২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫
`

বিক্ষোভকারীদের কাছে ৭২ ঘণ্টা সময় চাইলেন হারিরি

কর আরোপের প্রতিবাদে তৃতীয় দিনের মতো রাস্তায় আন্দোলনকারীরা; নির্ধারিত সময়ের মধ্যে জোটের শরিকদের অর্থনৈতিক সঙ্কট সমাধানের উপায় হাজির করতে বলেছেন প্রধানমন্ত্রী
-

তীব্র আন্দোলনের মুখে জনগণের দাবি পূরণে ৭২ ঘণ্টা সময় চেয়েছেন লেবাননের প্রধানমন্ত্রী সাদ হারিরি। গত শুক্রবার সন্ধ্যায় রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যমে দেয়া এক ভাষণে দেশের সম্পত্তি বিনষ্ট না করে বিক্ষোভকারীদের শান্ত থাকার আহ্বান জানিয়েছেন তিনি। এ সময় যেকোনো পণ্য ও সেবার ওপর নতুন কর আরোপ না করার আশ্বাস দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। তা ছাড়া তিনি জোটের অন্য নেতাদের অর্থনৈতিক সঙ্কট নিরসনের উপায় খুঁজে বের করতে ৭২ ঘণ্টার সময় বেঁধে দিয়েছেন।
এ দিকে বিক্ষোভের জেরে উত্তাল লেবাননে নিজ দেশের নাগরিকদের ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে সৌদি আরব, কুয়েত, মিসর ও বাহরাইনসহ বেশ কয়েকটি দেশ। আপাতত সেখানে অবস্থানকারী নাগরিকদের বিক্ষোভ এড়িয়ে চলার পরামর্শ দেয়া হয়েছে।
এর আগে, গত শুক্রবার পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে না আসা পর্যন্ত নিজ দেশের দূতাবাস বন্ধ রাখার ঘোষণা দিয়েছিল ব্রিটেন ও কানাডা। জনগণের দাবি দ্রুত মেনে নিতে হারিরিকে অনুরোধ জানিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।
অন্য দিকে গতকাল শনিবার লেবাননের হিজবুল্লাহ নেতা সাইয়েদ হাসান নাসরুল্লাহ বলেছেন, তার দল ব্যাপক বিক্ষোভের মধ্যেও সরকারের পদত্যাগের দাবি করবে না। নাসরুল্লাহ টেলিভিশনের ভাষণে বলেন, আমি সরকারকে সমর্থন করছি। কিন্তু নতুন এজেন্ডা এবং নতুন চেতনার আহ্বান জানিয়ে তিনি আরো বলেছেন, চলমান বিক্ষোভ এগিয়ে যাওয়ার পথ দেখিয়েছে। সরকারের উদ্দেশে তিনি বলেন, আর নতুন কর আরোপ নয়। নাসরুল্লাহ আরো বলেন, দরিদ্রদের ওপর যেকোনো শুল্ক আরোপ করা হলে তিনি সমর্থকদের রাস্তায় নামার আহ্বান জানাবেন।
হোয়াটসঅ্যাপসহ বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নতুন কর আরোপের ঘোষণা দিয়েছিল লেবানন সরকার। গত বৃহস্পতিবার প্রধানমন্ত্রী সাদ হারিরি এই ঘোষণা দেয়ার পরপরই প্রতিবাদ বিক্ষোভে উত্তাল হয়ে ওঠে গোটা দেশ। করারোপের প্রতিবাদে বিক্ষোভ শুরু হলেও এটি এখন রূপ নিয়েছে সরকারবিরোধী আন্দোলনে। গতকাল আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম জানায়, প্রবল চাপের মুখে হোয়াটসঅ্যাপ থেকে কর প্রত্যাহারের ঘোষণার পরেও বিক্ষোভ চালিয়ে যাচ্ছে লেবাননবাসী। জনগণের ক্রয়ক্ষমতা কমে যাওয়া, জীবনযাত্রার মানের অবনতি ও দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির প্রতিবাদে সরকারের পদত্যাগ চেয়ে শুক্রবার রাজধানী বৈরুতে জমা হয়েছিল প্রায় ১০ হাজার মানুষ। পার্লামেন্ট ভবনের সামনে সাদ হারিরির পদত্যাগ চেয়ে স্লোগান দেয়ার সময় পুলিশের বাধার মুখে পড়ে বিক্ষোভকারীরা। উত্তেজিত জনগণকে লক্ষ্য করে কাঁদানে গ্যাস ও রাবার বুলেট ছোড়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। এ সময় অন্তত ১৭২ জন আহত হন বলে জানা গেছে। ৭০ বিক্ষোভকারীকে আটকও করেছে পুলিশ।
পুলিশি বাধা সত্ত্বেও শনিবার বৈরুতের রাজপথে নিজেদের দাবি-দাওয়া নিয়ে তৃতীয় দিনের মতো আন্দোলনে নামছে বিক্ষোভকারীরা। গত এক বছরের মধ্যে সরকারের বিরুদ্ধে লেবাননে এটিই সবচেয়ে বড় বিক্ষোভের ঘটনা বলে জানিয়েছে গণমাধ্যমগুলো। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রিয়া আল হাসান বলেছেন, বিক্ষোভকারীদের সাথে সংঘর্ষ এড়াতে নিরাপত্তা বাহিনীকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। প্রেসিডেন্ট মিশেল আউনের সভাপতিত্বে মন্ত্রীরা জরুরি বৈঠকে বসেছেন জনগণের দাবি পর্যালোচনা করতে।


আরো সংবাদ



premium cement