২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৭ বৈশাখ ১৪৩১, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫
`

রাজনৈতিক ইস্যু ছাড়াই ট্রাম্পের মধ্যপ্রাচ্য শান্তি পরিকল্পনা প্রকাশ ফিলিস্তিনিদের প্রত্যাখ্যান

বাহরাইনে যুক্তরাষ্ট্রের পৃষ্ঠপোষকতায় মধ্যপ্রাচ্য অর্থনৈতিক কর্মশালার বিরুদ্ধে গাজায় ফিলিস্তিনিদের বিক্ষোভ : এএফপি -

বহুল আলোচিত মধ্যপ্রাচ্য শান্তি পরিকল্পনা ঘোষণা করেছে যুক্তরাষ্ট্র। ফিলিস্তিনিদের বর্জনের মুখে বাহরাইনে দুই দিনের এক কর্মশালায় এই পরিকল্পনা ঘোষণা করা হয়। তবে এতে ফিলিস্তিনি রাষ্ট্র বা ইসরাইল-ফিলিস্তিন সঙ্ঘাতের কোনো রাজনৈতিক ইস্যুর কথা বলা হয়নি। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের উপদেষ্টা ও জামাতা জ্যারেড কুশনার ‘শান্তির জন্য সমৃদ্ধি’ শীর্ষক এই পরিকল্পনা ঘোষণা করেন। এর আওতায় ফিলিস্তিনি অঞ্চল ও প্রতিবেশী আরব রাষ্ট্রগুলোতে পরবর্তী ১০ বছরে পাঁচ হাজার কোটি মার্কিন ডলার বিনিয়োগের কথা বলা হয়েছে। তবে শর্ত হচ্ছে- ফিলিস্তিনকে এই পরিকল্পনা মেনে নিতে হবে। পাশাপাশি অমীমাংসিত বিষয়গুলো সমাধানে রাজি হতে হবে। এটিকে ‘শতাব্দীর সেরা সুযোগ’ আখ্যা দিয়েছেন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের জামাতা ও হোয়াইট হাউজের উপদেষ্টা জ্যারেড কুশনার। তিনি ‘এই সুযোগ’ গ্রহণ করতে ফিলিস্তিনিদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। মানামা সম্মেলনের উদ্বোধনী ভাষণে জ্যারেড কুশনার জানান, হোয়াইট হাউজ ও মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ফিলিস্তিনকে ছেড়ে যাচ্ছেন না। গোটা মধ্যপ্রাচ্যে শান্তি প্রতিষ্ঠায় বিবদমান পক্ষগুলোকে একটি ন্যায্য সমঝোতায় পৌঁছতে হবে। ট্রাম্প প্রশাসন জানিয়েছে পরিকল্পনার রাজনৈতিক অংশ পরে প্রকাশ করা হবে।
কয়েক দশকের মার্কিন রীতির ব্যত্যয় ঘটিয়ে ২০১৭ সালের ৬ ডিসেম্বর জেরুসালেমকে ইসরাইলের রাজধানী স্বীকৃতির ঘোষণা দেন ট্রাম্প। বিক্ষোভে ফেটে পড়া ফিলিস্তিনিদের পক্ষ থেকে ঘোষণা দেয়া হয়, এর পরে ইসরাইলের সাথে আর কোনো শান্তি আলোচনায় মার্কিন মধ্যস্থতা মানবে তারা। এর মধ্যে নানা সময়ে সংবাদমাধ্যমের শিরোনাম হয়েছে ফিলিস্তিন ইস্যুতে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ইসরাইলঘেঁষা শান্তি পরিকল্পনার বিভিন্ন দিক। যুক্তরাষ্ট্রের তরফে জানানো হয় ডিল অব দ্য সেঞ্চুরি বা শতাব্দীর সেরা চুক্তি নামে পরিচিত এই পরিকল্পনা রমজানের পর আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণা করা হবে। মঙ্গলবার বাহরাইনের একটি হোটেলে মার্কিন প্রেসিডেন্টের উপদেষ্টা জারেড কুশনারের নেতৃত্বে শুরু হয় হয়েছে দুই দিনের অর্থনৈতিক কর্মশালা। এই কর্মশালায় মধ্যপ্রাচ্যে বিপুল বিনিয়োগের ঘোষণা দেন কুশনার। রাস্তা উন্নয়ন, সীমান্ত ক্রসিং, শক্তি উৎপাদন ও পর্যটনসহ নানা খাতে বিপুল বিনিয়োগের কথা জানানো হয় ওই পরিকল্পনায়। বলা হয়, এসব প্রকল্পের অধীনে লাখ লাখ ফিলিস্তিনির কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হবে।
এই পরিকল্পনায় দাতা রাষ্ট্রগুলো ও বিনিয়োগকারীদের ওই অঞ্চলে প্রায় পাঁচ হাজার কোটি ডলার বিনিয়োগ করার আহ্বান জানানো হয়েছে। এর মধ্যে দুই হাজার ৮০০ কোটি ডলার যাবে ইসরামফলের দখল করা পশ্চিমতীর ও গাজায়। এ ছাড়া সাড়ে ৭০০ কোটি ডলার দেয়া হবে জর্দানকে, ৯০০ কোটি ডলার মিসরকে এবং ৬০০ কোটি ডলার লেবাননকে দেয়া হবে। তবে মধ্যপ্রাচ্যে বিপুল বিনিয়োগ এবং লাখ লাখ ফিলিস্তিনির কর্মসংস্থানের সুযোগের কথা বলা হলেও ট্রাম্প প্রশাসনের এ পরিকল্পনায় ফিলিস্তিনি রাষ্ট্র বা ইসরাইল-ফিলিস্তিন সঙ্ঘাতের কোনো রাজনৈতিক সমাধানের কথা বলা হয়নি। তবে ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষ ও তাদের প্রতিদ্বন্দ্বী গ্রুপ হামাসের তরফ থেকে এই মার্কিন পরিকল্পনা প্রত্যাখ্যান করা হয়েছে। রোববার ফিলিস্তিনি প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাস বলেন, ‘আমেরিকা পুরো বিষয়টিকে রাজনৈতিক ইস্যু থেকে অর্থনৈতিক ইস্যু বানিয়ে ফেলছে, আমরা এটি গ্রহণ করতে পারি না।’ বাহরাইনে সম্মেলন শুরুর আগে এর প্রতিবাদে সোমবার পশ্চিমতীরের রাস্তায় বিক্ষোভ করে হাজার হাজার ফিলিস্তিনি। হেবরনের কাছে পোড়ানো হয় প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ও বাহরাইনের বাদশার ছবি।
ফিলিস্তিনের এক মানবাধিকার কর্মী মোস্তফা বারগুতি বলেন, যত দিন আমরা স্বাধীন না হবো, তত দিন কোনো উন্নয়ন হবে না। এই শান্তি পরিকল্পনা ফিলিস্তিনিদের অধিকার আরো সঙ্কুচিত করে দেবে।’ তা ছাড়া আনাদোলু জানায়, মানামা সম্মেলনের বিপরীতে ফিলিস্তিনিদের অধিকার প্রতিষ্ঠায় আন্তর্জাতিক একটি সম্মেলনের ঘোষণা দিয়েছেন ফিলিস্তিনি প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাস। তিনি বলেন, ফিলিস্তিনিদের ন্যায্য অধিকার হরণে বাহরাইনে যে সম্মেলনটি অনুষ্ঠিত হচ্ছে, এর প্রতিবাদে আমরা একটি আন্তর্জাতিক সম্মেলন আহ্বান করব। আলজেরিয়ায় ফিলিস্তিনি দূতাবাসের সামনে ‘শতাব্দীর সেরা সমঝোতা’র বিরুদ্ধে অনুষ্ঠিত এক বিক্ষোভে অংশ নিয়ে দেশটিতে নিযুক্ত ফিলিস্তিনি রাষ্ট্রদূত আমিন মাকবুল প্রেসিডেন্টের বরাতে আনাদোলু এজেন্সিকে এ কথা জানিয়েছেন। আমিন মাকবুল বলেন, মধ্যপ্রাচ্যে শান্তি প্রতিষ্ঠায় যুক্তরাষ্ট্রের একক আধিপত্য বড় বাধা। ফিলিস্তিনিদের অধিকার রক্ষায় প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাস শিগগিরই কূটনৈতিক সফরে বের হবেন। ফিলিস্তিনিদের স্বাধীনতা আন্দোলনে সমর্থন আদায়ের লক্ষ্যে তিনি রাশিয়া, ফ্রান্সসহ অন্যান্য দেশ সফর করবেন। সমস্যা সমাধানে ফিলিস্তিনরা এখন আর যুক্তরাষ্ট্রকে মধ্যস্থতাকারী হিসেবে মানে না বলেও জানান তিনি।


আরো সংবাদ



premium cement
চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতি : মিশা সভাপতি, ডিপজল সম্পাদক ফিলিপাইনে ব্রহ্মস পাঠাল ভারত, ৩৭৫ মিলিয়ন ডলারের চুক্তি চীনের মোকাবেলায় নতুন ডিভিশন ভারতীয় সেনাবাহিনীতে! আবারো চেন্নাইয়ের হার, ম্লান মোস্তাফিজ 'কেএনএফ' সন্ত্রাস : সার্বভৌম নিরাপত্তা সতর্কতা অর্থনীতিতে চুরি : ব্যাংকে ডাকাতি পাকিস্তানে আফগান তালেবান আলেম নিহত যুক্তরাষ্ট্রের সাহায্য না করলে এ বছরই রাশিয়ার কাছে হারতে পারে ইউক্রেন : সিআইএ প্রধান রাশিয়ার সামরিক শিল্পক্ষেত্রে প্রধান যোগানদার চীন : ব্লিংকন ইরাকে সামরিক ঘাঁটিতে 'বিকট বিস্ফোরণ' শেখ হাসিনা সব প্রতিবন্ধকতা উপড়ে ফেলে দেশকে এগিয়ে নিয়ে চলেছেন: পররাষ্ট্রমন্ত্রী

সকল