১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৬ বৈশাখ ১৪৩১, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫
`

মাদুরো যাবে, গুয়েদো আসবে!

মাদুরো যাবে, গুয়েদো আসবে! - ছবি : সংগৃহীত

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সন্ত্রাসবাদকে একটি রক্তক্ষয়ী অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করে। এটি সন্ত্রাসী সংগঠনগুলোক খাওয়ায় এবং জন্ম দেয়, তাদের অস্ত্র দেয় আর অন্য দেশকে আক্রমণ করার জন্য তাদের ব্যবহার করে।
তার পর, এটি সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের জন্য বিশ্বব্যাপী প্রচারণা শুরু করে। আর এটি ঘোষণা করে- তাদের অভিযানে যারা থাকবে না, এসব দেশ ‘সন্ত্রাসবাদের পক্ষে’।

এটি বিশ্বজুড়ে ছড়িয়ে থাকা প্রায় সব জায়গায় সন্ত্রাসী সংগঠনের জন্য লোক সংগ্রহ করে। এটি তাদের প্রশিক্ষণ দেয় এবং পাশাপাশি তাদের ঘাঁটিগুলোতে তাদের সাথে সভাও করে।
তার পরে এটি সেই সন্ত্রাসী সংস্থাকে ওই দেশের বিরুদ্ধে ব্যবহার করে যেখানে ঘাঁটি অবস্থিত। উপরন্তু এটি সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে যুদ্ধ সমর্থন না করার জন্য এবং সন্ত্রাসবাদকে সমর্থন করার জন্য সেই দেশটিকে দোষারোপ করে।

কিভাবে ও কেন বিভিন্ন দেশ ও এর নেতাদের শাস্তি হয়?
এটি যেসব দেশ তাদের সম্পদ শোষণ, লুণ্ঠন করতে দেয় না এমন দেশগুলোকে লেবেল দেয় ‘বান্ডিট স্টেটস’। এটি সম্পদকে নিজস্ব স্বার্থে ব্যবহার করতে চায় এমন দেশগুলোকে হুমকি দেয় এবং বিশ্ব আর্থিক ব্যবস্থার মাধ্যমে তাদের ওপর চাপ সৃষ্টি করে।

এর পর পরই এটি সে দেশটিকে অস্থিতিশীল করার প্রক্রিয়া শুরু করে। অভ্যুত্থান প্রচেষ্টা, নেতাদের বহিষ্কার, সন্ত্রাসী হামলা, জাতিগত দ্বন্দ্ব, অর্থনৈতিক সঙ্কট, ব্যাপক বিক্ষোভÑ এসব একের পর এক আসতে থাকে।

এসব দেশের বিরুদ্ধে অনিবার্যভাবে প্রয়োগ করা হয় অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা। এটি দেশগুলোর অর্থনীতিকে আক্রান্ত করে, তাদের জনগণকে শাস্তি দেয় এবং যারা নিষেধাজ্ঞা মেনে চলতে চায় না, তাদের ওপর তদন্ত ও চাপ প্রয়োগ করা হয় আর এসব করা হয় তার নিজের স্বার্থের জন্য।

তেল, প্রাকৃতিক গ্যাস জাতীয়করণ করা প্রতিটি দেশের ওপর হামলা চালানো হয়েছে
এটি যেসব দেশ তার তেল, প্রাকৃতিক গ্যাস, স্বর্ণ, খনি, পানি, কৃষি ও বাজারকে আমেরিকান নিয়ন্ত্রণের অধীনে রাখতে অস্বীকার করে, সেসবের প্রতিটি আক্রান্ত করে। এটি তখন যুদ্ধ, আগ্রাসন, অভ্যন্তরীণ সঙ্ঘাত ও হত্যার হুমকি দেয়।

প্রায় সব দেশই যারা তাদের তেল সংস্থাগুলোকে জাতীয়করণ করেছে, সেসব দেশকেই তার তেল ও প্রাকৃতিক গ্যাসের দাবি-দাওয়া নিয়ে বিশৃঙ্খলার দিকে ঠেলে দেয়া হয়েছে।
লিবিয়া এর কোনো ব্যতিক্রম নয়। ইরাকও ভিন্ন নয়।
তাদের টুকরো করা হয়। কিছু হয় সৌদি আরবের মতো, যারা সম্পূর্ণ আত্মসমর্পণ করে, তাদের সম্পদ লুণ্ঠন করতে দিতে জিম্মি অবস্থাকে বরণ করে।

এটি ইরানের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে এবং দেশগুলোর ওপর চাপ প্রয়োগ করে যেন, তারা মেনে চলে। তারপরে, ইরানের আন্তর্জাতিক অর্থনৈতিক ব্যবস্থায় প্রবেশ এবং তা পরিচালনার জন্য এর নিজস্ব সমান্তরাল কোম্পানিগুলোকে সেট করে। যদি অন্য কোনো দেশ ইরানের সাথে সহযোগিতা করে এবং এর কার্যক্রম অব্যাহত রাখার চেষ্টা করে, তবে ২০১৩ সালের ১৭ থেকে ২৩ ডিসেম্বরে তুরস্কের বিচার বিভাগীয় অভ্যুত্থানের মতো দেশটিতে খোলামেলাভাবে আক্রমণ চালানো হয়।

আপনি যদি স্বর্ণ বা তেল মার্কিন কোম্পানিগুলোর জন্য সহজলভ্য না করেন তবে এটিই করা হবে।
ইরানি অর্থ এবং হল্কব্যাঙ্কের বিষয়টি আগে দুবাইয়ে যুক্তরাষ্ট্র এবং ফতেহউল্লেহ গুলেনের সংগঠনের (ফেতু) মাধ্যমে পরিচালিত হয়েছিল। অভ্যুত্থানের প্রক্রিয়া শুরু হলে দ্রুত তা তুরস্কে স্থানান্তরিত হয়।
এখন আমরা একই দৃশ্যটি ভেনিজুয়েলাতে আরেকবার হতে দেখছি। এক বৈশ্বিক বৃহৎ তেল উৎপাদককে অভ্যুত্থান, যুদ্ধ ও আক্রমণের হুমকি দেয়া হচ্ছে এ কারণে যে, তারা তেল খাতকে জাতীয়করণ করেছে। এটি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইচ্ছামতো এসব সম্পদকে সহজলভ্য করেনি এবং মার্কিন কোম্পানিগুলোর কাছে আত্মসমর্পণ করেনি।

এটি খোলাখুলিভাবে হুমকির মুখে রয়েছে এ কারণে যে, দেশটি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের হাতে স্বর্ণ তুলে দেয়নি। এটি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং পশ্চিমা সংস্থাগুলোকে তার স্বর্ণের খনি চালানোর অনুমতি দেয়নি, এটি মার্কিন নিয়ন্ত্রণাধীন বাজারে তার স্বর্ণ সমর্পণ করেনি।

মাদুরো যাবে, গুয়েদো আসবে : স্বর্ণ ও তেল উভয়ে তাদের ‘মালিকদের’ খুঁজে পাবে
মাদুরো যাবে ও গুয়েদো আসবে। কারণ গুয়েদো মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, ব্রিটেন, ইউরোপ ও লাতিন আমেরিকায় তাদের নিয়ন্ত্রিত দেশগুলোর পক্ষে রয়েছে। কারণ গুয়েদো এরই মধ্যে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও পশ্চিমা দেশগুলোর বাজারে তার স্বর্ণ ও তেল উভয় সমর্পণ করেছে। তিনি সে ব্যক্তি যাকে সেসব শক্তি ও কোম্পানি নিযুক্ত করেছে।

ভেনিজুয়েলা ও এর অর্থনীতি, জনগণ, রাষ্ট্র ও নেতাকে সমর্থন করে এমন দেশগুলোকেও এটি হুমকি দিতে শুরু করেছে। যারা আন্তর্জাতিক ব্যবস্থার কাছে স্বর্ণ রাখছে না, এটি তাদের শাস্তি দিচ্ছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, এ উদ্দেশ্যে তুরস্কের বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু হবে। এটি রাশিয়া ও সংযুক্ত আরব আমিরাতকে চাপ দিচ্ছে এ ক্ষেত্রে।

এটি রাজনীতির বিষয় নয়, বরং ‘লুণ্ঠন’
এটি রাজনীতির কোনো বিষয় নয়, বরং লুটপাট। ভেনিজুয়েলা হলো পরবর্তী দেশ, যে লুট করার তালিকায় পরের ক্রমে রয়েছে। তারা দেশটির তেল, স্বর্ণ ও বিদ্যমান সম্পদ লুণ্ঠন করতে যাচ্ছে। এর কোনো রাজনৈতিক ব্যাখ্যার প্রয়োজন নেই।

যদি আপনি আপনার সম্পদ রক্ষা করেন, যদি আপনি নিজের দেশের সুরক্ষা করেন, আপনি যদি নিজের পায়ে দাঁড়ানোর চেষ্টা করেন এবং শোষণের বিরুদ্ধে মনোভাব নেয়ার চেষ্টা করেন তবে আপনাকে আক্রমণ করা হবে। পশ্চিমা উপনিবেশবাদ শতাব্দীকাল ধরে এটি চালিয়ে আসছে।
তারা দেশটিকে হয় ধ্বংস করে দেয় এবং লুটপাট করে অথবা পুতুল প্রশাসন বানিয়ে এর ও দেশটির নেতাদের ওপর নিয়ন্ত্রণ নেয় অথবা তারা তাদের সম্পদ লুট করে আর সে কাজ শেষ হলে গোটা দেশকে ঘৃণ্য শাস্তি দেয়।

তুরস্কের ওপর এ কারণেই কি আক্রমণ করা হয়নি?
ঐতিহ্যীকরণের জন্য আমাদের দেশের প্রচেষ্টার কারণেই কি গত পাঁচ বছরে তুরস্কে সব হামলার পেছনে একমাত্র কারণ নয়? ভেনিজুয়েলায় যা ঘটছে তা অনুরূপ। কেউই আমেরিকার গোপন সমর্থক বা অভিনব শব্দের পেছনে লুকিয়ে থাকতে পারবে না।
এটা পরিষ্কার যে, ভেনিজুয়েলার ভাগ্যকে লুণ্ঠনের একটি প্রচেষ্টা চলছে। সেখানে একজন নেতা, একটি দেশ, একটি জনগোষ্ঠী রয়েছে- যাদের নিজদের স্বর্ণ ও তেল সমর্পণ না করার জন্য শাস্তি দেয়া হচ্ছে।
এর বাইরে বাকি সব কথা বাকোয়াজ।
সূত্র : তুর্কি দৈনিক ইনি শাফাক


আরো সংবাদ



premium cement
চন্দনাইশ, বাঁশখালী ও বোয়ালখালীতে ৩ জনের মৃত্যু গাজায় ইসরাইলি হামলায় নিহতের সংখ্যা ৩৪ হাজার ছাড়াল শ্যালকের অপকর্মে দুঃখ প্রকাশ করলেন প্রতিমন্ত্রী পলক রাজশাহীতে ট্রাকচাপায় ৩ মোটরসাইকেল আরোহী নিহত পাবনায় দুই গ্রুপের সংঘর্ষে হতাহত ২২ বিল দখলের চেষ্টা, জেলা ছাত্রলীগ নেতাকে গণপিটুনি ‘শাহাদাতের তামান্নায় উজ্জীবিত হয়ে কাজ করলে বিজয় অনিবার্য’ কারাগারে নারী হাজতিকে হাত-পা বেঁধে নির্যাতন, প্রধান কারারক্ষীসহ ৩ জনের বদলি প্যারিসে ইরানি কনস্যুলেটে ঢুকে আত্মঘাতী হামলার হুমকিদাতা গ্রেফতার প্রেম যমুনার ঘাটে বেড়াতে যেয়ে গণধর্ষণের শিকার, গ্রেফতার ৫ ‘ব্যাংকিং খাতের লুটপাটের সাথে সরকারের এমপি-মন্ত্রী-সুবিধাবাদী আমলারা জড়িত’

সকল