২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫
`

তেল ক্ষেত্রে হামলায় ইরানের মদদ সন্দেহাতীত : সৌদি আরব

রিয়াদে সৌদি যুবরাজের সাথে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী পম্পেওর বৈঠক হইন্টারনেট -

সৌদি আরব বলেছে, তাদের তেল ক্ষেত্রে ড্রোন হামলায় ইরানের মদদ থাকার ব্যাপারে কোনো সন্দেহের অবকাশ নেই। এ হামলা ইরানের আগ্রাসনের অংশ। গত বুধবার এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলেছেন সৌদি প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র কর্নেল তুর্কি আল মালকি। তার এ বক্তব্যের পর মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন, ইরানের সাথে যুদ্ধ করা ছাড়াও অনেক বিকল্প আছে।
কর্নেল তুর্কি আল মালকি বলেছেন, গত শনিবার সৌদি আরবের তেল স্থাপনায় যে হামলা হয়েছে তা চালানো হয়েছে উত্তর দিক থেকে। এতে যে ইরানের মদদ রয়েছে তা নিয়ে কোনো সন্দেহের অবকাশ নেই। তবু প্রকৃতপক্ষে কোন স্থান থেকে ওই হামলা চালানো হয়েছিল, তা নিয়ে তদন্ত করছে সৌদি আরব। সংবাদ সম্মেলনে তিনি হামলায় ব্যবহৃত অস্ত্রের বিধ্বস্ত অংশগুলো প্রদর্শন করেন। তিনি বলেন, এ হামলা ইয়েমেন থেকে চালানো হয়নি। যে ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করা হয়েছে হামলায় তার অংশবিশেষ পাওয়া গেছে। তা থেকে অকাট্য প্রমাণ মিলেছে যে, ইরান আগ্রাসন চালিয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে তুর্কি আল মালকি বলেন, মোট ১৮টি ড্রোন ও সাতটি ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়া হয়েছিল। এর মধ্যে রয়েছে ইরানিয়ান ডেল্টা উইংয়ের মনুষ্যবিহীন অস্ত্র। তিনি আরো বলেন, ক্রুজ মিসাইলের পাল্লা হলো ৭০০ কিলোমিটার। এর অর্থ হলো এসব মিসাইল ইয়েমেনের ভেতর থেকে সৌদি আরবে হামলায় ব্যবহার হতে পারে না। সংবাদ সম্মেলনে তিনি একটি সার্ভিলেন্স ভিডিও দেখান। তাতে দেখা যায়, একটি ড্রোন দেশটির উত্তর দিক থেকে আসছে। কর্নেল তুর্কি আল মালকি বলেন, এসব অস্ত্রই ইরানের শাসকগোষ্ঠী এবং রেভ্যুলুশনারি গার্ডরা বেসামরিক স্থাপনায় হামলায় ব্যবহার করছে। সাংবাদিকেরা প্রশ্ন করলে এ জন্য তিনি সরাসরি ইরানকে হামলার জন্য দায়ী করেননি। তবে বলেছেন, অপরাধীদের অবশ্যই চিহ্নিত করা হয়েছে এবং তাদেরকে জবাবদিহিতার আওতায় আনা হবে।
এ দিকে এ হামলায় জড়িত থাকার কথা বারবার অস্বীকার করে আসছে ইরান। যদি তাদেরকে এ হামলার জন্য টার্গেট করে যুক্তরাষ্ট্র, তা হলে তার তাৎক্ষণিক জবাব দেয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছে ইরান। কর্নেল তুর্কি আল মালকির সংবাদ সম্মেলনের পর ইরানের প্রেসিডেন্ট হাসান রুহানির একজন উপদেষ্টা হিসামুদ্দিন আশেনা বলেছেন, সৌদি আরব প্রমাণ করেছে তারা কিছুই জানে না। তিনি টুইটারে লিখেছেন, ওই সংবাদ সম্মেলন প্রমাণ করে যে, মিসাইল ও ড্রোন কোথায় তৈরি এবং কোথা থেকে তা ছোড়া হয়েছে এ বিষয়ে কিছুই জানে না সৌদি আরব। তা ছাড়া দেশটির প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা কেন এগুলো আকাশে শনাক্ত করতে বা তা নিষ্ক্রিয় করতে পারল না, তা ব্যাখ্যা করতে ব্যর্থ হয়েছে তারা।
সৌদি আরবে হামলার জন্য দায়ী ইয়েমেনের বিদ্রোহী হাউছিরাÑ এ বক্তব্যেই অটল আছে ইরান। গত বুধবার দেশটির প্রেসিডেন্ট রুহানি বলেছেন, সৌদি আরব নেতৃত্বাধীন জোট ইয়েমেনের ভেতরে যে হস্তক্ষেপ করছে তার পরিণামে বৃহত্তর একটি যুদ্ধের সূচনা হতে পারে। হাউছিদের ওই হামলা তারই সতর্কতা। কিন্তু সৌদি আরবের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র আল মালকি বলেছেন, ইরান যা-ই বলার চেষ্টা করুক, ওই হামলা ইয়েমেন থেকে চালানো হয়নি। এমন হামলা হাউছি বিদ্রোহীদের পক্ষে চালানো সম্ভব নয়। এ বিষয়ে কিংস কলেজ লন্ডনের একজন লেকচারার আন্দ্রেয়াস ক্রিগ আলজাজিরাকে বলেছেন, হামলাকে কেন্দ্র করে যেসব প্রশ্ন উঠেছিল তার কিছুটা ব্যাখ্যা দেয়ার চেষ্টা করা হয়েছে সংবাদ সম্মেলনে। তিনি বলেছেন, প্রশ্ন উঠেছে কিভাবে এতটা নিখুুঁত টার্গেট চালানো সম্ভব হলো তাদের পক্ষে, যেখানে সৌদি আরবের রয়েছে আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা। এ ক্ষেত্রে একটি ব্যাখ্যা হলো তারা ক্ষেপণাস্ত্র হামলার জন্য দক্ষিণ দিকে নজর রাখছিল, উত্তর দিকে নয়। ফলে সৌদি আরবের ওই সংবাদ সম্মেলনকে বাগ্যুদ্ধ হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন তিনি। তিনি আরো বলেছেন, সৌদি আরব একটি ঘটনা দাঁড় করানোর চেষ্টা করছে এবং এ ক্ষেত্রে তারা আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছ থেকে সহানুভূতি পাওয়ার চেষ্টা করছে।
ইরানের সাথে যুদ্ধ ছাড়াও অনেক বিকল্প আছে : ট্রাম্প
এ দিকে রয়টার্স জানায়, তেল স্থাপনায় হামলার জন্য সৌদি আরব তেহরানকে দায়ী করার পর ইরানের সাথে যুদ্ধ করা ছাড়াও অনেক বিকল্প আছে বলে মন্তব্য করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। গত বুধবার লস অ্যাঞ্জেলসে ট্রাম্প সাংবাদিকদের বলেন, ‘অনেক বিকল্প আছে। চূড়ান্ত উপায়টি তো আছেই, এ ছাড়াও অনেক বিকল্প আছে। আমরা দেখছি। আমি বলছি চূড়ান্ত উপায় বলতে যুদ্ধে যাওয়া বোঝাচ্ছে।’
সৌদি আরব সফরে গিয়ে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেও হামলাটিকে ‘যুদ্ধের শামিল’ বলে বর্ণনা করেছেন। কিন্তু প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের কণ্ঠে সতর্কতার আভাস ছিল। এক টুইটে ট্রাম্প জানিয়েছেন, ইরানের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা ‘যথেষ্ট বৃদ্ধি করার’ জন্য মার্কিন অর্থ মন্ত্রণালয়কে নির্দেশ দিয়েছেন তিনি। পরবর্তী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে অনির্দিষ্ট, শাস্তিমূলক অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞার পদক্ষেপগুলো ঘোষিত হবে বলে সাংবাদিকদের জানিয়েছেন তিনি। সৌদি আরব বলেছেÑ ‘বৈশ্বিক মনোভাব পরীক্ষার জন্যই’ হামলাটি চালানো হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের দাবির পথ ধরে ও সৌদির মন্তব্যের কয়েক ঘণ্টা পরই ট্রাম্প ওই টুইটটি করেন।

 


আরো সংবাদ



premium cement
টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের দূত হলেন উসাইন বোল্ট ডিএমপির অভিযানে গ্রেফতার ৩৭ বাংলাদেশে নতুন করে বাড়ছে ম্যালেরিয়া আক্রান্তের সংখ্যা হিট অ্যালার্ট নিয়ে আবহাওয়া অধিদফতরের নতুন বার্তা ভান্ডারিয়ায় পিকআপ চাপায় বৃদ্ধ নিহত হোচট খেল লিভারপুল, পিছিয়ে গেল শিরোপা দৌড়ে যোদ্ধাদের দেখতে প্রকাশ্যে এলেন হামাস নেতা সিনওয়ার! ফের পন্থ ঝড়, ঘরের মাঠে গুজরাটকে হারাল দিল্লি ইউক্রেনকে গোপনে দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র গ্রেফতারের পর যুক্তরাষ্ট্রের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ফিলিস্তিনপন্থীদের বিক্ষোভ আরো বেড়েছে ইউক্রেন যুদ্ধে দুর্নীতি, পুতিনের নির্দেশে গ্রেফতার রুশ উপ-প্রতিরক্ষামন্ত্রী! 

সকল