২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০, ১৭ রমজান ১৪৪৫
`

বসনিয়ার এক এতিম বালকের বিশ্বজয়

বসনিয়ার এক এতিম বালকের বিশ্বজয় - ফাইল ছবি

যুদ্ধবিধ্বস্ত একটি দেশ থেকে দারিদ্র্যতা ও শত প্রতিকূলতা ঠেলেও কঠোর পরিশ্রমের মাধ্যমে সাফল্য অর্জন করা যায় তারই প্রতীক আলমির কাপিক। ৩৮ বছর বয়সী আলমির কাপিক বসনিয়ার নাগরিক। তিনি বসনিয়ার গর্ব, অহঙ্কার। বসনিয়া-হার্জেগোভেনিয়ার পতাকা তিনি ধরে রেখেছিলেন গর্বিতভাবে, যা গভীর সম্মান ও বিনম্র শ্রদ্ধায় আবুধাবিতে পতপত করে উড়িয়েছেন। গত মাসে আবুধাবিতে অনুষ্ঠিত ‘ওয়ার্ল্ড প্রফেশনাল জাইউ-জিতসু চ্যাম্পিয়নশিপে’ বাদামি বেল্ট ডিভিশনে আল্ট্রা হেভিওয়েট চ্যাম্পিয়ন শিরোপা জয়ের শীর্ষে উঠে এসেছেন তিনি। আলজাজিরাকে বিজয়ের অনুভূতি জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আমি বিশ্বাসই করতে পারছি না... আমি অতি আনন্দে কাঁদতে শুরু করেছিলাম। বছরের পর বছর প্রশিক্ষণ এবং কঠোর অধ্যবসায়ের মাধ্যমে জাইউ-জিতসু চ্যাম্পিয়ন হওয়ার স্বপ্ন পূরণ করতে পেরেছি। আমি অর্জন করেছি মাস্টার বেলটি বাঁধার যোগ্যতা।’

১৯৯০-এর দশকের শুরুতে বসনিয়ার রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের সময় প্রাণে বেঁচে থাকার জন্য ছোটো শহর বনোভিচিতে আলমির কাপিককে কঠিন সংগ্রাম করতে হয়েছে। তখন তার বয়স ছিল ১৩ বছর। প্রায় চার বছরব্যাপী যুদ্ধের সময় তার বাবা সার্বিয়ান স্নাইপার দ্বারা গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হন। মায়ের সাথে লাইনে দাঁড়িয়ে রেড ক্রিসেন্ট থেকে খাবার নিয়ে তাদের বেঁচে থাকতে হয়েছে। সে সময় খাবার এতই দুর্লভ ছিল যে, অনেকেই বেঁচে থাকার জন্য ঘাস-পাতা খেয়েছে। কপিক বলেন,
‘আমরা জীবিত থাকার জন্য লড়াই করছিলাম, টিকে থাকতে চেয়েছিলাম।’

কাপিক পরিশ্রমী ও স্বপ্নদর্শী ছিলেন। যে কাজই করতেন মনোযোগ দিয়ে করতেন। বিশ^াস করতেন মন দিয়ে চেষ্টা করলে ফল একদিন আসবেই। জীবন যুদ্ধে শত প্রতিকূলতার বিরুদ্ধে দাঁড়িয়েও তিনি সামনে এগিয়ে যাওয়ার জন্য হাল ছাড়েননি। খেয়ে না-খেয়ে, অনেক বাধা অতিক্রম অতিক্রম করে সফল ক্যারিয়ার গড়েছেন।

বসনিয়ায় কাপিকের মতো ক্রীড়াবিদদের জন্য রাষ্ট্রীয় তহবিল থেকে খুব সামান্যই সহায়তা রয়েছে। দৈনিক প্রশিক্ষণ নিতে অনুশীলনকারীরা বসনিয়ার রাজধানী সারায়েভোয় ব্যক্তিগতভাবে ভাড়া দিয়ে থাকত। পর্যাপ্ত সুযোগ-সুবিধা কিছুই ছিল না। এমনকি সংযুক্ত আরব আমিরাতের রাজধানীতে সাম্প্রতিক প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণের জন্য কাপিকের বন্ধুরা আর্থিকভাবে তাকে সাহায্য করেছিলেন।
কাপিক বলেন, ‘বসনিয়া ও হার্জেগোভিনা এমন একটি দেশ যেখানে অনেক বিষয়ে বিভ্রান্তি রয়েছেÑ আইনত, সামাজিকভাবে এবং খেলাধুলার ক্ষেত্রেও। ক্রীড়াবিদদের চিন্তা করতে হয় কিভাবে খারাপ অবস্থার মধ্যেও নিজেদের প্রশিক্ষণ চালিয়ে যেতে হবে। তার কোচ ফুয়াদ মুজভিচ বলেন, চ্যালেঞ্জিং অবস্থা দৈনন্দিন জীবনেরই অংশ। আমরা এমন লোক নই; যারা কিছু না পেলেই অভিযোগ করে, অজুহাত পেশ করব। আমরা আবুধাবিতে সোনার পদক পেয়েছি, এই সম্মান এমন কিছু যা আপনি টাকা দিয়ে কিনতে পারবেন না। সফলতার নিয়ম একটাই যে, যত কঠিন প্রশিক্ষণ নেবেন, সে তত সহজে জয় করতে পারবেন। কাপিক অত্যন্ত অধ্যবসায়ী, পরিশ্রমী ও সুশৃঙ্খল। তার বুদ্ধি এবং দৃঢ়তার সীমানা বিস্তৃত।

কাপিক মিসর ও সিরিয়ায় পড়াশোনা করেছেন, তিনি আরবিতে কথা বলেন, বই অনুবাদক হিসেবে কাজ করেন। তিনি একজন ধর্মপ্রাণ মুসলমান, তিনি বিশ্বব্যাপী শিক্ষার্থীদের জন্য অনলাইনে কুরআন ক্লাস নেন। দশ বছর আগে কাপিক মিসরের রাজধানী কায়রোয় আল-আজহার বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক ডিগ্রি লাভ করেন এবং ‘হাফিজ’ হন।

তিনি বলেন, একজন ক্রীড়াবিদ হিসেবে আমার বিশ্বাস থেকেই আমি মানসিক শক্তি ও উৎসাহ পাই। আমি যখন নবী ও রাসূলদের সম্পর্কে জানি, তাদের জীবনী পড়ি; তখন আমি অনুপ্রাণিত হই। আপনার ক্ষুদ্র প্রচেষ্টাও বিরাট সার্থকতা পেতে পারে, ক্ষুদ্র থেকেও বড় কিছু করতে পারেন যদি দৃঢ়তা থাকে, সৎ উদ্দেশ্য ও স্বপ্ন থাকে।

জুলাই মাসে, কাপিক তার মাস্টার বেল্ট পাওয়ার জন্য ব্রাজিলের রিও ডি জেনিরোয় যাবে।
আবুধাবিতে জয়ী হওয়ার পর কাপিক একটি জাতীয় উদাহরণ হয়ে দাঁড়িয়েছে যে কিভাবে একজন ব্যক্তি সফলতা লাভের জন্য ত্যাগ স্বীকার করতে পারে। বসনিয়ার যুবকদের উদ্দেশে তিনি বলেন, আপনাকেই কাজ করতে হবে। যারা প্রাণপণ চেষ্টা করে তাদের জন্য ফলাফল অবশেষে আসবেই। এর প্রমাণ হলো কয়েক বছরের সাধনার ফলে যা আবুধাবিতে ঘটেছে; যেখানে আমরা শক্তিশালী দেশ ও শক্তিশালী যোদ্ধাদের বিরুদ্ধে লড়াই করেছি; কিন্তু বসনিয়া এবং হার্জেগোভিনায়ই পদক এসেছে। আপনার জীবনে ব্যর্থতা আসা হতাশার নয়, হতাশা হচ্ছে ব্যর্থতা এলে আবার উঠে দাঁড়ানোর চেষ্টা না করা।

আরো পড়ুন :
মুকতাদা আল সদর : ধর্মীয় নেতা যখন কিংমেকার
রিফাত হাসান

ইরাকে গত ১২ মে অনুষ্ঠিত পার্লামেন্ট নির্বাচনে জাতীয়তাবাদী নেতা হিসেবে পরিচিত মুকতাদা আল সদরের নেতৃত্বাধীন জোট সাইরুন (সংস্কারের পথে অভিযাত্রা) অপ্রত্যাশিতভাবে ভালো ফলাফল করেছে তাতে দেখা যায়, মুকতাদার জোট পার্লামেন্টের ৩২৯ আসনের মধ্যে ৫৪টি আসন পেয়েছে। মুকতাদা কমিউনিস্টদের সাথে জোট বেঁধে নির্বাচনে অংশ নিয়েছিলেন।

নির্বাচনে ইরান সমর্থিত ফাতাহ জোট পেয়েছে ৪৭টি আসন। এই জোটের প্রধান হলেন মিলিশিয়া গ্রুপ বদর ব্রিগেডের কমান্ডার হাদি আল আমিরি। আর যুক্তরাষ্ট্র সমর্থিত বর্তমান প্রধানমন্ত্রী হায়দার আল আবাদির নেতৃত্বাধীন জোট নসর (ভিক্টরি) তৃতীয়স্থানে থেকে পেয়েছে ৪২টি আসন। সাবেক প্রধানমন্ত্রী নূরি আল মালিকির স্টেট অব ল কোয়ালিশন পেয়েছে ২৬ আসন এবং কুর্দি নেতা মাসুদ বারজানির নেতৃত্বাধীন কুর্দিস্তান ডেমোক্র্যাট পার্টি পেয়েছে ২৫টি আসন। অন্যদলগুলো বাকি আসন পেয়েছে। নির্বাচনী ফলাফলের এই চিত্র থেকে এখনো স্পষ্ট নয়, যে কোনো জোটের নেতৃত্বে নতুন সরকার গঠিত হবে। তবে একটি বিষয় স্পষ্ট হয়ে গেছে যে, নতুন সরকার গঠনের ক্ষেত্রে মুকতাদা আল সদরে বড় ভূমিকা থাকবে। বস্তুত তিনিই কিংমেকারের ভূমিকায় অবতীর্ণ হবেন। কেননা সরকার গঠনের জন্য প্রয়োজন হবে ১৬৫ আসন। এ ক্ষেত্রে মুকতাদার জোটের ৫৪টি আসন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।

নির্বাচনের আগে বা নির্বাচনী প্রচারণার সময়ে মুকতাদা আল সদর তেমন একটা আলোচনায় ছিলেন না। বলতে গেলে অনেকটা প্রান্তিক অবস্থানেই চলে গিয়েছিলেন। কিন্তু ইরাকি জনগণের অসন্তোষকে কাজে লাগানোর ক্ষেত্রে মুকতাদার মতো দক্ষ রাজনৈতিক ও ধর্মীয় নেতা দেশটিতে আর নেই বললেই চলে। তিনি একই সাথে যুক্তরাষ্ট্র ও ইরানবিরোধী। ইরাকে এ দুই দেশের আধিপত্য ও প্রভাব মেনে নিতে তিনি কখনোই প্রস্তুত নন। ২০০৩ সালে ইরাকে মার্কিন আগ্রাসনের সময় মুকতাদা তার অনুগত লোকজনকে মার্কিন বাহিনীর ওপর হামলা চালানোর নির্দেশ দেন। আবার সম্প্রতি তিনি ইরাকে দুর্নীতি ও বিদেশী প্রভাব বিস্তারের বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়ে উঠেছিলেন। ২০১৬ সালের সমর্থকেরা বিভিন্ন সরকারি দফতরে হামলা ও ভাঙচুর করেছে সরকারের দুর্নীতির প্রতিবাদে। ইরাকে ক্রমবর্ধমান দুর্নীতির বিরুদ্ধে ভোটাররা তাই মুকতাদা সদরের মনোনীত প্রার্থীদেরও তুলনামূলক বেশি ভোট দিয়েছে। এর ফলে মুকতাদা নির্বাচনে আশাতীত সাফল্য পেয়েছেন।

এবারের নির্বাচনে অবশ্য ২০১৪ সালের নির্বাচনের তুলনায় অনেক ভোট পড়েছে। ২০১৪ সালে ভোট বাড়ছিল ৬২ শতাংশ। কিন্তু এবার প্রচণ্ড ভোটের হার মাত্র ৪৪ শতাংশ। এর কারণও অবশ্য আছে। নির্বাচনের দিন রাস্তায় নিরাপত্তা বাহিনীর অসংখ্য চেকপোস্ট বসানোয় গাড়ি চলাচল ছিল খুবই জঘন্য। চেকপোস্টে অহেতুক হয়রানির ভয়ে এবং আত্মঘাতী হামলার আশঙ্কায় ভোটাররা খুব একটা কেন্দ্রমুখী হননি। এ ছাড়া রাস্তায় গাড়ি কম থাকায় দূরবর্তী কেন্দ্রগুলোয় হেঁটে ভোট দিতে যাওয়ায় অনেকেই আগ্রহী হননি। এটাও ভোট কম পড়ার অন্যতম কারণ। অবশ্য আগের নির্বাচনের দিনের তুলনায় এবারের নির্বাচনে তেমন কোনো সহিংসতা ঘটেনি। কিন্তু তারপরও এবারের নির্বাচনে মাত্র ৪৪ শতাংশ ভোট পড়াকে বিশ্লেষকরা ইরাকি রাজনীতিকদের প্রতি দেশটির জনগণের আস্থা কমে যাওয়াই প্রমাণ বলে মনে করেছেন।

নির্বাচনে এত কম ভোট পড়ার মধ্যেও মুকতাদা সদরের অন্য জোটগুলোর চেয়ে বেশি আসন পাওয়ার কারণ হচ্ছে বাগদাদের কিছু কিছু এলাকায় তুলনামূলক বেশি ভোট পড়া। বিশেষ করে মুকতাদার নিয়ন্ত্রিত সদর সিটিতে ভোট পড়েছে অনেক বেশি। অন্যান্য এলাকার কর্মজীবী বিশেষ করে শ্রমিক শ্রেণীর মানুষ মুকতাদার জোটকে বেশি ভোট দিয়েছে। বসরাতেও মুকতাদার জোট অনেক ভোট পেয়েছে। এবারের নির্বাচনে মুকতাদা কমিউনিস্ট ও ধর্মনিরপেক্ষ দলগুলোর সাথে জোট গড়ার মাধ্যমে ভোটারদের কাছে তার শিয়া গোষ্ঠীগত নেতার পরিচয়ের বাইরেও আলাদা একটা আবেদন সৃষ্টি করেছিলেন। নির্বাচনী প্রচারণা চালানোর সময় তিনি মুন্নি প্রধান এলাকায় গিয়ে তাদের মসজিদে নামাজ পড়েছেন। এ ছাড়া তার নির্বাচনী ইশতেহারে তিনি শিয়া-সুন্নিসহ ইসলামের বিভিন্ন গোষ্ঠী বা গোত্রগুলোর মধ্যে সমঝোতার পরিকল্পনার কথাও বলেছিলেন। এর অংশ হিসেবে তিনি সুন্নি প্রধান দেশ সৌদি আরবে গিয়ে দেশটির যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানের সাথে সাক্ষাৎ করেছেন। তার এসব কর্মকাণ্ড নির্বাচনে ভোটারদের সমর্থন লাভে সহায়তা করেছে বলে মনে করা হচ্ছে।

ইরাকে নতুন সরকার গঠন করার ক্ষেত্রে কয়েক মাস লেগে যেতে পারে। কারণ সরকার গঠনের জন্য প্রয়োজনীয় ১৬৫টি আসন কোনো জোট সংগ্রহ করতে পারবে তা স্পষ্ট হতে বেশ কিছু দিন সময় লাগবে। আর এ ক্ষেত্রে রয়েছে নানা হিসাব-নিকাশ। মুকতাদা আল সদরের জোট অন্য জোটগুলোর চেয়ে বেশি আসন পেলেও নতুন সরকার গঠনে বৃহত্তর জোট গড়তে মুকতাদাকে যথেষ্ট বেগ পেতে হবে। কেননা সরকার গঠন নিয়ে আগামীতে অন্তরালে লড়াইটা হবে আসলে ইরান ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে। কারণ এ প্রতিদ্বন্দ্বী দুই দেশের কোনোটাই চাইবে না ইরাকে তার প্রতিপক্ষের নিয়ন্ত্রিত সরকার থাকুক। সে কারণে সরকার গঠনের লড়াইটা হবে খুবই জোরালো। একই সাথে ইরাক মুকতাদা সদরের জোটকেও সরকার গঠনের সুযোগ দিতে চাইবে না। কারণ নির্বাচনের আগেই ইরানের শীর্ষ নেতা আয়াতুল্লাহ খামেনির উপদেষ্টা আয়াতুল্লাহ বেলায়েতি বলেছেন, আমরা উদারপন্থী ও কমিউনিস্টদের ইরাক শাসক করতে দেবো না। এর অর্থই হচ্ছে তিনি মুকতাদা আল সদরকে টার্গেট করেই এ কথাটা বলেছেন। কারণ মুকতাদা এই দুই গোষ্ঠীর সাথেই জোট গড়েছেন। ফলে মুকতাদার জোটের নেতৃত্বে নতুন সরকার গঠনের উদ্যোগকে প্রতিহত করতে ইরান সর্বাত্মক চেষ্টা চালাবে।
মুকতাদা আল সদর নিজে অবশ্য প্রধানমন্ত্রী হতে পারবেন না, কেননা তিনি নির্বাচনে প্রার্থী হননি।

কিন্তু তিনি কিভাবে নতুন সরকার গঠন করতে চান তার একটা আভাস নির্বাচনের পরপরই তার এক টুইটের মাধ্যমে দিয়েছেন। সেখানে তিনি তার মিত্র হিসেবে কুর্দি, সুন্নি ও শিয়া দলগুলোর নাম উল্লেখ করেছেন। তবে এ ক্ষেত্রে তিনি এড়িয়ে গেছেন ইরানের সাথে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রাখা শিয়া দলগুলোর নাম। বিশেষ করে শিয়া মিলিশিয়া গ্রুপগুলোর জোট বদর ব্রিগেড ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী নূরে আল মালিকির দাওয়া পার্টিকে বাদ দিয়েছেন। ইরাকে ইরানি প্রভাব ঠেকানোর লক্ষ্যেই যে তিনি এ কাজ করেছেন তা বলার অপেক্ষা রাখে না। কিন্তু তারপরও ইরান ইরাকে তার প্রভাব বজায় রাখার চেষ্টার ত্রুটি করবে না।

এ ক্ষেত্রে ইরান তার ঘনিষ্ঠ মিত্র হাদি আল আমিরি, সাবেক প্রধানমন্ত্রী নূরি আল মালিকি ও আরেক শিয়া নেতা বর্তমান প্রধানমন্ত্রী হায়দার আল আবাদির জোটকে যদি ঐক্যবদ্ধ করতে পারে তাহলে তাদেরই নতুন সরকার গঠনের সুযোগ সৃষ্টি হবে। বাধাগ্রস্ত হবে মুকতাদা আল সদরের জোটের নেতৃত্বে নতুন সরকার গঠনের চেষ্টা। ইরান সমর্থক গ্রুপগুলো যদি বর্তমান প্রধানমন্ত্রী হায়দার আল আবাদিকেই প্রধানমন্ত্রী হিসেবে সমর্থন দিয়ে যায় তাহলে মুকতাদা আল সদরের জোটের নতুন সরকার গঠনের চেষ্টা ব্যর্থ হতে পারে। তবে সে ক্ষেত্রে ইরাকে কট্টর শিয়া গ্রুপগুলোর প্রাধান্য প্রতিষ্ঠিত হলে দেশটিতে আবারো গোষ্ঠীগত দ্বন্দ্ব-সঙ্ঘাত বিশেষ শিয়া ও সুন্নিদের মধ্যে দ্বন্দ্ব প্রকট হয়ে উঠতে পারে। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী হায়দার আল আবাদি যদি মুকতাদা আল সদরের সাথে ঐক্য করেন তাহলে তিনি ইরাককে গোষ্ঠীগত রাজনীতির পথ থেকে কিছুটা বাইরে আসতে পারবেন বলে বিশ্লেষকেরা মনে করছেন। আর মুকতাদা সদরও ইরানি প্রভাব ঠেকাতে আবাদিকে আবারো সরকার গঠনে সমর্থন দিতে পারেন।

নতুন সরকার গঠনে কোনো জোট সফল হবে তা দেখার জন্য আরো কয়েক মাস অপেক্ষা করতে হবে। এখন নতুন পার্লামেন্টের প্রথম কাজ হবে দেশের প্রেসিডেন্ট নির্বাচন করা। এরপর প্রেসিডেন্ট সবচেয়ে বড় জোটকে নতুন সরকার গঠনের আমন্ত্রণ জানাবেন। তখনই শুরু হবে মুকতাদা আল সদরের আসল পরীক্ষা। তবে এই নির্বাচনের মাধ্যমে তিনি যে ইরাকে এখন কিংমেকারের ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছেন তা নিয়ে সন্দেহের কোনো অবকাশ নেই।


আরো সংবাদ



premium cement
মতলব উত্তরে পানিতে ডুবে ভাই-বোনের মৃত্যু প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগের শেষ ধাপের পরীক্ষা শুক্রবার লম্বা ঈদের ছুটিতে কতজন ঢাকা ছাড়তে চান, কতজন পারবেন? সোনাহাট স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশ ত্যাগ করলেন ভুটানের রাজা জাতীয় দলে যোগ দিয়েছেন সাকিব, বললেন কোনো চাওয়া-পাওয়া নেই কারওয়ান বাজার থেকে সরিয়ে নেয়া হচ্ছে ডিএনসিসির আঞ্চলিক কার্যালয় এলডিসি থেকে উত্তরণের পর সর্বোচ্চ সুবিধা পেতে কার্যকর পদক্ষেপ নিন : প্রধানমন্ত্রী নারায়ণগঞ্জ জেলার শ্রেষ্ঠ ওসি আহসান উল্লাহ ‘ট্রি অব পিস’ পুরস্কার বিষয়ে ইউনূস সেন্টারের বিবৃতি আনোয়ারায় বর্তমান স্বামীর হাতে সাবেক স্বামী খুন, গ্রেফতার ৩ ফতুল্লা প্রেস ক্লাবের ইফতার মাহফিল অনুষ্ঠিত

সকল