২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫
`

ইরাকে হামলায় ইসরাইলের সংশ্লিষ্টতা নিশ্চিত করল যুক্তরাষ্ট্র

-

মার্কিন কর্মকর্তারা নিশ্চিত করেছেন যে গত মাসে ইরাকে অবস্থিত ইরানের একটি অস্ত্রাগারে বোমা হামলার জন্য ইসরাইলই দায়ী ছিল। এই আক্রমণটিকে এই অঞ্চলজুড়ে ইরানের সামরিক প্রভাব বিস্তারের বিরুদ্ধে ইসরাইলের বহু বছর ধরে চালানো অভিযানের একটি উল্লেখযোগ্য অংশ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে।
ওই হামলায় সম্ভাব্য সংশ্লিষ্টতার ইঙ্গিত দিয়ে ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেনজামিন নেতানিয়াহু বৃহস্পতিবার রুশ ভাষার ইসরাইলি টেলিভিশন চ্যানেল ৯-এ সম্প্রচারিত এক সাক্ষাৎকার দেন। তিনি সরাসরি ইরাকের নাম উল্লেখ না করে জানান বহু স্থানে ইরানের পরিকল্পনা নস্যাৎ করতে নিরাপত্তা বাহিনীকে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।
গত কয়েক সপ্তাহে ইরাকের আধাসামরিক বাহিনীর বেশ কয়েকটি অস্ত্রভাণ্ডার ও ঘাঁটিতে বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। এসব বাহিনীর বেশ কয়েকটিকে সহায়তা করে আসছে ইসরাইলের আঞ্চলিক প্রতিদ্বন্দ্বী ইরান। বুধবার আক্রান্ত বাহিনীগুলোর তরফ থেকে অভিযোগ তোলা হয়, এসব বিস্ফোরণের নেপথ্যে যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরাইলের ভূমিকা রয়েছে।
বৃহস্পতিবার চ্যানেল ৯-এ সম্প্রচারিত সাক্ষাৎকারে নেতানিয়াহুর কাছে জানতে চাওয়া হয় প্রয়োজন পড়লে ইরাকে অবস্থিত ইরানি লক্ষ্যবস্তুতে ইসরাইল কোনো ব্যবস্থা নেবে কি? জবাবে তিনি বলেন, আমরা ব্যবস্থা নিচ্ছি, কেবল প্রয়োজন পড়লে নয়। বহু স্থানে আমরা এমন এক রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিচ্ছি যারা আমাদের ধ্বংস করতে চায়। নিশ্চয়ই আমি নিরাপত্তা বাহিনীকে উন্মুক্তভাবে কাজ করার সুযোগ দিয়েছি আর ইরানের পরিকল্পনা নস্যাৎ করতে প্রয়োজনীয় সব কিছু করার নির্দেশনা দিয়েছি।
গত মাসে ইরাকি শিয়া মিলিশিয়া ঘাঁটিতে কমপক্ষে তিনটি বিস্ফোরণ হয়েছে। এসব হামলার কমপক্ষে একটি হামলার জন্য ইসরাইলই দায়ী বলে নিশ্চিত করা হয়েছে। দুই আমেরিকান কর্মকর্তা বলেছেন, ইসরাইল জুলাই মাসে একটি ইরানি অস্ত্র ডিপোতে হামলা চালিয়েছিল এবং এতে ইরানের দুই সামরিক কমান্ডার নিহত হয়েছিল। মার্কিন কর্মকর্তারা নাম প্রকাশ না করার শর্তে এ কথা বলেছিলেন কারণ তারা মিডিয়ার সাথে এই বিষয়ে আলোচনা করার অনুমতিপ্রাপ্ত ছিলেন না। ১৯ জুলাইয়ের আক্রমণটি ইরাকের উত্তরের সালাহুদ্দিন প্রদেশের আমিরলিতে একটি সামরিক ঘাঁটিতে হয়েছিল। ১২ আগস্ট বাগদাদের কাছে আল সাকর সামরিক ঘাঁটিতে একটি বিশাল বিস্ফোরণ রাজধানীটিকে কাঁপিয়ে দিয়েছিল। এতে একজন বেসামরিক ব্যক্তি নিহত ও ২৮ জন আহত হয়। বিস্ফোরণগুলোর মধ্যে সবচেয়ে সাম্প্রতিক বিস্ফোরণটি মঙ্গলবার রাতে বাগদাদের উত্তরে একটি যুদ্ধাস্ত্রাগারে হয়েছিল।
সিরিয়ায় শত শত হামলার দায় স্বীকার করে ইসরাইল দাবি করেছে এর অনেকগুলোই ইরানি লক্ষ্যবস্তু টার্গেট করে পরিচালনা করা হয়েছে। ইসরাইলের দাবি, ওই সব এলাকায় তেহরানের স্থায়ী সামরিক উপস্থিতি ঠেকানো এবং অত্যাধুনিক অস্ত্র পৌঁছানো ঠেকাতে এসব হামলা পরিচালনা করা হয়েছে।
সম্প্রতি ইসরাইলি কর্মকর্তারা জানিয়েছেন তারা গত কয়েক বছরে ইরাককে বড় হুমকি হিসেবে বিবেচনা করছে। বর্তমানে ইরাকের মূল মিত্র ইরান। তবে সম্প্রতি ইরাকের পপুলার মোবিলাইজেশন ফোর্সেস (পিএমএফ) ঘাঁটিতে হামলার বিষয়ে সরাসরি মন্তব্য করছেন না ইসরাইলি কর্মকর্তারা।
বুধবার ইরাকের মূলত শিয়া মুসলমানদের আধাসামরিক বাহিনীর আমব্রেলা গ্রুপ পিএমএফ-এর পক্ষ থেকে অভিযোগ তোলা হয়, যুক্তরাষ্ট্র তাদের বাহিনীর সাথে চারটি ইসরাইলি ড্রোনকে ইরাকি এলাকায় অভিযান চালানোর অনুমোদন দেয়। মার্কিন প্রতিরক্ষা দফতর পেন্টাগন এতে সংশ্লিষ্ট থাকার কথা অস্বীকার করেছে। ইরাকে নিয়োজিত মার্কিন নেতৃত্বাধীন জোটও পিএমএফ-এর বিবৃতি উড়িয়ে দিয়েছে। শুক্রবার নিউ ইয়র্ক টাইমস ইসরাইলি ও মার্কিন কর্মকর্তাদের বরাত দিয়ে জানিয়েছে যে ইসরাইল গত মাসে ইরাকের একটি ইরানের অস্ত্র ডিপোতে বোমা মেরেছে।


আরো সংবাদ



premium cement