২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৭ বৈশাখ ১৪৩১, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫
`

জালনোটের উৎস খুঁজে প্রতিকার জরুরি

জালনোটের উৎস খুঁজে প্রতিকার জরুরি - ছবি : সংগ্রহ

আর অল্প কয়েক দিন পর ঈদ। প্রতি বছর ঈদ ঘিরে জালনোট কারবারিদের তৎপরতা দেখা যায়। তাই এ ব্যাপারে আইন প্রয়োগকারী সংস্থা, বাংলাদেশ ব্যাংক ও সাধারণ মানুষকে বিশেষভাবে সতর্ক থাকা প্রয়োজন। জালনোট ধরা পড়লেও জাল কারবারিদের তৎপরতা থেমে নেই। গত জানুয়ারি থেকে ১৮ এপ্রিল পর্যন্ত এক হাজার টাকা মূল্যমানের ৬৮২টি, ৫০০ টাকা মূল্যমানের ১২৩টি এবং ১০০ টাকা মূল্যমানের ১২টি জালনোট ধরা পড়েছে বলে বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে।

এবারো ঈদ সামনে রেখে সক্রিয় হয়ে উঠেছে চক্রটি। তাই জাল টাকা শনাক্তে বিভিন্ন পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে। ঢাকায় গোয়েন্দা পুলিশের পৃথক অভিযানে প্রায় অর্ধ কোটি টাকার জালনোটসহ তিন জালটাকা প্রস্তুতকারী ও পাঁচ প্রতারক গ্রেফতার হয়েছে। গ্রেফতারকৃতরা জাল টাকা তৈরি করে ঢাকা, চট্টগ্রাম ও খুলনা মহানগরসহ দেশের সব জেলায় পাঠাত। রোজায় কেনাকাটা বেশি হওয়ার সুযোগে তারা জালটাকা চালিয়ে দেয়ার চেষ্টা করছিল। এ ছাড়া ঈদ সামনে রেখে তারা জালনোট ছড়িয়ে দেয়ার ষড়যন্ত্র করেছিল। ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের একটি দল রাজধানীর পল্লবী থানা এলাকায় অভিযান চালায়। অভিযানে গ্রেফতার হয় পাঁচ প্রতারক।

নোটজাল কারবারিদের তৎপরতা ঠেকাতে বাংলাদেশ ব্যাংক, আইন প্রয়োগকারী সংস্থা ও গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর কার্যক্রম জোরদার করা হয়েছে। তবে সমস্যা হলো, আইনের দুর্বলতার কারণে দেশে জালনোটের বিস্তার বন্ধ হচ্ছে না। ফলে জালনোট কারবারিরা সহজেই জামিন পেয়ে যায়। তা ছাড়া প্রচলিত আইনে যার হাতে জালনোট পাওয়া যাবে, তাকেই আইনের আওতায় আনার বিধান রয়েছে। এ কারণে জালনোট প্রতিরোধ কার্যক্রম জোরালো হচ্ছে না। তাই জালনোট প্রতিরোধে একটি আইন প্রণয়নে অর্থ মন্ত্রণালয়ে সুপারিশ করা হয়েছে। এর আলোকে একটি খসড়া আইন তৈরিও করেছে মন্ত্রণালয়। এটি চূড়ান্ত হলে এ অপরাধীদের কঠোর শাস্তির আওতায় আনা সম্ভব হবে বলে আশা করা হচ্ছে। আইনটি দ্রুত চূড়ান্ত করা দরকার।

ব্যাংকারদের মতে, টাকা জালিয়াত চক্র ধরা পড়লেও সাক্ষীর অভাবে তারা উপযুক্ত শাস্তি পায় না। সে কারণে ছাড়া পাওয়ার পর একই ব্যক্তি আবার জাল নোট কারবারে জড়িয়ে পড়ে। জাল নোট ধরা এবং মামলা করা পুলিশের দায়িত্ব। জাল নোট ও আসল নোটের পার্থক্য সম্পর্কে জনসাধারণকে সচেতন করতে হবে। সবচেয়ে প্রতিরোধ ব্যবস্থা গড়ে তুলতে হবে ব্যাংকগুলোতে। এটিএম মেশিনে টাকা সরবরাহের আগে জালনোট শনাক্তকারী মেশিনে পরীক্ষা করতে হবে।

আসল নোট চেনার সহজ উপায় : বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতি সংবলিত নতুন ১০০ টাকা, ৫০০ টাকা ও এক হাজার টাকার নোট লেনদেনের সময় নোটের প্রধান চারটি নিরাপত্তা বৈশিষ্ট্য যেমন- রং পরিবর্তনশীল কালি, অসমতল ছাপা, নিরাপত্তা সুতা ও জলছাপ সতর্কতার সাথে পরখ করলে সহজেই আসল নোট চেনা যাবে। জালনোট শনাক্তকারী যন্ত্রের সাহায্যেও নোট পরীক্ষা করা যায়।

জালনোট প্রতিরোধ করা না গেলে ক্ষতিগ্রস্ত হবে দেশের অর্থনীতি। তাই জালনোটের কারবারিদের রুখতে হবে। রোধ করতে হবে জালনোটের বিস্তার। এ জন্য এখন থেকেই সব ধরনের সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে। জালনোটের কারবারিদের শনাক্ত করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে। আমরা আশা করব, জাল নোটের বিস্তার রোধে যে আগাম ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে তা কার্যকর হবে।

জালটাকা বহনের সবচেয়ে বেশি ঝুঁকি সাধারণ মানুষের। কারণ প্রচলিত আইন অনুযায়ী যার কাছেই হোক না কেন, জালনোট পাওয়া গেলে তাকেই অপরাধী বলে গণ্য করা হবে। অথচ খালি চোখে তাৎক্ষণিক জালনোট শনাক্ত করার সহজ কোনো উপায় নেই। কর্মব্যস্ত জীবনে সবার পক্ষে সম্ভবও নয় প্রতিটি নোট যাচাই-বাছাই করা। জালনোট শুধু একজন ব্যক্তির জন্যই বিপজ্জনক নয়, একই সাথে তা দেশীয় অর্থনীতির জন্যও বিপদের কারণ। সুতরাং এর সাথে জড়িতদের শনাক্ত করা এবং কঠোর বিচারের সম্মুখীন করা জরুরি। তারা যাতে আইনের ফাঁক গলিয়ে বেরিয়ে আসতে না পারে, সেই ব্যবস্থা নিতে হবে।
likhonalife@gmail.com


আরো সংবাদ



premium cement
মেক্সিকোয় মেয়র প্রার্থী ছুরিকাঘাতে নিহত রাজশাহীর সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৪১ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত কলেজসমূহেও ক্লাস বন্ধ ঘোষণা দেশীয় খেলাকে সমান সুযোগ দিন : প্রধানমন্ত্রী ফ্যাসিবাদের শোষণ থেকে জনগণকে মুক্ত করতে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে : মিয়া গোলাম পরওয়ার সিংড়ায় প্রতিমন্ত্রীর শ্যালককে প্রার্থীতা প্রত্যাহারের নির্দেশ আ’লীগের চুয়াডাঙ্গায় হিট‌স্ট্রো‌কে যুবকের মৃত্যুর ৭ ঘণ্টা পর নারীর মৃত্যু ঢাকায় তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রি ছাড়াল, যশোরে দেশের সর্বোচ্চ ৪২.৬ শ্যালকদের কোপে দুলাভাই খুন : গ্রেফতার ৩ তীব্র গরমে কী খাবেন আর কী খাবেন না এবার তালতলী উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতির আপত্তিকর ভিডিও ভাইরাল

সকল