২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫
`

রাশিয়ার সাথে পরমাণু চুক্তি বাতিল করবে যুক্তরাষ্ট্র : ট্রাম্প

-

রাশিয়ার সঙ্গে ১৯৮৭ সালে স্বাক্ষরিত পরমাণু চুক্তি থেকে বেরিয়ে আসার কথা ভাবছে যুক্তরাষ্ট্র। ইন্টারমিডিয়েট-রেঞ্জ নিউক্লিয়ার ফোর্সেস (আইএনএফ) নামের এই চুক্তি মস্কো ‘লঙ্ঘন’ করছে বলে অভিযোগ তুলে ওয়াশিংটন এ পদক্ষেপ নিচ্ছে বলে শনিবার এক সংবাদ সম্মেলনে জানিয়েছেন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। যুক্তরাষ্ট্রের এ পদক্ষেপকে বিশ্বের একমাত্র পরাশক্তি হওয়ার বাসনা আখ্যায়িত করে রাশিয়া বলেছে এ স্বপ্ন কখনোই পূরণ হবে না।’ তবে ব্রিটেন রাশিয়ার সাথে পরমাণু চুক্তি থেকে বেরিয়ে আসার মার্কিন সিদ্ধান্তকে সমর্থন করেছে।
তিন দশক আগে তৎকালীন সোভিয়েত ইউনিয়নের প্রধান মিখাইল গর্ভাচেভ ও মার্কিন প্রেসিডেন্ট রোনাল্ড রিগ্যান চুক্তিটি করেছিলেন। ওই চুক্তিতে ভূমি থেকে নিক্ষেপযোগ্য ৫০০ থেকে সাড়ে ৫ হাজার কিলোমিটার পাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র নিষিদ্ধ করা হয়েছিল। রাশিয়া অনেক দিন ধরেই চুক্তিটির ‘লঙ্ঘন’ করে আসছে বলে অভিযোগ ট্রাম্পের। নেভাদায় এক প্রচার সমাবেশে মার্কিন প্রেসিডেন্ট বলেন, ‘আমি জানি না কেন প্রেসিডেন্ট ওবামা এটি নিয়ে মধ্যস্থতা করেননি, কিংবা বেরিয়ে আসেননি। তারা অনেক বছর ধরে এটি (চুক্তি) লঙ্ঘন করে আসছে।”
মস্কো ভূমি থেকে নিক্ষেপযোগ্য ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্রের পরীক্ষা চালিয়েছে এমন খবর পাওয়ার পর ২০১৪ সালে তৎকালীন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ওবামা রাশিয়ার বিরুদ্ধে আইএনএফ চুক্তিটি লঙ্ঘনের অভিযোগ এনেছিলেন। চুক্তিটি থেকে সরে আসতে ইউরোপের নেতারা সেসময় তাকে চাপ দিলেও ‘অস্ত্র প্রতিযোগিতা পুনরায় শুরু হতে পারে এ আশঙ্কা থেকে’ ওবামা তাতে সায় দেননি।
স্নায়ুযুদ্ধের সময় সোভিয়েত ইউনিয়ন এসএস-২০ ব্যবস্থা গ্রহণ করায় যুক্তরাষ্ট্র উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছিল। মার্কিন মিত্ররা তখন যুক্তরাষ্ট্রের পারসিং ও ক্রুজ মিসাইল নেয়ার ব্যাপারে সম্মত হয়েছিল। এই ঘটনায় বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে এবং রাজনৈতিক অস্থিরতা সৃষ্টি হয়। পরে এই আইএনএফ চুক্তির মাধ্যমেই পরিস্থিতি শান্ত হয়। পরে বেশ কয়েকবার লঙ্ঘনের অভিযোগ আনলেও প্রেসিডেন্ট ওবামা কখনোই এই চুক্তি থেকে সরে আসতে চাননি। তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্র সরে এলে আবার বিশ্বে অস্ত্র প্রতিযোগিতা শুরু হয়ে যেতে পারে।
রাশিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একটি সূত্র রুশ বার্তা সংস্থা রিয়া নভোস্তিকে বলেছে, ‘এ চুক্তি থেকে বের হয়ে যাওয়ার পেছনে মূল কারণ হচ্ছে এককেন্দ্রিক বিশ্ব গড়ার স্বপ্ন। কিন্তু তা কি বাস্তবে রূপ লাভ করবে? না।’ ওই কর্মকর্তা বলেন, পরমাণু চুক্তি নস্যাৎ করার বিষয়ে বহুবার রাশিয়া মার্কিন উদ্যোগের প্রকাশ্যে নিন্দা করেছে। বহু বছর ধরে আমেরিকা ধীরে ধীরে এই চুক্তির ভিত্তি বানচাল করার চেষ্টা করে আসছে। যুক্তরাষ্ট্রের দাবি, রাশিয়া আইএনএফ চুক্তির নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে নোভাতর ৯এম৭২৯ নামে নতুন একটি মাঝারি পাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র বানিয়েছে। ন্যাটোর কাছে রুশ এ ক্ষেপণাস্ত্রটি এসএসসি-৮ নামে পরিচিত। নতুন এ ক্ষেপণাস্ত্র মস্কোকে স্বল্প সময়ের নোটিশেই ন্যাটোর সদস্যভুক্ত দেশগুলোতে হামলার সুযোগ করে দেবে বলে আশঙ্কা ওয়াশিংটনের। অপর দিকে চুক্তি লঙ্ঘনের কথা অস্বীকার ছাড়া নিজেদের নতুন ক্ষেপণাস্ত্র সম্পর্কে প্রায় তেমন কিছুই বলেনি রাশিয়া।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, প্রচলিত বাহিনীর বিপরীতে রাশিয়া এ ধরনের ক্ষেপণাস্ত্রকেই তুলনামূলক সস্তা বিকল্প হিসেবে বিবেচনা করছে। শুক্রবার নিউ ইয়র্ক টাইমসের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, আইএনএফ থেকে যুক্তরাষ্ট্রের সরে আসার মূল লক্ষ্য রাশিয়া নয়, চীন। পশ্চিম প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে বেইজিংয়ের বিস্তৃত সামরিক উপস্থিতির কারণেই ওয়াশিংটনের চুক্তি থেকে সরে আসার এ ভাবনা। আইএনএফে স্বাক্ষরকারী দেশের তালিকায় না থাকার কারণে চীনের মাঝারি পাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র বানাতে বাধা নেই।
চলতি সপ্তাহে যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা জন বোল্টনের মস্কো সফরের কথা রয়েছে। ওই সময় মস্কোর সঙ্গে আলোচনাকালে তিনি চুক্তি থেকে সরে যাওয়ার কথা রুশ কর্মকর্তাদের আনুষ্ঠানিকভাবে জানাবেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।

 


আরো সংবাদ



premium cement
টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের দূত হলেন উসাইন বোল্ট ডিএমপির অভিযানে গ্রেফতার ৩৭ বাংলাদেশে নতুন করে বাড়ছে ম্যালেরিয়া আক্রান্তের সংখ্যা হিট অ্যালার্ট নিয়ে আবহাওয়া অধিদফতরের নতুন বার্তা ভান্ডারিয়ায় পিকআপ চাপায় বৃদ্ধ নিহত হোচট খেল লিভারপুল, পিছিয়ে গেল শিরোপা দৌড়ে যোদ্ধাদের দেখতে প্রকাশ্যে এলেন হামাস নেতা সিনওয়ার! ফের পন্থ ঝড়, ঘরের মাঠে গুজরাটকে হারাল দিল্লি ইউক্রেনকে গোপনে দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র গ্রেফতারের পর যুক্তরাষ্ট্রের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ফিলিস্তিনপন্থীদের বিক্ষোভ আরো বেড়েছে ইউক্রেন যুদ্ধে দুর্নীতি, পুতিনের নির্দেশে গ্রেফতার রুশ উপ-প্রতিরক্ষামন্ত্রী! 

সকল