২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১, ১৪ শাওয়াল ১৪৪৫
`

সঙ্ঘাত রক্তপাতে ক্লান্ত ইয়েমেনের জনগণ আর যুদ্ধ চায় না

-

ইয়েমেনের হাউছি বিদ্রোহী দখলকৃত সানা ও রাষ্ট্রনিয়ন্ত্রিত এডেনের বাসিন্দারা একটি ব্যাপারে একমত যে, তারা সবাই শান্তি চায়। চার বছর ধরে চলা গৃহযুদ্ধ দেশটিতে চরম মানবিক বিপর্যয় ডেকে এনেছে। অনুন্নত দেশটির বাসিন্দারা প্রায় প্রতিদিনই প্রতিপক্ষ বিরোধী প্রপাগান্ডা ও উত্তেজনা সৃষ্টিকারী বক্তব্য বক্তৃতা শুনছে। এই ধরনের বক্তব্য দিয়ে যুদ্ধরত দলগুলো তাদের সমর্থক সাধারণ মানুষকে শত্রুদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে উদ্বুদ্ধ করছে।
ইয়েমেনের সর্বত্রই যুদ্ধ ছড়িয়ে পড়েছে। সশস্ত্র যোদ্ধারা সামরিক পোশাক পরে সরু অলিগলি থেকে শুরু করে বাজারের দেয়ালগুলোতে শহীদ যোদ্ধাদের পোস্টার সেঁটে দিচ্ছে। কিন্তু অনেক ইয়েমেনি মনে করে যথেষ্ট হয়েছে। আর যুদ্ধ নয়।
ইরান সমর্থিত হাউছি বিদ্রোহী আর সৌদি সমর্থিত সরকারের মধ্যে এই গৃহযুদ্ধ চলছে। সাধারণ নাগরিক যে দলের পক্ষেই থাকুক, এ যুদ্ধ আরব বিশ্বের দরিদ্র জনগোষ্ঠীটিকে দুর্ভিক্ষের দ্বারপ্রান্তে এনে দাঁড় করিয়েছে। সানার বাব আল সাবাহ মার্কেটের দোকানি আমিন মোহাম্মদ বলেন, যুদ্ধে কোনো ক্ষমা নেই। এটা সব কিছু গ্রাস করে নেয়। তিনি আরো বলেন, প্রতিদিনই ইয়েমেনিরা যুদ্ধ বন্ধের ঘোষণা শোনার জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছে। রাজধানীর বাজারগুলোতে মোহাম্মদের মতো দোকানিরা দোকান খুলে খদ্দেরের আশায় বসে থাকে। ক্রেতা-বিক্রেতা উভয়েই জীবনযাত্রা স্বাভাবিক করতে চায়। কিন্তু দেশটির হুতি বিদ্রোহীরা নগরীর গণমাধ্যম ও মসজিদগুলোর মাইকে সরকার ও সৌদি সমর্থিত জোটের বিরুদ্ধে লড়াই করার জন্য মানুষকে আহ্বান করছে। হাউছি নিয়ন্ত্রিত আল মাশিরাহ টিভি মানুষকে হাউছি বাহিনীতে যোগ দিতে উদ্বুদ্ধ করার জন্য অব্যাহতভাবে সামরিক অভিযান ও রণসঙ্গীত প্রচার করছে। হাউছিদের জনপ্রিয় স্লোগান হচ্ছে, এটি আমাদের দেশ। এটা আমাদের যুদ্ধ।
কিন্তু স্থানীয় বাসিন্দা হাসান আবদুল করিম এতে ভ্রুক্ষেপ করছেন না। সাত সন্তানের মুখের আহার যোগানোই এখন এই বাসচালকের একমাত্র চিন্তা। তিনি বলেন, এই যুদ্ধ, এত রক্তপাত ও লাশ দেখতে দেখতে আমরা ক্লান্ত। সানার এই বাসিন্দা আরো বলেন, যথেষ্ট হয়েছে। আর নয়। এখন সময় এসেছে ইয়েমেনকে নতুন করে সাজানোর। দেশ পুনর্গঠনে সব মানুষের অংশগ্রহণ প্রয়োজন। এদিকে সরকার নিয়ন্ত্রিত রাজধানী এডেন থেকে প্রায় ৩০০ কিলোমিটার দক্ষিণের বাসিন্দা খুলুদ আল আকেলও আবদুল করিমের মতোই ভাবছেন। তিনি বলেন, এই যুদ্ধ দেখতে দেখতে আমরা খুবই ক্লান্ত। যুদ্ধবিধ্বস্ত অঞ্চলের এই নারী আরো বলেন, আমাদের গ্যাস, পানি ও খাবারের তীব্র সঙ্কট দেখা দিয়েছে। বাষ্পরুদ্ধ কণ্ঠে তিনি বলেন, এ জন্যই আমরা এই যুদ্ধের অবসান চাই।

 


আরো সংবাদ



premium cement

সকল