২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫
`

জিনজিয়াং ইস্যুতে বৈঠকের অনুরোধ পশ্চিমা রাষ্ট্রদূতদের

-

চীনের উইঘুর মুসলিম অধ্যুষিত জিনজিয়াং প্রদেশে মানবাধিকার লঙ্ঘনের ব্যাপারে ব্যাখ্যা জানতে দেশটির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সাথে বৈঠকে বসতে চাচ্ছেন বেইজিংয়ে থাকা কানাডার নেতৃত্বে ১৫ দেশের রাষ্ট্রদূতেরা। জিনজিয়াংয়ের কম্যুনিস্ট পার্টির শীর্ষ নেতা চেন কুয়াঙওয়ের কাছের তারা এ বিষয়ে একটি চিঠিও দিয়েছেন।
দেশটির পশ্চিমাঞ্চলীয় রাজ্য জিনজিয়াংয়ে বেইজিংয়ের মানবাধিকার লঙ্ঘনের উদ্বেগজনক ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে পশ্চিমা দেশগুলোর রাষ্ট্রদূতেরা বিরল এ পদক্ষেপ গ্রহণ করেন। চেনকে উদ্দেশ করে লেখা ওই চিঠিতে বলা হয়েছে, আমরা চীনে সংখ্যালঘু নৃগোষ্ঠী বিশেষ করে উইঘুর সম্প্রদায়ের ব্যাপারে গভীর উদ্বিগ্ন। এ পরিস্থিতির উন্নতির জন্য যত দ্রুত সম্ভব আমরা একটি বৈঠকে বসার জন্য আপনার কাছে অনুরোধ জানাচ্ছি। এ চিঠির কপি চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, জননিরাপত্তা মন্ত্রণালয় এবং কম্যুনিস্ট পার্টির আন্তর্জাতিক বিভাগেও দেয়া হয়েছে।
চিঠিতে কানাডা, ব্রিটেন, ফ্রান্স, সুইজারল্যান্ড, ইউরোপীয় ইউনিয়ন, জার্মানি, ডেনমার্ক, অস্ট্রেলিয়া, আয়ারল্যান্ড, সুইডেন, বেলজিয়াম, নরওয়ে, এস্তোনিয়া, ফিনল্যান্ড ও নেদারল্যান্ডসের রাষ্ট্রদূতদের নাম রয়েছে। এক্ষেত্রে নেতৃত্ব দিচ্ছে কানাডার রাষ্ট্রদূত। এ চিঠিতে যুক্তরাষ্ট্র সংযুক্ত না থাকলেও তারা এ ব্যাপারে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে জানিয়েছে, তারা চীনকে অব্যাহতভাবে এ ধরনের কর্মকাণ্ড বন্ধ করার আহ্বান জানাচ্ছে। এতেও যদি তারা সংযত না হয় তাহলে তারা জিনজিয়াংয়ে মানবাধিকার লঙ্ঘনের সাথে জড়িত চেনসহ অন্যান্য কর্মকর্তা ও কোম্পানিগুলোর ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপের বিষয়টি বিবেচনা করবে।
চিঠির ব্যাপারে চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র হুয়া চুনিঙ বলেন, তিনি এখনো চিঠিটি দেখেননি। তবে জিনজিয়াংয়ে রাষ্ট্রদূতদের স্বাগত জানাই। কিন্তু যদি তারা রাজ্যটির সরকারের ওপর চাপ সৃষ্টি করতে চান, তাহলে অবশ্যই সমস্যার কথা। রাষ্ট্রদূত হিসেবে দ্বিপাক্ষিক বিষয়গুলোতে পারস্পরিক সমঝোতা, বিশ্বাস ও সহযোগিতাকে ইতিবাচকভাবে উৎসাহিত করাই তাদের ভূমিকা হওয়া উচিত। কিন্তু এখন তারা চীনের অভ্যন্তরীণ ব্যাপারে হস্তক্ষেপ করতে চাচ্ছেন। জিনজিয়াং একটি উন্মুক্ত রাজ্য। আমরা বর্তমান পরিস্থিতি বোঝার জন্য তাদের সদিচ্ছাকে স্বাগত জানাই। কিন্তু আমাদের স্থানীয় সরকারের ওপর চাপ সৃষ্টি বা অভ্যন্তরীণ ব্যাপারে হস্তক্ষেপের যেকোনো তৎপরতার আমরা বিরোধিতা করব।
জিনজিয়াংয়ের উইঘুর ও অন্যান্য মুসলিম সম্প্রদায়ের ওপর দমন-নিপীড়ন ও নজরদারির বিরুদ্ধে মানবাধিকার সংস্থা, বিভিন্ন দেশ ও জাতিসঙ্ঘ মানবাধিকার বিশ্লেষকরা দীর্ঘ দিন ধরেই সমালোচনা করে আসছিলেন। গত আগস্টে জাতিসঙ্ঘের মানবাধিকার সংস্থা অনেকগুলো বিশ্বাসযোগ্য রিপোর্টের ভিত্তিতে জিনজিয়াংয়ের বিভিন্ন বন্দি শিবিরে ১০ লক্ষাধিক মুসলমানের ওপর নির্যাতন-নিপীড়নের কথা প্রকাশ করে। কিন্তু চীন এ ধরনের অভিযোগ অস্বীকার করে। তবে পরে তারা জানায়, এগুলো বন্দিশিবির নয়, বরং এগুলো বৃত্তিমূলক প্রশিক্ষণকেন্দ্র। এখানে কাউকে জোরপূর্বক বন্দী রাখা হয়নি। তবে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের কিছু দোষী লোকজনকেও এ ধরনের কেন্দ্রে পাঠানো হয়ে থাকে। বিশ্বব্যাপী মানবাধিকার সংস্থাগুলোর অভিযোগে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করে চীন জানিয়েছে, তারা অন্য রাষ্ট্রের অভ্যন্তরীণ ব্যাপারে হস্তক্ষেপ না করার নীতি অবলম্বন করে।


আরো সংবাদ



premium cement