২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১, ১৪ শাওয়াল ১৪৪৫
`

২৬ শীর্ষ ধনীর সম্পদ বিশ্বের অর্ধেক দরিদ্র মানুষের সম্পত্তির সমান : অক্সফাম

গত বছর ৩৮০ কোটি দরিদ্র মানুষের মোট সম্পদ ১১ শতাংশ কমেছে। আর ধনীদের বেড়েছে প্রতিদিন ২৫০ কোটি ডলার : ইন্টারনেট -

বিশ্বের সম্পত্তি গুটিকয়েক মানুষের হাতে কেন্দ্রীভূত হওয়ার বিষয়টি সামনে এনেছে দাতব্য সংস্থা অক্সফাম। বিশ্ব অর্থনৈতিক সম্মেলনকে কেন্দ্র করে প্রকাশিত এক রিপোর্টে অক্সফাম জানিয়েছে, বিশ্বের দরিদ্র জনগোষ্ঠীর অর্ধেকের (৩৮০ কোটি) মানুষের মোট সম্পত্তির সমান সম্পদ রয়েছে বিশ্বের ২৬ শীর্ষ ধনীর কাছে।
অক্সফাম জানিয়েছে, ২০১৮ সালের বিশ্বের ধনীরা আরো ধনী হয়েছে এবং দরিদ্ররা হয়েছে দরিদ্রতর। সম্পত্তির এই বিশাল ব্যবধানের কারণে দারিদ্র্যের বিরুদ্ধে লড়াই বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। যদি শীর্ষ ধনীদের আয়ে ১ শতাংশ সম্পদ কর আরোপ করা হয় তাহলে বছরে ৪১ হাজার ৮০০ কোটি ডলার অর্থ আসবে। এই অর্থ দিয়ে স্কুলে যাচ্ছে না এমন শিশুদের শিক্ষা দেয়া এবং স্বাস্থ্যসেবা দিয়ে ৩০ লাখ মৃত্যু এড়ানো যাবে।
অক্সফামের মতে, বিশ্বের ২২০০ বিলিওনিয়ারের সম্পত্তির মূল্য ২০১৮ সালে বেড়েছে ৯০ হাজার কোটি ডলার, প্রতিদিন বেড়েছে ২৫০ কোটি ডলার। বিশ্বের ধনকুবেরদের সম্পত্তি বৃদ্ধির হার ১২ শতাংশ। বিপরীতে বিশ্বের দরিদ্র অর্ধেক মানুষের সম্পত্তি কমেছে ১১ শতাংশ। এর ফলে বিশ্বের অর্ধেক মানুষের সমান সম্পত্তি জমা হয়েছে বিলিওনিয়ারদের হাতে। রিপোর্টটিতে আরো উঠে এসেছে, আর্থিক মন্দার পর গত দশ বছরের বিলিওনিয়ারদের সংখ্যা দ্বিগুণ হয়েছে। ২০১৭ ও ২০১৮ সালের প্রতি দুই দিন অন্তর নতুন একজন করে বিলিওনিয়ার বা শত কোটিপতি হয়েছেন। ব্রিটেনের ধনীদের ১০ শতাংশের তুলনায় দরিদ্রতম ১০ শতাংশ মানুষ উচ্চহারে কর দিচ্ছেন। অক্সফামের রিপোর্টে বলা হয়েছে, বিশ্বের সবচেয়ে ধনী ব্যক্তি জেফ বেজসের সম্পত্তি বেড়েছে ১১২ বিলিয়ন ডলারে। তার এই সম্পত্তির মাত্র ১ শতাংশ ১০৫ মিলিয়ন জনসংখ্যার দেশ ইথিওপিয়ার পুরো স্বাস্থ্য বাজেটের সমান। অক্সফামের প্রচারণা ও নীতিবিষয়ক পরিচালক ম্যাথিউ স্পেনসার বলেন, চরম দারিদ্র্যে বাস করা মানুষের সংখ্যা কমে আসা গত শতকের শেষার্ধের বড় অর্জন। কিন্তু ক্রমবর্ধমান অসমতা ভবিষ্যতে এই খাতের অগ্রগতিকে জটিল করে তুলছে। আমাদের অর্থনীতি যে পথে চলছে তাতে সম্পত্তি ক্রমবর্ধমানভাবে এবং অন্যায্যভাবে কয়েকজনের কাছে জমা হচ্ছে। স্পেনসার আরো বলেন, এটি এমন হওয়া উচিত নয়। সবাইকে বেঁচে থাকার সুযোগ দেয়ার পর্যাপ্ত সম্পদ রয়েছে পৃথিবীতে। সরকারগুলোর উচিত সম্পদ ও ব্যবসায়ীদের কর বাড়ানো। যাতে করে তারা জনগণের জীবন পরিবর্তনের জন্য উন্নতমানের সরকারি সেবা নিশ্চিত করতে ভূমিকা রাখতে পারে।
এতে বলা হয়েছে, অনেক দেশ সরকারি সেবাখাতে বিনিয়োগ করতে ব্যর্থ হওয়ায় অসাম্যকে তীব্রতর করে তুলছে। স্বাস্থ্যসেবা না পাওয়ায় ১০ হাজার মানুষের মৃত্যু হয়েছে। ২৬২ মিলিয়ন শিশু এখও স্কুলে যেতে পারছে না, কারণ তাদের বাবা-মারা স্কুলের ফি, পোশাক ও বই কিনে দিতে পারছে না। এদিকে বিশ্ব অসাম্য রিপোর্ট ২০১৮-এ উল্লেখ করা হয়েছে, ১৯৮০ থেকে ২০১৬ সাল পর্যন্ত বিশ্বের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির প্রতি ডলারের মধ্যে মাত্র ১২ সেন্ট অর্জন করেছে পৃথিবীর অর্ধেক দরিদ্র মানুষ। বিপরীতে শীর্ষ ধনী ১ শতাংশ প্রতি ডলারের ২৭ সেন্ট পেয়েছে।
সূত্র : গার্ডিয়ান


আরো সংবাদ



premium cement