২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১, ১৩ শাওয়াল ১৪৪৫
`

ভেনিজুয়েলানদের ঠেকাতে পেরুতে কঠোর অভিবাসন আইন

নতুন অভিবাসন আইন কার্যকর হওয়ার আগে পেরু সীমান্তে ভেনিজুয়েলানদের ভিড় : ইন্টারনেট -

ভেনিজুয়েলার নাগরিকদের প্রবেশ ঠেকাতে কঠোর আইন করেছে পেরু। স্থানীয় সময় শনিবার মধ্যরাত থেকে চালু হওয়া এই আইন এড়াতে ইতোমধ্যে হাজার হাজার ভেনিজুয়েলার নাগরিক সীমান্ত পাড়ি দিয়ে পেরুতে প্রবেশের চেষ্টা করছে।
নতুন এই অভিবাসন আইন চালু হলে ভিসা-পাসপোর্ট ছাড়া ভেনিজুয়েলার কোনো নাগরিক আর পেরুতে প্রবেশ করতে পারবে না। যদিও এত দিন জাতীয় পরিচয়পত্র দিয়ে ভেনিজুয়েলার নাগরিকেরা পেরুতে প্রবেশ করতে পারত। কিন্তু কার্যকর হওয়া নতুন এই আইনের ফলে দেশটির ভিসা-পাসপোর্ট পাওয়া এখন অত্যন্ত কঠিন হবে। আর সে কারণে আইন চালু হওয়ার আগে পেরুতে প্রবেশ করতে চাইছে ভেনিজুয়েলার অভিবাসনপ্রত্যাশী বেশির ভাগ নাগরিক।
ল্যাটিন আমেরিকার সমাজতান্ত্রিক এই দেশটিতে অর্থনৈতিক সমস্যার জেরে কয়েক মাস ধরে রাজনৈতিক সঙ্কট চলছে। দেশটিতে মুদ্রাস্ফীতি বেড়ে যাওয়ায় খাদ্য ওষুধসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের ব্যাপক সঙ্কট চলছে।
এই অবস্থায় জীবনযাপন কঠিন হয়ে পড়ায় টানা কয়েক বছর ধরে পাশের দেশ পেরুসহ বিভিন্ন দেশে পাড়ি জমাচ্ছেন হাজার হাজার ভেনিজুয়েলার নাগরিক। জাতিসঙ্ঘের হিসাব অনুযায়ী, ২০১৫ সাল থেকে প্রায় ৪০ লাখ মানুষ ভেনিজুয়েলা থেকে ছেড়ে অন্যান্য দেশে আশ্রয় নিয়েছে। দেশটিতে অর্থনৈতিক পতনের জেরে উচ্চ বেকারত্ব, খাদ্য ও ওষুধের ঘাটতি দেখা দিয়েছে। দ্রুত কয়েক লাখ মানুষকে মানবিক সাহায্যের প্রয়োজন বলে মনে করা হচ্ছে।
এ দিকে দীর্ঘদিন ধরে চলা সঙ্কটের মধ্যে নতুন করে এই আইন সীমান্তে বড় ধরনের হানাহানির শঙ্কা তৈরি করেছে। সীমান্তের কর্মকর্তারা বলেছেন, বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় প্রায় ৬ হাজার ভেনিজুয়েলান টাম্বেস শহরে প্রবেশ করেছে। যদিও দৈনিক গড় হিসাব এর প্রায় তিনগুণ। শুক্রবার দুই মেয়েকে নিয়ে পেরুর উত্তরাঞ্চলীয় সীমান্ত পাড়ি দিচ্ছিলেন মারিয়ানি লুজার্ডো। তিনি বলেন, ভেনিজুয়েলাতে পাসপোর্ট পাওয়া প্রায় অসম্ভব। আর সে কারণেই তাড়াতাড়ি তাদের পেরুতে প্রবেশ করা প্রয়োজন বলে জানান তিনি।
পেরুর প্রেসিডেন্ট মার্টিন ভিজকারা বৃহস্পতিবার কঠোর এই অভিবাসন নিষেধাজ্ঞা জারি করেছেন। তিনি বলেন, আমাদের দেশ আট লাখেরও বেশি ভেনিজুয়েলানকে জায়গা দিয়েছে। আমি মনে করি প্রবেশকারীদের সঠিকভাবে নিয়ন্ত্রণ করতে তাদের ভিসা নিয়ে প্রবেশ করা সম্পূর্ণ যৌক্তিক ও ন্যায্য। জাতিসঙ্ঘের তথ্য মতে, কলম্বিয়ায় প্রায় ১৩ লাখ ভেনিজুয়েলান নাগরিক আশ্রয় নিয়েছে। এরপরই ৭ লাখ ৬৮ হাজার ভেনিজুয়েলার নাগরিকদের আশ্রয় দিয়েছে পাশের দেশ পেরু।
চলমান রাজনৈতিক সঙ্কটে নিকোলাস মাদুরো সরকারের অধীনে অর্থনীতি ভেঙে গেছে এবং খাদ্য ও ওষুধের ঘাটতি ব্যাপক আকার ধারণ করেছে বলে দেশটির বিরোধীদের অভিযোগ। তেলসমৃদ্ধ দেশটির কয়েকটি অংশে পেট্রল স্টেশনগুলোতে জ্বালানি তেলের লেনদেন কমেছে। এ ছাড়া বিদ্যুৎ সঙ্কটে ঘন ঘন অন্ধকারে ঢাকা পড়ছে ভেনিজুয়েলা। সরকার বলছে, যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞার কারণে এ ধরনের ঘাটতি তৈরি হয়েছে। যদিও বিরোধীরা বলছে, এটি সরকারের অপব্যবহার ও দুর্নীতির ফল।


আরো সংবাদ



premium cement