২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫
`

সৌদির তেলক্ষেত্রে হামলায় ইরান জড়িত : ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী

-

সৌদি আরবের দু’টি তেলক্ষেত্রে হামলার জন্য ইরান দায়ী বলে ধারণা ব্রিটেনের। গতকাল সোমবার ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন বলেছেন, হামলার প্রতিক্রিয়ায় যুক্তরাষ্ট্র এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নের সাথে যৌথভাবে কাজ করবে ব্রিটেন।
গত ১৪ সেপ্টেম্বর সৌদি আরবের রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন কোম্পানি আরামকোর দু’টি তেলক্ষেত্রে ভয়াবহ ড্রোন হামলা হয়। ইয়েমেনের বিদ্রোহী গোষ্ঠী হাউছিরা তেলক্ষেত্রে হামলার দায় স্বীকার করলেও সৌদি আরব ও যুক্তরাষ্ট্র বরাবরের মতো ইরানকে দায়ী করছে। এবার সেই তালিকায় নিজের নাম লিখিয়েছেন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন। তবে ইরান হামলার এই অভিযোগ অস্বীকার করেছে। ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী এমনই এক সময় সাংবাদিকদের সামনে মন্তব্যটি করলেন, যখন জাতিসঙ্ঘের ৭৪তম সাধারণ অধিবেশনে অংশ নিতে তিনি নিউ ইয়র্কের পথে রওনা দিয়েছেন। যেখানে তার ইরানি প্রেসিডেন্ট হাসান রুহানির সাথেও একটি বিশেষ বৈঠক করার কথা রয়েছে।
নিউ ইয়র্কে জাতিসঙ্ঘের সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে যোগ দিতে সোমবার ব্রিটেন ছেড়েছেন প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন। বিমানে সাংবাদিকদের সাথে আলাপকালে ব্রিটিশ এই প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আরামকোর তেলক্ষেত্রে হামলার জন্য ইরানের জড়িত থাকার জোরালো সম্ভাবনা আছে বলে ধারণা করছে ব্রিটেন। আমাদের ধারণা, খুব সম্ভবত ইরানই এই হামলা চালিয়েছে। ‘আমাদের মার্কিন ও ইউরোপীয় বন্ধুদের সাথে হামলার প্রতিক্রিয়ায় কাজ করব, যাতে উপসাগরীয় অঞ্চলের উত্তেজনা প্রশমিত হয়।’
ব্রিটেনের সরকারি এক কর্মকর্তা বলেছেন, হামলার ভয়াবহতার মাত্রা, সক্ষমতা ও পরিসীমা বিবেচনায় হাউছিদের জড়িত থাকার দাবি ‘অকল্পনীয়।’ এটা কল্পনাতীত। এই হামলা ইরান সরকারের অনুমতি ছাড়া চালানো সম্ভব নয়। ইরানের বিরুদ্ধে ব্রিটেন কোনো ধরনের সামরিক অভিযান চালাবে কি না, এমন এক প্রশ্নের জবাবে বরিস জনসন বলেছেন, সৌদি আরবকে রক্ষায় যুক্তরাষ্ট্রের একটি প্রস্তাব অত্যন্ত নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছে ব্রিটেন। তিনি বলেন, ‘সৌদি আরব কিংবা যুক্তরাষ্ট্র যদি পরিষ্কারভাবে আমাদের আহ্বান জানায়, তাহলে আমরা কিভাবে তাদের উপকার করতে পারি সে বিষয়ে বিবেচনা করে সিদ্ধান্ত নেব।’

এ দিকে সৌদির সরকারি প্রেস এজেন্সি (এসপিএ) জানায়, শনিবার (১৪ সেপ্টেম্বর) স্থানীয় সময় ভোর ৪টায় আবকাইক ও খুরাইসে তেল স্থাপনায় ড্রোন হামলার কারণে সৃষ্ট আগুন এরই মধ্যে আরামকোর শিল্প নিরাপত্তাদল নিয়ন্ত্রণ করতে পেরেছে। যদিও এর জন্য দেশের সার্বিক তেল ও গ্যাস উৎপাদন অনেকটাই কমে গেছে।
অপর দিকে, গত সোমবার (১৬ সেপ্টেম্বর) ওভাল অফিসে সাংবাদিকদের সাথে আলাপকালে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছিলেন, ‘দৃশ্যত সৌদি আরবের তেলক্ষেত্রে হামলার জন্য ইরান একমাত্র দায়ী। তবে সে ক্ষেত্রে ওয়াশিংটন অবশ্যই তেহরানের সাথে যুদ্ধ এড়িয়ে চলতে চায়।’
পরিচয় গোপন রাখার শর্তে একজন মার্কিন কর্মকর্তা বলেন, ‘গত সপ্তাহে সৌদির তেলক্ষেত্রে যে হামলা ইরান থেকে হয়েছে তা ছিল ক্রুজ মিসাইল। ট্রাম্প প্রশাসন সিদ্ধান্ত নিয়েছে, জাতিসঙ্ঘের আসন্ন সাধারণ অধিবেশনে সংশ্লিষ্ট প্রমাণাদিসহ বিষয়টি উত্থাপন করা হবে।’
যদিও ইরান এরই মধ্যে সরাসরি অভিযোগটি প্রত্যাখ্যান করেছে। দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী মুহাম্মাদ জাওয়াদ জারিফ মার্কিন প্রশাসনকে অভিযোগের খেলা বন্ধের আহ্বান জানিয়ে বলেছেন, ‘এ ধরনের অবান্তর অভিযোগ উত্থাপনের মাধ্যমে নির্যাতিত ইয়েমেনিদের পাল্টা জবাব কখনোই বন্ধ করা যাবে না।’


আরো সংবাদ



premium cement