২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫
`
দুই দিনে ৩৪ মামলা

বাবরি মসজিদ ইস্যুতে স্ট্যাটাস দেয়ায় ৯০ জনকে গ্রেফতার

অযোধ্যার জমি বিষয়ে সুন্নি ওয়াকফ বোর্ডের সিদ্ধান্ত ২৬ নভেম্বর
-

ভারতের বহুল আলোচিত বাবরি মসজিদ বা অযোধ্যা মামলার রায় নিয়ে সামাজিক মাধ্যমে পোস্ট দিয়ে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্ট করার অজুহাত তুলে ৯০ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। দেশটির উত্তরপ্রদেশ রাজ্য থেকে তাদেরকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
জানা গেছে, রায় ঘোষণার পর উত্তরপ্রদেশ রাজ্য পুলিশ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে কড়া নজরদারি চালাচ্ছে। গত দুই দিনে ৩৪টি মামলা দায়ের করেছে পুলিশ। এ ছাড়া গ্রেফতার করা হয়েছে অন্তত ৯০ জনকে।
উত্তরপ্রদেশের পুলিশের পক্ষ থেকে এক বিবৃতিতে জানানো হয়েছে, এখন পর্যন্ত সামাজিক মাধ্যমে আট হাজার ২৭৫টি পোস্টের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। তারা বাবরি মসজিদ মামলার রায় সম্পর্কিত তিন হাজার ৭১২টি পোস্টের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নিয়েছে; যার মধ্যে বেশ কিছু পোস্ট এরই মধ্যে মুছে দেয়া হয়েছে। এমনকি বন্ধও করে দেয়া হয়েছে অনেক অ্যাকাউন্ট।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নজরদারির পাশাপাশি খোলা হয়েছে প্রযুক্তিনির্ভর কন্ট্রোল রুমও। মূলত সেখানে বসেই অযোধ্যাসহ গোটা রাজ্যের পরিস্থিতির দিকে নজর রাখছে রাজ্য ও কেন্দ্রীয় বাহিনীর কর্মকর্তারা।
উল্লেখ্য, গত শনিবার বাবরি মসজিদ মামলার রায় ঘোষণা করে ভারতের সুপ্রিম কোর্ট। মামলার রায়ে বলা হয়, বাবরি মসজিদের ওই জমি সরকার পরিচালিত একটি ট্রাস্টের হাতে তুলে দেয়া হবে। সেখানে একটি রামমন্দির নির্মাণ করবে ট্রাস্ট। মসজিদ নির্মাণের জন্য শহরের অন্য কোনো জায়গায় মুসলমানদের পাঁচ একর জমি দেয়া হবে।
প্রতিবাদ সভায় অংশ নেয়া শিক্ষার্থীরা জানান, ‘আমরা কোনো অপ্রীতিকর ঘটনায় জড়াতে চাই না। শুধু জানাতে চাই যে, আদালত যে রায় দিয়েছেন, সেটা অযৌক্তিক। এই রায় মেনে নেয়ার প্রশ্নই আসে না।’
এনডিটিভি ও আলজাজিরা জানায়, বাবরি মসজিদের জায়গার বদলে ভারতের সুপ্রিম কোর্ট মুসলিমদের যে পাঁচ একর জমি দিতে সরকারকে আদেশ দিয়েছেন, তা নিয়ে আগামী ২৬ নভেম্বর এক বিশেষ বৈঠকের আয়োজন করা হবে বলে জানিয়েছে সুন্নি ওয়াকফ বোর্ড।
উত্তরপ্রদেশ রাজ্যের সুন্নি ওয়াকফ বোর্ডের চেয়ারম্যান জাফর আহমদ ফারুকির মতে, অযোধ্যা মামলার রায়ের বিষয়ে সর্বোচ্চ আদালত থেকে যে রায় এসেছে তাকে সবাই সম্মান করছে। তাই এ ক্ষেত্রে কোনো রিভিউ আবেদন জানানো হবে না। গত রোববার সুন্নি সেন্ট্রাল ওয়াকফ বোর্ড জানিয়েছে, কেন্দ্রীয় সরকারের পক্ষ থেকে দেয়া জমিতে আদৌ কোনো মসজিদ তৈরি হবে কি না, তা তারা ভেবে দেখবে।
বোর্ডের চেয়ারম্যান জাফর ফারুকি এক সংবাদ সম্মেলনে বলেছেন, ‘আগামী ২৬ নভেম্বর বোর্ডের সাধারণ সভায় এ-সংক্রান্ত একটি বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। মূলত সেখানেই সিদ্ধান্ত হবে যে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ মেনে আমরা মসজিদ তৈরির জন্য বরাদ্দকৃত পাঁচ একর জমি নেবো কি না। কেননা বিষয়টি নিয়ে অনেকের মধ্যে এখনো দ্বিমত রয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘আমার মনে হচ্ছে ইতিবাচক কথোপকথনের মাধ্যমেই সব নেতিবাচক ভাবনা দূর করা সম্ভব। যদিও প্রথমে ঠিক ছিল, বৈঠকটি হবে আগামী ১৩ নভেম্বর। তবে পরে তা স্থগিত করে নতুন সময় নির্ধারণ করা হয়। এখন সিদ্ধান্ত হয়েছে পরবর্তী ২৬ তারিখ হবে এই বৈঠক।’
যদিও তিনি এ বিষয়ে মধ্যস্থতাকারীর ভূমিকায় থাকতে চান না। তবে নিজের স্পষ্ট মতামত তুলে ধরতে আগ্রহী তিনি। তবে শুধু জমি গ্রহণই নয়, সেখানে শুধু মসজিদই হবে কি না, তা নিয়েও ভিন্ন মতামত রয়েছে ওয়াকফ বোর্ডের সদস্যদের। চেয়ারম্যান জানিয়েছেন, অনেকেই চান, সুপ্রিম নির্দেশে জমি নেয়া হোক। আর সেখানে মসজিদের পাশাপাশি তৈরি হোক একটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানও। পুরোটাই ঠিক করা হবে ২৬ নভেম্বরের বৈঠকে। আর যদি জমি নেয়ার সিদ্ধান্ত হয়, সে ক্ষেত্রে তা কিভাবে কোন পরিস্থিতিতে নেয়া হবে, সেটাও ঠিক করা হবে বলে জানান ফারুকি।
অবশ্য আদালতের রায়ে তীব্র অসন্তোষ প্রকাশ করেছে মজলিস-ই-ইত্তেহাদুল মুসলিমিন (এআইএমআইএম)। ঐতিহাসিক বাবরি মসজিদের বদলে অন্যত্র মসজিদ নির্মাণের জন্য সুপ্রিম কোর্ট যে পাঁচ একর জমির প্রস্তাব দিয়েছেন এরই মধ্যে তা প্রত্যাখ্যান করেছেন দলটির প্রধান আসাদুদ্দিন ওয়াইসি এমপি। তিনি বলেছেন, ‘এসব দানের কোনো জমি মুসলমানদের প্রয়োজন নেই। আমরা তা প্রত্যাখ্যান করছি।’
শনিবার রাতে হায়দরাবাদে একটি জনসভায় দেয়া ভাষণে আসাদউদ্দিন প্রশ্ন রেখে বলেন, ‘বাবরি মসজিদ যদি আইনত বৈধ হয়, তবে কেন যারা সেটি ভেঙে দিয়েছিল তাদের হাতে জমি অর্পণ করা হলো? আর যদি মসজিদ অবৈধ হয়, তবে কেন মামলা চলছে এবং বিজেপির সিনিয়র নেতা এল কে আদভানি অভিযুক্ত এবং তার বিরুদ্ধে মামলা প্রত্যাহার হয়নি কেন? এটি একটি মৌলিক প্রশ্ন যে, আমরা এই রায় নিয়ে সন্তুষ্ট নই।’ তিনি আরো বলেন, বাবরি মসজিদ আমার আইনি অধিকার। আমি মসজিদের পক্ষে লড়াই করছি, জমির জন্য নয়।
নেহরু বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রতিবাদ সভা
এ দিকে বাবরি মসজিদ মামলায় ভারতীয় সুপ্রিম কোর্টের দেয়া রায়ের সমালোচনা করে প্রতিবাদ সভা করেছেন জওয়াহেরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয়ের (জেএনইউ) শিক্ষার্থীরা। বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে অনুষ্ঠিত এই প্রতিবাদ সভায় রায়টি পর্যালোচনা করা হয়। দাবি করা হয়, আদালত এ রায়ের মধ্য দিয়ে মুসলমানদের বিপক্ষে অবস্থান নিয়েছে।
প্রতিবাদ সভার আয়োজক শারজিল ইমাম বলেন, ‘রায় নিয়ে আলোচনা করতে আমরা একটি সভা ডেকেছিলাম। আমাদের হাতে রায়ের একটি কপি ছিল। রায়টির গুরুত্বপূর্ণ কিছু দিক এবং কী করে বিচার বিভাগ আবারো মুসলমানদের বিপক্ষে অবস্থান নিলো, তা নিয়ে আমরা আলোচনা করেছি।’


আরো সংবাদ



premium cement
‘পেশাগত স্বার্থে সাংবাদিকদের ঐক্যবব্ধ হতে হবে’ গাজাবাসীর প্রধান কথা- ‘আমাদের খাবার চাই’ অধিকার প্রতিষ্ঠায় দেশপ্রেমিক জনতার ঐক্যের বিকল্প নেই : ডা: শফিকুর রহমান সোনাগাজীতে জামাতে নামাজ পড়ে বাইসাইকেল পুরস্কার পেল ২২ কিশোর গফরগাঁওয়ে পানিতে ডুবে শিশুর মৃত্যু দ্রব্যমূল্য ঊর্ধ্বগতিতে সাধারণ মানুষ দিশেহারা : আমিনুল লিবিয়ায় নিয়ে সালথার যুবককে নির্যাতনের ঘটনায় মামলা, গ্রেফতার ১ মনুষ্য চামড়ায় তৈরি বইয়ের মলাট সরানো হলো হার্ভাড বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আওয়ামী লীগকে বর্জন করতে হবে : ডা: ইরান আমরা একটা পরাধীন জাতিতে পরিণত হয়েছি : মেজর হাফিজ তরুণীর লাশ উদ্ধারের পর প্রেমিকসহ ৪ জনের বিরুদ্ধে মামলা

সকল