২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫
`

মাথা ঢেকে মুসলমানদের প্রতি সংহতি জানালেন নিউজিল্যান্ডের নারীরা

-

ক্রাইস্টচার্চে মসজিদে হামলার ঘটনায় আতঙ্কগ্রস্ত মুসলমানদের প্রতি সংহিত ও সমর্থন জানাতে শুক্রবার নিউজিল্যান্ডজুড়ে হাজারো নারী মাথা ঢেকে বের হন। ঠিক এক সপ্তাহ আগে উগ্র ডানপন্থী এক শ্বেতাঙ্গ অস্ট্রেলীয় ক্রাইস্টচার্চে দু’টি মসজিদে গুলি চালিয়ে ৫০ জনকে হত্যা করে।
তারপর থেকে সন্ত্রাসী হামলার শিকার হতে পারেন এমন আতঙ্কে দেশটির মুসলমান নারীরা হিজাব পরে ঘর থেকে বাইরে বের হতে ভয় পাচ্ছেন। বিষয়টি জানতে পেরে অকল্যান্ডের চিকিৎসক থায়া অ্যাশম্যান ‘হেডস্কার্ফ ফর হারমনি’ নামে একটি আন্দোলনের ডাক দিয়ে নিউজিল্যান্ডের জনগণকে মুসলমানদের প্রতি সমর্থন জানাতে শুক্রবার মাথা ঢেকে বাইরে বের হওয়ার আহ্বান জানান।
অ্যাশম্যান বলেন, ‘আমি বলতে চেয়েছি, আমরা আপনার সাথেই আছি। আমরা চাই আপনার নিজের রাস্তায় আপনি বাড়ির মতো নিরাপদ বোধ করুন। আমরা আপনাকে ভালোবাসি, সমর্থন করি ও সম্মান করি।’ গত ১৫ মার্চ জুমার নামাজের সময় ঘটে যাওয়া ভয়াবহ হামলায় নিহতদের স্মরণে শুক্রবার দুপুরে দুই মিনিটের জন্য নীরব থেকেছে পুরো নিউজিল্যান্ড। ঠিক তার আগে নিউজিল্যান্ডে বসবাসরত মুসলমানদের প্রতি সংহতি জানাতে সব প্রচারমাধ্যমে প্রচার করা হয় জোহরের আজান।
জুমার নামাজের সময় বুলেট জর্জরিত আল নূর মসজিদের বাইরে হ্যাগলি পার্কে জড়ো হয় হাজারো মানুষ, তাদের মধ্যে ছিলেন স্বয়ং নিউজিল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী জেসিন্ডা আরডার্ন। সবার বিষাদ ভরা চোখে ছিল ভালোবাসা, সহমর্মিতা। এদিন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নারীরা স্কার্ফ দিয়ে মাথা ঢাকা ছবি পোস্ট করেন।
ক্রাইস্টচার্চের বাসিন্দা বেলি সিবলি বলেন, ‘কেন আমি আজ মাথা ঢেকেছি? প্রথম কারণ হচ্ছে, যদি আজ কেউ বন্দুক তুলে কাউকে নিশানা করে তবে আমি তাদের মাঝখানে দাঁড়িয়ে যাব এবং আমি চাই সে যেন পার্থক্য করতে না পারে। কারণ আমাদের মধ্যে কোনো পার্থক্য নেই।’
মসজিদে হামলায় নিহতদের দাফন কাজ বৃহস্পতিবারও হয়েছে। ওইদিন কবরস্থানে পাহারারত এক নারী পুলিশ কর্মকর্তাকে কালো কাপড়ে মাথা ঢেকে অটোমেটিক রাইফেল হাতে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যায়।
আজান আর নীরবতায় শ্রদ্ধা
এক সপ্তাহ আগে ক্রাইস্টচার্চের আল নূর মসজিদের ইমাম জামাল ফাউদা বর্ণবাদী এক খুনির চোখে দেখেছেন জিঘাংসা, দেখেছেন নামাজারত মানুষের রক্ত, দেখেছেন বন্ধু-স্বজনের অসহায় মৃত্যু। ঠিক সাত দিন পর এলো আরেক শুক্রবার। নিহত অর্ধশত মানুষের স্মরণে শুক্রবার দুপুরে দুই মিনিটের জন্য নীরব থাকল পুরো নিউজিল্যান্ড। ঠিক তার আগে নিউজিল্যান্ডে বসবাসরত মুসলমানদের প্রতি সংহতি জানাতে সব প্রচারমাধ্যমে প্রচার করা হলো জোহরের আজান। গত ১৫ মার্চ ওই হামলার ঘটনার পর থেকে প্রতিদিনই সব ধর্মের নানা বয়সী মানুষ ফুল হাতে ওই মসজিদের বাইরে আসছিল সংহতি জানাতে। মাওরি আদিবাসীদের ঐতিহ্যবাহী রণনৃত্য হাঁকা পরিবেশন করে শ্রদ্ধা আর সংহতি জানাচ্ছিল শিক্ষার্থীরা।
নিউজিল্যান্ড হেরাল্ডের খবরে বলা হয়, জুমার নামাজের সময় হ্যাগলি পার্কের এই সমাবেশে জড়ো হয়েছিল প্রায় দশ হাজার মানুষ। মুসলমান রীতিতে কালো কাপড়ে মাথা ঢেকে প্রধানমন্ত্রী আরডার্ন সেখানে উপস্থিত ছিলেন প্রায় আধা ঘণ্টা।


আরো সংবাদ



premium cement