চীনের বন্দিশিবিরগুলো মৃত্যুর চেয়েও ভয়াবহ নির্যাতন কেন্দ্র
শিবির থেকে জীবিত ফেরা দিলনুর- ১২ ডিসেম্বর ২০১৮, ০০:০০
চীনে যে দুর্দশার মুখোমুখি হয়েছিলেন এবং সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য যে কঠিন সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন সে সম্পর্কে বিস্তারিত জানিয়েছেন তুরস্কে আশ্রয় নেয়া উইঘুর মুসলমানেরা। জিনজিয়াং নামে পরিচিত পূর্ব তুর্কিস্তানে চীন সরকারের নিপীড়ন ও সরকারিভাবে পরিচালিত ‘নির্যাতন কেন্দ্র’ থেকে পালিয়ে আসার আগে ভয়াবহ পরিস্থিতির মুখোমুখি হওয়ার কথা ডেইলি ইয়ানি সাফাককে বর্ণনা করেছেন তারা।
তাদের ফোন কলে আড়ি পাতে চীন কর্তৃপক্ষ। চীনে দুই সন্তানকে পরিত্যাগ করতে বাধ্য হওয়ার পর তিন সন্তানের জননী উইঘুর মা দিলনুর ইনভের পাঁচ বছর বয়সী তেনজিলিসহ তুরস্কে আশ্রয় নিয়েছেন। তার বাবা-মাকে চীনা সরকার আটক করেছিল এবং দিলনুর তাদের সাথে যোগাযোগ করতে পারছিলেন না। তার চার বছরের ছেলে ইহসান এবং সাত বছর বয়সী মেয়ে নেজিরি কাশগড়ে রয়ে গেছে। কিন্তু দিলনুর তাদের সাথে যোগাযোগ করতে ব্যর্থ হয়েছিলেন।
দিলনুর বলেন, ‘যদি আমি আমার দেশে ফিরে যাই তবে আমি জানি আমাকে অবিলম্বে শিবিরে পাঠানো হবে। আমার জন্য এটি বেছে নেয়া মৃত্যুর চেয়েও খারাপ’। দিলনুর বলেন, তার পরিবারের সব সদস্য তাকে তাদের সাথে যোগাযোগের ব্যাপারে সতর্ক করে দিয়েছিল, কারণ পূর্ব তুর্কিস্তানে উইঘুর মুসলিমদের ফোন কলগুলোতে চীনের সরকার আড়ি পেতেছে, যা তাকে তার নিজ দেশের সাথে সম্পর্ক বন্ধ করতে বাধ্য করেছিল।
‘ক্যাম্প না, নির্যাতন কেন্দ্র’
তৃতীয় সন্তানের জন্ম দেয়ার পর রাবিয়া গুলকে সাত বছরের কারাদণ্ড দেয়া হয় এবং চীনের দুই সন্তানের নীতির কারণে শিশুটিকে অনিবন্ধিত শিশু হিসেবে চার বছরের জন্য গোপন করে রাখতে হয়েছিল। রাবিয়া গুল বলেন, ‘যদি আমি তুরস্কে পালাতাম, তাহলে আমাকে নির্যাতন কেন্দ্রে পাঠানো হতো, যদিও তারা ‘ক্যাম্প’ বলে।
‘আমার অনেক আত্মীয় এই ক্যাম্পগুলোতে থাকত। সেখানে একটি নির্যাতন কেন্দ্র রয়েছে যেখানে পোঁছানোর সাথে সাথেই ধর্ষণের মাধ্যমে নির্যাতন শুরু হয়।’ গুলের শিশু মেয়েটি বর্তমানে আত্মীয়স্বজনদের কাছে বেড়ে ওঠছে। অনেকে উইঘুরদের স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চল চীনের জিনজিয়াংকে উল্লেখ করেন পূর্ব তুর্কিস্তান বলে। এখানে তুর্কি উইঘুরসহ অনেক সংখ্যালঘু গোষ্ঠী বসবাস করে। তারা বিশ্বাস করে যে উইঘুর এলাকায় বসবাসকারীদের একটি অংশ তুর্কি উপজাতি এবং এরা চীনা নয় বরং মধ্যএশিয়ার অংশ।
চীনের মুসলমান জনসংখ্যার জন্য ‘রাজনৈতিক পুনর্শিক্ষা’ এর অজুহাতে বেইজিং গত তিন মাসে বন্দিশিবির নির্মাণ আরো বাড়িয়ে দিয়েছে। উপগ্রহে ধারণকৃত চিত্রাবলি অনুসারে এই ক্যাম্প অতিরিক্ত সাত লাখ বর্গমিটার বিস্তৃত করা হয়েছে। চীনের মুসলিম বন্দিশিবিরগুলো আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছ থেকে তীব্র সমালোচনার মুখে পড়েছে। কিন্তু বেইজিং বন্দিশিবিরের অস্তিত্বকে অস্বীকার করেছে এবং কয়েক বছর ধরে দেশের উইঘুর সংখ্যালঘুদের বিরুদ্ধে নিপীড়নের অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করেছে। তারা এসব অভিযোগের পরিবর্তে এসবকে ‘বৃত্তিমূলক প্রশিক্ষণকেন্দ্র’ বলে আসছে। সূত্র : ইয়ানি সাফাক
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা