২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০, ১৭ রমজান ১৪৪৫
`

বড় চাকরি ঘুষের বড় সুযোগ নয়

-

শিগগিরই আপনি সরকারি বড় চাকরিতে যোগদান করতে যাচ্ছেন। কেউ প্রশাসন, কেউ পুলিশ, কেউ পররাষ্ট্র ইত্যাদি ক্যাডারে। যোগদান করার পরপরই নানামুখী চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হবেন। এটা অবশ্য সৎভাবে চলতে গেলে। আপনি যদি সততা ও জবাবদিহিতার তোয়াক্কা না করেন, তাহলে চাকরি করতে আপনার খুব একটা অসুবিধা হবে না।

আর যদি সততা রক্ষা করে দেশ ও জাতির জন্য কাজ করতে চান, তাহলে অবশ্য ঘরে-বাইরে তীব্র চ্যালেঞ্জ অপেক্ষা করছে আপনার জন্য। এ কথা আগেই জেনে রাখুন। যেসব কারণে ইচ্ছা না থাকা সত্তে¡ও নবীন চাকরিজীবী কর্মস্থলে দুর্নীতি করে সেগুলো হচ্ছে-
পরিবার তথা মা-বাবা, ভাইবোন ও স্ত্রীর পক্ষ থেকে অধিক টাকা উপার্জন করার জন্য মাত্রাতিরিক্ত চাপ। মানুষকে দেখানোর জন্য বড় অনুষ্ঠান করে বিয়ে করার জন্য ২০-৩০ লাখ টাকা জোগাড় করার চাপ। কর্মস্থলে আগে থেকে চলমান দুর্নীতির ধারা। নিজের মনে আগে থেকে লালিত পার্থিব লোভ-লালসা।

কর্মস্থলে সৎভাবে চলতে গেলে প্রথমেই বাধা আসবে পরিবার তথা বাবা-মা, ভাই-বোনের পক্ষ থেকে। ব্যতিক্রম কখনোই উদাহরণ নয়। অনেক বাবা-মা আগে থেকেই মুখিয়ে থাকেন, তার সন্তান বিসিএস প্রথম শ্রেণীর সরকারি চাকরিতে যোগদান করে প্রথম ছয় মাসের মধ্যেই একটি দশতলা দালান বানাবে। তার বাকি তিন ভাইয়ের প্রত্যেককে কয়েক লাখ টাকা ব্যয় করে বিদেশে পাঠাবে। তিন বোনকে লাখ লাখ টাকা যৌতুক দিয়ে বড়লোকের কাছে বিয়ে দেবে।

কিন্তু ছয় মাসে কিভাবে এত কিছু করা সম্ভব, তা তারা কখনোই জনসম্মুখে উচ্চারণ করেন না। তারা এটা ভালো করেই জানেন, তারা চাচ্ছেন তাদের সন্তান সেবাপ্রার্থীদের এবং রাষ্ট্রের টাকা লুট করেই এমনটি করবে। হায়, কী জঘন্য চিন্তা! বাবা-মায়ের উচিত স্রষ্টাকে যথাযথ ভয় করা। আল্লাহ বলেন, ‘তোমরা অন্যায়ভাবে একে অপরের সম্পদ ভোগ করো না এবং জনগণের সম্পদের কিয়দংশ জেনেশুনে পাপ পন্থায় আত্মসাৎ করার উদ্দেশ্যে শাসন কর্তৃপক্ষের হাতেও তুলে দিও না।’ (সূরা বাকারা-১৮৮)। এ ধরনের মা-বাবার কি মৃত্যু হবে না? সন্তানকে অন্যায়ের পথে ঠেলে দেয়ার জন্য তাদের কি আল্লাহর দরবারে জবাবদিহি করতে হবে না?


মনে রাখবেন, আল্লাহ পবিত্র কুরআনে বাবা-মায়ের সাথে ভালো ব্যবহার করার নির্দেশ দিয়েছেন। তাদের যেকোনো আদেশ বা যেকোনো প্রত্যাশা অন্ধভাবে পূরণ করার আদেশ আল্লাহ আপনাকে দেননি। তাই তারা চাইলেই আপনি তাদেরকে খুশি করার জন্য ঘুষ নেবেন, এমনটি কখনোই করতে যাবেন না। কেননা, শেষ বিচারের দিনে আপনার কর্মের জবাবদিহিতা আপনাকেই করতে হবে। আপনার ঘুষের জন্য আপনার বাবা-মা জবাবদিহি করবেন না। আল্লাহ বলেন, ‘কেউ অন্যের বোঝা বহন করবে না।’ (সূরা বনি ইসরাইল-১৫)।

‘আল্লাহ কাউকে তার সাধ্যের অতিরিক্ত বোঝা চাপিয়ে দেন না। সে তাই পায়, যা সে উপার্জন করে। তার ওপর তাই বর্তায়, যা সে করে।’ (সূরা বাকারা-২৮৬)। ‘প্রত্যেক ব্যক্তি তার কৃতকর্মের জন্য দায়ী।’ (সূরা মুদ্দাসসির-৩৮)। ফুটবলে বিশ্বকাপ জিততে হলে ১১ জন খেলোয়াড়ের ১১ জনকেই নিজ নিজ অবস্থানে ভালো খেলতে হয়। একজন ভালো খেললে আর বাকি ১০ জন নিজ নিজ অবস্থানে পুতুলের মতো দাঁড়িয়ে থাকলে, সেই দল প্রথম পর্ব থেকেই ছিটকে পড়ে। একটি পরিবারে একাধিক ভাই-বোনের ব্যাপারও একই রকম। সেখানেও প্রত্যেক ভাই-বোনকে নিজ নিজ চেষ্টা-পরিশ্রমের মাধ্যমে নিজ কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করতে হবে। আত্মীয়স্বজন তাকে শুধু পথ দেখিয়ে দিতে পারে বা কৌশল শিখিয়ে দিতে পারে বা সামর্থ্য অনুযায়ী তার যোগ্যতা বিকাশের জন্য স্বল্প সহযোগিতা করতে পারে।

কোনো পরিবারে বাবার মৃত্যুর পর ছোট ভাইয়েরা যখন বালেগ হয়, তখন তাদের উচিত কোনো অসাধু লোকের প্ররোচনায় বড় ভাইয়ের দিকে তাকিয়ে না থেকে, বরং নিজেদের যোগ্যতা ও পরিশ্রমের মাধ্যমে নিজেরা স্বাবলম্বী হতে চেষ্টা করা। কারণ, প্রত্যেকেরই একটি নিজস্ব শারীরিক ও মানসিক যোগ্যতা আছে। কিন্তু কুসংস্কারবশত বড় ভাইয়ের দিকে তাকিয়ে থাকলে এ ক্ষেত্রে বরং নিজের যোগ্যতা ও সময়ের অপচয় হয় মাত্র। বড় ভাইয়ের আশায় অলস হয়ে বসে না থেকে ছোট ভাইয়েরা যদি চেষ্টা-পরিশ্রম করত, তাহলে তারা সবাই এত দিনে বড় ভাইয়ের চেয়েও ভালো চাকরি পেত বা স্বাবলম্বী থাকত। সবাই পরিবারের বড় সন্তান নন, কিন্তু এক সময় তার বড় সন্তান থাকতে পারে। তখন তিনি যেন অন্যায়ভাবে বড় সন্তানের ওপর বা কোনো এক সন্তানের ওপর বাকি সন্তানদের রিজিকের দায়িত্ব চাপিয়ে না দেন। কেউ যদি এমন করেন, তাহলে তিনি হাতে ধরেই তার সন্তানদের মাঝে রক্তের সম্পর্ক ক্ষতিগ্রস্ত করার সূচনা করলেন মাত্র। কেননা, অন্ধভাবে এক সন্তানের ওপর বাকি সব সন্তানের রিজিকের দায়িত্ব চাপিয়ে দেয়া বড় ধরনের অন্যায়। এ কারণে পরবর্তী সময়ে ভাইদের মাঝে মুখ দেখাদেখিও বন্ধ হয়ে যায়।

পবিত্র কুরআনে সূরা আল জুমার ১০ নম্বর আয়াতে বলা হয়েছে, ‘নামাজ আদায় শেষে তোমরা জমিনে ছড়িয়ে পড়ো এবং আলøাহর অনুগ্রহ অনুসন্ধান করো।’ এখানে অনুগ্রহ অনুসন্ধান বলতে রিজিক অনুসন্ধান বোঝানো হয়েছে। এখানে তো এমন বলা হয়নি যে, নামাজ আদায় শেষে পরিবারের যেকোনো এক ভাই আল্লাহর অনুগ্রহ অনুসন্ধান করো আর বাকি ভাইবোনেরা হাত-পা গুটিয়ে তার আশায় বসে থাকো। বরং সবাইকেই নিজ নিজ রিজিক অনুসন্ধান করতে বলা হয়েছে। এক ব্যক্তি রাসূল সা:-এর কাছে ভিক্ষা চাইলে রাসূল সা: লোকটির সম্পদ থেকে একটি কুড়াল কিনে দেন এবং তা ব্যবহার করে স্বাবলম্বী হওয়ার পরামর্শ দেন।

সরকারি চাকরিতে যোগদান করে আপনি যে বেতন পাবেন, সেই বেতন দিয়ে তো আপনার সেই কর্মস্থলের শহরে বউ নিয়ে ঠিকমতো অন্ন-বস্ত্র, বাসস্থান আর চিকিৎসার ব্যবস্থা করতে হিমশিম খাবেন। বাবা-মায়ের আকাশচুম্বী প্রত্যাশা পূরণ করবেন কিভাবে? বাবা-মায়ের এ ধরনের অন্যায় প্রত্যাশা বিনয়ের সাথে প্রত্যাখ্যান করুন। বাবা-মায়ের উচিত আল্লাহকে যথাযথ ভয় করা এবং এ ধরনের অন্যায় প্রত্যাশা থেকে বিরত থাকা। অন্যায়প্রবণ বাবা-মায়ের কারণেই আজ মানবসমাজে শান্তি নেই। লোভী মা-বাবাই সন্তানকে কর্মস্থলে দুর্নীতির দিকে ঠেলে দেন। লোভী স্ত্রীই স্বামীকে দুর্নীতির দিকে ঠেলে দেন। ফলে রাষ্ট্রে অরাজকতা নেমে আসে। তা ছাড়া, সৎ থাকতে চাইলে সহকর্মীদের একাংশের পক্ষ থেকেও আপনি চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হবেন। তারা প্রকাশ্যে বা গোপনে আপনার সততার চেষ্টার ব্যাপারে টিটকারি করতে চাইবে। অধস্তন কর্মচারীদের কেউ কেউ বলবে, ‘অমুক স্যার ছোটলোক, বড় মাছ কেনেন না।’

অন্যায়ভাবে অন্যের সম্পদ লুট করতে করতে অনেকে স্রষ্টাকে ভুলে গেছে। তাই অন্যায় থেকে বিরত থাকার জন্য আপনার চেষ্টা তাদের কাছে নিছক হাসিঠাট্টার বিষয়ে পরিণত হয়েছে। তারা সততা রক্ষা করতে ব্যর্থ হয়েছে। তাই চাচ্ছে আপনিও তাদের দলে শামিল হোন। লেজ হারানো খেঁকশিয়ালের কাহিনীর মতো অনেকটা। তাদের টিটকারিকে নয়, বরং আপনি গুরুত্ব দিন আল্লাহর কাছে নিজের জবাবদিহিতাকে। আপনি গুরুত্ব দিন আল্লাহভীতিকে। সততা বজায় রাখতে হলে আপনাকে এসব টিটকারি, অপবাদ ও হাসিঠাট্টা সহ্য করতে হবে। ‘দুর্নীতিকে না বলুন’- এ ধরনের সাক্ষ্য, হাস্যকর যোগান দিয়ে কখনো দুর্নীতি দূর হবে না। একমাত্র আল্লাহভীতিই সমাজ থেকে দুর্নীতি দূর করে সমাজে শান্তি আনতে পারে।

সৎ থাকার কারণে আপনার বাবা-মা যদি আপনার প্রতি অসন্তুষ্ট থাকেন, তাতে আপনার বিচলিত হওয়ার কোনো কারণ নেই। এ জন্য আল্লাহর দরবারে আপনি বরং পুরস্কৃত হবেন। সূরা আন নিসার ১৩৫ নম্বর আয়াতে আল্লাহ বলেন, ‘হে ঈমানদারগণ, তোমরা ন্যায়ের ওপর প্রতিষ্ঠিত থাকো, আল্লাহর ওয়াস্তে ন্যায়সঙ্গত সাক্ষ্যদান করো, তাতে তোমাদের নিজের বা বাবা-মায়ের অথবা নিকটবর্তী আত্মীয়স্বজনের যদি ক্ষতি হয় তবুও।’ আপনার স্বজনরা এবং বন্ধুমহলের অনেকে চাইবে আপনার বিয়েতে ২০ লাখ টাকা খরচ করুন। কেননা আপনি বড় কর্মকর্তা আর বিয়েতে বৈধভাবে অর্জিত ২০ লাখ টাকা খরচ করতে হলে আপনাকে কমপক্ষে ১০ বছরের চাকরির বেতন জমাতে হবে।

তাহলে বিয়ে করার জন্য ১০ বছর দেরি করবেন? অন্যথায় আপনাকে কর্মস্থলে সীমাহীন দুর্নীতি করতে হবে অথবা ব্যাংক থেকে সুদে ১০-২০ লাখ টাকা ঋণ নিয়ে বাকি জীবন দুর্নীতি করে সেটা সুদাসলে পরিশোধ করতে হবে। তাই বন্ধুবান্ধব আর আত্মীয়স্বজন কী বলল সে দিকে না তাকিয়ে আপনি দেখুন আল্লাহ কী বলেছেন। আত্মীয়স্বজন, বন্ধুবান্ধবের এটা বোঝা উচিত, সরকারি চাকরি মানেই লাখ লাখ টাকা নয়, বরং সীমিত বেতনের চাকরি।

আল্লাহ বলেন, ‘বন্ধুরা সে দিন (হাশরের দিন) একে অন্যের শক্র হবে, তবে মুত্তাকিরা ছাড়া।’ (সূরা যুখরুফ-৬৭)। হাশরে দুর্নীতি আর সুদের জন্য আপনি যখন শাস্তির মুখোমুখি হবেন, তখন আপনার সেই বন্ধুদের দোষারোপ করে বলবেন, ‘তোদের কারণে আজ আমার এ অবস্থা!’ তারা বলবে, ‘আমরা তো তোকে শুধু বলেছি বেশি টাকা খরচ করে সবাইকে দেখিয়ে বড় অনুষ্ঠান করে বিয়ে করার জন্য। আমরা তো সুদ-ঘুষ গ্রহণ করতে বলিনি।’ তখন আপনি বলবেন, ‘তোদের পরামর্শে বেশি টাকা খরচ করে বিয়ে করার জন্যই তো সুদ-ঘুষের সাথে নিজেকে জড়াতে বাধ্য হয়েছি।’ তখন আপনার বন্ধুরা আপনার পাপের দায়ভার নিতে অস্বীকার করবে। এভাবেই বন্ধুরা সে দিন একে অন্যের শক্র হবে।

অন্ধভাবে অন্যের কথায় চলতে গিয়ে বা তাদের খুশি করতে গিয়ে নিজেকে অন্যায়ের সাথে জড়িত করা থেকে বিরত থাকুন। রাসূল সা: বলেছেন, ‘ওই বিয়ে উত্তম, যাতে খরচ কম।’ বিয়ে করতে বরের জন্য কালেমা, মোহরানা আর সাক্ষীই যথেষ্ট। পেছনে কে কী বলল, তার তোয়াক্কা করবেন না। আপনি বরং চাকরির বেতনের সাথে তাল মিলিয়ে মোহরানা ধার্য করে সামর্থ্য অনুযায়ী অল্প খরচে বিয়ে করুন। মোহরানা পরিশোধ করুন। আপনি বরং চাকরির প্রথম দু-তিন বছরের বেতন জমিয়ে মোহরানা স্থির করুন এবং বাকি টাকা দিয়ে স্বল্প খরচে ওয়ালিমা করুন। পরিবারের আর্থিক দায়িত্ব পুরুষের ওপর নির্ধারিত। এটা কঠিন দায়িত্ব। এটা থেকে দূরে সরে থাকার কোনো সুযোগ নেই। কম খরচ করে বিয়ে করার সুযোগ আপনার অর্থনৈতিক দায়িত্বকে হালকা করে দিয়েছে। আপনি কেন এটা গ্রহণ করবেন না? বিয়ে করার ক্ষেত্রে বন্ধু বা সহকর্মীকে খুশি করার ধারণা অপ্রাসঙ্গিক ও অবাস্তব। তাদের খুশি করতে গিয়ে নিজের জীবন দুর্বিষহ করে তুলবেন কেন?

কে কী মনে করল সেটাতে ভ্রুক্ষেপ করবেন না। বালেগ হওয়ার পর সন্তানের আর্থিক ব্যাপারে বাবারই যেখানে কোনো দায়িত্ব থাকে না, সেখানে অন্য ভাইদের রিজিক নিশ্চিত করার জন্য সদ্য চাকরিপ্রাপ্ত এক ভাইয়ের ওপর দায়িত্ব আসবে কোথা থেকে?

আপনি বরং চাকরিতে সততা বজায় রেখে, নিজের সামর্থ্যরে ভেতরে থেকে বাকি দু-এক ভাইবোনকে সহযোগিতা করতে চেষ্টা করুন। কেননা, আলøাহ কাউকে তার সাধ্যের অতিরিক্ত বোঝা চাপিয়ে দেন না। (সূরা বাকারা-২৮৬)। তাহলে আপনি নিজে অতিরিক্ত বোঝা গ্রহণ করবেন কেন? কেন নিজেকে অতিরিক্ত কষ্ট দেবেন? সমাজকে সততা উপহার দিতে চাইলে আপনাকে কঠোর হতে হবে। অলস, পাপী আর চাপাবাজদের বুদ্ধিমত্তার সাথে প্রত্যাখ্যান করে চলতে হবে। তবেই লোকেরা তা থেকে শিক্ষা গ্রহণ করবে।

প্রত্যেক ভাইবোনের উচিত, নিজেরা কষ্ট পরিশ্রম করে স্বাবলম্বী হওয়া। তারা অন্য ভাইয়ের দিকে তাকিয়ে থাকবে কেন? তাদের কি মগজ, হাত-পা, চোখ-নাক-কান নেই? তাদের কি আত্মমর্যাদা বোধ নেই? বাংলাদেশে বেশির ভাগ চাকরির বেতন এমন, তা দিয়ে সেই ব্যক্তি নিজেই স্ত্রী-সন্তান নিয়ে ঠিকমতো চলতে পারেন না। আবার আরেকজনকে বিদেশে পাঠানোর টাকা পাবেন কোথা থেকে?

বাবা-মায়ের কখনোই উচিত নয়, এক সন্তানের ওপর অন্য সব সন্তানের দায়ভার চাপিয়ে দেয়া। এটা করার অধিকার তাদের নেই। দায়িত্বহীন ও আবেগি মা-বাবাই শুধু এমনটা করে থাকেন। আত্মীয়স্বজন, বন্ধুবান্ধব বা সহকর্মীদের কখনোই উচিত নয় একজন চাকরিজীবীকে অনেক বড় অনুষ্ঠান করে বিয়ে করার তাগিদ দিয়ে তাকে সুদ-ঘুষের পথে ঠেলে দেয়াসহ তার জীবন দুর্বিষহ করে তোলা।
একজন সৎ পুলিশ অফিসার, একজন সৎ প্রশাসনিক অফিসার, একজন সৎ ট্যাক্স অফিসার, একজন সৎ ব্যাংক অফিসার, একজন সৎ ডাক্তার, একজন সৎ আইনজীবী দরকার এ দেশের, এ সমাজের অধঃপতন থেকে রক্ষার জন্য। অন্যায়ের চলমান স্রোতে ভেসে যাওয়ায় কোনো কৃতিত্ব নেই। খড়কুটাই শুধু স্রোতে ভেসে যায়। স্রোতের বিপরীতে ন্যায়ের পক্ষে শক্ত অবস্থান গ্রহণ করুন। আপনিই জয়ী হবেন। জয়ী আপনাকে হতেই হবে।


লেখক : চিকিৎসক, ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল


আরো সংবাদ



premium cement