২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০, ১৭ রমজান ১৪৪৫
`

আফগানিস্তান : শান্তি কি হাতের মুঠোয়?

-

আফগানিস্তান নিয়ে শান্তিচুক্তি তো দূরের কথা, এখন পর্যন্ত অনেক সমস্যার জট কিভাবে খোলা হবে, তার কোনো রূপরেখাও হয়নি। কিন্তু তার পরও সাম্প্রতিক দোহা রাউন্ড শান্তি আলোচনার পর যুক্তরাষ্ট্র ও তালেবান উভয় পক্ষই মনে করছে, ১৭ বছর ধরে চলা যুদ্ধের অবসান ঘটিয়ে শান্তির পথে অগ্রগতি হয়েছে। এখন পর্যন্ত দুই পক্ষ মূলত যে বিষয় দু’টিতে একমত হয়েছে, তা হলো আফগানিস্তান থেকে সব বিদেশী সৈন্য প্রত্যাহার করা হবে এবং তালেবান পক্ষ কোনো ‘সন্ত্রাসী’ গ্রুপকে দেশটিতে কাজ করতে দেবে না। তবে বিদেশী সৈন্য প্রত্যাহারের পর কারা দেশ পরিচালনা করবে, বিভিন্ন গ্রুপের মধ্যে কিভাবে সমন্বয় করা হবে, বর্তমান কাবুল প্রশাসনের কী হবে, সে ব্যাপারে এখন পর্যন্ত আলোচনাই শুরু হয়নি। অর্থাৎ কাজ বাকি রয়ে গেছে অনেক। কিন্তু তার পরও বলা হচ্ছে অগ্রগতি হয়েছে। তবে সার্বিক ঘটনাপ্রবাহ সম্পর্কে যারা অবহিত, তারা কিন্তু জানেন, সত্যিই অগ্রগতি হয়েছে।

এই অগ্রগতির খবর নিশ্চিত করেছেন খোদ জালমি খালিলজাদ। তিনি হলেন মার্কিন আলোচক দলের নেতা। আফগানিস্তানের অচলাবস্থা নিরসনের জন্য বিশেষ দায়িত্ব দিয়েই তাকে পাঠানো হয়েছে। তিনিও দোহা রাউন্ডের অগ্রগতি নিয়ে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন।
তিনি দোহা ত্যাগ করার আগে জানিয়েছেন, শান্তির জন্য চারটি ইস্যুতে সমঝোতা প্রয়োজন : সন্ত্রাসপ্রতিরোধ নিশ্চয়তা, সৈন্য প্রত্যাহার, আন্তঃআফগান সংলাপ ও ব্যাপকভিত্তিক যুদ্ধবিরতি।

তিনি বলেন, সৈন্য প্রত্যহারের সময়সূচি নির্ধারিত হওয়ার পর এবং সন্ত্রাস প্রতিরোধের ব্যাপারে মতৈক্য হওয়ার পর রাজনৈতিক নিষ্পত্তি ও ব্যাপকভিত্তিক যুদ্ধবিরতির জন্য সরকারসহ তালেবান ও অন্যান্য আফগান পক্ষের মধ্যে আন্তঃআফগান আলোচনা শুরু হবে।
তবে দু’টি প্রধান ইস্যু প্রশ্নে খসড়া চুক্তিতে উপনীত হওয়ার অর্থ হচ্ছে উভয়ের কাছে গ্রহণযোগ্য চুক্তি না হওয়া পর্যন্ত তারা আলোচনা অব্যাহত রাখবে।

এর আগে আশঙ্কা করা হচ্ছিল, আফগান যুদ্ধে সামগ্রিক জয়ের ঘোষণা দিয়ে তালেবান কট্টরপন্থীরা আলোচনা ভণ্ডুল করে দিতে পারে, কোনো চুক্তি ছাড়াই আলোচনা ত্যাগ করতে বাধ্য করতে পারে। এমন আশঙ্কাও ছিল, আলোচনায় মন্থর গতিতে অগ্রগতির ফলে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প অধৈর্য হয়ে কোনো চুক্তি ছাড়াই আফগানিস্তান থেকে মার্কিন সৈন্য প্রত্যাহারের ঘোষণা দিয়ে দিতে পারেন।
কিন্তু এখন পর্যন্ত দৃশ্যত তেমন কিছুই ঘটেনি। খালিলজাদ টুইটারে বলেন, শান্তির পরিবেশ ভালো হচ্ছে। উভয়পক্ষই যুদ্ধের অবসান চায়। বিভিন্ন চড়াই-উৎরাই সত্ত্বেও প্রকৃত সাফল্য অর্জিত হচ্ছে।

এখন উভয়পক্ষ আন্তঃআফগান সংলাপ ও যুদ্ধবিরতির মতো কঠিন ইস্যুগুলো নিয়ে আলোচনা শুরু করতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
আফগানদের জন্য এ আলোচনা পর্ব খুবই গুরুত্বপূর্ণ হতে পারে। বিশেষ করে যুদ্ধবিরতির জন্য তারা অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছে।

এর মধ্যে আরেকটি ঘটনাও ঘটে যাচ্ছে। আমেরিকান ও তালেবান পক্ষ যখন দোহায় তাদের সর্বশেষ দফার আলোচনা সফল হয়েছে বলে জানাচ্ছিল, ঠিক সে দিনই বাদগিস প্রদেশে তালেবান হামলায় ২০ আফগান সৈন্য নিহত, ১০ জন আহত ও আরো ২০ জন বন্দী হয়েছে। কাবুলের ওপর চাপ বাড়াতে তালেবান পক্ষ এ ধরনের হামলা বাড়াতে থাকবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। এতে উত্তেজনা আরো বাড়তে পারে।
আবার তালেবান পক্ষ এখনো কাবুল প্রশাসনকে আলোচনায় শামিল করতে অস্বীকৃতি জানিয়ে আসায় আফগান সরকারের মধ্যে হতাশা বাড়ছে। এ ছাড়া সাবেক প্রেসিডেন্ট হামিদ কারজাইও কাবুল সরকারের ওপর চাপ বাড়াচ্ছেন এই বলে যে, আশরাফ গনি যত দিন প্রেসিডেন্ট থাকবেন, তত দিন আফগান সরকার ও তালেবানের মধ্যে সমঝোতা হবে না।

তালেবান পক্ষ বলে আসছে, কাবুল সরকার হলো যুক্তরাষ্ট্রের তাঁবেদার। তাদের সাথে আলোচনার কোনো অর্থ হয় না। তারা কিন্তু তাদের অবস্থানে অটল রয়ে গেছে এবং যুক্তরাষ্ট্রকে তাদের দাবি মানতে বাধ্য করতে পেরেছে। এটিও তাদের একটি বড় সাফল্য।

কিন্তু তার পরও মনে হচ্ছে, আফগানরা শান্তির ব্যাপারে আগের যেকোনো সময়ের চেয়ে বেশি আস্থাশীল হতে পারে। কিছু দেরি হলেও শান্তি আলোচনায় যে অগ্রগতি হয়েছে, তাতে তারা আশাবাদী হতে পারে। আর এর মাধ্যমে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে সবচেয়ে দীর্ঘস্থায়ী যুদ্ধের অবসান ঘটবে বলেই সবার কাছে মনে হয়েছে। যতটুকু মনে হচ্ছে, এই প্রক্রিয়ার প্রতি সম্মতি রয়েছে পাকিস্তান, চীন, রাশিয়া, ইরানেরও। এতগুলো পক্ষ যেখানে একমত, সেখানে অন্য কিছুই হয়তো বাধা হয়ে থাকবে না।


আরো সংবাদ



premium cement
ড. ইউনূসের ইউনেস্কো পুরস্কার নিয়ে যা বললেন তার আইনজীবী একনেকে ৮৪২৫ কোটি টাকার ১১ প্রকল্প অনুমোদন সান্তাহারে ট্রাকের চাকায় পিষ্ট হয়ে যুবক নিহত জলবায়ু সহনশীল মৎস্যচাষ প্রযুক্তি উদ্ভাবনে পদক্ষেপ নেয়া হবে : আব্দুর রহমান যুক্তরাষ্ট্রের সেতু ভাঙ্গার প্রভাব পড়বে বিশ্বজুড়ে! নাশকতার মামলায় চুয়াডাঙ্গা বিএনপি-জামায়াতের ৪৭ নেতাকর্মী কারাগারে হারল্যানের পণ্য কিনে লাখপতি হলেন ফাহিম-উর্বানা দম্পতি যাদের ফিতরা দেয়া যায় না ১৭ দিনের ছুটি পাচ্ছে জবি শিক্ষার্থীরা বেলাবতে অটোরিকশা উল্টে কাঠমিস্ত্রি নিহত রোহিঙ্গা ইস্যুতে মিয়ানমার সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে জাতিসঙ্ঘের প্রতিবেদন

সকল