২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০, ১৭ রমজান ১৪৪৫
`

মানবাধিকার প্রতিষ্ঠার বিকল্প নেই

১০ ডিসেম্বর আন্তর্জাতিক মানবাধিকার দিবস -

‘মানবাধিকার’ প্রতিটি মানুষের জন্মগত ও অবিচ্ছেদ্য। মানুষ এ অধিকার ভোগ করবে এবং চর্চা করবে- এটাই সঙ্গত। মানবাধিকার পৃথিবীর সব জায়গায় এবং সবার জন্য সমানভাবে প্রযোজ্য। এ অধিকার একই সাথে সহজাত ও আইনগত। স্থানীয়, জাতীয়, আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক আইনের আওতায় একটি বড় দায়িত্ব হলো, এসব অধিকার নিশ্চিত করা।

১৯৪৮ সালের ১০ ডিসেম্বর প্যারিসে অনুষ্ঠিত জাতিসঙ্ঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে প্রত্যেক মানুষের মানবাধিকার নিশ্চিত করার লক্ষ্যে ‘মানবাধিকারের সর্বজনীন ঘোষণাপত্র’ অনুমোদন করা হয়েছিল। সেখানে মানুষের মানবাধিকারের বিভিন্ন দিক এবং তার সুরক্ষার কথা বলা হয়েছে।

অথচ দেশে কিংবা বিদেশে- বিশ্বের সর্বত্র মানবাধিকারের চরম লঙ্ঘন ঘটছে প্রতিনিয়ত। মানুষকে তার মানবাধিকার আদায় করতে গিয়ে বিষম বেগ পেতে হচ্ছে। এর কারণ নানা ধরনের চাপ ও প্রভাবের কাছে নতিস্বীকার। কিন্তু সহজে এবং স্বাভাবিকভাবেই মানুষের এ অধিকার পাওয়ার কথা। দুর্বল ও অসহায় মানুষ প্রভাবশালীদের কাছে সর্বদা পরাস্ত। নিজেদের সম্মান কিংবা বেঁচে থাকার তাগিদে অন্যায়কে মুখবুজে সহ্য করা ছাড়া কোনো উপায় থাকে না। নানা নির্যাতন, আতঙ্ক আর অন্যায়ের কাছে হার মানতে বাধ্য হতে হয়। অথচ সমতা ও বৈষম্যহীনতার ভিত্তিতে প্রত্যেক নাগরিকের অধিকারগুলোকে শ্রদ্ধা করা, রক্ষা করা এবং পরিপূর্ণ করার বাধ্যবাধকতা রয়েছে প্রত্যেকটি রাষ্ট্রের। আমাদের দেশের সংবিধানেও নাগরিকদের মৌলিক মানবাধিকারগুলোর গ্যারান্টি দেয়া হয়েছে, যার কোনো একটি লঙ্ঘিত হলে সংক্ষুব্ধ ব্যক্তি আদালতে রিট করার মাধ্যমে তার অধিকার নিশ্চিত করতে পারবেন। এরপরও মানবাধিকার পরিপূর্ণভাবে সুনিশ্চিত হয়নি আজো।

রাষ্ট্রকে জনগণের মানবাধিকার পেতে অবশ্যই অগ্রণী ভূমিকা পালন করতে হবে। এ ক্ষেত্রে রাষ্ট্রের দায়িত্ব সব থেকে বেশি। অনিয়ম, সন্ত্রাস, দুর্নীতি, বঞ্চনা ও স্বজনপ্রীতিসহ সব ধরনের অনৈতিক পন্থা থেকে সংশ্লিষ্ট সব ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে সরে আসতে হবে। মানবাধিকারের পরিপন্থী সব ধরনের কর্মকাণ্ড পরিহার করতে হবে সর্বতোভাবে। পাশাপাশি মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিরুদ্ধে জনমত গড়ে তুলতে হবে। মানুষকে মৌলিক মানবাধিকার আদায়ে সোচ্চার ও তৎপর হতে হবে। সবাইকে মানবাধিকারের বিষয়গুলো সম্পর্কে সচেতন করে তুলতে হবে।

বিশ্বব্যাপী মানবাধিকারের চরম লঙ্ঘন দেখা যাচ্ছে প্রতিনিয়ত। সিরিয়া, ইয়েমেন, ইরাক, আফগানিস্তান, ফিলিস্তিন, মিয়ানমারসহ অন্য অনেক দেশে মানবাধিকারের তোয়াক্কাই করা হয় না। চলছে যুদ্ধ, গৃহযুদ্ধ দেশে দেশে; যেখানে অকারণে মারা যাচ্ছে অনেক নিরীহ মানুষ। আহত হচ্ছে আরো অনেকে। তাদের মধ্যে নারী ও শিশুর সংখ্যাই বেশি। কিন্তু বিশ্বের কোনো পরাশক্তি এসব দেশে মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিরুদ্ধে কার্যকর কোনো ভূমিকা তো রাখছেই না; বরং পারলে এটাকে উসকে দেয়!

সাম্প্রতিক সময়ে মিয়ানমারে নৃশংস গণহত্যা এবং এ কারণে বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়া নির্যাতিত রোহিঙ্গা মুসলমানদের ব্যাপারে বিশ্বশক্তিগুলোর চরম অবহেলাই পরিলক্ষিত হচ্ছে। তারা কানে তুলছে না বিশ্বের মানবাধিকার সংগঠনগুলোর কড়া ও জোরালো প্রতিবাদও। মিয়ানমারের সরকার ও সংখ্যাগরিষ্ঠ সম্প্রদায় মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিরুদ্ধে কঠোর কোনো ব্যবস্থা নেয়া হয়নি। এই ইস্যুতে এমন কি জাতিসঙ্ঘ কার্যকর কোনো ভূমিকা রাখতে পারছে না। এসব থেকে এটা স্পষ্ট যে, মানবাধিকার পরিস্থিতি কোথায় এসে দাঁড়িয়েছে। মানবাধিকারের সুরক্ষা কেবল কাগজে-কলমেই সীমাবদ্ধ হয়ে গেছে।

যথাযথভাবে মানবাধিকার সুনিশ্চিত হলে সমাজ, রাষ্ট্র তথা বিশ্বে স্থিতিশীল পরিবেশ বিরাজ করবে। স্থানীয়, জাতীয় ও আন্তর্জাতিকভাবে মানবাধিকার রক্ষায় সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে। এ বিষয়ে সচেতন করতে হবে জনগণকে। সর্বক্ষেত্রে সম্পূর্ণরূপে প্রতিষ্ঠিত হোক মানবাধিকার।
লেখক : শিক্ষক


আরো সংবাদ



premium cement
এলডিসি থেকে উত্তরণের পর সর্বোচ্চ সুবিধা পেতে কার্যকর পদক্ষেপ নিন : প্রধানমন্ত্রী নারায়ণগঞ্জ জেলার শ্রেষ্ঠ ওসি আহসান উল্লাহ ‘ট্রি অব পিস’ পুরস্কার বিষয়ে ইউনূস সেন্টারের বিবৃতি আনোয়ারায় বর্তমান স্বামীর হাতে সাবেক স্বামী খুন, গ্রেফতার ৩ ফতুল্লা প্রেস ক্লাবের ইফতার মাহফিল অনুষ্ঠিত বদরের শিক্ষায় ন্যায়-ইনসাফের সমাজ প্রতিষ্ঠায় ঐক্যবদ্ধ হতে হবে : সেলিম উদ্দিন ইসলামের বিজয়ই বদরের মূল চেতনা : ছাত্রশিবির পরিবেশ দূষণে বাংলাদেশে বছরে ২ লাখ ৭২ হাজার মানুষের মৃত্যু : বিশ্বব্যাংক নোয়াখালীতে ল’ইয়ার্স কাউন্সিলের ইফতার মাহফিল অনুষ্ঠিত ‘আইনের শাসন ও মানবাধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য ল’ ইয়ার্স কাউন্সিল কাজ করে যাচ্ছে’ পুকুরে পাওয়া গেল ১০০ ইলিশ

সকল