যুক্তরাষ্ট্র-তালেবান শান্তিচুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে পাকিস্তানকে আমন্ত্রণ
- ডন, বিবিসি ও রয়টার্স
- ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০২০, ০০:০০
আগামী ২৯ ফেব্রুয়ারি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও তালেবানের মধ্যে শান্তিচুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে যোগ দেয়ার জন্য পাকিস্তানকে আমন্ত্রণ জানিয়েছে কাতার। রেডিও পাকিস্তান মঙ্গলবার এই তথ্য জানিয়েছে।
গত সপ্তাহে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও তালেবান ঘোষণা করেছিল যে, তারা শনিবার কাতারের দোহায় একটি ঐতিহাসিক চুক্তি স্বাক্ষর করার জন্য প্রস্তুত রয়েছে, যা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বাধীন দীর্ঘতম যুদ্ধের অবসানের পথকে প্রশস্ত করবে। মঙ্গলবার এক বৈঠকে কাতার সরকারের পক্ষে পাকিস্তানে নিযুক্ত কাতারের রাষ্ট্রদূত সাকর বিন মুবারক আল-মনসুরি পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী শাহ মাহমুদ কুরেশিকে আমন্ত্রণ জানিয়েছেন বলেও রেডিও পাকিস্তান জানিয়েছে।
কুরেশি বলেন, আফগান শান্তি প্রক্রিয়াতে পাকিস্তান ও কাতার দুই দেশেরই ‘গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা’ রয়েছে। শান্তিচুক্তিকে স্বাগত জানিয়ে তিনি বলেন, আফগান সঙ্ঘাতের সামরিক কোনো সমাধান নেই বলে পাকিস্তান সবসময়ই আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে সঙ্কট নিরসনের দৃষ্টিভঙ্গি বজায় রেখেছে এবং বিশ্ব এখন একই অবস্থান গ্রহণ করছে।
রেডিও পাকিস্তানের খবরে বলা হয়েছে, কুরেশি আস্থা ব্যক্ত করেন যে, শান্তিচুক্তি আন্তঃআফগান সংলাপের দিকে এগিয়ে নিয়ে যাবে। পররাষ্ট্রমন্ত্রী শনিবার বলেন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র-তালেবান শান্তিচুক্তির খবর প্রকাশের পরে পাকিস্তান তার ভূমিকা পালন করেছে এবং সমস্ত প্রতিশ্রুতি পূরণ করছে। কুরেশি আরো বলেন, এখন আফগান সরকারের দায়িত্ব হচ্ছে শান্তি প্রক্রিয়াটিকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া। আন্তঃ-আফগান সংলাপের দিকে অগ্রসর হওয়ার জন্য একটি অন্তর্ভুক্তিমূলক প্রতিনিধিদল গঠন হোক এমনটি দেখতে চায় পাকিস্তান। তিনি বলেন,‘আমি আমার অভিজ্ঞতা থেকে দেখেছি যে আফগানিস্তানের জনগণ শান্তি চায়।
যুক্তরাষ্ট্র-তালেবান চুক্তি
চুক্তির আগে যুক্তরাষ্ট্র-তালেবান যুদ্ধবিরতি শুরু হয়েছে। ২২ তারিখ শনিবার থেকে যুক্তরাষ্ট্র ও আফগান তালেবানের মধ্যে সাত দিনের এক অস্ত্রবিরতি শুরু হয়েছে। মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেও শুক্রবার বলেছেন, শান্তি অন্বেষণের দীর্ঘপথে এটি এক গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ। উদ্যোগটি সফল হলে দুই পক্ষ প্রায় দুই দশকের সঙ্ঘাত অবসানের লক্ষ্যে প্রথম পর্যায়ের একটি চুক্তিতে স্বাক্ষর করবে। অস্ত্রবিরতি চুক্তি স্থানীয় সময় শুক্রবার মধ্যরাত থেকে কার্যকর হয়েছে। মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেও এবং তালেবান উভয় পক্ষই বিবৃতি জারি করে বলেছে যে তারা এক সপ্তাহের অস্ত্রবিরতির পরে ২৯ ফেব্রুয়ারি দোহায় এই চুক্তিতে স্বাক্ষর করতে সম্মত হয়েছে।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও তালেবান প্রতিনিধিদের মধ্যে এক বছরের বেশি সময় ধরে আলোচনার পর চুক্তিটি স্বাক্ষরিত হচ্ছে। তালেবান আলোচকেরা এক বিবৃতিতে বলেন, তাদের প্রত্যাশিত চুক্তিকে সামনে রেখে এক উপযোগী নিরাপত্তা পরিস্থিতি সৃষ্টি করা হবে। সব বিদেশী সৈন্য প্রত্যাহারের সাথে দেশে শান্তি প্রতিষ্ঠার প্রাথমিক কাজ শুরু হবে।
ন্যাটো মহাসচিব জেনস স্টলটেনবার্গ এ উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়ে বলেছেন, সহিংসতা হ্রাসে ও শান্তি প্রতিষ্ঠায় আস্থার সাথে অবদান রাখায় তালেবানের ইচ্ছা ও সামর্থ্যরে এক গুরুত্বপূর্ণ পরীক্ষা। আফগান সরকার এ আলোচনার অংশীদার নয়।
আফগান প্রেসিডেন্টের অভিষেক পেছাতে চায় যুক্তরাষ্ট্র
এ দিকে আফগান প্রেসিডেন্টের অভিষেক অনুষ্ঠানের পরিকল্পনা পিছিয়ে নিতে চায় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। আফগানিস্তানের প্রেসিডেন্ট আশরাফ গনির রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বীরা মার্কিন নেতৃত্বাধীন শান্তিচুক্তির প্রচেষ্টাকে ঝুঁকিপূর্ণ করার উদ্বেগের কারণে তার দ্বিতীয় মেয়াদে প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠান স্থগিত রাখা উচিত বলে মনে করে যুক্তরাষ্ট্র। অভিষেক অনুষ্ঠান পেছানোর এই বিষয়টি নিয়ে বিশ্বস্ত দু’টি সূত্র সোমবার এই তথ্য জানিয়েছে।
আফগানিস্তানের এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, গত ২৮ সেপ্টেম্বরের বিতর্কিত নির্বাচনের মাধ্যমে আশরাফ গনি গত সপ্তাহে বিজয় দাবি করেছেন এবং বৃহস্পতিবার শপথ গ্রহণের পরিকল্পনা করছেন। আফগান গণমাধ্যমের খবরে বলা হয়েছে, তার প্রতিপক্ষ ও সাবেক ডেপুটি আবদুল্লাহ আবদুল্লাহ নিজেকে বিজয়ী হিসেবে ঘোষণা করেছেন এবং সমান্তরালে অভিষেক অনুষ্ঠান করার পরিকল্পনা করছেন। দুইজনেরই বিজয়ী হওয়া ও ওয়াশিংটনের সমর্থন পাওয়ার দাবি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বাধীন শান্তি প্রক্রিয়াকে হুমকির মুখে ফেলে দিয়েছে।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা