২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১, ১৪ শাওয়াল ১৪৪৫
`

কাশ্মিরে আজ গণআন্দোলনের ডাক

-

কাশ্মিরের স্বাধীনতাকামী নেতারা স্থানীয় জনগণকে আজ শুক্রবার জুমার নামাজের পর নিষেধাজ্ঞা ভেঙে বাইরে বেরিয়ে এসে পদযাত্রায় যোগ দেয়ার ডাক দিয়েছেন। মঙ্গলবার রাতভর জম্মু ও কাশ্মিরের প্রধান নগরী শ্রীনগরে জনগণকে এ আন্দোলনে নামার ডাক দিয়ে ছাপা পোস্টার ছড়ানো হয়। গত ৫ আগস্ট ভারত সরকার জম্মু ও কাশ্মিরের বিশেষ মর্যাদা তুলে নেয়ার পর কাশ্মিরে এই প্রথম এভাবে প্রতিবাদের ডাক এলো।
কাশ্মিরের বিশেষ মর্যাদা রোধের পরপরই সেখানকার প্রায় তিন শতাধিক রাজনৈতিক নেতাকর্মীকে গ্রেফতার করে পুলিশ। তাদের অনেকেই ভারত সরকার বিরোধী এবং কাশ্মিরের স্বাধীনতার পক্ষে আন্দোলন করেছেন। শ্রীনগরে ছড়ানো পোস্টারের মধ্যে একটিতে লেখা ছিল, ‘সব মানুষ, তরুণ ও বৃদ্ধ, পুরুষ ও নারী সবার উচিত জুমার নামাজের পর মিছিলে যোগ দেয়া।’ দ্য ‘জয়েন্ট রেজিসট্যান্স লিডারশিপ’ এর নামে এ পোস্টার ছাপা হয়েছে। যেটি কাশ্মিরের বৃহৎ সব স্বাধীনতাকামী দলের প্রতিনিধিত্ব করছে।
পোস্টারে লোকজনকে শ্রীনগরে অবস্থিত জাতিসঙ্ঘের মিলিটারি অবজারভার গ্রুপের কার্যালয়ের দিকে পদযাত্রা করার আহ্বান জানানো হয়েছে। ১৯৪৯ সালে ভারত-পাকিস্তান প্রথম যুদ্ধের পর শ্রীনগরে জাতিসঙ্ঘের এ প্রতিষ্ঠানটি স্থাপন করা হয়।
ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি সরকার দীর্ঘদিন ধরেই কাশ্মিরের বিশেষ মর্যাদা বাতিল করতে চাইছিল। সরকার তাদের সেই প্রচেষ্টায় সফল হলেও কাশ্মিরের বৈধ স্বায়ত্তশাসন প্রত্যাহার করে নেয়া আদতে কারো জন্যই ভালো হবে না বলে মত সমালোচকদের। তাদের মতে, এর ফলে কাশ্মিরের স্বাধীনতাকামীদের ভারত থেকে বিচ্ছিন্ন হওয়ার আন্দোলনের পালে আরো হাওয়া লাগবে এবং তা দীর্ঘ দিন ধরে জ্বলতে থাকা কাশ্মিরের বিদ্রোহের আগুনে ঘি ঢালবে। বিশেষ মর্যাদা বাতিলের আগের দিন থেকেই বাড়তি নিরাপত্তা জন্য কাশ্মিরজুড়ে অতিরিক্ত হাজার হাজার সামরিক ও আধাসামরিক বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে। বিশেষ মর্যাদা বাতিলের পর সেখানে এক সপ্তাহের বেশি সময় ধরে কারফিউ জারি ছিল। ল্যান্ডফোন, মোবাইল ফোন নেটওয়ার্ক ও ইন্টারনেট সেবাও বন্ধ করে রাখা হয়েছিল। এখন কারফিউ না থাকলেও সদ্য সাবেক রাজধানী শ্রীনগরে চলাচলের ওপর নানা বিধি-নিষেধ রয়েছে। এত নিরাপত্তা কড়াকড়ির মধ্যেও প্রতিবাদ ও বিক্ষোভ থেমে নেই। বিশেষ কয়ে শ্রীনগরের নানা জায়গায় শুরু থেকেই খণ্ড খণ্ড বিক্ষোভের খবর এসেছে নানা আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমে।
ওই দিকে, উত্তর কাশ্মিরের বারামুল্লায় বুধবার নিরাপত্তা বাহিনীর সাথে স্বাধীনতাকামীদের বন্দুকযুদ্ধে দুইজন নিহত হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। নিরাপত্তা বাহিনীর গুলিতে এক স্বাধীনতাকামী নিহত ও স্বাধীনতাকামীদের গুলিতে দুই পুলিশ সদস্য আহত হওয়ার পর তাদের হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় এক পুলিশ সদস্যের মৃত্যু হয়।
শুক্রবারের বিক্ষোভ কর্মসূচি নিয়ে ক্ষুব্ধ এক কাশ্মিরি বলেন, কেন্দ্র সরকার হাজার হাজার বহিরাগতকে এখানে পাঠিয়ে কাশ্মিরের জনমিতি পরিবর্তন করে ফেলার পরিকল্পনা করেছে। তিনি ধর্মীয় নেতাদের জুমার নামাজের খুতবায় এ আশঙ্কা নিয়ে কথা বলার আহ্বান জানান। শ্রীনগরের যেসব এলাকায় বিক্ষোভ হচ্ছে সেখানকার সাধারণ মানুষ শুক্রবারের বিক্ষোভ মিছিলে যোগ দিতে চেষ্টা করবেন বলে জানায় রয়টার্স। মধ্যবয়সী একজন বলেন, ‘আমরা চেষ্টা করব, লোকজন যাওয়ার চেষ্টা করবে। কিন্তু জানি না তারা আমাদের যেতে দেবে কি না।’


আরো সংবাদ



premium cement