২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫
`

এ বছর বিশ্বে ভোট দেবে সর্বাধিক সংখ্যক মানুষ দেশে দেশে নির্বাচনে নানা বৈচিত্র্য

-

সরকার বা রাষ্ট্রপ্রধান পরিবর্তনের জন্য এ বছর সর্বাধিক ৫৩টি দেশের প্রায় দুই বিলিয়ন ভোটার তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করবে। কয়েকটি বড় বড় দেশে এবার ভোট হবে। এর মধ্যে রয়েছে ভারত, ইন্দোনেশিয়া ও নাইজেরিয়া। ভারতে রয়েছে ৮০ কোটি ভোটার, ইন্দোনেশিয়ায় ১৮ কোটি ৭০ লাখ ও নাইজেরিয়ায় আট কোটি ৪০ লাখ। কাতার-ভিত্তিক গণমাধ্যম আলজাজিরার এক প্রতিবেদনে এমন তথ্য উঠে আসে।
নির্বাচন হবে ৩ ধরনের
এ বছর তিন ধরনের নির্বাচন হবে। এর একটি প্রেসিডেন্ট নির্বাচন, একটি সংসদীয় নির্বাচন অন্যটি সাধারণ নির্বাচন।
প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ভোটাররা দেশের প্রেসিডেন্ট নির্বাচন করেন। তিনি দেশের সর্বোচ্চ রাজনৈতিক অবস্থান ধরে রাখেন এবং আনুষ্ঠানিকভাবে দেশের প্রতিনিধিত্ব করেন। সংসদীয় নির্বাচনে ভোটাররা দেশের আইন পরিষদ বা সংসদ গঠন করে। নির্বাচিত প্রতিনিধিদের থেকে পরে সরকার প্রধান বা প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হন। আইন পরিষদ দেশ পরিচালনার জন্য আইন প্রণয়ন ও প্রয়োগ এবং সরকারের প্রতিদিনের কার্যক্রম পরিচালনা করে। দক্ষিণ আফ্রিকা, ব্রাজিল ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টরা রাষ্ট্রের প্রধান ও সরকারেরও প্রধান। এ দেশগুলোতে কোনো প্রধানমন্ত্রী নেই। সাধারণ নির্বাচনে ভোটাররা রাজ্যের প্রধান হিসেবে ফেডারেল এবং স্থানীয় প্রতিনিধি নির্বাচন করে।
এ বছর ৫৩টি দেশে ভোট
২০১৯ সালে ৫৩টি দেশে ভোট হবে। তবে জানুয়ারিতে কোনো দেশে ভোট হয়নি। আর আগস্ট ও সেপ্টেম্বরেও কোনো দেশে ভোট হবে না। ফেব্রুয়ারিতে ভোট হবে তিনটি দেশে। দেশগুলো হলো এল সালভাদর, নাইজেরিয়া ও সেনেগাল। মার্চ মাসে সাতটি দেশ টুভালু, এস্তোনিয়া, গিনি বিসাউ, স্লোভাকিয়া, কমরো, থাইল্যান্ড ও ইউক্রেন। এপ্রিলে ১০টি দেশ ভারত, অ্যান্ডোরা, ইসরাইল, ফিনল্যান্ড, ইন্দোনেশিয়া, আলজেরিয়া, বেনিন, স্পেন, উত্তর ম্যাসেডোনিয়া ও মালি। তবে ভারতের নির্বাচনের তারিখ এখনো ঘোষণা করা হয়নি। সেখানে মে মাসের প্রথম দিকেও নির্বাচন হতে পারে।
মে মাসে ভোট হবে ১০টি দেশে। দেশগুলো হলো অস্ট্রেলিয়া, মৌরিতানিয়া, পানামা, দক্ষিণ আফ্রিকা, লিথুনিয়া, ফিলিপাইন, মালাউই, বেলজিয়াম, নেদারল্যান্ডস ও চাদ। জুন মাসে চারটি দেশে লিবিয়া, গুয়াতেমালা, ডেনমার্ক ও লাটভিয়া। জুলাই মাসে তিনটি দেশ গায়ানা, নাউরু ও আফগানিস্তান। অক্টোবরে ৯টি দেশে ভোট হবে। দেশগুলো হলো বোতসোয়ানা, কানাডা, উরুগুয়ে, পর্তুগাল, মোজাম্বিক, গ্রিস, সুইজারল্যান্ড, আর্জেন্টিনা ও বলিভিয়া। নভেম্বরে দু’টি দেশ মার্শাল দ্বীপপুঞ্জ ও নামিবিয়া। ডিসেম্বরে চারটি দেশ ক্রোয়েশিয়া, ডোমিনিকা, রোমানিয়া ও তিউনিশিয়া।
ভোটারের বয়স একেক দেশে একেক রকম
বিশ্বের ৯০ ভাগ নাগরিক ভোটার হন ১৮ বছর বয়সে। সর্বোচ্চ ২১ বছরে লেবানন, মালয়েশিয়া, সামোয়া, সিঙ্গাপুর ও টোঙ্গায় ভোটার হওয়া যায়। তবে ১৬ বছরে ভোটার হওয়া যায় সাতটি দেশে। দেশগুলো হলো আর্জেন্টিনা, অস্ট্রিয়া, ব্রাজিল, কিউবা, ইকুয়েডর ও মাল্টা। ১৭ বছরে চারটি দেশে ইথিওপিয়া, ইন্দোনেশিয়া, দক্ষিণ সুদান ও পূর্ব তিমুর। ১৮ বছরে ভোটার হওয়া যায় সর্বাধিক ১৬০টি দেশে। ১৯ বছরে একটি দেশে দক্ষিণ কোরিয়া ও ২০ বছরে দু’টি দেশ ক্যামেরুন ও নাউরুতে ভোটার হওয়া যায়।
নারীরা কখন থেকে ভোট দেয়ার অধিকার পায়
নিউজিল্যান্ড প্রথম দেশ যারা নারীদের ভোট দেয়ার অধিকার দেয়। ১৮৯৩ সালে দেশটিতে নারীরা ভোটাধিকার পায়। ১৯৫০ সালে বিশ্বের দুই-তৃতীয়াংশ দেশ সব প্রাপ্তবয়স্ক নাগরিকদের ভোটের সমান অধিকার দেয়। ইউরোপীয় দেশ সুইজারল্যান্ড নারীদের ভোট দেয়ার অধিকার দেয় ১৯৭১ সালে। এটি ছিল ইউরোপে নারীদের ভোটাধিকার দেয়া সর্বশেষ দেশ। ১৯৯৪ সালে দক্ষিণ আফ্রিকায় বর্ণবাদ শেষ হওয়ার পরে সবাইকে সমান ভোটাধিকার দেয়া হয়। আফগানিস্তানে নারীরা কয়েকবার ভোট দেয়ার অধিকার পেয়েছে ও হারিয়েছে। ২০০৪ সাল থেকে তারা ভোটের অধিকার ধরে রেখেছে।
কত বছর পরপর ভোট
বেশির ভাগ দেশে চার থেকে পাঁচ বছর পরপর নির্বাচন হয়। সর্বাধিক ঘন ঘন নির্বাচন হয় সান মারিনোতে। সেখানে প্রতি ছয় মাস পর নির্বাচন হয়। সেই নির্বাচনে বিকল্প দলগুলোর দুই পক্ষের একজন নেতা নির্বাচিত হন। তিন বছর পরপর নির্বাচন হয় চারটি দেশে অস্ট্রেলিয়া, ফিজি, নাউরু ও নিউজিল্যান্ড। চার বছর পরপর নির্বাচন হয় ৫১টি দেশে, পাঁচ বছর পর ১০১টি দেশে। ছয় বছর পরপর নির্বাচন হয় ছয়টি দেশে। দেশগুলো হলো কিরগিজিস্তান, লাইবেরিয়া, মেক্সিকো, ফিলিপাইন, রাশিয়া ও ভেনেজুয়েলা। সাত বছর পরপর নির্বাচন হয় ৯টি দেশে আজারবাইজান, ক্যামেরুন, ইকোয়েটোরিয়াল গিনি, গ্যাবন, রুয়ান্ডা, সিরিয়া, তাজিকিস্তান ও তুর্কমেনিস্তান। ছয়টি দেশে নির্বাচনের কোনো মেয়াদ নেই। দেশগুলো হলো ডেনমার্ক, গ্রিস, জর্দান, মন্টিনিগ্রো, টুভালু ও ভানুয়াতু।
নেতৃত্বে থাকার সময় ভিন্ন
নির্বাচিত হলে ক্ষমতায় থাকার মেয়াদ একেক দেশে একেকটা। অধিকাংশ নেতা এক বা দুই মেয়াদে নেতৃত্ব দেন। তবে কোনো কোনো দেশে নির্দিষ্ট সময়সীমার মধ্যে মেয়াদ শেষ না করা অস্বাভাবিক নয়। কিছু দেশের নেতৃত্ব, যেমন যুক্তরাজ্য ও নিউজিল্যান্ডে সংসদে সর্বাধিক সমর্থন হারানো বা পদত্যাগ না করার আগ পর্যন্ত কাজ করে। ভেনেজুয়েলার মতো দেশে দায়িত্ব পালনের কোনো মেয়াদ নেই। দেশটিতে ভোটারদের আবেদনের পরেই আবার নেতা নির্বাচন হবে। বিশ্বের ৪২টি দেশে এক ব্যক্তির ক্ষমতায় থাকার মেয়াদ এক টার্ম। দুই টার্ম মেয়াদ ৮৩টি দেশে। ৫৩টি দেশে ক্ষমতায় থাকার নির্দিষ্ট কোনো মেয়াদ নেই।
সর্বোচ্চ মেয়াদে ক্ষমতায় থাকা বর্তমান নেতা
ক্যামেরুনের প্রেসিডেন্ট পল বিয়া বিশ্বের দীর্ঘতম সময় ক্ষমতায় থাকা নেতা। তিনি ৪৪ বছর ধরে ক্ষমতায় রয়েছেন। তার পরেই রয়েছেন ইকোয়েটোরিয়াল গিনির তিওডোর ওবিনগ নাগিয়মা মবাসোগো। তিনি ক্ষমতায় আছেন ৩৪ বছর। তৃতীয় অবস্থানে আছেন কম্বোডিয়ার হুন সেন। তিনি ক্ষমতায় আছেন ৩৪ বছর। এক বছরের নিচে ক্ষমতায় আছেন ৩৮ জন। এক থেকে চার বছরের মধ্যে ৭২ জন, পাঁচ থেকে নয় বছরের মধ্যে ২৪ জন, ১০ থেকে ১৯ বছরের মধ্যে ১৫ জন, ২০ থেকে ৩০ বছরের মধ্যে চারজন এবং ৩০ বছরের উপরে চারজন ক্ষমতায় আছেন।
কারাবন্দীদের ভোট
৫২টি দেশের সব কারাবন্দী ভোটার ভোট দিতে পারে। কিছু বন্দী ভোট দিতে পারে ৬৫টি দেশে। আর কারাবন্দীদের কেউ ভোট দিতে পারে না ৬০টি দেশে।
সূত্র: আলজাজিরা


আরো সংবাদ



premium cement
বান্দরবানে বৃষ্টির চেয়ে চোখের পানি ফেলে বিশেষ নামাজ চকরিয়ায় যুবককে গুলি ও কুপিয়ে হত্যা, গ্রেফতার ৭ উপজেলা নির্বাচনে ব্যর্থ হলে গণতন্ত্র ক্ষুণ্ন হবে: সিইসি বাগাতিপাড়ায় ইসতিসকার নামাজ পরিবর্তনশীল জলবায়ুর জন্য কাসাভা উপযুক্ত, হেক্টরপ্রতি ফলন ৩৫-৫০ টন : বাকৃবি অধ্যাপক বৃষ্টির জন্য হাকাকার, সাভারে ইসতিসকার নামাজ আদায় বরিশালে সালাতুল ইসতিসকার আদায় অর্ধ শতাব্দীতে ভ্যাকসিন সাড়ে ১৫ কোটি লোকের জীবন বাঁচিয়েছে : বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা আল্লাহর রহমত কামনায় সকলকে সিজদাহ অবনত হতে হবে-মাওলানা দেলোয়ার হোসাইন কাউখালীতে বৃষ্টির জন্য কাঁদলেন মুসল্লিরা ভাঙ্গায় বৃষ্টির জন্য ইসতিসকার নামাজ আদায়

সকল