২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৭ বৈশাখ ১৪৩১, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫
`

নেদারল্যান্ডস সুপ্রিম কোর্টের রায় স্রেব্রেনিসা গণহত্যায় ডাচ সরকারের দায় ১০ ভাগ

-

১৯৯৫ সালে বসনিয়ার স্রেব্রেনিসায় প্রায় আট হাজার মুসলমানকে হত্যার ঘটনায় ডাচ সরকার ‘আংশিক (১০ ভাগ) দায়ী’ বলে হেগের একটি আদালতের পর্যবেক্ষণকে সমর্থন জানিয়েছেন নেদারল্যান্ডসের সুপ্রিম কোর্ট। গতকাল শুক্রবার নেদারল্যান্ডসের সুপ্রিম কোর্ট ওই পর্যবেক্ষণের পক্ষে মত দেন।
স্রেব্রেনিসার জাতিসঙ্ঘ সেফ জোন থেকে ৩৫০ মুসলমানকে অরক্ষিত অবস্থায় রাখার পর তারা সার্বিয়ান আর্মির হাতে হত্যার শিকার হন। রায়ের পর্যবেক্ষণে বলা হয় যেহেতু ডাচ সেনারা আন্তর্জাতিক শান্তিরক্ষী হিসেবে দায়িত্বরত ছিল সেহেতু তাদের এ বিষয়টি আন্তর্জাতিক আইনি বিচারে রাষ্ট্রীয় দায়বদ্ধতার মধ্যে পড়ে। পাশাপাশি আদালত ডাচ সরকারের পক্ষ থেকে নিহত ব্যক্তিদের পরিবারকে ক্ষতিপূরণ দেয়ার বিষয়েও গুরুত্বারোপ করেন।
সার্ব সেনাদের হাত থেকে বাঁচতে জাতিসঙ্ঘের ‘ডাচ সেফ জোনে’ হাজারো বসনীয় মুসলমান আশ্রয় নিয়েছিল। এদের মধ্যে ৩৫০ জন পুরুষ ছিল যাদের অরক্ষিত অবস্থায় রেখে এক রকম ইচ্ছাকৃতভাবেই মৃত্যুর মুখে ঠেলে দেয়া হয়।
১৯৯৫ সালে সার্ব সেনারা বসনিয়ার স্রেব্রেনিসায় মুসলিমদের ওপর গণহত্যা চালায়। সে সময় ৮০০০ মুসলমান নিহত হয়। গণহত্যার শিকার বেশির ভাগই ছিল পুরুষ ও বালক। সেই গণহত্যায় ডাচ সরকারের সম্পৃক্ততা নিয়ে করা একটি মামলায় ২০১৪ সালে রায় দেন নেদারল্যান্ডসের বিচারিক আদালত। ২০১৭ সালে আপিলে বিচারিক আদালতের রায়ের বেশির ভাগ অংশ বহাল রাখেন হেগের আদালত।
সুপ্রিম কোর্ট তার পর্যবেক্ষণে বলেন, ডাচ সেনারা জানত অথবা তাদের জানা উচিত ছিল, বসনিয়ার মুসলমান পুরুষদের শুধু আটক করে রাখা হয়নি, তারা নির্যাতন বা হত্যার প্রকৃত ঝুঁঁকিতে ছিল। সেনারা ইচ্ছাকৃতভাবে অথবা অবৈধভাবে ওই মানুষদের সার্ব সেনাদের হাতে নির্যাতন ও হত্যার জন্য তুলে দেয় বলেও পর্যবেক্ষণে জানায় সুপ্রিম কোর্ট। আদালতের ভাষ্য, একটি ভবনে অরক্ষিত অবস্থায় রাখার মধ্য দিয়ে ওই পুরুষদের বাঁচার সুযোগ রাখা হয়নি। তবে বিচারকেরা ওই ঘটনায় নিহত ব্যক্তিদের পরিবারকে ক্ষতিপূরণ ৩০ শতাংশ থেকে ১০ শতাংশে নামিয়ে আনেন। এর আগে ২০১৭ সালে হেগের আদালত হত্যায় ডাচ সেনাদের সম্পৃক্ততার মাশুল হিসেবে নেদারল্যান্ডসকে নিহত ব্যক্তিদের পরিবারকে ক্ষতিপূরণের ৩০ শতাংশ অর্থ দেয়ার রায় দিয়েছিল। স্রেব্রেনিসা ছিল জাতিসঙ্ঘের ঘোষিত প্রথম কোন ‘সেফ জোন’। সেফ জোন হচ্ছে, কোনো অঞ্চলে চলা গৃহযুদ্ধ এবং রক্তবন্যার মাঝখানে বেসামরিক নাগরিকদের জন্য এমন এক সুরক্ষিত এলাকা যার নিরাপত্তার ভার থাকে জাতিসঙ্ঘ শান্তিরক্ষী বাহিনীর কাছে।


আরো সংবাদ



premium cement