছি না। শিক্ষা, সংস্কৃতি, ধর্ম সব কিছু আজ কলুষিত। আপন ও দলীয় স্বার্থে অনৈতিক কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে অপরের ক্ষতি ও ধ্বংস কোনো ব্যাপার নয়। আধিপত্য বিস্তার ও ক্ষমতার লালসায় সব ধরনের অনৈতিক উচ্ছখল আচার-আচরণ এ জাতির পক্ষে সম্ভব। দেখে দেখে একে অন্যের কাছ থেকে এসব অভ্যাসে গড়ে উঠছে পরিবার ও সমাজ। শিষ্টাচার-ভদ্রতা-নম্রতা, অন্যের প্রতি দায়িত্ব-কর্তব্যশীল আচরণ বিলুপ্তির পথে। পরিবার থেকে রাষ্ট্র পর্যন্ত এখন অনৈতিকতায় দিশাহারা সমাজ।

সরকারি-বেসরকারি ব্যক্তি থেকে পরিবার ও রাষ্ট্র পর্যন্ত সবখানে নীতিনৈতিকতার লালন-পালন ও প্রতিষ্ঠা থাকতে হবে। তা না হলে কোনো অবস্থায় সুশৃঙ্খল ও আদর্শিক সমাজ আশা করা যায় না।

লেখক : সংগঠক


আরো সংবাদ



premium cement
নোয়াখালীতে ডাকাতির প্রস্তুতির সময় গ্রেফতার ৩ মেসি না খেলায় হংকংয়ের সমর্থকরা টিকেটের অর্ধেক অর্থ ফেরত পাবে অবন্তিকার অভিযোগ কে কে অবহেলা করেছে, তদন্ত করা হবে : জবি ভিসি গাজায় যুদ্ধবিরতি নিয়ে আলোচনা করতে সৌদি ও মিসর যাবেন ব্লিঙ্কেন গাজায় ‘শতভাগ’ মানুষ ‘তীব্র খাদ্য সঙ্কটে’ : মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী নাভালনির মৃত্যু : ৩০ রুশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা ইইউ’র জীবাশ্ম জ্বালানির তহবিল বন্ধ করল কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয় নাভালনির মৃত্যু : ৩০ রুশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা ইইউর সালাম মুর্শেদীকে গুলশানের বাড়ি ছাড়তে হাইকোর্টের নির্দেশ গাজায় যুদ্ধবিরতি নিয়ে আলোচনার জন্যে মিসর ও সৌদি আরব যাচ্ছেন ব্লিঙ্কেন আমাকে অ্যাপ্রোচ করেছিল, আমি গ্রহণ করিনি : মেজর অব. হাফিজ

সকল