অভিন্ন বিশ্ব হিজরি ক্যালেন্ডার
- মো: আব্দুল করিম মিয়া
- ১০ জুন ২০১৯, ১৭:৫১
নতুন চাঁদ (আল হেলাল) ও সাধারণ চাঁদের (আল কামার) পার্থক্য ও গুরুত্ব বিবেচনায় না নেয়ার কারণে ভারত, পাকিস্তান ও বাংলাদেশে প্রায় ৬০ থেকে ৭০ কোটি মুসলিম- সারা বিশ্বের চেয়ে রোজা ও ঈদ এক দিন পর উদযাপন করে আসছেন। সৌদি আরবের সাথে বাংলাদেশের সময় মাত্র তিন ঘণ্টা এগিয়ে। অথচ সিঙ্গাপুর মালয়েশিয়া, ইন্দোনেশিয়া এবং ব্রুনাই সময়ের পার্থক্যে পাঁচ-ছয় ঘণ্টা এগিয়ে। আর আমরা মধ্যখানে মাত্র তিন ঘণ্টা ব্যবধানে থেকেও সৌদি আরবের সাথে একই দিনে রোজা ও ঈদ উদযাপন করতে পারি না কেন?
বাস্তবতা দেখে শিক্ষা গ্রহণ করে যুগের চাহিদা অনুসারে কুরআন ও হাদিসের আওতায় সঠিক সিদ্ধান্ত নেয়া উচিত। দেশে অনেক জ্ঞানী-গুণী, আলেম এবং মুফতি রয়েছেন। তাদের এ ব্যাপারে সক্রিয় হতে হবে। এক দিনের বিলম্বের কারণে কোটি কোটি মুসলিম নর-নারীর রোজা ও ঈদে সমস্যা হচ্ছে।
মহান রাব্বুল আলামিন আল হেলালের ঘোষণা দেয়া প্রসঙ্গে সূরা আল বাকারা ১৮৯ নম্বর আয়াতে বলেছেন, ‘মানুষ তোমাকে জিজ্ঞাসা করে নতুন চন্দ্রসমূহ সমন্ধে, বলে দাও নতুন চন্দ্র (১২ মাসের) নতুন মাসের নতুন সময়ের শুরু এবং হজের হিসাব-নিকাশ ও মানুষের কল্যাণের জন্য। একই সূরার ১৮৫ নম্বর আয়াতের শেষাংশে ‘শাহেদা’ শব্দ দিয়ে তিনি ছিলেন প্রথম ঘোষণাকারী। তারপর চার খলিকা ক্রমাগত এ দায়িত্ব পালন করেছেন। এরপর খিলাফতের ৩০ বছরের ব্যবধানে মুসলিম বিশ্বের আয়তন বহু গুণে বৃদ্ধি পায় এবং বিশ্ব মুসলিম উম্মাহ দ্বন্দ্ব-কলহের ঘন কুয়াশায় আচ্ছন্ন হয়ে পড়ে।
ধর্মীয় ও রাজনৈতিক বিশৃঙ্খলা, অনুন্নত যোগাযোগ ব্যবস্থা ও প্রচার মাধ্যম জোরালো না থাকার কারণে রাজনৈতিক ও ধর্মীয় সিদ্ধান্তগুলো স্থানীয়ভাবে নেয়ার প্রথা চালু হয়। এর ফলে আল হেলালের গুরুত্ব ভুলে আল কামারকে (সাধারণ চাঁদকে) আল হেলাল বলে চালিয়ে দেয়া হলো; কিন্তু পৃথিবীতে চাঁদ একটিই। এই চাঁদের এক মাসের জন্য একটিমাত্র জন্ম মুহূর্ত একটি চাঁদের (এক মাসে) একাধিকবার হেলাল বা জন্মের অবস্থায় থাকতে পারে না। আল্লাহ এবং আল্লাহর রাসূল সা: হেলাল অবস্থায় চাঁদ দেখার কথা বলেছেন। সাধারণ চাঁদকে কোনো ক্রমেই একাধিকবার স্থানভেদে হেলাল বলে ঘোষণা দেয়ার দরকার পড়ে না।
প্রধান চার ইমামের মধ্যে প্রখ্যাত তিনজন ইমাম বলেছেন, পৃথিবীর কোনো প্রান্তে হেলালের প্রথম ঘোষণার পর আর নতুন কোনো ঘোষণার প্রয়োজন নেই। প্রথম ঘোষণা পৃথিবীর অপর প্রান্তে পৌঁছাতে এক দিন বা দুই দিন দেরি হলে নতুন মাসের হিসাব প্রথম ঘোষণা থেকে শুরু হবে এবং পরবর্তী মাসে একটি বা দু’টি কাজা আদায় করলে তা পূর্ণ হয়ে যাবে। (ফতোয়ায়ে শামি-রোজা অধ্যায়)
অন্য এক বিখ্যাত হাদিসে আছে- ‘কোনো মুসলমান তার সমকালীন সময়ের বিশ্ব নেতাকে (ইমাম) না জেনে বা না চিনে মৃত্যুবরণ করলে তার মৃত্যু জাহেলিয়াতের মৃত্যু বলে গণ্য হবে।’ অপর এক হাদিসে আছে- আজ্জাহিলিয়াতু ফিন্নার; অর্থাৎ জাহেলের স্থান জাহান্নাম। প্রতিটি মুসলিম দেশে চাঁদ দেখা কমিটির কোনো মুসলমান নতুন চাঁদ দেখে ঘোষণার জন্য কাবা ঘরের ইমামকে জানালে তিনি তাৎক্ষণিক ঘোষণা দেবেন, হে বিশ্ব মুসলিম উম্মাহ অমুক দেশে এতটার সময় হেলালের চাঁদের উদয় হয়েছে তোমরা রোজা রাখো (অথবা ঈদ করো)।
ফলে বিশ্ব মুসলিম উম্মাহর প্রতিটি সদস্যই সঠিক সময়ে পরিপূর্ণভাবে রোজা ও ঈদ পালন করতে পারবেন এবং বছরের পাঁচটি গুরুত্বপূর্ণ রাতের ইবাদত সঠিকভাবে পালন করতে পারবেন। এতে মুসলিম উম্মাহর একত্মতা প্রমাণিত হবে।
প্রতি বছর একটি বা দু’টি রোজা পূর্ণভাবে পালন করতে পারবে। এ পদ্ধতি চালু না হওয়ার কারণে মাসের শুরুতে এবং শেষে একটি করে মোট দু’টি রোজা বাদ পড়ে যায়। ফলে অপূরণীয় ক্ষতি হয়ে যায়।
লেখক : প্রকৌশলী
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা