২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১, ১৩ শাওয়াল ১৪৪৫
`

প্রথম উ.কোরিয়া সফরে চীনের প্রেসিডেন্ট শি

-

প্রথমারের মতো উত্তর কোরিয়া সফরে গিয়েছেন চীনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং। দুই দিনের সফরে বৃহস্পতিবার তিনি পিয়ংইয়ং পৌঁছেছেন বলে চীনা রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম জানিয়েছে। ২০০৬ সালে চীনের রাষ্ট্রপ্রধান হিসেবে দায়িত্ব নেয়ার পর এটাই তার প্রথম সফর। বৃহস্পতিবার শুরু এই সফরে পরমাণু প্রকল্প ও বাণিজ্যিক বিষয় নিয়ে আলোচনা হতে পারে।
উত্তরের শীর্ষ নেতা কিম জং উনের সঙ্গে বৃহস্পতিবারই তিনি এক রুদ্ধদ্বার বৈঠকে মিলিত হয়েছেন। বৈঠকে কী নিয়ে আলোচনা হয়েছে তা জানা যায়নি। বেইজিং পিয়ংইয়ংয়ের প্রধান ব্যবসায়িক অংশীদার হলেও ১৪ বছরের মধ্যে এবারই প্রথম চীনের কোনো প্রেসিডেন্ট উত্তর কোরিয়ায় গেলেন।
এ সফরে শি নিষেধাজ্ঞা জর্জরিত উত্তর কোরিয়ার জন্য বেশ কিছু অর্থনৈতিক সহযোগিতা প্রকল্প নিয়ে গেছেন বলেও ধারণা করা হচ্ছে। জাপানে জি-২০ শীর্ষ সম্মেলনের এক সপ্তাহ আগে চীনা প্রেসিডেন্টের এ সফরে পিয়ংইয়ং-ওয়াশিংটন সম্পর্কের উত্থান-পতন নিয়েও আলোচনা হবে বলে মনে করা হচ্ছে। জি-২০ সম্মেলনে শি-র সঙ্গে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বৈঠক হওয়ার কথা রয়েছে। উত্তর কোরিয়ার ক্ষমতায় আসায় পর থেকে এ নিয়ে চারবার চীন সফর করেছেন কিম। অন্য দিকে ২০০৫ সালে চীনের তৎকালীন প্রেসিডেন্ট হু জিনতাওয়ের সফরকালে উত্তর কোরিয়ার ক্ষমতায় ছিলেন কিমের বাবা কিম জং ইল।
উত্তর কোরিয়ার পারমাণবিক কার্যক্রমের কারণে দেশটির ওপর ধারাবাহিক নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে জাতিসঙ্ঘ। বেইজিং এসব নিষেধাজ্ঞায় সমর্থন দিলেও শি-র এবারের সফর দুই দেশের সম্পর্কের উন্নতিতে ভূমিকা রাখবে বলেই ধারণা করা হচ্ছে। উত্তর কোরিয়ায় চীনা প্রেসিডেন্টের এ সফর ‘বেইজিং-পিয়ংইয়ং সম্পর্কে নতুন অধ্যায় যোগ করবে’ বলে মন্তব্য করেছে চীনের রাষ্ট্রীয় টেলিভিশন সিসিটিভি।
এর আগে চীনে এই দুই নেতার চারবার দেখা হলেও উত্তর কোরিয়ায় প্রথম। চলতি বছরের জানুয়ারিতে বেইজিং সফরের সময় দুই দেশের মধ্যে সম্পর্ক স্থাপনের ৭০তম বার্ষিকী উপলক্ষে চীনা প্রেসিডেন্টকে উত্তর কোরিয়া সফরের আমন্ত্রণ জানান কিম। উত্তর কোরিয়ার প্রধান বাণিজ্য সহযোগী চীন। এক সপ্তাহ পরেই জি-২০ সম্মেলনে ট্রাম্পের সঙ্গে বৈঠকের কথা রয়েছে শি জিনপিংয়ের। তার আগে কিমের সঙ্গে এই বৈঠক কূটনৈতিকভাবে খুবই গুরুত্বপূর্ণ বিবেচনা করা হচ্ছে। সফরে কোরীয় পরিস্থিতি, দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কোন্নয় এবং নিরাপত্তা ইস্যুতে আলোচনা করবেন তিনি। জাপানে অনুষ্ঠিতব্য জি-টোয়েন্টি সম্মেলনের সপ্তাহ খানেক আগে উত্তর কোরিয়া সফরে গেলেন শি। ওই সম্মেলনে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে বৈঠক করবেন তিনি। আর সম্মেলন শেষে দক্ষিণ কোরিয়া যাবেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। এ অবস্থায় এই সফরকে আঞ্চলিক নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতা রক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করছেন বিশ্লেষকেরা। সর্বশেষ ২০০৫ সালে উত্তর কোরিয়া সফর করেন তৎকালীন চীনা প্রেসিডেন্ট হু জিনতাও। গত বছরই চারবার চীন সফর করেছেন উত্তর কোরিয়ার সর্বোচ্চ নেতা কিম জং উন।
উ. কোরিয়ায় ত্রাণ পাঠাচ্ছে দ. কোরিয়া
এ দিকে বিবিসি জানায়, উত্তর কোরিয়ায় চলমান তীব্র খাদ্য সঙ্কটে পাশে দাঁড়িয়ে বিরল দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে দক্ষিণ কোরিয়া। দেশটিতে ৫০ হাজার টন চাল পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে তারা যা বিগত এক দশকে প্রথম।
বিগত প্রায় চার দশকের মধ্যে সবচেয়ে তীব্র খরার কবলে পড়ার কথা জানিয়েছে উত্তর কোরিয়া। এই বছরের প্রথম পাঁচ মাসে দেশটিতে মাত্র ৫৪ দশমিক ৪ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে। ১৯৮২ সালের পর এটাই দেশটিতে সর্বনি¤œ বৃষ্টিপাতের রেকর্ড। জাতিসঙ্ঘের এক যৌথ মূল্যায়নে বলা হয়, এক দশকের মধ্যে সবচেয়ে খারাপ ফলনের কারণে উত্তর কোরিয়ার প্রায় এক কোটি মানুষ মারাত্মক খাদ্য সঙ্কটে পড়েছে।


আরো সংবাদ



premium cement