কাশ্মিরিদের ‘ভালো আছি’ বলতে বাধ্য করছে ভারত
আংশিক মোবাইল সেবা চালু বন্ধ থাকবে ইন্টারনেট- পিটিআই, এনডিটিভি ও আনন্দবাজার
- ১৫ অক্টোবর ২০১৯, ০০:০০
দুই মাসেরও বেশি সময় পর পর্যটকদের জন্য খুলে দেয়া হলো জম্মু-কাশ্মির। গতকাল সোমবার থেকে আংশিকভাবে চালু করা হয়েছে মোবাইল পরিষেবাও। প্রশাসন সাধারণ মানুষকে অনুরোধ করছে স্বাভাবিক জীবনে ফিরে যেতে। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ প্রায় প্রতিদিন জোর দিয়ে বলছেন, গত দুই মাসে কাশ্মিরিদের গায়ে একটি বুলেটও লাগেনি। কাশ্মির নিয়ে বিরোধীদের আশঙ্কা মিথ্যা প্রমাণ হয়েছে।
এ অবস্থায় সমাজকর্মীদের একটি দল সম্প্রতি সেখান থেকে ঘুরে এসে জানিয়েছেন উল্টো চিত্রের কথা। সরেজমিন পরিদর্শন শেষে তারা জানান, ভালো আছি বলতে বাধ্য করা হচ্ছে কাশ্মিরিদের। গত শনিবার দিল্লিতে আনুষ্ঠানিকভাবে রিপোর্ট প্রকাশ করেন তারা। সরকার যে দাবি করছে তার সাথে বাস্তবতার মিল নেই বলে জানিয়েছেন ওই সমাজকর্মীরা। তারা বলেন, ভালো আছি বলতে বাধ্য করা হচ্ছে কাশ্মিরিদের। তবে অহিংস পথে প্রতিবাদ জারি রেখেছে তারা। সরকার অনুরোধ করলেও স্বায়ত্তশাসন কেড়ে নেয়ার প্রতিবাদে দোকানপাট ও হোটেল বন্ধ রেখে অসহযোগ আন্দোলন চলছে কাশ্মিরে। চার সমাজকর্মীর দলে আছেন মনোবিদ অনিরুদ্ধ কালা, জনস্বাস্থ্য কর্মী ব্রিনেল ডি সুজা, সাংবাদিক রেবতি লাউল ও সমাজকর্মী শবনম হাসমি। তারা কাশ্মিরে ছিলেন ২৫-৩০ সেপ্টেম্বর, জম্মুতে ৬-৭ অক্টোবর। তারা সমাজের সর্বস্তরের মানুষের সাথে কথা বলেছেন। তার মধ্যে আছেন রাজনীতিক, আমলা, গৃহবধূ, স্কুলশিক্ষক, ব্যবসায়ী, ফলবিক্রেতা, ট্যাক্সিচালক, ছাত্র, কবি, চাষি, শিশু, সাংবাদিক, সমাজকর্মী, ক্যাটারিং ব্যবসায়ী। আছেন পণ্ডিত, শিখ, খ্রিষ্টানরাও।
শ্রীনগর থেকে বারামুলা, অনন্তনাগ থেকে বাদগাম এবং জম্মু সর্বত্র একই প্রতিক্রিয়া পেয়েছেন তারা। দোকানপাট খোলা রাখতে, ঘর থেকে বের হতে বাধ্য করা হচ্ছে তাদের। এর মাধ্যমে তারা যে ভালো আছে, সেটাই প্রমাণ করতে চাইছে সরকার। ৩৭০ অনুচ্ছেদ বাতিল হওয়ার পরে জম্মুতে মানুষ উল্লাস করছেÑ এমন একটি ছবি সংবাদমাধ্যমে তুলে ধরা হয় বারবার। তবে সেটা অনেকটাই সত্য নয়।
সংবাদ সম্মেলনে দাবি করা হয়, ‘কাশ্মিরের থেকেও কমসংখ্যক মানুষ জম্মুতে মুখ খুলেছেন। তাদের বাধ্য করা হচ্ছে বলতে যে, তারা খুশি!’
আংশিক মোবাইল পরিষেবা চালু, বন্ধ থাকবে ইন্টারনেট
দুই মাসেও বেশি সময় ধরে বন্ধ থাকার পর জম্মু ও কাশ্মিরে সরকারি মোবাইল অপারেটর বিএসএনএলের পোস্টপেইড পরিষেবা চালু করা হয়েছে। তবে এখনই সেখানে চালু হচ্ছে না ইন্টারনেট সেবা। সোমবার মোবাইল সেবা চালু করা হয় বলে জানিয়েছে সংবাদ সংস্থা পিটিআই। এর আগে বৃহস্পতিবার থেকে পর্যটকদের জন্য খুলে দেয়া হয় কাশ্মির। তবে পর্যটকদের উপস্থিতি ছিল হাতে গোনা।
এর আগে গত মাসে সরকার জম্মু ও কাশ্মিরে ল্যান্ডলাইন সংযোগ পুনরুদ্ধার করে, তবে সরকার পরিচালিত সংস্থা বিএসএনএল টেলিফোন সংযোগ উপত্যকার মাত্র কয়েকটি বাড়িতেই আছে। তাই ল্যান্ডলাইন চালু হলেও মোবাইল পরিষেবার ওপর এই বিধিনিষেধের ফলে স্থানীয় বাসিন্দারা হতাশ হয়ে পড়েছিল এবং প্রয়োজনীয় পরিষেবাগুলো ব্যাহত হচ্ছিল তাদের। জাতিসঙ্ঘ, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রসহ বেশ কয়েকটি দেশ কাশ্মিরে প্রয়োগ করা এই নিষেধাজ্ঞার বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে। যদিও জম্মু ও কাশ্মির নিয়ে এই সিদ্ধান্তকে ঐতিহাসিক বলে বর্ণনা করে ক্ষমতাসীন মোদি সরকার। পাশাপাশি এই সিদ্ধান্ত নেয়ার ক্ষেত্রে কংগ্রেসের ‘অক্ষমতা’কে বারবার তুলে ধরে বিজেপি। নরেন্দ্র মোদি সরকারের দ্বিতীয়বার ক্ষমতায় আসার পর এখনো পর্যন্ত এই সরকারের এটি অন্যতম বড় পদক্ষেপ হিসেবে তুলে ধরে বিজেপি।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা