২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১, ১৪ শাওয়াল ১৪৪৫
`

শামীমা-মুসানার দেশে ফেরা-না ফেরা নিয়ে যুক্তরাজ্য ও যুক্তরাষ্ট্রে বিতর্ক

-

ইসলামিক স্টেটে (আইএস) যোগদানকারী মার্কিন নারীকে দেশে ফিরতে না দেয়ার কথা গত বুধবার ঘোষণা করেছেন দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেও। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পও মনে করেন, যুক্তরাষ্ট্র থেকে আইএসে যোগ দেয়া উগ্রবাদী নারীকে দেশে ফিরতে দেয়া উচিত নয়। কিন্তু দেশটির সংবিধানের ১৪তম অনুচ্ছেদ অনুযায়ী তা করা সিদ্ধ কি না তা নিয়ে উঠেছে প্রশ্ন। সংশ্লিষ্ট উগ্রবাদী নারীর পক্ষে একাধিক ইসলামী সংগঠন যুক্তি উপস্থাপন করেছে। আইনি লড়াইয়ের প্রস্তুতিও নেয়া হচ্ছে।
যুক্তরাষ্ট্র সমর্থিত কুর্দি বাহিনীর হামলায় ইসলামিক স্টেট গোষ্ঠীর সর্বশেষ অবস্থানও তাদের হাতছাড়া হয়ে গেছে। আটক ইরাকি উগ্রবাদীদের ১০ ট্রাকে ভরে পাঠিয়ে দেয়া হয়েছে ইরাকে। তবে উগ্রবাদীদের অনেককে কুর্দি যোদ্ধারা কারাগারে আটকে রেখেছে। এদের স্ত্রী ও সন্তানেরা রয়েছে আশ্রয় শিবিরে। এমন একজন বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত ব্রিটিশ নাগরিক শামীমা বেগম। যুক্তরাজ্য তার নাগরিকত্ব বাতিল করেছে। কিন্তু তার আইনজীবী দাবি করছেন, যেহেতু শামীমার অন্য কোনো দেশের নাগরিকত্ব নেই সেহেতু তার নাগরিকত্ব বাতিলের সরকারি সিদ্ধান্তটি আইনসিদ্ধ হয়নি।
শামীমা বেগমকে যুক্তরাজ্যে প্রবেশ করতে দেয়া উচিত বলে মন্তব্য করেছেন লেবার পার্টির প্রধান জেরেমি করবিন। তিনি বলেন, ব্রিটেনে তার জন্ম। তাই তার ফিরে আসার অধিকার রয়েছে। গত মঙ্গলবার শামীমা বেগমের নাগরিকত্ব বাতিল করে দেয় যুক্তরাজ্য সরকার। সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত কিছু খবরে শামীমা বেগমের বাবা বর্তমানে বাংলাদেশে বসবাস করছেন। তার মায়ের মতো তার বাবার জন্মও বাংলাদেশে। সুতরাং ২১ বছর হওয়ার আগ পর্যন্ত শামীমা স্বয়ংক্রিয়ভাবে বাংলাদেশের নাগরিকত্ব পাওয়ার দাবিদার। শামীমার বর্তমান বয়স ১৯ বছর। বয়স ২১ বছর হয়ে যাওয়ার পর শামীমা তার স্বয়ংক্রিয়ভাবে পাওয়া বাংলাদেশের দ্বৈত নাগরিকত্ব রাখা না রাখার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে পারবে। সেখানেই গত সপ্তাহে একটি ছেলে সন্তানের জন্ম দিয়েছেন ১৯ বছরের এই তরুণী। এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেছেন, সন্তানের জন্য তিনি লন্ডনে পরিবারের কাছে ফিরতে চান।
জেরেমি করবিন বলেন, তার জন্ম ব্রিটেনে। তার অবশ্যই দেশে আসার অধিকার রয়েছে। তবে সেজন্য অবশ্যই তাকে অনেক জিজ্ঞাসাবাদের মুখোমুখি হতে হবে। তিনি বলেন, তার আইএসে যোগ দেয়ার বিষয়টি নিয়ে তদন্ত হওয়া উচিত। তিনি দেশে ফেরার আবেদন করার পর সম্প্রতি তার নাগরিকত্ব কেড়ে নেয়ার সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছে ব্রিটিশ স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। তবে করবিন বলেন, ‘আমার মতে তার অবশ্যই ফিরে আসার অধিকার রয়েছে। তার নাগরিকত্ব কেড়ে নেয়ার সিদ্ধান্ত খুবই মারাত্মক কৌশল।’
এবার একই ধরনের দাবি উঠেছে যুক্তরাষ্ট্র থেকে সিরিয়ায় যাওয়া নারী হোদা মুসানার (২৪) বিষয়ে। চার বছর আগে সে ইসলামিক স্টেটে যোগ দিতে যুক্তরাষ্ট্র ত্যাগ করেছিল। সিরিয়ায় সে উগ্রবাদীগোষ্ঠীটির এক সদস্যকে বিয়ে করে। সেই উগ্রবাদী ছিল অস্ট্রেলীয় নাগরিক। সেখানে থাকা অবস্থায় সে টুইটারে ইসলামিক স্টেটের পক্ষে প্রচারণা চালাত, পশ্চিমা বিশ্বের দেশগুলোতে হামলা চালাতে উৎসাহ দিত। বর্তমানে তার অবস্থান শামীমার মতোই সিরিয়ার এক আশ্রয় শিবিরে।
মুসানা বলেছেন, আইএসে যাগ দিয়ে যা করছে তার জন্য সে দুঃখিত। এখন সে অ্যালাবামায় বসবাসরত তার পরিবারের কাছে ফিরতে চায়। শামীমা বেগমের মতো সে-ও এখন এক সন্তানের জননী। কিন্তু মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেও বলে দিয়েছেন, তার যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশের কোনো আইনগত সুযোগ নেই। যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এক টুইটার বার্তায় লিখেছেন, ‘মুসানাকে দেশে ঢুকতে না দেয়ার বিষয়ে তিনি পম্পেওকে নির্দেশ দিয়েছেন।’
কিন্তু শামীমার নাগরিকত্ব বাতিলের বিষয়ে যুক্তরাজ্যের সরকারি সিদ্ধান্ত যে রকম প্রশ্নের মুখে পড়েছে ঠিক সে রকম প্রশ্নের মুখে পড়েছে মুসানার মার্কিন নাগরিকত্ব থাকা না থাকার প্রশ্নটি। তার বাবা যুক্তরাষ্ট্রে কর্মরত একজন ইয়েমেনি কূটনীতিক ছিলেন। মুসানার জন্ম যুক্তরাষ্ট্রের হ্যাকেনস্যাকে। মার্কিন কর্মকর্তাদের মতে, যেহেতু তার বাবা ইয়েমেনি ‘কূটনীতিক’ সেহেতু কার্যত মুসানা মার্কিন আইনের আওতায় জন্ম নেননি। তার জন্য স্বয়ংক্রিয়ভাবে সংবিধানের ১৪ অনুচ্ছেদে বর্ণিত নাগরিকত্বের অধিকার প্রযোজ্য নয়।
অন্য দিকে ‘কাউন্সিল অন আমেরিকান-ইসলামিক রিলেশনসের’ কর্মকর্তা এবং মুসানার পরিবারের মুখপাত্র হাসান শিবলী বলেছেন, ‘তার জন্ম ১৯৯৪ সালের অক্টোবর মাসে। কিন্তু তার আগেই তার বাবা মার্কিন সরকারকে জানিয়ে দিয়েছিলেন যে তিনি আর কূটনীতিক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন না।’ ‘কনস্টিটিউশনাল ল’ সেন্টার ফর মুসলিমস ইন আমেরিকার’ পরিচালক চার্লস সুইফট মন্তব্য করেছেন, মুসানার বাবার কূটনীতিক পদ থেকে অব্যাহতি নেয়ার ঘটনা যেহেতু তার জন্মের আগেই হয়েছে, সেহেতু জন্মসূত্রে সে মার্কিন নাগরিক। চার্লস সুইফট মার্কিন সরকারের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আইনি লড়াইয়ের প্রস্তুতি নিচ্ছেন।

 


আরো সংবাদ



premium cement
চীনা কোম্পানি বেপজা অর্থনৈতিক জোনে ১৯.৯৭ মিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করবে মৃত মায়ের গর্ভে জন্ম নিলো নতুন প্রাণ দুই ভাইকে পিটিয়ে হত্যার প্রতিবাদ সমাবেশে কেউ মারা যায়নি : পুলিশ সুপার হামাসকে কাতার ছাড়তে হবে না, বিশ্বাস এরদোগানের জাহাজভাঙা শিল্পে শ্রমিক নিরাপত্তার উদ্যোগ ভালো লেগেছে : সীতাকুন্ডে মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাস ১০ দেশের অংশগ্রহণে সামরিক মহড়া শুরু করল আরব আমিরাত গাজা থেকে ইসরাইলি সেনা প্রত্যাহারের পর ২ হাজার ফিলিস্তিনি নিখোঁজ ৯ বছর পর সৌদি আরবে আসছে ইরানি ওমরা কাফেলা দুই ভাইকে পিটিয়ে হত্যা : প্রতিবাদ সমাবেশে পুলিশের হামলার নিন্দা হেফাজতে ইসলামের ভর্তি পরীক্ষায় জবিতে থাকবে ভ্রাম্যমাণ পানির ট্যাংক ও চিকিৎসক মিয়ানমার থেকে ফেরত আসা বাংলাদেশীরা কারা?

সকল