২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৭ বৈশাখ ১৪৩১, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫
`

যুক্তরাষ্ট্রের সাথে প্রতিরক্ষা চুক্তি বহালের দরজা বন্ধ হয়নি ফিলিপাইনের

-

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র-ফিলিপাইনের সামরিক চুক্তি প্রেসিডেন্ট রডরিগো দুতার্তে সম্প্রতি বাতিল করার পরেও শুক্রবার এক প্রবীণ কূটনীতিক বলেছেন, এখনো তা রক্ষা করা যায়। তার এ বক্তব্যে এশিয়ার অন্যতম প্রাচীন সামরিক জোট ধরে রাখার ক্ষেত্রে উভয় দেশেই আশা বেড়ে গেছে।
ওয়াশিংটনে ফিলিপাইনের রাষ্ট্রদূত জোসে ম্যানুয়েল রোমাদেজ একটি ফোরামে বলেছেন, ‘সমস্যা সমাধানের জন্য আলোচনা চলছে। তবে সামরিক জোটটিই টিকে যাবে। বিশ্বশক্তি হিসাবে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের গুরুত্বকে স্বীকার করে নিয়ে তিনি বলেন, আমি যা বলছি তা হচ্ছেÑ চুক্তি বহালের দরজা পুরোপুরি বন্ধ হয়নি।’
রোমাদেজ বলেন, কিভাবে ভিজিটিং ফোর্সেস অ্যাগ্রিমেন্ট (ভিএফএ) সংশোধন ও উন্নত করা যায়, অস্ট্রেলিয়ার সাথে ফিলিপাইনের সামরিক চুক্তি এবং জাপানের সাথে একই রকম চুক্তিকে এগিয়ে নেয়া যায় তার সম্ভাব্য কলাকৌশল পর্যবেক্ষণ করছে উভয় দেশ।
যুক্তরাষ্ট্রের কিছু আইন প্রণেতা মানবাধিকার নিয়ে উদ্বেগের কারণে ফিলিপাইনের প্রাক্তন পুলিশ প্রধানের জন্য যুক্তরাষ্ট্রের ভ্রমণ ভিসা বাতিল করায় ক্ষোভ প্রকাশ করে এই মাসের শুরুর দিকে ভিএফএ থেকে যাওয়ার বেরিয়ে ঘোষণা দেন দুতার্তে। এতে দুই দেশের মধ্যে উত্তেজনা দেখা দেয়।
ভিএফএ চুক্তির মেয়াদ গত বছর আগস্টে শেষ হয়। এই চুক্তিতে ফিলিপাইনের বাইরে এবং ভেতরে কয়েক হাজার আমেরিকান সৈন্য পালাক্রমে আসা-যাওয়া করার সুযোগ রয়েছে। এদের কয়েক হাজার সৈন্য যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত থাকে এবং বার্ষিক সামরিক মহড়ার জন্য কয়েক হাজার সেনাকে সরবরাহ করা হয়।
দুতার্তের বিরোধী আইনপ্রণেতারা তার সিদ্ধান্তে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। কিছু আইনপ্রণেতা যারা দুতার্তের সাথে আছেন বা পক্ষে আছেন; তারাও তাকে এমন একটি পদক্ষেপ পুনর্বিবেচনার আহ্বান জানিয়েছেন। কারণ এর ফলে প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবেলার সক্ষমতা কমে যেতে পারে এবং মাওবাদী ও বিদ্রোহীদের দ্বারা ক্রমাগত আক্রান্ত হয়ে সামরিক সক্ষমতা দুর্বল হতে পারে।
সামরিক মৈত্রী রক্ষা করার জন্য ফিলিপাইনের এই প্রচেষ্টা তার বৈদেশিক নীতির গতিবিধি পরিবর্তন সম্পর্কে ইঙ্গিত দেয়। বিশেষত, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রতি ফিলিপাইন সরকারের প্রকাশ্য বিরোধিতা নিয়ে আইনপ্রণেতাদের মধ্যে বিপরীত দৃষ্টিভঙ্গি জোরালো হয়ে উঠেছে। কারণ যুক্তরাষ্টে লাখ লাখ ফিলিপাইনির আত্মীয়স্বজন বসবাস করেন।
বিশেষজ্ঞরা বলেন, মার্কিন সেনাদের অনুপস্থিতিতে এই অঞ্চলে আরো দু’টি যৌথ প্রতিরক্ষা চুক্তি অর্থহীন হয়ে পড়বে এবং মার্কিন প্রতিরক্ষা সরঞ্জামাদি সংগ্রহ ও পরিচালনার কাজ কঠিন হবে। এটি প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে ওয়াশিংটনের সুযোগ-সুবিধাগুলো হ্রাস করবে। জাপান ও দক্ষিণ কোরিয়ায় দীর্ঘকাল ধরে উপস্থিত মার্কিন সেনাদের নিয়েও জটিলতা বাড়াবে। অন্য যেকোনো অঞ্চলের চেয়ে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় মার্কিন সামরিক বাহিনীর তৎপরতাকে সীমাবদ্ধ করবে।
ফিলিপাইনের পররাষ্ট্রনীতিতে এই পরিবর্তনের অন্যতম কারণ হলো চীনের প্রতি দুতার্তের দুর্বলতা ও সুসম্পর্ক। আর এটাকে ফিলিপাইনের বহু নাগরিকই সমুদ্রসীমায় অযথাযথ ভূমিকা রাখার কারণ মনে করে এবং দুতার্তেকে সন্দেহের চোখে দেখে।
দক্ষিণ চীন সাগরে চীনের আধিপত্য বিস্তারের প্রচেষ্টার কট্টর সমালোচক সুপ্রিম কোর্টের অবসরপ্রাপ্ত বিচারক আন্থোনিও কার্পিও বলেন, বেইজিংয়ের আধিপত্য ঠেকানোর জন্য মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সাথে প্রতিরক্ষা সম্পর্ক বজায় রাখা ফিলিপাইনের জন্য অত্যন্ত জরুরি। চীনকে মোকবেলা করার জন্য আমরা কেবলমাত্র মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকেই আশা করতে পারি।


আরো সংবাদ



premium cement

সকল