২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১, ১৪ শাওয়াল ১৪৪৫
`

তুরস্কের কাছে খাশোগি হত্যার রেকর্ডিং চেয়েছে যুক্তরাষ্ট্র

কন্স্যুলেট ভবনে ঘাতকদের হাতের ছাপ!
ইস্তাম্বুলে সৌদি কন্সাল জেনারেলের বাসভবনের পেছনের বাগানে অনুসন্ধানরত তুর্কি পুলিশ : ইন্টারনেট -

যে রেকর্ডিংয়ে ইস্তাম্বুল কন্স্যুলেট ভবনে সাংবাদিক জামাল খাশোগি হত্যাকাণ্ডের সাথে সৌদি কর্তৃপরে জড়িত থাকার প্রমাণ রয়েছে, সেটি ওয়াশিংটনকে সরবরাহ করার জন্য তুরস্ককে অনুরোধ করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। বুধবার হোয়াইট হাউজে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, আমার এটি চেয়েছি, আসলেই যদি এর অস্তিত্ব থাকে।
হত্যার রেকর্ডকৃত কথোপকথনের প্রমাণ চাওয়া হয়েছে জানিয়ে ট্রাম্প বলেন, আমি নিশ্চিত নই এমন কিছু রয়েছে। হয়তো আছে, সম্ভবত আছে। ট্রাম্প জানান, সৌদি আরব ও তুরস্ক সফরে থাকা মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেওর কাছ থেকে তিনি বিস্তারিত জানার আশা করছেন। এ সপ্তাহের শেষ দিকেই সত্য বেরিয়ে আসবে। তবে সৌদি আরবকে রার চেষ্টার কথা অস্বীকার করেছেন ট্রাম্প। তিনি বলেন, না, কোনোভাবেই না। আমি শুধু জানতে চাই সত্যিকার অর্থে কী ঘটেছে।
এর আগে খাশোগির নিখোঁজের ঘটনায় দুর্বৃত্তরা জড়িত থাকতে পারে বলে দাবি করেছিলেন ট্রাম্প। সৌদি নেতাদের দিকে অভিযোগ তোলার বিষয়ে তিনি সতর্কতা অবলম্বন করেছেন। বলেছেন, নির্দোষ প্রমাণিত হওয়ার আগ পর্যন্ত তাদের অপরাধী বিবেচনা করা হচ্ছে।
এ দিকে ইস্তাম্বুলে সৌদি আরবের দু’টি কূটনৈতিক ভবনে তল্লাশি চালিয়ে গুরুত্বপূর্ণ আলামত পাওয়ার দাবি করেছেন তুরস্কের তদন্তকারীরা। তারা বলছেন, খাশোগি হত্যায় অভিযুক্ত ১৫ সদস্যের হিট স্কোয়াডের মধ্যে ছয়জনের হাতের আঙুলের ছাপ পাওয়া গেছে সি ব্লকে। কন্স্যুলেট ভবনের নির্দিষ্ট একটি এলাকা তদন্তকারীদের মনোযোগ কেড়েছে। ‘সি ব্লক’ নামে পরিচিত ওই এলাকা শুধু কূটনৈতিক কর্মীদের জন্য নির্ধারিত। গত কয়েক ঘণ্টায় সূত্রগুলো জানিয়েছে, খাশোগিকে কন্স্যুলেট ভবনের সি ব্লকে হত্যার শক্ত প্রমাণ রয়েছে। খাশোগির সাথে কী ঘটেছে তা জানতে তদন্তকারীরা গতকাল বুধবার কন্স্যুলেট ভবন ও কনসাল জেনারেলের বাসভবনে ১২ ঘণ্টারও বেশি সময় অনুসন্ধান ও তল্লাশি চালিয়েছে।
তদন্তের শুরু থেকেই খাশোগিকে হত্যার একটি অডিও প্রমাণ হাতে থাকার দাবি করে আসছে তুরস্ক। বলা হচ্ছে, খাসোগিকে হত্যা করার সময় তার অ্যাপল ওয়াচে ওই সময়ের কথাবার্তা রেকর্ড হয়েছে। ওই অডিও রেকর্ডিং পুরোপুরি শুনেছেন এমন এক তুর্কি সূত্র দাবি করেন, ২ অক্টোবর মাত্র সাত মিনিটে পুরো হত্যাকাণ্ড সম্পাদিত হয়েছে। ওই সূত্র দাবি করেছে, খাশোগিকে হত্যার উদ্দেশ্যে সৌদি আরবের জেনারেল সিকিউরিটি বিভাগের ফরেনসিক প্রমাণসংক্রান্ত প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করা সালাহ মোহাম্মদ আল তুবাইগিসহ ১৫ জনের একটি দল প্রাইভেট জেটে করে ওই দিন সকালে আঙ্কারা পৌঁছান। দূতাবাসের কনসাল জেনারেলের অফিস থেকে খাশোগিকে টেনেহিঁচড়ে কনসাল জেনারেলের পড়ার ঘরে নিয়ে যাওয়া হয়। সে সময় ওপরে প্রচণ্ড চিৎকারের আওয়াজ শুনতে পেয়েছিলেন বলে জানিয়েছেন সেখানে নিচতলায় উপস্থিত থাকা এক ব্যক্তি। কিছুণ পর তার চিৎকার বন্ধ হয়ে যায়। কারণ তাকে চেতনানাশক কিছু দেয়া হয়েছিল। এর মধ্যে মঙ্গলবার সৌদি কনসাল মোহাম্মদ আল-ওতাইবি তুরস্ক ছেড়ে রিয়াদ চলে গেছেন।
এ দিকে খাশোগির নিখোঁজের ঘটনায় সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানের সংশ্লিষ্টতার ব্যাপারে মার্কিন গোয়েন্দাদের সন্দেহ প্রবল হয়ে উঠেছে। এ সন্দেহ ক্রমাগত তাদের বিশ্বাসে রূপ নিচ্ছে। সূত্রকে উদ্ধৃত করে নিউ ইয়র্ক টাইমস বলছে, ২ অক্টোবর ইস্তাম্বুলে যাওয়া সৌদি স্কোয়াডের ১৫ সদস্যের ছবি ও তুরস্কের কাছে থাকা অডিও রেকর্ডিংয়ের ভিত্তিতে মার্কিন গোয়েন্দাদের বিশ্বাস জোরালো হয়ে উঠেছে। তারা মানতে শুরু করেছেন যে, খাশোগিকে হত্যা করা হয়েছে এবং সৌদি যুবরাজ এ হত্যাকাণ্ডে জড়িত। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের কাছে জমা দেয়ার জন্য গোয়েন্দারা এ-সংক্রান্ত একটি মূল্যায়ন রিপোর্ট তৈরি করছেন।
ফাঁস হওয়া বিভিন্ন আলামত ও তুর্কি সূত্রকে উদ্ধৃত করে বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে খাশোগি নিখোঁজের ঘটনায় সৌদি যুবরাজের সংশ্লিষ্টতা থাকার দাবি করা হয়েছে। মার্কিন গোয়েন্দারাও সৌদি যুবরাজের সংশ্লিষ্টতা থাকার কথা বিশ্বাস করতে শুরু করেছেন। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কর্মকর্তাদের উদ্ধৃত করে নিউ ইয়র্ক টাইমস জানায়, ফাঁস হওয়া তথ্য, ২ অক্টোবর ইস্তাম্বুলে যাওয়া ১৫ সৌদি নাগরিকের নাম ও ছবি এবং তুরস্কের কাছে থাকা অডিও রেকর্ডিংয়ের ভিত্তিতে মার্কিন গোয়েন্দাদের সন্দেহকে প্রবল করতে ভূমিকা রেখেছে।
নিউ ইয়র্ক টাইমস আরো জানিয়েছে, খাশোগির ঘটনায় সৌদি যুবরাজের জড়িত থাকার ব্যাপারে সরাসরি কোনো প্রমাণ গোয়েন্দারা পাননি। সৌদি যুবরাজই খাশোগিকে হত্যার নির্দেশ দিয়েছিলেন কি না কিংবা তাকে আটক করে সৌদি আরবে ফিরিয়ে নিয়ে যেতে বলেছিলেন কি না সে ব্যাপারে এখনো নিশ্চিত প্রমাণ গোয়েন্দাদের হাতে নেই।
এর আগে তুর্কি সূত্রকে উদ্ধৃত করে নিউ ইয়র্ক টাইমস জানায়, ওই ১৫ সদস্যবিশিষ্ট সৌদি স্কোয়াডের মধ্যে একজনকে সৌদি যুবরাজের দেহরী হিসেবে শনাক্ত করা হয়েছে। মাহের আবদুল আজিজ মুতরেব নামের ওই দেহরী এক সময় লন্ডনের সৌদি দূতাবাসে কূটনীতিক হিসেবে নিয়োজিত ছিলেন। জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তুর্কি কর্তৃপ তাকে এখন খুঁজছে। সম্প্র্রতি সৌদি যুবরাজের মাদ্রিদ, প্যারিস ও যুক্তরাষ্ট্র সফরে তোলা ছবিতে মুতরেবকে পাহারারত অবস্থায় দেখা গেছে।
সূত্র দাবি করেছে, খাশোগিকে জিজ্ঞাসাবাদের কোনো আলামত দেখা যায়নি। তাকে হত্যা করতেই স্কোয়াডটি এসেছিল। স্টাডিরুমের টেবিলে ওপর শুইয়ে খাশোগিকে জীবিত অবস্থায় কেটে টুকরো টুকরো করা হয়। পুরো হত্যাকাণ্ডটি ঘটাতে সময় লেগেছে মাত্র সাত মিনিট।


আরো সংবাদ



premium cement
চীনা কোম্পানি বেপজা অর্থনৈতিক জোনে ১৯.৯৭ মিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করবে মৃত মায়ের গর্ভে জন্ম নিলো নতুন প্রাণ দুই ভাইকে পিটিয়ে হত্যার প্রতিবাদ সমাবেশে কেউ মারা যায়নি : পুলিশ সুপার হামাসকে কাতার ছাড়তে হবে না, বিশ্বাস এরদোগানের জাহাজভাঙা শিল্পে শ্রমিক নিরাপত্তার উদ্যোগ ভালো লেগেছে : সীতাকুন্ডে মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাস ১০ দেশের অংশগ্রহণে সামরিক মহড়া শুরু করল আরব আমিরাত গাজা থেকে ইসরাইলি সেনা প্রত্যাহারের পর ২ হাজার ফিলিস্তিনি নিখোঁজ ৯ বছর পর সৌদি আরবে আসছে ইরানি ওমরা কাফেলা দুই ভাইকে পিটিয়ে হত্যা : প্রতিবাদ সমাবেশে পুলিশের হামলার নিন্দা হেফাজতে ইসলামের ভর্তি পরীক্ষায় জবিতে থাকবে ভ্রাম্যমাণ পানির ট্যাংক ও চিকিৎসক মিয়ানমার থেকে ফেরত আসা বাংলাদেশীরা কারা?

সকল