২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১, ১৪ শাওয়াল ১৪৪৫
`

রাষ্ট্রনায়ক শাসন ও সুনীতি

জিয়াউর রহমান - ছবি : সংগ্রহ

রাজনীতিবিদ ও রাষ্ট্রনায়কদের মধ্যে সম্পর্ক আপাতদৃষ্টিতে পরিপূরক হলেও, কার্যক্ষেত্রে প্রশস্ত পার্থক্য বিদ্যমান থাকে। অনেক খ্যাতিমান রাজনীতিবিদ ‘রাষ্ট্রনায়ক’ হয়ে উঠতে পারেন না। জনপ্রিয় রাজনীতিবিদেরও কারো কারো দৃষ্টিসীমা সীমাবদ্ধ থাকতে পারে, কিন্তু যিনি রাষ্ট্রনায়ক তাকে অনেকদূর পর্যন্ত দেখতে হয়। সুদূর ভবিষ্যতের আহ্বানকে উপলব্ধি করে বর্তমানে পরিকল্পনার সক্ষমতা অর্জন করলেই একজন রাজনীতিবিদ ক্রমান্বয়ে রাষ্ট্রনায়ক হয়ে উঠতে পারেন। পৃথিবীর অনেক দেশেই দেখা গেছে বিপুল জনপ্রিয় ও লোকরঞ্জনবাদী রাজনীতিবিদ বা গণনেতা কাল্ট (Cult) এ পরিণত হয়ে খুব দ্রুতই যবনিকার অপর প্রান্তে পৌঁছে যান। শুধু রাষ্ট্রনায়কোচিত গুণাবলির অভাবেই জনপ্রিয়তার মহাসড়ক থেকে গণনেতা পিছলে পড়েন। বাগাড়ম্বরপূর্ণ বক্তৃতায় উত্তেজিত জনতাকে অভীষ্ট লক্ষ্যে পরিচালিত করার পর অনেক গণনেতা পথ হারিয়ে ফেলেন। কারণ তারা দেশ পরিচালনায় প্রকট সমস্যার সমাধানের খোঁজ পান না। জনসমর্থনের ক্রমাগত ঘাটতি হতে থাকায় আত্মবিমোহিত রাজার মতো হয়ে ওঠে তাদের আচরণ। সেজন্য ইতিহাসের একজন পণ্ডিত অধ্যাপক বলেছিলেন- Making a cult of a leader is always mistake. মারাত্মক ভুল তাকে দিকভ্রান্ত করে, সর্বগ্রাসী ব্যর্থতা তার আকাশসমান জনপ্রিয়তায় মুহূর্তে ধস নামিয়ে দেয়। অপরিণামদর্শী অনেক গণনেতা গণশত্রুতেও পরিণত হয়েছেন।

প্রকৃত রাষ্ট্রনায়ককে সুদূরপ্রসারী পরিণতির কথা মনে রেখে জনআবেগের বিরুদ্ধেও অনেক সময় অবস্থান নিতে হয়, দেশ ও জাতির নিরাপত্তার প্রশ্নে। রাষ্ট্রনায়ক এগিয়ে যান রাষ্ট্রকাঠামো টিকে থাকার শর্তগুলো পূরণ করে। রাষ্ট্র ও জনগণের অন্তঃক্রিয়ায় একটি কার্যকর রাষ্ট্রের সামগ্রিক বিকাশের প্রভাবক হচ্ছেন রাষ্ট্রনায়ক।

বরেণ্য অগ্রদৃষ্টিসম্পন্ন যৌথ নেতৃত্বের দ্বারা যুক্তরাষ্ট্রের স্বাধীনতা এসেছিল। প্রথম মার্কিন রাষ্ট্রপতি জর্জ ওয়াশিংটন ছিলেন বিপুল জনপ্রিয়। তাকেও অনুরোধ করা হয়েছিল আজীবন রাষ্ট্রপতি বা সম্রাট হতে। কিন্তু তিনি তা প্রত্যাখ্যান করেছিলেন। ভক্তকুল দ্বারা অনুরুদ্ধ হয়ে তার মনে যদি আজীবন রাষ্ট্রপতি থাকার সাধ জেগে উঠত, তাহলে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে স্বাধীনতার পর আরেকটি রক্তাক্ত বিপ্লব সঙ্ঘটিত হতো গণতন্ত্র আদায়ের জন্য। তাই রাষ্ট্রনায়কোচিত সিদ্ধান্তে সব অনুরোধ উপেক্ষা করে দুই মেয়াদের পরই তিনি অবসর নেন এবং যুক্তরাষ্ট্রের গণতন্ত্রকে দেন অগ্রগতি ও বিকাশের সুযোগ। বিংশ শতাব্দীর বিশ^নন্দিত নেতা নেলসন ম্যান্ডেলা দীর্ঘ ২৭ বছর কারাবাসের পর বিপুল জনপ্রিয়তা সত্ত্বেও একবারের বেশি রাষ্ট্রপতি থাকেননি। এই মহৎ নেতাদের কারণেই ফাংশনাল গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রগুলো পৃথিবীর ধারাবাহিক ইতিহাসে একটি বিশেষ অধ্যায় হিসেবে আলোচিত এবং পিছিয়ে পড়া জাতিগুলোর জন্য অনুসরণের দৃষ্টান্ত হয়েছে।
সুশৃঙ্খল সামরিক বাহিনীতে যোগ দিয়ে কর্মময় জীবনের শুরু জিয়াউর রহমানের। দৃঢ়তা, অটল মনোভাব, প্রবল সাহস ও অদ্ভুত নিবিষ্টতায় গড়ে উঠেছিল তার ব্যক্তিত্ব। তাই রাজনীতিবিদ না হয়েও বাংলাদেশের জন্ম ও বিকাশের সূচনায় তার কয়েকটা সুযোগ এসেছিল ঐতিহাসিক দায়িত্ব পালনের। দেশপ্রেমিক জিয়া প্রথম দায়িত্বটি পালন করেন দেশমাতৃকার স্বাধীনতা ঘোষণা ও মুক্তিযুদ্ধ শুরু করার মাধ্যমে। দ্বিধা ও সংশয়ের কারণে তৎকালীন রাজনৈতিক নেতৃত্ব ওই সময় সে সুযোগ কাজে লাগাতে পারেননি। এরপর, স্বাধীনতা-উত্তর দেশের রাজনীতি ভিন্নরূপে আত্মপ্রকাশ করল। গণতন্ত্র ও সংবিধানকে কেড়ে নিয়ে নিজের দখলে রাখলেন ক্ষমতাসীনেরা। গণতন্ত্র ও বহুত্ববাদের জলাঞ্জলি হচ্ছিল স্বেচ্ছাচার ও দুর্নীতির চাপে। ’৭৫-এ জানুয়ারিতে গণতন্ত্র চূড়ান্তভাবে নিরুদ্দেশ হওয়ায় আশা ভঙ্গ হলো জনগণের।

’৭৫-এর ৭ নভেম্বর আবারো জেগে উঠল সিপাহি-জনতা, জিয়াকে নেতার আসনে বসাল তারাই। শুরু হলো জিয়ার দ্বিতীয় অধ্যায়। দৃষ্টি ছিল তার প্রখর ও দূরগামী। রাষ্ট্রক্ষমতায় আসীন হয়ে তিনি অবরুদ্ধ গণতন্ত্রকে অর্গল ভেঙে অবমুক্ত করলেন। জনগণ নিজেদের মর্যাদা ফিরে পায় এবং তাদের রুদ্ধশ^াস প্রশমিত হয়। ক্ষমতার পালাবদলে জনগণকে ধোঁকা দিয়ে জিয়া নিজে একনায়কত্বমুলক শাসন চালু করেননি। সততা ও দূরদৃষ্টির কারণে ক্ষমতার অলিন্দে ছিল তার সতর্ক পদক্ষেপ। গণতন্ত্রের প্রতি প্রবল কমিটমেন্ট এবং তার প্রখর ‘ইন্টিগ্রিটি’র কাছে কোনো স্তাবক গোষ্ঠী ভিড়তে পারেনি। একজন রাষ্ট্রনায়ক নিজেকে পরিচালিত করেন শুভবুদ্ধির নীতিতে। ক্ষমতার অত্যুজ্জ্বল আলোকে ে নিজের চোখকে ধাঁধিয়ে দিতে দেন না।

১৯৮০ সালে রাষ্ট্রপতি জিয়ার একটি ঘটনা স্মরণযোগ্য, যা আমাকে বলেছিলেন জাতয়িতাবাদী ছাত্রদলের প্রতিষ্ঠাকালীন আহ্বায়ক কাজী আসাদ। ওই বছরের কোনো একসময় ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় নেতাদের নিয়ে রাষ্ট্রপতি বৈঠক করছিলেন। বৈঠক চলাকালে একজন গুরুত্বপূর্ণ ছাত্রনেতা রাষ্ট্রপতি জিয়ার বিপুল জনপ্রিয়তার কথা উল্লেখ করে তাকে আজীবন রাষ্ট্রপতি হিসেবে ঘোষণা করা উচিত বলে বক্তব্য রাখেন, এ সময় জিয়া চেয়ার থেকে লাফ দিয়ে উঠে মাইক্রোফোনের সামনে এসে তাকে সরিয়ে দিয়ে বলেন, ‘এই ছেলে তো আমাকে ধ্বংস করে দিবে, এদের জন্যই দল ও নেতৃত্বের সর্বনাশ ঘটে।’ উপস্থিত ছাত্রনেতারা সবাই হতচকিত হয়ে সেদিন রাষ্ট্রনায়ক জিয়ার অন্তর্লোক উপলব্ধি করতে পেরেছিলেন। তোষামোদের ছায়া কখনো একজন প্রকৃত রাষ্ট্রনায়কের অন্তরে বিস্তার লাভ করে না। ছাত্র নেতাটির বক্তব্যের তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় উপলব্ধি করা যায়, জিয়াউর রহমানের অন্তর্লীন আত্মশক্তি বহুদলীয় গণতন্ত্রের প্রশ্নে কতখানি বলীয়ান ছিল। কয়েক দিনের মধ্যেই ওই ছাত্র নেতাকে রাজনীতি ছেড়ে বিদেশে পাড়ি জমাতে হয়েছিল।

গণতন্ত্রের চর্চা ও অনুশীলনের অব্যাহত ধারায় জনসমাজে টেকসই সহিষ্ণুতার ভিত্তি লাভ করে থাকে। জাতীয় রাজনীতির সাথে যুক্ত জাতীয় নেতাদের মানসিক গড়নে দৃঢ়মূল, গণতান্ত্রিকবোধের দ্বারাই পরমতসহিষ্ণুতা সঞ্চারিত হয় জনসমাজে এবং জনগণের মধ্যে তখন ‘টলারেন্সের’ শক্তির স্ফুরণ ঘটতে থাকে। গণতন্ত্রী জিয়া সহিষ্ণুতার এক অনন্য নজির সৃষ্টি করেছিলেন ঢাকা বিশ^বিদ্যালয়ে, যা সর্বজনবিদিত। বিশ^বিদ্যালয়ের ছাত্রদের কর্তৃক হয়রানির শিকার হয়েও জিয়া ছিলেন স্থির ও শান্ত। স্নেহশীল জিয়া ছাত্রদের বিরুদ্ধে কোনো প্রতিক্রিয়াই দেখাননি। বরং নিবৃত্ত করেছিলেন রাইফেল উদ্যত তার নিরাপত্তা রক্ষীদের। ছাত্রদের প্রতি মমত্ববোধের এই দৃষ্টান্ত সারা দেশে জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলকে সাধারণ ছাত্রদের মধ্যে উত্তরোত্তর ক্রমবর্ধমান জনপ্রিয় করে তোলে। সহিষ্ণুতার এই নিদর্শন রাজনীতিবিদদের জন্য আজও অনুসরণীয়।

রাষ্ট্রপতি জিয়া আত্মদীপে নিবিষ্ট ছিলেন, অর্থাৎ নিজের অন্তরের আলোতে পথ চলতেন বলেই লোভ-প্রলোভনকে পরাজিত করেছেন অমিত বিক্রমে। সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী মরহুম অব: লে: ক: মোস্তাফিজুর রহমানের কাছ থেকে শোনা একটি ঘটনা আজও মনে গেঁথে আছে। বেলজিয়ামে রাষ্ট্রীয় সফরের সময় সে দেশের রাজা রাষ্ট্রপতি জিয়াকে একটি সোনার গোলাপ ফুল উপহার দিয়েছিলেন। দেশে ফিরে কিছু দিন পর বঙ্গভবনে নিজের অফিস কক্ষে টেবিলে সেই গোলাপ ফুলটি ফুলদানিতে লক্ষ্য করলেন। রাষ্ট্রপতির নজরে পড়ার সাথে সাথে তিনি এ বিষয়ে জিজ্ঞাসা করলে উপস্থিত কর্মকর্তারা বলেছিলেন, এটি তাকে ব্যক্তিগতভাবে দেয়া হয়েছে বলেই টেবিলের ফুলদানিতে রাখা হয়েছে। সাথে সাথে তিনি প্রতিবাদ করে বললেন, রাষ্ট্রপতির ব্যক্তিগত উপহার বলে কিছু নেই, সবই রাষ্ট্র ও জনগণের।’
১৯৮০ সালে বিদেশ সফরশেষে এয়ারপোর্টে নেমে জিয়া গাড়িবহরে শোনেন, তার দু’জন সফরসঙ্গী দু’টি ভিসিআর নিয়ে এসেছেন। তখন ভিসিআর ছিল ‘ব্যান্ড আইটেম’। এই দু’জনের মধ্যে একজন ছিলেন রাজনীতিক, অন্যজন রাষ্ট্রপতির নিরাপত্তায় নিয়োজিত সামরিক কর্মকর্তা। রাষ্ট্রপতি জিয়া গন্তব্যে পৌঁছার পূর্বেই একজন দল থেকে বহিষ্কৃত এবং অপরজন চাকরিচ্যুত হন। শহীদ জিয়ার সততার ভিত্তি ছিল সমদর্শী ন্যায়বোধ, যে কারণে তিনি আজও মহিমান্বিত ও স্মরণীয়।

জিয়াউর রহমানের শাসনকালে অর্থাৎ ১৯৮০-৮১ সালে রাজশাহী বিশ^বিদ্যালয়ে ছাত্র এবং ছাত্র রাজনীতির সাথে যুক্ত ছিলাম। আমি তখন জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল রাজশাহী বিশ^বিদ্যালয় শাখার প্রথম কমিটির প্রচার সম্পাদক। সে সময় আমার একজন সহপাঠী বন্ধু ছিল রাজশাহী মহানগর ছাত্রদলের ডাকসাইটে নেতা। সে সবসময় এক অদ্ভুত রোমান্টিক উন্মাদনায় ভুগত। একদিন শহরের একটি মহল্লার ছেলেদের সাথে রাজনীতিবহির্ভূত একটি সঙ্ঘাতে জড়িয়ে পড়ে বন্ধুটি গুরুতর আহত হয়। একজন ছাত্র ও নেতা হিসেবে বন্ধুটি যে ঘটনায় হাঙ্গামার মধ্যে পড়েছিল, সেসব ঘটনায় জড়িয়ে পড়লে একজন ছাত্রনেতা সম্পর্কে মানুষের মধ্যে বিরূপ ধারণা সৃষ্টি হয়। আমার কলেজ সহপাঠী বন্ধুটিকে সংঘটিত ঘটনার দু’দিনের মধ্যে রাষ্ট্রপতি এবং বিএনপি চেয়ারম্যানের নির্দেশক্রমে বহিষ্কার করা হয়েছিল। এখানে উল্লেখ্য, আমার বন্ধুটির বাবা সে সময় জেলা প্রশাসনের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা এবং তার ভগ্নিপতি ছিলেন একটি গুরুত্বপূর্ণ গোয়েন্দা সংগঠনের প্রধান ও উচ্চপদস্থ সামরিক কর্মকর্তা। এ ঘটনাটি এ জন্যই উল্লেখ করলাম যে, শহীদ জিয়ার সুনীতি ও শাসন এ কারণেই জনগণের মধ্যে সুনাম ও আস্থা অর্জন করেছিল যে, রাষ্ট্র পরিচালনায় তিনি ক্ষমতাবান, ঘনিষ্ঠ সহকর্মী বা দলীয় বিবেচনা নির্বিশেষে কারো কোনো অন্যায়কে কখনোই প্রশ্রয় দিতেন না।

প্রতিটি মানুষের মধ্যে ন্যায়বিচার ভাবনা বিদ্যমান, কিন্তু স্বার্থবুদ্ধির প্রকোপ সেটিকে আড়াল করে দেয়। ন্যায়বিচারের ধারণাটি সুদীর্ঘকালের, সেজন্য আমাদের ঐতিহ্যেও নীতি-ন্যায্যতা শব্দগুলোর ব্যাপক প্রচলন রয়েছে। মধ্যযুগের নিষ্ঠুর শাসকরাও নিজেদের ‘ন্যায়পরায়ণ’ হিসেবে দেখাতে ভালো বাসতেন। তৈমুর লংয়ের একটি বিখ্যাত উক্তি হচ্ছে- ‘আমার সার্বভৌমত্ব সংরক্ষণে আমি এক হাতে রাখি ন্যায়বিচার, অন্য হাতে সমদর্শী ন্যায়পরতা। আর এই দুই বাতির আলোয় উদ্ভাসিত করি আমার রাজকীয় প্রাসাদ (To preserve our sovereignty, we took justice in one hand and equity in the other and by the light of these two lamps kept our royal palace illuminated). বর্তমানে গণতন্ত্রের নামে উচিত-অনুচিতের এথিক্সের ধার ধারেন না ক্ষমতাবানেরা। আত্মপ্রেমজনিত বৈকল্যে তারা ন্যায়বিচারকে বিপন্ন করে তুলেছেন।

তিনিই সফল রাষ্ট্রনায়ক যিনি ন্যায়বিচার বা ইনসাফ দ্বারা পরিচালিত হন। জিয়ার হৃদয়ে ছিল ন্যায়বিচারের আলোর গোলক। আর সেজন্যই সেখান থেকে উৎসারিত হয়েছে সুনীতি ও সুশাসনের আন্তরপ্রেরণা। সে কারণেই তিনি ঐতিহাসিক ভূমিকা রাখতে পেরেছিলেন জাতির ক্রান্তিকালে। প্রখ্যাত মার্কিন ঐতিহাসিক ও সমাজ সমালোচক আর্থার এম শ্লেসিঙ্গার এর একটি উদ্ধৃতি জিয়া সম্পর্কে খুবই মানানসই বলে মনে হয়। তিনি বলেছেন, মহৎ নেতা নেত্রী তারাই যাদের কৃতকর্ম ইতিহাসে স্থায়ী ছাপ রাখে। (Great leaders are those men and women who leave their personal stamp on history). দুর্বিনীত হুঙ্কার ও অবাঞ্ছিত হস্তক্ষেপ সত্ত্বেও ইতিহাসে শহীদ জিয়ার স্বর্ণালি অধ্যায় কখনোই মুছে ফেলা যাবে না।

টা ই ম লা ই ন : ১৯৩৬-১৯৮১

১৯৩৬ : বগুড়ার বাগবাড়িয়ায় ১৯ জানুয়ারি জন্ম।
১৯৫৩ : কাকুল মিলিটারি অ্যাকাডেমিতে ক্যাডেট হিসেবে যোগদান।
১৯৫৫ : সামরিক বাহিনীতে কমিশন লাভ
১৯৬০ : খালেদার সঙ্গে বিয়ে
১৯৬৫ : পাক-ভারত যুদ্ধে অসীম সাহসিকতার জন্য বীরত্বসূচক পুরস্কার লাভ
১৯৭০ : ইস্টবেঙ্গল রেজিমেন্টে দ্বিতীয় অধিনায়ক হিসেবে ট্রান্সফার।
১৯৭১ : পাকিস্তান সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে বিদ্রোহ ঘোষণা করে মুক্তিযুদ্ধে যোগদান ও ২৭ মার্চ স্বাধীনতার ঘোষণা প্রদান। মুক্তিযুদ্ধে জেড ফোর্সের অধিনায়ক। স্বাধীনতাযুদ্ধে অবদানের জন্য ‘বীর উত্তম’ খেতাবে ভূষিত।
১৯৭২ : ডেপুটি চিফ অব স্টাফ পদে পদোন্নতি।
১৯৭৩ : মেজর জেনারেল পদে পদোন্নতি।
১৯৭৫ : চিফ অব আর্মি স্টাফ নিযুক্ত। ৭ নভেম্বর সিপাহি জনতার বিপ্লবের মাধ্যমে ক্ষমতার কেন্দ্রবিন্দুতে চলে আসেন। উপপ্রধান সামরিক আইন প্রশাসক পদে নিযুক্ত।
১৯৭৬ : প্রধান সামরিক আইন প্রশাসকের দায়িত্ব গ্রহণ।
১৯৭৭ : রাষ্ট্রপতির দায়িত্ব গ্রহণ।
১৯৭৮ : রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে জাগদলের প্রার্থী হিসেবে রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে বিজয়ী। একই বছরে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) প্রতিষ্ঠা করা।
১৯৭৯ : জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও সামরিক আইন প্রত্যাহার।
১৯৮১ : চট্টগ্রামে এক সামরিক ব্যর্থ অভ্যুত্থানে নিহত।


আরো সংবাদ



premium cement
নবায়নযোগ্য জ্বালানি ৪০ শতাংশে উন্নীত করতে কাজ করছে সরকার : পরিবেশ সচিব সৌরশক্তি খাতে আবার মাথা তুলে দাঁড়াতে চায় জার্মানি ‘সরকারের সদিচ্ছার অভাবেই বিচার প্রক্রিয়ার ধীর গতি’ মোদি কি হিন্দু-মুসলমান মেরুকরণের চেনা রাজনীতিতে ফিরছেন? টাঙ্গাইলে বৃষ্টির জন্য ইসতেসকার নামাজ ফুলগাজীতে ছাদ থেকে পড়ে স্কুলছাত্রের মৃত্যু দোয়ারাবাজারে শিশু হত্যা মামলার আসামিসহ গ্রেফতার ২ কাউখালীতে পানিতে ডুবে শিশুর মৃত্যু চুয়েট শিক্ষার্থীদের সড়কে অবস্থান অব্যাহত, ঘাতক বাসচালক গ্রেফতার তামাক পণ্যে সুনির্দিষ্ট করারোপের দাবিতে এনবিআর চেয়ারম্যানের কাছে ২৫ সংসদ সদস্যের চিঠি প্রাণিসম্পদ প্রদর্শনীতে মহিষের আক্রমণে বাবা-ছেলেসহ আহত ৪

সকল