২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১, ১৩ শাওয়াল ১৪৪৫
`

রবীন্দ্রনাথ ও নজরুল : একটি তুলনা

রবীন্দ্রনাথ ও নজরুল - ছবি : সংগ্রহ

বাংলা সাহিত্যের বহুল আলোচিত ও প্রতিভাবান দুই কবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর (১৮৬১-১৯৪১) ও কাজী নজরুল ইসলাম (১৮৯৯-১৯৭৬)। দু’জনেরই রচনাসম্ভার এতই বিশাল যে সীমিত পরিসরের তাদের সম্যক উপস্থাপনা প্রায় অসম্ভব এবং দুরূহ তো বটেই। এই ক্ষুদ্র পরিসরে ব্রিটিশ রাজের ও সময়ের দাবির প্রতি তাদের তুলনামূলক দৃষ্টিভঙ্গি প্রসঙ্গে আলোচনার প্রয়াস পাবো।

রবীন্দ্রনাথ ছিলেন ব্রিটিশদের আশীর্বাদপুষ্ট জমিদার পরিবারের সন্তান, যে জমিদারি তিনিও উত্তরাধিকার সূত্রে পেয়েছিলেন। নজরুল ছিলেন ব্রিটিশ ভারতে এক দীনহীন পরিবারের সন্তান, যাকে বেঁচে থাকার লড়াই কঠোরভাবে করতে হয়েছে, যেটা রবীন্দ্রনাথকে করতে হয়নি। দারিদ্র্য নজরুলকে নত বা দমাতে পারেনি; বরং তিনি বলেছেন- ‘হে দারিদ্র্য, তুমি মোরে করেছ মহান।/তুমি মোরে দানিয়াছ খ্রীস্টের সম্মান/কণ্টক-মুকুট শোভা। -দিয়েছ, তাপস,/ অসঙ্কোচ প্রকাশের দুরন্ত সাহস’। এই দুরন্ত সাহস তাকে দেশের স্বার্থে রাজদ্রোহী করেছে এবং তিনি লিখতে পেরেছেন, ‘মহা বিদ্রোহী রণ-ক্লান্ত,/ আমি সেই দিন হব শান্ত,/যবে উৎপীড়িতের ক্রন্দন-রোল আকাশে বাতাসে ধ্বনিবে না,/ অত্যাচারীর খড়্গ কৃপাণ ভীম রণ-ভূমে রণিবে না,/ বিদ্রোহী রণ-ক্লান্ত/ আমি সেই দিন হব শান্ত’। ভারতবর্ষের নিপীড়িত জনগণের প্রতি অপরিসীম মমতায় তিনি লিখেছেন, ‘নহে এরা অভিনেতা, দেশ-নেতা নহে,/ এদের সৃজন-কুঞ্জ অভাবে, বিরহে,/ইহাদের বিত্ত নাই, পুঁজি চিত্তদল;/নাই বড় আয়োজন, নাই কোলাহল;/আছে অশ্র“, আছে প্রীতি, আছে বক্ষ-ক্ষত’।

তার প্রতি অদৃষ্ট এমনই বিরূপ হয়ে দেখা দিলো যে, অত্যাচারী ব্রিটিশ রাজ এবং এ দেশীয় দোসর জমিদার-মহাজনদের অত্যাচার থেকে ‘উৎপীড়িতের ক্রন্দন-রোল’ থামার আগেই তিনি ১৯৪২ সালে বাকরুদ্ধ, শান্ত ও নিষ্ক্রিয় হয়ে গেলেন। নিজের এই পরিণতির কথা সম্ভবত তিনি আগেই টের পেয়েছিলেন। তাই প্রাণোচ্ছল কবি লিখেছেন, ‘তোমাদের পানে চাহিয়া বন্ধু, আমি আর জাগিব না,/ কোলাহল করি সারা দিনমান কারো ধ্যান ভাঙিব না।/ নিশ্চল নিশ্চুপ/ আপনার মনে পুড়িব একাকী গন্ধবিধুর ধূপ’। এটাই সত্য হয়েছিল।

অপর দিকে, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ৮১ বছর সক্রিয় জীবন যাপন করেছেন। তার ভাইদের, কেউ কেউ উত্তরাধিকার সূত্রে প্রাপ্ত জমিদারি হারালেও তিনি বাস্তববুদ্ধি, হিসাব ও নিয়মানুবর্তিতার মাধ্যমে জমিদারি অটুট রাখতে পেরেছিলেন। এই অপরূপ বাংলার অভাবী রায়তের খাজনাভোগী জমিদার কবি লিখেছেন, ‘আমার সোনার বাংলা, আমি তোমায় ভালবাসি।/ চিরদিন তোমার আকাশ, তোমার বাতাস, আমার প্রাণে বাজায় বাঁশি’। এ কবিতার কিয়দংশ এখন বাংলাদেশের জাতীয় সঙ্গীত। অথবা ‘ও আমার দেশের মাটি, তোমার পরে ঠেকাই মাথা, তোমাতে বিশ্বময়ীর, তোমাতে বিশ্বমায়ের আঁচল পাতা।/তুমি মিশেছ মোর দেহের সনে,/তুমি মিলেছ মোর প্রাণে মনে,/ তোমার ওই শ্যামলবরণ কোমল মূর্তি মর্মে গাঁথা’।

নিপীড়িত মানুষের নিপীড়িত কবি নজরুল লিখেছেন- ‘বন্ধু আমার! থেকে থেকে কোন্ সুদূরের বিজন পুরে/ ডাক দিয়ে যাও ব্যথার সুরে?/আমার অনেক দুঃখের পথের বাসা বারে বারে ঝড়ে উড়ে,/ ঘর-ছাড়া তাই বেড়াই ঘুরে’। মানুষের ব্যথায় ব্যথিত নজরুল লিখেছেন, ‘বন্ধু, তোমার বুক-ভরা লোভ, দু’-চোখে স্বার্থ-ঠুলি,/ নতুবা দেখিতে, তোমারে সেবিতে দেবতা হয়েছে কুলি’। রবীন্দ্রনাথও শৃঙ্খলিত পরাধীন দেশের লোকাচারে ক্ষুব্ধ হয়ে লিখেছেন, ‘ইহার চেয়ে হতেম যদি/আরব বেদুয়িন!,/ পায়ের তলে বিশাল মরু/ দিগন্তে বিলীন/.../ থাকিতে নারি ক্ষুদ্র কোণে/আম্রবনছায়ে,/সুপ্ত হয়ে লুপ্ত হয়ে/গুপ্ত গৃহবাসে’। কারো কারো মতে, এটা রবীন্দ্রনাথের এক ধরনের ‘বিলাস’ও হতে পারে। তিনি বাংলাকে উদ্দেশ করে লিখেছেন- ‘ওগো মা, তোমার কোলে জনম আমার, মরণ তোমার বুকে।/ তোমার পরে খেলা আমার দুঃখে সুখে’। প্রায় সব বড় লেখকের বেলায়ই আমরা কম-বেশি স্ববিরোধিতা লক্ষ করি। এটাও ঠিক, সব লেখকের লেখারই একটা মূল আদর্শের ভিত্তিগত প্রবণতা থাকে। রবীন্দ্রনাথ ও নজরুলের ক্ষেত্রেও আছে। এই দু’জনে ভিন্নধর্মী পারিবারিক পরিবেশে মানুষ হয়েছেন। রবীন্দ্রনাথ ‘সোনার চামচ মুখে নিয়ে’ জন্মগ্রহণ করেছেন। নজরুলের ভাগ্যে তা জোটেনি। জীবনে বহু কষ্টভোগ করতে হয়েছে তাকে। তার লেখা বই বাজেয়াপ্ত হয়েছে। তাকে কারারুদ্ধ করা হয়েছে। ‘আমার উপর অভিযোগ, আমি রাজদ্রোহী! তাই আমি আজ কারাগারে বন্দী এবং রাজদ্বারে অভিযুক্ত’ (নজরুলের ‘রাজবন্দীর জবানবন্দি)’।

রবীন্দ্রনাথকে এমন অভিযোগে অভিযুক্ত হতে হয়নি এবং কারাবন্দীও হতে হয়নি। নববর্ষায় আনন্দিত তিনি লিখতে পেরেছেন, ‘হৃদয় আমার নাচে রে আজিকে,/ময়ূরের মতো নাচে রে হৃদয় নাচেরে’। আর এমনি পরিস্থিতিতে নজরুল লিখেছেন, ‘বাদলবায়ে মোর নিভিয়া গেছে বাতি।/ তোমার ঘরে আজ উৎসবের রাতি’। নজরুল লেখেন- ‘মোদের উঠান-ভরা শস্য ছিল হাস্য-ভরা দেশ/ ঐ বৈশ্য দেশের দস্যু এসে লাঞ্ছনার নাই শেষ’। ব্রিটিশদের স্বাগত জানিয়ে রবীন্দ্রনাথ লিখেছেন, ‘পশ্চিম আজি খুলিয়াছে দ্বার, সেথা হতে সবে আনে উপহার,/ দিবে আর নিবে, মিলাবে মিলিবে, যাবে না ফিরে’। তিনি কী নীরদ সি চৌধুরীর মতো ভারতবর্ষে ব্রিটিশ রাজের চিরস্থায়িত্ব কামনা করেছিলেন?

নজরুল উপনিবেশবাদী ব্রিটিশ রাজের অত্যাচারে হতাশায় ভেঙে না পড়ে অধীর হয়ে লিখেছেন, ‘এবার বন্দী বুঝেছে, মধুর প্রাণের চাইতে ত্রাণ।/ মুক্ত-কণ্ঠে স্বাধীন বিশ্বে উঠিতেছে কলতান -/ জয় নিপীড়িত প্রাণ!/ জয় নব অভিযান!/ জয় নব উত্থান!’। আমাদের ভুললে চলবে না- নজরুলের ‘ধূমকেতু’কে স্বাগত জানিয়ে রবীন্দ্রনাথ লিখেছিলেন, ‘আয় চলে আয়, রে ধূমকেতু,/ আঁধারে বাঁধ অগ্নিসেতু/ দুর্দিনের এই দুর্র্গশিরে/ উড়িয়ে দে তোর বিজয় কেতন। অলক্ষণের তিলক রেখা/ রাতের ভালে হোক না লেখা,/ জাগিয়ে দে রে চমক মেরে/ আছে যারা অর্দ্ধচেতন’। লক্ষণীয় এই যে, ‘আঁধারে অগ্নি সেতু’ বাঁধার, ‘দুর্দিনের দুর্গশিরে’ ‘বিজয় কেতন’ উড়াবার, ‘অলক্ষণের তিলক রেখা রাতের ভালে’ লিখার এবং ‘চমক মেরে’ ‘অর্দ্ধচেতন’দের জাগাবার ভার রবীন্দ্রনাথ নজরুলের ওপরই ন্যস্ত করেছিলেন। ১৯১৯ সালে জালিয়ানওয়ালা বাগ হত্যাযজ্ঞের পর ‘নাইটহুড’ ত্যাগের সিদ্ধান্ত নিতে ৪৬ দিন সময় লাগলেও রবীন্দ্রনাথ ব্রিটিশ সম্রাজ্ঞী ভিক্টোরিয়ার মৃত্যুতে ‘রাজভক্তির প্রতীক’ মাতৃশোকোচ্ছ্বাস করে ‘নাইট’ উপাধি পেয়ে আনন্দিত ও ধন্য হয়েছিলেন।

সম্রাট পঞ্চম জর্জ ১৯১১ সালে বঙ্গভঙ্গ রদ করায় প্রধান ভারতীয় হিন্দুদের পক্ষে কৃতজ্ঞতাস্বরূপ রবীন্দ্রনাথ সম্রাটের উদ্দেশে উচ্ছ্বসিত ভাষায় ‘জনগণমন অধিনায়ক’ প্রশস্তি লিখতে দ্বিধা করেননি। এটি এখন ভারতের জাতীয় সঙ্গীত। ১৯১৩ সালে তিনি নোবেল পুরস্কারে ভূষিত হন। পরাধীন ভারতবর্ষে মানবাধিকার বলতে কিছু ছিল না। সেই পরিস্থিতিতে ভারতবর্ষের সমস্যা চিহ্নিত করতে গিয়ে রবীন্দ্রনাথ তার নোবেল-ভাষণে বলেছেন – ‘Now, when in the present time of political unrest, the children of the great India cry for rejection of the West I feel hurt. I feel that it is a lesson which they have received from the West. Such is not our mission. India is there to unite all human races. Because of that reason in India we have not been given the unity of races. Our problem is the race problem which is the problem of all Humanity’, (Dr. Gagan Jain, Selected Nobel Laureates’ Prize Acceptance Speeches, Delhi, Page, 169-177). প্রশ্ন জাগতে পারে, ভারতবর্ষের স্বাধীনতার কথা তার মাথায় আসেনি কেন? এর আগে ১৮৫৭ সালের অ্যাবরটিভ্ স্বাধীনতা যুদ্ধের (যা সিপাহি বিদ্রোহ নামে খ্যাত) পর ১৮৮৫ সালে সর্বভারতীয় কংগ্রেস ও ১৯০৬ সালে সর্বভারতীয় মুসলিম লীগ গঠিত হয়ে গেছে। বিশাল ভারতে বর্ণে-ধর্মে-ভাষায়-স্বার্থে বিচিত্র মানুষ কখনো সঙ্ঘবদ্ধ হয়ে আন্দোলন-সংগ্রাম করবে এমন ভরসা হয়তো ছিল না বলেই স্বাধীনতা সংগ্রামে তার আগ্রহ-উৎসাহ দেখা যায়নি। শেষ বয়সে তিনি ব্রিটিশ যুবরাজের দিল্লিবাস কামনা করেছিলেন সুশাসনের প্রত্যাশায়। কাজেই তিনি জাতি হিসেবে আমাদের প্রেরণার উৎস কতটা, তা গভীরভাবে বিবেচ্য। ‘রবীন্দ্রনাথ আমাদের ঐতিহ্য, সম্পদ নন। আমরা রবীন্দ্রনাথকে রাষ্ট্রীয় জীবনের সহায়-সম্পদ করব না’। (আহমদ শরীফ, ইদানীং আমরা, ১৩৯৩, পৃষ্ঠা-১০১)।

কবিতাঙ্গনে নজরুলের আবির্ভাব প্রসঙ্গে বলা যায়, বাংলা কবিতা যুগ যুগ ধরে সমাজের স্থবির মানসের পরিচর্যায় পরিব্যাপ্ত ছিল। আলোড়নহীন সমাজ নতুন বিক্ষোভ ও নতুন মূল্যবোধের উদ্ভব ঘটতে পারেনি। তবে এ কথা স্বীকার্য, বাংলার সমাজে পরে রেনেসাঁ এসেছিল। কবিতার ক্ষেত্রে নতুন নতুন উদ্ভাবনের জোয়ারও এসেছিল। দীর্ঘ দিনের অচলায়তন ভাঙার পর বাংলার সমাজ অত্যন্ত দ্রুতগতিতে বিবর্তিত হয়েছে, যার চাহিদার সাথে রবীন্দ্রনাথও তাল মেলাতে পারেননি। বহুদিনের পশ্চাৎপদ মন চতুর্দিকের অগ্রযাত্রার সাথে অধৈর্য হয়ে এক হতে চেয়েছে। এ কথা অনস্বীকার্য, বাংলা কাব্য সাহিত্যে রবীন্দ্রনাথের সৌন্দর্য চেতনা, জীবনের মূল্য ও গুরুত্ববোধ প্রয়োজনানুগ ভিত্তি দিয়েছে। তবে তার জীবনকালেই বাংলার সমাজের চাহিদা এমন হয়ে দাঁড়াল যে, তা কেবল সৌন্দর্যবোধ ও নিরপেক্ষ জীবনবোধ দিয়ে মেটানো যায়নি। নতুন সমাজ বিনির্মাণের জন্য মানুষ তখন অস্থির। নিজের অস্তিত্বের মূল্যায়নে মানুষ তখন অসহিষ্ণু হয়ে উঠেছে। সমাজের সেই পরিবর্তিত অবস্থার বৈশিষ্ট্যের ধরনই এক বিদ্রোহকে জাঁকিয়ে তুলেছিল। এ সাম্প্রতিকতা কবির কাছে নিতান্ত চাহিদা পূরণের ডাক। রবীন্দ্রনাথের লেখায় সমাজের এই অন্তর্গত প্রকৃতির আহ্বানে বাস্তব প্রতিফলন ঘটেনি। কবিতার ক্ষেত্রে অবস্থাটা এমন দাঁড়াল যে, যিনিই এ ডাকে সাড়া দেবেন তিনিই হবেন নতুন। এই ডাকে সাড়া দিতে বীরচেতা নজরুলই স্বভাবত প্রেরণা পেলেন প্রথম। তাই তিনি হয়ে উঠলেন অনন্য। সম্পদের সুসম বণ্টনের প্রতীকস্বরূপ নজরুলই প্রথম প্রশ্ন তুললেনÑ “বাবু সা’ব এসে চড়িল ‘বাষ্প-শকটে’, কুলিরা পড়িল তলে/ বেতন দিয়াছ? চুপ রও যত মিথ্যাবাদীর দল!/ কত পাই দিয়ে কুলিদের তুই কত ক্রোড় পেলি বল্’?

পক্ষান্তরে, বাস্তব জীবনে রক্ষণশীল রবীন্দ্রনাথ সামন্ত-বুর্জোয়ার স্বার্থসচেতন কবি কখনো কখনো এবং কোথাও কোথাও বিদ্বান ও বিত্তবান-বুর্জোয়াসুলভ উদারতার পরিচয় দিয়েছেন। উচ্চকণ্ঠ হয়ে তত্ত্ব হিসেবে সামাজের ও শাস্ত্রের রীতিনীতি লঙ্ঘনের কথা উচ্চারণ করেছেন ঠিকই, তবে প্রয়োজনীয় মুহূর্তেও কবি শাস্ত্র-সমাজ কিংবা সরকারের অন্যায় বিরোধী দ্রোহী হতে পারেননি। ক্ষীণকণ্ঠে প্রতিবাদী কিংবা নিষ্ক্রিয় প্রতিকারকামী হয়েছেন মাত্র। তাই যারা মানবতাবাদী এবং আর্থসামাজিক জীবনে মানুষের দুঃখ-যন্ত্রণা-বঞ্চনার অপনোদনে সম্পদের সমবণ্টনে বিশ্বাসী, তাদের কাছে রবীন্দ্রনাথ ও তার সাহিত্য-কর্ম অতি মহান ঐতিহ্য বা সম্পদ হওয়ার নয়। এমনকি জীবন-চেতনার ক্ষেত্রে কোনো কার্যকর পুঁজি হিসেবে গণ্য নয়। গণমানুষের হিতকর সমাজ গঠন ও রক্ষায় নিজ নিজ প্রত্যয়ে অবিচল থাকার জন্য মোহমুক্ত থাকাই বুদ্ধিমানের কাজ।

রবীন্দ্রনাথ-নজরুলের তুলনামূলক বিচারে উপর্যুক্ত মূল্যায়ন হয়তো উভয়ের সাহিত্য কর্মের বিশালতা ও বৈচিত্র্যের বিবেচনায় ‘অন্ধের হাতি দেখা’র মতো ঠেকতে পারে; তবে বৈজ্ঞানিক দৃষ্টিকোণ থেকে বিচার করলে তা অযথার্থ হবে বলে মনে হয় না। রোগ নির্ণয়ে রক্ত পরীক্ষার প্রয়োজন হলে শরীরের সম্পূর্ণ রক্ত বের করে পরীক্ষা করা হয় না; ইনজেকশনের সিরিঞ্জে কয়েক মিলিলিটার রক্ত নিয়ে পরীক্ষা করলেই রোগ সম্পর্কে অনুমান করা যায়। আমিও তাই করেছি। পরিশেষে বলব জাতি-ধর্ম নির্বিশেষে নজরুল যেমন সব মানুষের কাছে পৌঁছতে পেরেছেন, রবীন্দ্রনাথ তা পারেননি। এটা এ কারণে যে, বাংলা সাহিত্যে কবি হিসেবে রবীন্দ্রনাথ হয়তো বা বড়, কিন্তু মানুষ হিসেবে নজরুল অনেক বড়।

লেখক : অর্থনীতির অবসরপ্রাপ্ত অধ্যাপক, বিসিএস সাধারণ শিক্ষা ক্যাডার


আরো সংবাদ



premium cement
বৃষ্টির জন্য দেশবাসীর প্রতি ইস্তিস্কার নামাজ আদায়ের আহ্বান আমিরে জামায়াতের সড়ক উন্নয়ন প্রকল্পে চুক্তি স্বাক্ষর করল তুর্কি, ইরাক, কাতার, সংযুক্ত আরব আমিরাত ঢাকায় ‘হিট স্ট্রোকে এক ব্যক্তির মৃত্যু শ্যামবাজার ঘাটে লঞ্চে আগুন, নিয়ন্ত্রণে ৪ ইউনিট ‘আমার শিশু মেয়েটির যে সর্বনাশ সে করেছে’ বান্দরবানের ৩ উপজেলায় নির্বাচন স্থগিত চুয়াডাঙ্গায় বৃষ্টির জন্য ইস্তিস্কার নামাজে মুসুল্লিদের ঢল বাংলাদেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্বের চাবিটা মনে হয় পার্শ্ববর্তী দেশকে দিয়েছে সরকার : রিজভী চীনের দক্ষিণাঞ্চলীলের গুয়াংডংয়ে সর্বোচ্চ স্তরের বৃষ্টিপাতের সতর্কতা জারি আজমিরীগঞ্জ উপজেলা চেয়ারম্যান মর্তুজা হাসান গ্রেফতার মুসলিম শ্রমিক হত্যায় হিন্দু নেতারা চুপ কেন : প্রশ্ন হেফাজত নেতা আজিজুল হকের

সকল