২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৭ বৈশাখ ১৪৩১, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫
`

সিরিয়া নিয়ে শান্তিপ্রক্রিয়া কি সফল হবে?

-

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প গত ডিসেম্বরে সিরিয়া থেকে আমেরিকার সৈন্য প্রত্যাহারের ঘোষণা দেয়ার পর প্রথমবারের মতো ‘আসতানা শান্তিপ্রক্রিয়ার’ নেতারা অর্থাৎ রাশিয়া, ইরান ও তুরস্কের নেতারা রাশিয়ার কৃষ্ণসাগরীয় অবকাশ কেন্দ্র সোচিতে ত্রিপক্ষীয় বৈঠকে মিলিত হয়েছিলেন।

তাদের আলোচনায় তিনটি বিষয় প্রাধান্য পেয়েছিল। প্রথমত, বিরোধীদের দখলে থাকা ইদলিব প্রদেশে ও বেসামরিক অঞ্চলে কী করা উচিত। দ্বিতীয়ত, সিরিয়ার উত্তর-পূর্বাঞ্চল থেকে সৈন্য প্রত্যাহারের মার্কিন সিদ্ধান্তের পরিপ্রেক্ষিতে আসতানা প্রক্রিয়ার অংশীদারদের কিভাবে প্রতিক্রিয়া দেখানো উচিত এবং তৃতীয়ত, একটি সাংবিধানিক কমিটি গঠনের ব্যাপারে কিভাবে সামনে এগোনো যায়? উল্লেখ্য, একটি রাজনৈতিক সমাধানের পথে এ সাংবিধানিক কমিটিকে একটি প্রধান পদক্ষেপ হিসেবে বিবেচনা করা হয়ে থাকে। দুই বছর আগে ‘আসতানা প্রক্রিয়ার’ সূচনা হওয়ার পর থেকে এখন পর্যন্ত এই তিনটি ইস্যু সমন্বিতভাবে বৃহত্তম চ্যালেঞ্জ হয়ে উঠেছে।

ইদলিবের ভবিষ্যৎ
সিরিয়ার গৃহযুদ্ধকে কেন্দ্র করে রাশিয়া, ইরান এবং তুরস্ক, বিশেষত রাশিয়া এবং তুরস্ক তিক্ত প্রতিদ্বন্দ্বী হয়ে ওঠে। উল্লিখিত তিনটি দেশ এই যুদ্ধে বিভিন্ন পক্ষের প্রতি সমর্থন জানায়। রাশিয়া ও ইরান সিরিয়া সরকারের প্রতি তাদের সমর্থন ব্যক্ত করে সিরিয়ায় সৈন্য পাঠিয়েছে এবং রাজনৈতিক ও আর্থিক সহায়তা দিয়েছে। অপর দিকে, তুরস্ক সিরিয়ার সরকারবিরোধী পক্ষের প্রতি সমর্থন ব্যক্ত করে এবং তাদের রাজনৈতিক ও সামরিক নেতৃত্বের জন্য একটি নিরাপদ অঞ্চল গড়ে তোলার সুযোগ করে দেয়।

২০১৫ সালের নভেম্বরে তুরস্ক তার সিরিয়া সীমান্তের কাছে রাশিয়ার একটি যুদ্ধবিমান গুলি করে ভূপাতিত করলে দুই দেশের সম্পর্ক তলানিতে গিয়ে পৌঁছে। অবশ্য ইরান ও রাশিয়া তুরস্কের ২০১৬ সালের জুলাই মাসের অভ্যুত্থান প্রচেষ্টার নিন্দা করলে এবং পশ্চিমা মিত্রদের দ্বারা তুর্কি প্রেসিডেন্ট এরদোগান যখন ক্রমবর্ধমানভাবে একঘরে হয়ে পড়ছিলেন, তখন রাশিয়া ও ইরান এরদোগানের প্রতি সহানুভূতির মনোভাব নিয়ে এগিয়ে এলে, উভয়পক্ষের সম্পর্ক আবার স্বাভাবিক হয়ে আসে।

রাশিয়ার সাথে সম্পর্ক পুনঃপ্রতিষ্ঠার পর তুরস্ক সিরিয়ার অভ্যন্তরে ২০১৬ সালের আগস্টে ইউফ্রেটিস শিল্ড নামক প্রথম বড় ধরনের সামরিক অভিযান চালায়। ওই অভিযানের মাধ্যমে তুর্কি সৈন্য এবং তুর্কি সমর্থিত সিরিয়া বিরোধী উপদলগুলো ইসলামিক স্টেট অব ইরাক অ্যান্ড দ্য লেভান্ট (আইসিস নামে পরিচিত) এবং সিরিয়ান ডেমোক্রেটিক ফোর্সেসের (এসডিএফ) কাছ থেকে, তুর্কি সীমান্তের কাছে ইউফ্রেটিসের পশ্চিম তীরের দুই হাজার বর্গকিলোমিটারেরও বেশি এলাকা পুনরুদ্ধার করেছে। কয়েক মাস পর আলেপ্পোর পতন ঘটলে রাশিয়া ও তুরস্ককে সিরিয়ায় তাদের অভিন্ন স্বার্থ চিহ্নিত করার অনুমতি দেয়া হয়। ফলে ২০১৭ সালের জানুয়ারিতে ‘আসতানা প্রক্রিয়া’ চালু হয় এবং পরে এতে ইরান যোগ দেয়।

২০১৭ সালে আসতানা শান্তিপ্রক্রিয়ার মাধ্যমে সিরিয়া সরকার এবং বিরোধীদের মধ্যকার সঙ্ঘাতের বড় চারটি এলাকাকে কথিত সঙ্ঘাত কমানো বা সহিংসতা হ্রাস এলাকা হিসেবে প্রতিষ্ঠার বিষয় অনুমোদন দেয়া হয়। এগুলো হলো- ইদলিব প্রদেশ, উত্তরাঞ্চলীয় হোম্স্ প্রদেশ, পূর্ব গূতা এবং ফেরা ও কুনিত্রা প্রদেশ।

সরকারবিরোধী পক্ষের সাথে যুদ্ধ বন্ধ করার জন্য রাশিয়া উদ্যোগ নেয়। রাশিয়া সিরিয়ায় অত্যন্ত মূল্যবান বিস্তীর্ণ পূর্বাঞ্চলীয় প্রদেশগুলোর ওপর নিজের নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠার জন্য অধিক সৈন্য পাঠানোর প্রতিশ্রুতি দেয়।

২০১৮ সালে রাশিয়া সিরিয়ার বিরোধী পক্ষের ওপর ফের হামলা শুরু করে। এ হামলার মাধ্যমে রাশিয়া সিরিয়ার বিরোধী পক্ষকে উল্লিখিত চারটি এলাকার তিনটি থেকে হটিয়ে দেয়। তুরস্কের সাথে বড় ধরনের মতপার্থক্য এবং ইরানের বিরোধিতার মুখে রাশিয়া এ হামলা চালায়। তবে ইদলিবে হামলা চালানো থেকে রাশিয়া বিরত থাকে।

তেহরানে একটি ত্রিপক্ষীয় শীর্ষ বৈঠক অনুষ্ঠানে ব্যর্থ হওয়ার মাত্র ১০ দিন পর তুর্কি প্রেসিডেন্ট এরদোগান এবং রুশ প্রেসিডেন্ট পুতিন ২০১৮ সালের সেপ্টেম্বরে একটি দ্বিপক্ষীয় চুক্তি স্বাক্ষর করেন। ওই চুক্তির মাধ্যমে ইদলিবে ১৫-২০ কিলোমিটার গভীর একটি অসামরিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠা করার বিষয় অনুমোদন করা হয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে তুরস্ক আগে আলকায়েদার সাথে সম্পৃক্ত বিদ্রোহী গ্রুপ হায়াতি তাহরির আল শামসকে (এইচটিএস) ওই এলাকা থেকে সরিয়ে নেয়া ও নিরস্ত্র করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে।

যা হোক না কেন, ২০১৯ সালের জানুয়ারি মাসে মার্কিন সৈন্য প্রত্যাহারের ঘোষণা দেয়ার পর ইদলিবের ব্যাপারে রাশিয়া-তুরস্ক চুক্তি বাতিল হয়ে যাওয়ার আশঙ্কায় এইচটিসি আগেই হামলা চালিয়ে ইদলিবের বেশির ভাগ এলাকা দখল করে নেয়। রাশিয়া ওই হামলাকে ২০১৮ সালের চুক্তির লঙ্ঘন বলে বিবেচনা করে।

সোচির শীর্ষ বৈঠকে তুরস্ক ইদলিব সঙ্কট সমাধানের সর্বাত্মক প্রয়াস চালায় এবং সেখানে যাতে কোনো হামলা না হয়- সেটা নিশ্চিত করার চেষ্টা করে। কারণ ইদলিবে হামলা হলে ইদলিব প্রদেশে বসবাসরত ৩০ লাখ শরণার্থী তুরস্কে গিয়ে আশ্রয় নেবে। মার্কিন নীতির ক্ষেত্রে অনিশ্চয়তার পরিপ্রেক্ষিতে রাশিয়া ইদলিবে দ্রুত হামলা চালানো সমীচীন হবে না বলে মনে করে। সুতরাং বলা যেতে পারে, অন্ততপক্ষে সিরিয়ার উত্তর-পূর্বাঞ্চলের অবস্থা স্পষ্ট না হওয়া পর্যন্ত ইদলিবের ব্যাপারে রাশিয়া-তুরস্ক সমঝোতা ধরে রাখা হবে।

আগামী এপ্রিলে সিরিয়া থেকে মার্কিন সৈন্য প্রত্যাহারের ব্যাপারে ট্রাম্পের সিদ্ধান্তে সোচি সম্মেলনে বেশ উত্তেজনা দেখা দেয়। সিরিয়ায় আইএসের পরাজয়ের পর সাবেক মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেও সেখানে মার্কিন সেনা মোতায়েন অব্যাহত রাখার চেষ্টা করলে তুরস্ক, রাশিয়া এবং ইরান ঐক্যবদ্ধভাবে এর বিরোধিতা করেছিল। পম্পেও সিরিয়ায় ইরানের প্রভাব হ্রাস করার জন্যই আমেরিকার সৈন্যদের সেখানে মোতায়েন রাখার নীতিতে অটল ছিলেন।

সিরিয়ায় ২০১৫ সালের সেপ্টেম্বরে রাশিয়ার হস্তক্ষেপের পর থেকে এ পর্যন্ত ট্রাম্পের সৈন্য প্রত্যাহারের সিদ্ধান্তকে অবশ্যই গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা হিসেবে দেখতে হবে। ট্রাম্পের ওই সিদ্ধান্তের পর আকস্মিকভাবে ত্রিদেশীয় শক্তির মধ্যে বড় ধরনের মতপার্থক্য হতে যাচ্ছে বলে মনে হচ্ছে। তুরস্ক, রাশিয়া এবং ইরানের মধ্যকার ভিন্নমতের একটি গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্ট হলো- যুক্তরাষ্ট্রের মিত্র এসডিএফের অধিকৃত ভূখণ্ডের উত্তরাধিকারী কে হওয়া উচিত? সিরিয়ায় তুরস্কের সবসময় প্রধানতম উদ্বেগ হলো কুর্দি প্রশ্নে। তাদের চূড়ান্ত লক্ষ্য, এসডিএফের হুমকি দূর করা। উল্লেখ্য, এসডিএফ কুর্দিস পিপলস প্রোটেকশন ইউনিট (ওয়াইপিজি) দ্বারা প্রভাবিত এবং যুক্তরাষ্ট্র তাদের আইএসের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করার জন্য অস্ত্র ও প্রশিক্ষণ দিয়েছে। তুরস্ক সরকার ওয়াইপিজিকে কুর্দিস্তান ওয়ার্কার্স পার্টির (পিকেকে) সিরিয়া শাখা হিসেবে দেখে থাকে এবং সন্ত্রাসী গোষ্ঠী বলে বিবেচনা করে।

তুরস্ক সিরিয়া থেকে মার্কিন সৈন্য প্রত্যাহারের আগে এসডিএফকে নিরস্ত্র করার এবং সিরিয়া ভূখণ্ডের ৩০ কিলোমিটার ভেতরে এবং ইউফ্রেটিসের পূর্ব দিকে সিরীয় সীমান্তের ৪৫০ কিলোমিটার বরাবর একটি ‘বাফার জোন’ প্রতিষ্ঠা করার প্রস্তাব দিয়েছে। আঙ্কারা ইউফ্রেটিসের পশ্চিমাঞ্চলে তাদের ২০১৬ সালের ইউফ্রেটিস শিল্ড এবং ২০১৮ সালের প্রথমার্ধে অলিভ ব্রাঞ্চ অপারেশনের মাধ্যমে ইতোমধ্যে একটি ‘নিরাপদ অঞ্চল’ প্রতিষ্ঠা করেছে। মার্কিন প্রভাবিত এলাকায় কী করা উচিত, এ ব্যাপারে রাশিয়া এবং ইরানের সম্পূর্ণ ভিন্ন ভিশন রয়েছে।

তাদের পরামর্শ হলো- এসডিএফ অধিকৃত ভূখণ্ডগুলো সিরিয়া সরকারের অধীনে ফিরে যাওয়া উচিত। তুরস্ক সিরীয় সরকারের সাথে সমন্বয়ের মাধ্যমে তার পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করলেই কেবল রাশিয়া তুর্কি প্রস্তাবকে স্বাগত জানাবে বলে মনে হচ্ছে। সেই লক্ষ্যে রাশিয়ার পরামর্শ হলো- তুরস্ক এবং সিরিয়া ১৯৯৮ সালের আদানা চুক্তিকে পুনরায় সক্রিয় করবে। ওই চুক্তিতে পিকেকের যোদ্ধাদের সিরিয়া ভূখণ্ডের অভ্যন্তরে তাদের কার্যক্রম চালিয়ে যাওয়ার অনুমতি দেয়া হলেও স্থায়ী সামরিক উপস্থিতি প্রতিষ্ঠার অনুমতি নেই। এ পর্যায়ে মস্কোর চূড়ান্ত লক্ষ্য হলো, সিরীয় সরকারকে একটি বৈধ সরকার হিসেবে স্বীকৃতি দেয়ার জন্য আঙ্কারাকে চাপ দেয়া এবং ওই সরকারের সাথে তাদের কার্যক্রম চালিয়ে যাওয়ার ব্যবস্থা করা। এই লক্ষ্য অর্জনে সফল হলে সেটা হতে পারে সিরীয় যুদ্ধের ক্ষেত্রে একটি গেম চেঞ্জার।

মার্কিন পরিকল্পনা এবং মার্কিন সৈন্য প্রত্যাহারের পরবর্তী অবস্থা কী হবে সেটা পরিষ্কার না হওয়া পর্যন্ত কিছু ঘটবে না। যুক্তরাষ্ট্র তুরস্কের সাথে সমন্বয় করে সেনা প্রত্যাহার সম্পন্ন করলে, সেটা তুরস্কের জন্য খুব ভালো হবে। আর যদি আমেরিকা তুরস্কের সাথে সমন্বয় না করার সিদ্ধান্ত নেয়, তাহলে ইরান আর রাশিয়া সুবিধা পাবে এবং তাদের অংশীদারকে বেশ দুর্বল অবস্থায় পরিত্যাগ করবে এবং আদানা চুক্তি ফিরিয়ে আনার প্রস্তাব গ্রহণ করে নেবে।

সাংবিধানিক কমিটি
‘আসতানা প্রক্রিয়া’ এখন পর্যন্ত সিরিয়র যুদ্ধে রাশিয়াকে দুটি প্রধান লক্ষ্য অর্জনের সুযোগ দিয়েছে : বিরোধীদের সামরিকভাবে পরাজিত করে রাজনৈতিক প্রক্রিয়ার দিকে মনোযোগী হওয়া এবং সংবিধান সংশোধন করে রাজনৈতিক উত্তরণ ঘটানো। ২০১৮ সালের জানুয়ারিতে তুরস্কের সহায়তায় রাশিয়া সোচিতে জাতীয় সংলাপের জন্য সিরিয়া কংগ্রেসের আয়োজন করেছিল। সেখানে সিরিয়া সরকার এবং তুরস্কভিত্তিক সরকারবিরোধীদের প্রতিনিধিদের একত্রিত হওয়ার সুযোগ করে দেয়। ওই উদ্যোগের প্রধান লক্ষ্য ছিল একটি সাংবিধানিক কমিটি গঠন করা। ওই সভায় সিরিয়াবিষয়ক জাতিসঙ্ঘের সাবেক বিশেষ দূত স্টিফান ডি মিসতুরাও অংশ নিয়েছিলেন। সেখানে যুদ্ধ অবসানের লক্ষ্যে সিরিয়ার সংবিধান পুনরায় লেখার লক্ষ্যে একটি কমিটি গঠনের জন্য চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়।

১৫০ সদস্যের ওই কমিটিতে সিরিয়া সরকারের পক্ষ থেকে ৫০, বিরোধীদের ৫০ এবং জাতিসঙ্ঘের পক্ষ থেকে ৫০ জন সদস্য থাকবেন। তাদের মধ্যে সিভিল সোসাইটি এবং টেকনিক্যাল এক্সপার্টরা অন্তর্ভুক্ত হবেন। ওই কমিটি গঠন নিয়ে কিছুটা অগ্রগতি হলেও এখনো কোনো চুক্তি হয়নি। সাংবিধানিক কমিটি গঠনে মার্কিন মনোভাবের ব্যাপারে স্পষ্ট করে কিছু জানা যায়নি। তবে এটা স্পষ্ট, যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট আসতানা প্রক্রিয়ায় তিন উদ্যোক্তা দেশকে পছন্দ করেন না। তাই পরিশেষে বলা যায়, সিরিয়ায় তুরস্ক, রাশিয়া ও ইরান যেটাই করার চেষ্টা করুক না কেন, দীর্ঘ আট বছরের এই প্রাণঘাতী যুদ্ধ থেকে আমেরিকা আদৌ বা কিভাবে বেরিয়ে আসবে- তা অনিশ্চিত।
আলজাজিরা থেকে ভাষান্তর : মুহাম্মদ খায়রুল বাশার


আরো সংবাদ



premium cement