২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫
`

নাগা চুক্তিতে মনিপুর-আসাম অরুনাচলের উদ্বেগ

প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সাথে নাগা নেতারা হফাইল ছবি -

নাগা গ্রুপগুলোর সাথে গত ৩১ অক্টোবর ভারতের কেন্দ্রীয় সরকারের সমঝোতার বিষয়টি প্রকাশ করতে ‘বিলম্ব’ হওয়ায় মনিপুর, অরুনাচল প্রদেশ ও আসামে উদ্বেগ বাড়ছে। মনিপুরে বিক্ষোভ চলছে। মেইতেই সম্প্রদায়ের প্রতিনিধিত্বকারী গ্রুপগুলো আশঙ্কা করছে যে সরকার হয়তো এই তিন রাজ্যে নাগা প্রাধান্যপূর্ণ এলাকাগুলোকে একীভূত করার নাগাদের দাবি মেনে নেবে।
অন্য দিকে আসামের মুখ্যমন্ত্রী সর্বনান্দ সানোয়াল বৃহস্পতিবার নয়াদিল্লিতে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের সাথে বৈঠক করে নাগা চুক্তি নিয়ে রাজ্যের কিছু অংশে সৃষ্ট আশঙ্কা আর উদ্বেগের কথা জ্ঞাপন করেছেন। এর আগে মনিপুরের মুখ্যমন্ত্রী বিরেন সিং স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে অনুরোধ করেছিলেন যাতে তার রাজ্যের আঞ্চলিক সীমানা সুরক্ষিত হয়। বুধবার অরুনাচল প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী পেমা খান্ডু বলেছিলেন, আসাম, মনিপুর ও অরুনাচলের সব নাগা-জনবহুল অঞ্চলকে একীভূত করে এনএসসিএনের (আইএম) বৃহত্তর নাগাল্যান্ড বা ‘নাগালিম’ তৈরির যে দাবি করেছে তা তার সরকার মেনে নেবে না।
চুক্তি সইয়ের নামে অরুনাচল প্রদেশের নাগা প্রাধান্যপূর্ণ এলাকাগুলোতে প্রশাসনিক হস্তক্ষেপ বা ‘ভূখণ্ডগত অখণ্ডতায়’ প্রভাব ফেলে এমন কোনো পদক্ষেপের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ কর্মসূচি শুরু করার হুমকি দিয়েছে অল অরুনাচল প্রদেশ স্টুডেন্টস ইউনিয়ন। নাগা গ্রুপগুলোর সাথে চুক্তি চূড়ান্ত করার আগে তিনটি রাজ্যের সংশ্লিষ্টদের সাথে আলোচনা করা হবে বলে ভারতের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বারবার আশ্বস্ত করা সত্ত্বেও এসব ঘোষণা দেয়া হচ্ছে।
সম্ভাব্য নাগা চুক্তির বিরুদ্ধে আন্দোলনে নেতৃত্ব দিতে গঠিত পাঁচটি নাগরিক সংস্থার জোট কো-অর্ডিনেশন কমিটি ফর ইন্টিগ্রেটি অব মনিপুরের এক নেতা বলেন, কেবল আশ্বাসে কোনো কাজই হবে না। আমরা চুক্তির (তা ২০১৫ সালে এনএসসিএন-আইএমের সাথে সই করা কাঠামো চুক্তিই হোক কিংবা ৩১ অক্টোরব নাগা গ্রুপগুলোর সাথে হওয়া কথিত চুক্তি যাই হোক না কেন) বিষয়বস্তু অবিলম্বে প্রকাশ করার জন্য কেন্দ্রের প্রতি দাবি জানাচ্ছি। কেন্দ্র কেন এখনো ২০১৫ সালের চুক্তি প্রকাশ করছে না?
নাগা গ্রুপগুলোর দাবি করা ‘গ্রেটার নাগালিম’ প্রশ্নে তারা উদ্বিগ্ন। নাগাল্যান্ড ও প্রধানত আসাম, মনিপুর ও অরুনাচল প্রদেশের নাগা প্রাধান্যপূর্ণ এলাকাগুলো নিয়ে এই ‘গ্রেটার নাগালিম’ গঠনের দাবি তোলা হয়েছে। অরুনাচল প্রদেশ ও মনিপুরে অন্তত তিনটি জেলা রয়েছে নাগা প্রধান্যপূর্ণ। একইভাবে আসামের দু’টি জেলায় নাগাদের আধিক্য রয়েছে।
আসামের মুখ্যমন্ত্রীর কার্যালয় বলেছে, বৈঠক চলাকালীন সর্বনান্দ সোনোয়াল প্রস্তাবিত নাগা শান্তি চুক্তির পরিপ্রেক্ষিতে আসামের বিরাজমান জনসাধারণের মনোভাব সম্পর্কে প্রধানমন্ত্রীকে অবহিত করেছিলেন। প্রধানমন্ত্রী মোদি সোনোয়ালকে আশ্বাস দিয়েছেন কেন্দ্র সরকার কোনো সিদ্ধান্ত নেয়ার আগে আসামের জনগণের স্বার্থ ও আকাক্সক্ষা বজায় রাখবে।
সূত্র দাবি করেছে, সরকার ও এনএসসিএন-আইএম ও নাগা ন্যাশনাল পলিটিক্যাল গ্রুপসহ নাগা গ্রুপগুলো আলাদা পতাকা, সংবধান ও নাগা প্রাধান্যপূর্ণ এলাকাগুলো একীভূত করার নাগাদের দাবির ব্যাপারে কিছুটা সমঝোতায় উপনীত হয়েছে। তবে ওই তিন রাজ্যে মারাত্মক প্রতিক্রিয়ার আশঙ্কায় তা প্রকাশ করা হচ্ছে না। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় সনোয়ালের দফতর থেকে প্রকাশিত এক বিবৃতিতে বলা হয়, যেকোনো চুক্তির আগে আসামের জনগণের স্বার্থের বিষয়টি বিবেচনা করার জন্য অমিত শাহের প্রতি অনুরোধ জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। এতে বলা হয়, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসামের মুখ্যমন্ত্রীকে আশ্বস্ত করেছেন যে রাজ্য ও এর জনগণের স্বার্থের বিরুদ্ধে যায়, এমন কিছুই করা হবে না।


আরো সংবাদ



premium cement