২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০, ১৭ রমজান ১৪৪৫
`

বিন সালমানের ভাগ্য বিপর্যয়ে নতুন সম্ভাবনা!

বিন সালমানের ভাগ্য বিপর্যয়ে নতুন সম্ভাবনা! - ছবি : এএফপি

আমেরিকান গুপ্তচর সংস্থা সিআইএ খাশোগির লোমহর্ষক হত্যাকাণ্ডের নির্দেশদাতা হিসেবে সৌদি প্রিন্স মোহাম্মদ বিন সালমানকে (এমবিএস) চিহ্নিত করার পর তার ভাগ্য বিপর্যয় অনিবার্য হয়ে উঠছে বলে মনে হচ্ছে। ওয়াশিংটন পোস্টে খাশোগি হত্যার ব্যাপারে সিআইএ’র এ অনুসিদ্ধান্ত নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশ হওয়ার পর এ নিয়ে তোলপাড় শুরু হয়। বিদেশ সফররত আমেরিকান ভাইস প্রেসিডেন্ট মাইক পেন্সকে এ বিষয়ে মন্তব্য করতে বলা হলে ক্লাসিফাইড কোনো বিষয়ে কথা বলতে তিনি অস্বীকৃতি জানান। তবে তিনি এও বলেন যে, যুক্তরাষ্ট্র এ বিষয়ে অনুসন্ধানের সর্বশেষ পর্যায় পর্যন্ত পৌঁছাবে।

এর একদিন পরই হোয়াইট হাউজের মুখপাত্র একটি তাৎপর্যপূর্ণ মন্তব্য করেছেন। তিনি সিআইএ’র অনুসিদ্ধান্তের বিষয়টি এড়িয়ে গিয়ে মন্তব্য করেছেন, যুক্তরাষ্ট্র সরকার এ বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্তে উপনীত হওয়ার বিষয়টি সঠিক নয়। এর সাথে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের মন্তব্য যোগ করা হলে অনুমান করা যাবে এমবিএস নামের লৌহ যুবক ক্রাউন প্রিন্সের ভাগ্যে কী ঘটতে যাচ্ছে। ট্রাম্প বলেছেন, মঙ্গলবার (বাংলাদেশ সময় বুধবার) আমেরিকান সরকার খাশোগি হত্যাকাণ্ডের বিষয়ে তার চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত জানাবে। তিনি এর মধ্যে সিআইএ প্রধান ও পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সাথে বিষয়টি নিয়ে কথা বলেছেন বলেও উল্লেখ করেন।

কয়েক দিন আগে সৌদি রাজকীয় একটি সূত্র এমবিএস’র ক্ষমতার উত্তরাধিকার বহাল থাকার ব্যাপারে আস্থা ব্যক্ত করে বলেছিলেন, আমেরিকানরা তাদের কিছু সুবিধা প্রাপ্তির জন্য দরকষাকষির সুবিধার্থে তুরস্কের সাথে যোগসূত্র রেখে খাশোগির বিষয়টিকে জটিল করে এ পর্যায়ে নিয়ে এসেছে। শিগগিরই এর সমাধান হয়ে যাবে। বাদশাহ সালমান তিন দশকের কিছু বেশি বয়সী ক্রাউন প্রিন্স পুত্রকে নিয়ে অতিসম্প্রতি বিভিন্ন অনুষ্ঠানে যোগদান করেন। সূত্রটি এটাকে এমবিএস-এর টিকে যাওয়ার সঙ্কেত বলে উল্লেখ করে।

কিন্তু এরপর দিন কয়েক যেতে না যেতেই সিআইএ’র অনুসিদ্ধান্তে মোহাম্মদ বিন সালমান এ নির্মম হত্যাযজ্ঞের নির্দেশদাতা হিসেবে উল্লেখ করার পর সব হিসাব পাল্টে গেছে। এমনকি সিআইএ’র বক্তব্যে বাদশাহ সালমানের কনিষ্ঠ পুত্র ও যুক্তরাষ্ট্রে নিযুক্ত সৌদি রাষ্ট্রদূত প্রিন্স খালেদ বিন সালমানকেও যুক্ত করে বলা হয়েছে, এ ক্ষমতাধর ব্যক্তি টেলিফোনে খাশোগিকে ইস্তাম্বুলের সৌদি কনসুলেটে তার দলিল সংগ্রহের জন্য যেতে পরামর্শ দেন। অভিযোগটির সত্যতা যথারীতি প্রিন্স খালেদ অস্বীকার করেছেন। কিন্তু এ বিষয়ে তিনি নিজ সম্পৃক্ততার বিষয়ে ভীত বলে খাশোগির নিখোঁজ হওয়ার ঘটনার দুই দিনের মাথায় যে যুক্তরাষ্ট্র ছেড়ে সৌদি আরব গেছেন সেখান থেকে আর ওয়াশিংটন ফিরে যাননি।

সৃষ্ট পরিস্থিতিতে এক জিনিস স্পষ্ট : খাশোগি হত্যাকাণ্ডের রহস্য এর মধ্যে উদঘাটিত হয়ে গেছে। সেখানে কী ঘটেছিল তা উদঘাটনের ব্যাপারে তুরস্কের দৃঢ় অঙ্গীকার এবং প্রমাণ সংগ্রহের দক্ষতা এই অর্জনে সহায়ক হয়েছে বলে মনে হয়। তুর্কি কর্তৃপক্ষ দেশটির মিত্র ও বন্ধুদেশগুলোর সাথে এর প্রমাণাদি শেয়ার করার মাধ্যমে সৌদি প্রসিকিউটরকে হত্যাকাণ্ডের কথা স্বীকার করে এক বিবৃতি দেয়ার জন্য বাধ্য করেন। তুরস্ক এ ঘটনার একটি আন্তর্জাতিক তদন্তের জন্যও আহ্বান জানায়। এখন জামাল খাসোগির হত্যাকাণ্ড একটি ‘অপরাধ ও বড় ভুল’ যথেষ্ট ছিল বলে স্বীকার করাটা রিয়াদের জন্য যথেষ্ট মনে করা হচ্ছে না। ঘটনাগুলোর সৌদি ভাষ্য অনুসারে সব কিছুই উদঘাটিত হয়েছে কেবল মূল বিষয় ছাড়া। এর মধ্যে তিনটি বড় প্রশ্ন উত্তরহীন থেকে গেছে। এই তিন প্রশ্ন হলো- খাশোগির লাশ কোথায়? তাদের স্থানীয় সহযোগী কে বা কারা ছিলেন? কে এই হত্যাকাণ্ডের আদেশ দিলেন?

শেষ প্রশ্নটিকে বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ মনে করা হচ্ছে। আর সেটিই সিআইএ’র বক্তব্যের প্রধান ফোকাস ছিল। এ বিষয়টি কেউ বিশ্বাস করবে না যে, এত বড় একটি হত্যাকাণ্ডের আদেশ সৌদি গোয়েন্দা উপপ্রধানের কাছ থেকে এসেছে। আর এর উপরের কেউ এই চেইনের সাথে জড়িত নেই। এটা মনে করাও অযৌক্তিক হবে যে, গোয়েন্দা কর্মকর্তাদের একটি দল রাজনৈতিক কর্তৃপক্ষের কোনো সমর্থন ছাড়াই এ হাই-প্রফাইল ‘অভিযান’ পরিচালনা করতে পারেন। প্রকৃতপক্ষে সন্দেহের অবকাশ নেই যে, রাজনৈতিক নেতৃত্বই সৌদি আরব থেকে খাসোগিকে দূরে সরিয়ে দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। সাংবাদিক খাশোগি হত্যার মধ্যে রাজনৈতিক নেতৃত্বের সংশ্লিষ্টতা সৌদি প্রশাসন অস্বীকার করলেও এই প্রশ্নের কোনো জবাব নেই যে, কেন ঘাতক টিমের মধ্যে একজন ময়নাতদন্ত বিশেষজ্ঞকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছিল। এতে মনে হয় যে, সৌদি গোয়েন্দাদেরকে খাশোগিকে ‘মৃত বা জীবিত’ ফিরিয়ে আনতে নির্দেশ দেয়া হয়েছিল।

আরেকটি প্রশ্ন হলো, জামাল খাসোগির হত্যাকারীরা বিচারের মুখোমুখি হবে কোথায়! এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক এবং আইনি বিষয়। এই হত্যাকাণ্ডের ব্যাপারে আন্তর্জাতিক তদন্ত চায় আঙ্কারা। জাতিসঙ্ঘ অপরাধীদের শাস্তি দিতে পারবে না। জাতিসঙ্ঘের তদন্তকারীরা সাধারণভাবে জাতিসঙ্ঘ নিরাপত্তা পরিষদের সাথে তাদের তথ্য ভাগ করে নেবে। একই সাথে, তুরস্ক এই দাবিও করছে যে, ১৫ সৌদি গোয়েন্দা কর্মী যারা হত্যাকাণ্ডের জন্য ইস্তাম্বুল এসেছিলেন তারা তুর্কি আইনের অধীনে তাদের অপরাধের জন্য দায়ী থাকবেন। তুরস্কের এই দাবি ভিয়েনা কনভেনশনের ওপর ভিত্তি করে করা। একটি নির্দিষ্ট দেশে সংঘটিত অপরাধগুলো সেই দেশের আদালতের এখতিয়ারের মধ্যে পড়ে। তুর্কিরা তার এই সার্বভৌম অধিকারের ভিত্তিতে অভিযুক্ত ব্যক্তিদের প্রত্যর্পণ করার অনুরোধ করেছে রিয়াদের কাছে।

রিয়াদ কঠোরভাবে এ ঘটনার আন্তর্জাতিক তদন্ত প্রত্যাখ্যান করেছে এবং সন্দেহভাজনদের তুরস্ককে হস্তান্তর করতেও অস্বীকার করছে। এর পরিবর্তে, সৌদিরা তুর্কি কর্তৃপক্ষের সাথে হত্যার বিষয়ে তদন্তে একটি সহযোগিতা চুক্তি স্বাক্ষর করার প্রস্তাব দিয়েছে। এই মামলায় সৌদি আরবের নাগরিকদের বিচারের মুখোমুখি হওয়ার জন্য অন্য দেশে হস্তান্তর করবে এমন আশা করা যাবে না। সৌদি আরব রোম সংবিধিতে স্বাক্ষর করেনি। দেশটি আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত (আইসিসি) এর বিচার বিভাগকে স্বীকৃতি দেয় না। এরপরও সৌদি আরবের গভীর উদ্বেগ হলো জামাল খাশোগিকে হত্যা করার আদেশটি ঠিক কে দিয়েছে এবং কী কারণে তারা তুরস্কে অভিযুক্ত খুনিদের পাঠাবে না, সেই কারণ জানতে চাইতে পারে তুর্কি কর্তৃপক্ষ।

সিআইএর খাসোগি হত্যাকাণ্ডের সাথে মোহাম্মদ বিন সালমান জড়িত মর্মে অনুসিদ্ধান্তে আসার সাথে এই বিষয়গুলো বিশেষভাবে যুক্ত। ঘটনার তদন্তের বিষয়গুলো এই পর্যায়ে আসা থেকে বোঝা যায় যে, এ ঘটনাক্রম থেকে মুক্ত হয়ে খাশোগি ইস্যুতে একটি সিদ্ধান্তে আসা আমেরিকান প্রশাসনের পক্ষে কঠিন। তারা এই বিষয়টিকে কতটা আসলেই আড়াল করতে চায় সেটিও গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন। সিআইএ’র অনুসিদ্ধান্তের খবর প্রকাশের আগেই বাদশাহ সালমানের একই মায়ের ভাই আহমদ বিন আবদুল আজিজ ব্রিটেন থেকে সৌদি আরব ফিরে গেছেন। সেখানে সৌদি রাজ পরিবারের প্রভাবশালী সদস্যরা তাকে স্বাগত জানিয়েছেন। তিনি এক বছরের জন্য সৌদি বাদশাহ হতে পারেন এবং সৌদি নীতিকে বিপথগামী ধারা থেকে ফিরিয়ে আনার জন্য এ সময় কাজ করবেন মর্মে একটি খবরও প্রকাশিত হয়েছে। তিনি ইয়েমেনের যুদ্ধের অবসান এবং উপসাগরীয় দেশগুলোর সাথে সৌদি আরবের যে দূরত্ব সৃষ্টি হয়েছে তা দূর করা এবং ইসলামিস্টদের সাথে আগের মতো সুসম্পর্ক সৃষ্টি করে অভ্যন্তরীণ অসন্তোষের ব্যাপারে ইতিবাচক সিদ্ধান্ত নিতে পারেন বলে মনে করা হচ্ছে।

এসব ঘটনা থেকে ইঙ্গিত মিলে যে, সৌদি আরবের ক্ষমতার উত্তরাধিকার বাদশাহ সালমানের পুত্রদের কাছ থেকে হাতছাড়া হয়ে যাচ্ছে। ক্রাউন প্রিন্সের পদ থেকে মোহাম্মদ বিন সালমানের বিদায়ের বিষয়টি নিছক একজন ব্যক্তির উত্তরাধিকার পরিবর্তনের বিষয় নয়। বিন সালমান সৌদি আরব ও মধ্যপ্রাচ্যে একটি মৌলিক পরিবর্তনের এজেন্ডা বাস্তবায়ন নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছিলেন। তিনি চাচ্ছিলেন মুসলিম ব্রাদারহুডকে মধ্যপ্রাচ্যের রাজনীতি থেকে বিদায় করতে। সেটি সম্ভবত আর বাস্তবায়ন হবে না।

বিশ্বব্যবস্থার পশ্চিমা নিয়ন্ত্রকরা এখন সম্ভবত উপলব্ধি করতে পারছেন যে বিন সালমানের সেই এজেন্ডা মধ্যপ্রাচ্যের বাস্তবতার বাস্তবায়নযোগ্য নয়। বিন সালমান এসব এজেন্ডা বাস্তবায়নের ব্যাপারে নিজ দেশ ও অঞ্চলে এর মধ্যে বেশ কোণঠাসা হয়ে পড়েছেন। যেসব সেকুলার উপদেষ্টারা বিন সালমানকে দেশটিকে তথাকথিত আধুনিক সৌদি আরব বানানোর জন্য পরামর্শ দিচ্ছিলেন তাদের বড় অংশটি খাশোগি হত্যাকাণ্ডের সাথে সম্পৃক্ত হয়ে বিচারের মুখে পড়েছেন। সালাফি-ব্রাদারহুড নির্বিশেষে সৌদি আলেম-ওলামাদের সমর্থন চূড়ান্তভাবে হারিয়েছেন তিনি। পবিত্র কাবা শরিফের ইমামকে গৃহবন্দী করার পর অবস্থার আরো অবনতি ঘটেছে।

দুর্নীতিবিরোধী অভিযানের নামে সৌদি রাজ পরিবারের প্রভাবশালীদের বিরুদ্ধে রাজ-ক্ষমতার স্বল্প বয়সী নিয়ন্ত্রকদের সাথে নিয়ে যে গ্রেফতার ও অর্থসম্পদ কেড়ে নেয়ার কাজ এমবিএস করেছেন সেটি রাজপরিবারে তার ক্ষমতার অনেক শেকড় কেটে দিয়েছে। আঞ্চলিক ক্ষেত্রে ইয়েমেনে নিষ্ফল যুদ্ধ চালিয়ে শেষ পর্যন্ত মধ্যপ্রাচ্যের এই জনবহুল দেশটিকে গৃহযুদ্ধে ঠেলে দেয়া হয়েছে। এ ছাড়া লেবাননের প্রধানমন্ত্রী সাদ হারিরিকে ডেকে নিয়ে পদত্যাগে বাধ্য করা, কাতারের ওপর সর্বব্যাপী অবরোধ আরোপ এবং সর্বশেষ কুয়েত-ওমানের সাথে বিরোধে জড়িয়ে পড়ার মধ্য দিয়ে বিন সালমানের কট্টর নীতি ব্যর্থতায় পর্যবসিত হয়েছে।

এর বাইরে আমেরিকা এবং ইসরাইল তাদের অর্থনৈতিক ও কৌশলগত এজেন্ডা পূরণের যে প্রতিশ্রুতি এমবিএস-এর কাছ থেকে পেয়েছিল তাও বাস্তবতার মুখ দেখছে না। তাদের কাছে দেয়া গোপন প্রতিশ্রুতি অনুসারে আরামকোর ৫০ শতাংশ শেয়ার পশ্চিমা কোম্পানিগুলোর জন্য উন্মুক্ত করার কথা। এখন পর্যন্ত শেয়ার ছাড়া হয়েছে ৫ শতাংশের মতো। সৌদি আরব, মিসর ও জর্দান- এই তিন দেশজুড়ে বিপুল বিনিয়োগে যে পর্যটন নগরী তৈরির ঘোষণা এমবিএস দিয়েছিলেন, তা বাস্তবায়নের ইচ্ছা বা সক্ষমতা তার আদৌ রয়েছে কি না সেই সন্দেহ সৃষ্টি হয়েছে। এমবিএস’র মাধ্যমে যে সামরিক জোট গঠন করার কার্যক্রম চলছিল তাও অনেকখানি ব্যর্থ হতে চলেছে। সৌদি আরবের একান্ত মিত্র দেশগুলোও এই জোটের ব্যাপারে আগ্রহ হারাচ্ছে। ইসলামি দেশগুলো নিয়ে যে নিরাপত্তা জোট গঠন করা হয় সেখান থেকে মালয়েশিয়া নিজেকে প্রত্যাহার করে নিয়েছে। ‘আরব ন্যাটো’ নামে আরেকটি জোট করতে চেয়েছিল উপসাগরীয় দেশগুলোর সাথে মিসর ও জর্দানকে যুক্ত করে। সেই উদ্যোগও এখন অনেকটা স্থবির হয়ে আছে।

সৌদি রাজতন্ত্র প্রতিষ্ঠা হওয়ার পর থেকে বর্তমান প্রশাসনের মতো এত অজনপ্রিয় ও নিষ্পেষণবাদী প্রশাসন আর আসেনি বলে ধারণা পুরো অঞ্চলজুড়ে। এ ধরনের একটি নেতৃত্ব বহাল থাকা অবস্থায় সে দেশকে আঞ্চলিক নেতা বানিয়ে বৈশ্বিক স্বার্থ কতটা পূরণ করা যাবে তা নিয়ে পাশ্চাত্যের নীতি প্রণেতারা সন্দেহের মধ্যে পড়ে গেছেন। এ কারণে বিন সালমানের নেতৃত্বে রিয়াদের প্রশাসন পাশ্চাত্যের জন্য কতটা সম্পদ আর কতটা দায়- তা নিয়ে নতুন হিসাব চলছিল বেশ কিছুদিন ধরে। এখন সেই হিসাব সম্ভবত একটি সমাপ্তি পর্যায়ে চলে এসেছে।

আর এতে বিন সালমান যুগের অবসান আসন্ন বলে মনে হচ্ছে। সেটি যদি বোঝাপড়ার মাধ্যমে বর্তমান বাদশাহর উত্তরাধিকার পরিবর্তনের মাধ্যমে হয়, তাহলে স্থিতি রক্ষিত হতে পারে। আর সেটি যদি কর্তৃত্বের দ্বন্দ্ব-সঙ্ঘাতের মধ্য দিয়ে হয়, তাহলে দেশটি অস্থির ও খণ্ড-বিখণ্ড হয়ে পুরো অঞ্চলের জন্য নিরাপত্তা ঝুঁকি তৈরি করতে পারে। যেমনটা সাদ্দাম উত্তর ইরাক, গাদ্দাফি উত্তর লিবিয়া অথবা আলি সালেহ উত্তর ইয়েমেনে ঘটেছে। আর এটি ঘটলে তা আশপাশের কোনো দেশের জন্য কল্যাণ বয়ে আনবে না। সম্ভবত এ কারণে মধ্যপ্রাচ্যের ইরান ছাড়া কেউই এ মুহূর্তে সৌদি রাজতন্ত্রের অবসান চাইছে না। তারা চাচ্ছে- সৌদি শাসন ও নীতি পদক্ষেপের সংস্কার। যে নীতি ফিলিস্তিনসহ গোটা মধ্যপ্রাচ্যের স্বার্থের জন্য চূড়ান্ত বিচারে অনুকূল হবে। একই সাথে তা বিশ্বশান্তি ও স্বার্থের জন্যও হবে অনুকূল।

মধ্যপ্রাচ্যের পরিস্থিতিতে অদূর ভবিষ্যতে গুণগত পরিবর্তন আসতে পারে। বিন সালমানের বিদায়ে এ বিষয়টি প্রতিষ্ঠিত হবে যে, ইসলামিস্টদের বাদ দিয়ে মধ্যপ্রাচ্যের নতুন কোনো অবয়ব দেয়া সম্ভব হবে না। আর মধ্যপ্রাচ্যে কোনো একক আঞ্চলিক শক্তির কর্তৃত্ব থাকবে না। তুরস্ক নতুন আঞ্চলিক শক্তি হিসেবে আবির্ভূত হতে পারে গোটা অঞ্চলে।


আরো সংবাদ



premium cement
এলডিসি থেকে উত্তরণের পর সর্বোচ্চ সুবিধা পেতে কার্যকর পদক্ষেপ নিন : প্রধানমন্ত্রী নারায়ণগঞ্জ জেলার শ্রেষ্ঠ ওসি আহসান উল্লাহ ‘ট্রি অব পিস’ পুরস্কার বিষয়ে ইউনূস সেন্টারের বিবৃতি আনোয়ারায় বর্তমান স্বামীর হাতে সাবেক স্বামী খুন, গ্রেফতার ৩ ফতুল্লা প্রেস ক্লাবের ইফতার মাহফিল অনুষ্ঠিত বদরের শিক্ষায় ন্যায়-ইনসাফের সমাজ প্রতিষ্ঠায় ঐক্যবদ্ধ হতে হবে : সেলিম উদ্দিন ইসলামের বিজয়ই বদরের মূল চেতনা : ছাত্রশিবির পরিবেশ দূষণে বাংলাদেশে বছরে ২ লাখ ৭২ হাজার মানুষের মৃত্যু : বিশ্বব্যাংক নোয়াখালীতে ল’ইয়ার্স কাউন্সিলের ইফতার মাহফিল অনুষ্ঠিত ‘আইনের শাসন ও মানবাধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য ল’ ইয়ার্স কাউন্সিল কাজ করে যাচ্ছে’ পুকুরে পাওয়া গেল ১০০ ইলিশ

সকল