২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫
`
অভিযুক্তদের ফাঁসি চেয়েছেন সৌদি কৌঁসুলি

খাশোগি খুনের আন্তর্জাতিক তদন্তের আহ্বান তুরস্কের

-

ইস্তাম্বুলে সৌদি দূতাবাসে সৌদি সাংবাদিক জামাল খাশোগির হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় আন্তর্জাতিক তদন্তের আহ্বান জানিয়েছে তুরস্ক। তুর্কি পররাষ্ট্রমন্ত্রী মওলুদ কাভুসোগলু গত বুধবার রাষ্ট্রীয় বার্তাসংস্থা আনাদোলুকে বলেন, বিষয়টি এখন যে পর্যায়ে রয়েছে তাতে আমরা মনে করি, একটি আন্তর্জাতিক তদন্ত খুবই জরুরি।
সৌদি রাজতন্ত্রের সমালোচক ও ওয়াশিংটন পোস্টের কলামিস্ট খাশোগিকে গত ২ অক্টোবর তুরস্কের সৌদি দূতাবাসে পূর্বপরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়। শুধু এ হত্যাকাণ্ড ঘটানোর জন্যই সৌদি থেকে ১৫ জনের একটি দল ইস্তাম্বুল এসেছিল। প্রথমে সৌদি কর্তৃপক্ষ এ ব্যাপারে কোনো ধরনের সম্পৃক্ততা অস্বীকার করলেও পরে এ ব্যাপারে দায় স্বীকার করে এবং এ হত্যাকাণ্ডের সাথে যুক্ত থাকার অভিযোগে ১৮ জনকে গ্রেফতার করে।
আঙ্কারা শুরু থেকেই এ ব্যাপারে সৌদি আরবের সহযোগিতা কামনা করেছিল। এই পরিপ্রেক্ষিতে রিয়াদ তুর্কি কর্তৃপক্ষের সাথে আলোচনা ও কন্স্যুলেট অফিস পরীক্ষা করতে তাদের প্রধান কৌঁসুলিকে ইস্তাম্বুল পাঠায়। তবে সৌদি কর্তৃপক্ষ আসলেই সহযোগিতা করতে চেয়েছিল কি না সে বিষয়ে সন্দেহ প্রকাশ করে তুরস্ক। কাভুসোগলু পার্লামেন্টে বলেন, প্রথমেই এ বিষয়ে তদন্ত করতে আমরা সৌদি আরবকে একটি যৌথ টিম গঠন করতে বলেছিলাম এবং বিষয়টি নিয়ে আন্তর্জাতিক আদালতে যাওয়ার কোনো ইচ্ছা আমাদের ছিল না। কিন্তু এখন তুর্কি সরকার মনে করছে, এক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক তদন্ত প্রয়োজন ছিল। এক্ষেত্রে আমাদের যা যা করা দরকার আমরা তা-ই করব। যারা এ ব্যাপারে প্রমাণ দেখতে চেয়েছিলেন, তাদের আমরা তা দেখিয়েছি। তুরস্ক এর আগে আন্তর্জাতিক তদন্তের ক্ষেত্রে সহযোগিতা করবে বলে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলে। তারা বিষয়টি খোলাসা করতে জাতিসঙ্ঘের প্রতিও আহ্বান জানায়। তুর্কি কৌঁসুলির মতে, কন্স্যুলেটে প্রবেশ করামাত্রই খাশোগিকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয় এবং তার লাশ টুকরা টুকরা করে ফেলা হয়। কয়েক দফা অস্বীকার করার পর শেষ পর্যন্ত সৌদি স্বীকার করে, কন্স্যুলেটের মধ্যেই খাশোগি নিহত হয়েছেন, তবে তিনি নিহত হয়েছেন ধ্বস্তাধ্বস্তির কারণে।
অভিযুক্তদের ফাঁসি চেয়েছেন সৌদির কৌঁসুলি
এ দিকে, সৌদি আরবের সরকারি কৌঁসুলি খাশোগি হত্যাকাণ্ডের সাথে জড়িত সন্দেহভাজন ১১ জনের মধ্যে পাঁচজনের মৃত্যুদণ্ড চেয়েছেন। গতকাল বৃহস্পতিবার দেশটির সরকারি উপ-কৌঁসুলি ও মুখপাত্র সালান আল সালান সাংবাদিকদের জানান, ২ অক্টোবর এক লড়াইয়ের পর প্রাণঘাতি ইঞ্জেকশন পুশ করে খাশোগিকে হত্যা করা হয় এবং তার লাশকে টুকরো টুকরো করে কন্স্যুলেট ভবনের বাইরে নিয়ে আসা হয়।
সরকারি এই কৌঁসুলি কারো নাম উল্লেখ না করেই এ হত্যাকাণ্ডের নির্দেশদাতা ও হত্যাকাণ্ডে যুক্ত থাকা পাঁচ ব্যক্তির মৃত্যুদণ্ড এবং বাকিদের উপযুক্ত শাস্তি প্রদানের আহ্বান জানান। তিনি বলেন, ২১ জন সন্দেহভাজনের মধ্যে ১১ জনকে চিহ্নিত করা হয়েছে এবং তাদের আদালতে পাঠানো হবে। তবে হত্যাকাণ্ডের তাদের ভূমিকার ব্যাপারে পরিষ্কার ধারণা লাভে তদন্ত অব্যাহত থাকবে। সালান আরো বলেন, দেশে ফিরিয়ে আনার আলোচনা ব্যর্থ হওয়ার পর খাশোগিকে হত্যা করা হয়। খাশোগিকে দেশে ফেরত আনার আলোচনার ক্ষেত্রে যিনি নেতৃত্ব দিয়েছিলেন, তিনিই পরে খাশোগিকে হত্যার নির্দেশ দেন। তবে খাশোগির লাশের সন্ধান এখনো পাওয়া যায়নি বলে জানান তিনি।

 


আরো সংবাদ



premium cement