১৭ এপ্রিল ২০২৪, ০৪ বৈশাখ ১৪৩১, ০৭ শাওয়াল ১৪৪৫
`

ঝড়ের মধ্যেই হংকংয়ের রাজপথে তীব্র চীনবিরোধী বিক্ষোভ

-

ঝড়বৃষ্টি উপেক্ষা করে হংকংয়ের রাজপথে চীনবিরোধী বিক্ষোভে অংশ নিয়েছেন অঞ্চলটির বাসিন্দারা। গত শনিবার টানা ১১ সপ্তাহের মতো বিক্ষোভে অংশ নেন আন্দোলনকারীরা। তবে এ দিন রাজপথে নামেন মূলত শিক্ষকেরা। মূলত শিক্ষার্থীদের নেতৃত্বে এ আন্দোলন পরিচালিত হলেও ছাত্রছাত্রীদের সাথে সংহতি জানিয়ে গণতন্ত্রের দাবিতে রাজপথে নামেন তারা। যদিও এরই মধ্যে এ বিক্ষোভ নিয়ে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেছে চীন। হংকং সীমান্তবর্তী শেনঝেনে সামরিক মহড়াও চালিয়েছে বেইজিং।
শনিবারের শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভে যোগ দেন কয়েক হাজার স্কুলশিক্ষক। পুলিশ বলছে, এ দিনের বিক্ষোভে অংশ নিয়েছেন আট হাজার ৩০০ বিক্ষোভকারী। তবে আন্দোলনকারীরা বলছেন, প্রকৃতপক্ষে এ সংখ্যা ২২ হাজার। গতকাল রোববার ফের বড় ধরনের বিক্ষোভ হয়।
শনিবারের বিক্ষোভে অংশ নেয়া ব্যক্তিদের একজন গণিতের শিক্ষক সি এস চান। তিনি বলেন, কয়েক মাস ধরে সরকার আমাদের উপেক্ষা করছে। আমরা বিক্ষোভ অব্যাহত রাখব। বিতর্কিত প্রত্যর্পণ আইনের বিরোধিতায় টানা ১১ সপ্তাহ ধরে চলা এ বিক্ষোভ ক্রমেই সহিংস হয়ে উঠেছে। অব্যাহত আন্দোলন-বিক্ষোভ জনজীবনে বড় ধরনের ব্যাঘাত তৈরি করছে। চীন সরকার বিক্ষোভকারীদের প্রতি কঠোর ভাষায় সমালোচনা করছে। অনেকের মনেই এখন প্রশ্ন বেইজিং কি শেষ পর্যন্ত ধৈর্য হারাবে এবং সরাসরি পদক্ষেপ নিতে উদ্যোগী হবে? কিন্তু চীনের এ ক্ষেত্রে হস্তক্ষেপ করার আইনগত কতটা অধিকার আছে? হংকংয়ে চীনা সামরিক পদক্ষেপের আশঙ্কা কতটা?
ব্রিটেন ১৯৯৭ সালে হংকংকে চীনের কাছে ফিরিয়ে দেয়ার পর অঞ্চলটির সংক্ষিপ্ত একটি নতুন সংবিধান তৈরি করা হয়েছিল। সে অনুযায়ী যতক্ষণ না হংকংয়ে সার্বিকভাবে জরুরি অবস্থা জারি হচ্ছে অথবা যুদ্ধাবস্থা ঘোষণা করা হচ্ছে, ততক্ষণ চীনের সামরিক হস্তক্ষেপ একমাত্র ঘটতে পারে হংকং সরকার সে অনুরোধ জানালে। এ ছাড়া ‘জনশৃঙ্খলা রক্ষার স্বার্থে এবং দুর্যোগের সময় ত্রাণকাজে।’ তবে বেশির ভাগ বিশ্লেষক বলছেন, এই পর্যায়ে পিএলএ বা পিপলস লিবারেশন আর্মির সেনাদের হংকংয়ের রাস্তায় নামানোর বিষয়টি অনেকটা অকল্পনীয়। হংকংয়ে চীনা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ইভান চয় বলেন, এটি কাঠামোগত এবং অর্থনৈতিক পরিবেশে একটা নাটকীয় পরিবর্তন নিয়ে আসবে। এ ধরনের পদক্ষেপের পরিণতি সুদূরপ্রসারী হতে পারে।
হস্তান্তরের পর থেকে হংকংয়ে পিএলএ-এর প্রায় পাঁচ হাজার সেনা রয়েছে। ম্যাককোয়ারি ইউনিভার্সিটির গবেষক অ্যাডাম নাই বলছেন, এটি মূলত চীনা সার্বভৌমত্বের একটা প্রতীকী উপস্থিতি। তবে ৩১ জুলাই সেনানিবাস তাদের নীরব ও পরোক্ষ ভূমিকা ভঙ্গ করেছে। প্রতিবাদ নিয়ে একটি ভিডিও প্রকাশ পেয়েছে, যাতে দেখা যাচ্ছে সেনারা ক্যান্টনিজ ভাষায় চিৎকার করছে, এর পরিণতির জন্য আপনারা দায়ী থাকবেন! সেনারা বিক্ষোভকারীদের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে এবং ফুটেজের একটি দৃশ্যে দেখা যাচ্ছে, পুলিশ একটি ব্যানার ধরে রয়েছে, যাতে লেখা ‘অগ্রসর হওয়া বন্ধ করো, অন্যথায় আমরা শক্তি ব্যবহার করব।’ সাধারণত অসন্তোষের সময় হংকং পুলিশ এ ধরনের ভাষা ব্যবহার করে থাকে।


আরো সংবাদ



premium cement