২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫
`

যুক্তরাষ্ট্রকে চীন-রাশিয়ার কড়া হুঁশিয়ারি

যুক্তরাষ্ট্রকে চীন-রাশিয়ার কড়া হুঁশিয়ারি - ছবি : সংগৃহীত

রাশিয়ার কাছ থেকে যুদ্ধবিমান ও ক্ষেপণাস্ত্র কেনায় যে নিষেধাজ্ঞা দেয়া হয়েছে তা প্রত্যাহার না করলে পাল্টা পদক্ষেপ নেয়ার হুমকি দিয়েছে চীন। পরিণতি ভোগার জন্য প্রস্তুত থাকতে যুক্তরাষ্ট্রকে হুঁশিয়ারির পাশাপাশি চীন বলেছে, মার্কিন নিষেধাজ্ঞা রুশ যুদ্ধবিমান বিমান কেনার বিষয়ে নেয়া সিদ্ধান্তের পরিবর্তনে কোনো প্রভাব রাখতে পারবে না। তেমনি মস্কো বলেছে, ওয়াশিংটন আগুন নিয়ে খেলছে।

সম্প্রতি চীন রাশিয়ার কাছ থেকে সুখই যুদ্ধবিমান এবং ভূমি থেকে আকাশে উৎক্ষেপণযোগ্য ক্ষেপণাস্ত্র কিনেছে। তাই চীনের সেনাবাহিনীর ক্রয় শাখা এখন মার্কিন নিষেধাজ্ঞার সম্মুখীন। এসবের মধ্যে রয়েছে ১০টি সুখই যুদ্ধবিমান এবং এস-৪০০ ক্ষেপণাস্ত্র। এতে ক্ষুব্ধ চীনের পররাষ্ট্র দফতরের মুখপাত্র বলেছেন, তারা ট্রাম্প প্রশাসনকে এ নিষেধাজ্ঞা তুলে নেয়ার জন্য জোর আহ্বান জানাচ্ছেন। অন্যথায় তাদেরকে এর পরিণতি ভোগ করতে হবে।

এই বিভাগ এবং তার পরিচালক লি শাংফু যুক্তরাষ্ট্রে কোনো রফতানি লাইসেন্সের আবেদন করতে পারবেন না এবং মার্কিন অর্থ ব্যবস্থায় অংশ নিতে পারবেন না। ওয়াশিংটন বলছে, রাশিয়ার কাছ থেকে অস্ত্র কিনে চীন রাশিয়ার ওপর আরোপিত মার্কিন নিষেধাজ্ঞা লঙ্ঘন করেছে। যুক্তরাষ্ট্রকে হুঁশিয়ার করে চীন বলেছে, রাশিয়ার জেট ও ক্ষেপণাস্ত্র কেনার জন্য চীনের সেনাবাহিনীর ওপর আরোপিত মার্কিন নিষেধাজ্ঞা তুলে না নেয়া হলে ওয়াশিংটনকে এর পরিণতি ভোগ করতে হবে।

ইউক্রেনে রাশিয়ার কর্মকাণ্ড এবং মার্কিন রাজনীতিতে রুশ হস্তক্ষেপের জেরে মস্কোর ওপর আরোপিত যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞা চীন লঙ্ঘন করেছে বলে অভিযোগ করে ওয়াশিংটন। সে কারণেই বেইজিং সম্প্রতি রুশদের কাছ থেকে ১০টি সুখোই-৩৫ যুদ্ধবিমান ও এস-৪০০ ক্ষেপণাস্ত্র কেনার পর চীনা সামরিক বাহিনীর ওপর নিষেধাজ্ঞা দেয় যুক্তরাষ্ট্র। কিন্তু ২০১৪ সালে ইউক্রেনের কাছ থেকে ক্রিমিয়া অধিগ্রহণের পর থেকে রাশিয়ার ওপর যুক্তরাষ্ট্র ও অন্যান্য পশ্চিমা শক্তি একের পর এক নিষেধাজ্ঞা দিলেও বেইজিং তাতে কখনোই সমর্থন দেয়নি। সে কারণে মস্কোর কাছ থেকে অস্ত্র কেনাও বন্ধ রাখেনি তারা।

চীনা সামরিক বাহিনী এ মাসের শুরুতে রাশিয়ার সাথে বড় ধরনের সামরিক মহড়াতেও অংশ নিয়েছে। সামরিক বাহিনীর ওপর যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞা আরোপকে ‘অযৌক্তিক’ আখ্যা দিয়ে অত্যন্ত ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র গেং সুয়াং। তিনি বলেন, ওয়াশিংটন আন্তর্জাতিক সম্পর্কের মৌলিক নীতিমালা লঙ্ঘন করেছে এবং চীনের সাথে সম্পর্ককেও সমস্যাশঙ্কুল করে তুলেছে। সুয়াং বলেন, ‘আমরা যুক্তরাষ্ট্রকে এ ভুল শুধরে নেয়া এবং নিষেধাজ্ঞা তুলে নেয়ার দাবি জানাচ্ছি। অন্যথায় যুক্তরাষ্ট্রকে এর পরিণতি ভোগ করতে হবে।’ চীনের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞা আরোপে ক্রুদ্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়ে মস্কো বলছে, ওয়াশিংটন আগুন নিয়ে খেলছে।

যুক্তরাষ্ট্র চীনের সামরিক বাহিনীর হাতিয়ার উন্নয়ন বিভাগের ওপর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে এবং রাশিয়া থেকে অস্ত্র ও জঙ্গি বিমান কেনার জন্য ওই বিভাগের পরিচালক লিং শেংফুকেও নিষেধাজ্ঞার তালিকাভুক্ত করেছে। চীন তাদের নিজেদের প্রতিরক্ষার খাতিরে অত্যাধুনিক অনেক অস্ত্রশস্ত্র তৈরি করছে। কিন্তু দেশটি এর পাশাপাশি রাশিয়া থেকে আরো উন্নত অস্ত্র কিনতে আগ্রহী। বিশেষ করে আকাশ প্রতিরক্ষা এবং যুদ্ধবিমানের ক্ষেত্রে। আর মস্কোও আগের চেয়ে বর্তমান সময়ে বেইজিংয়ের কাছে এ ধরনের অস্ত্র বিক্রি করতে অনেক বেশি আগ্রহী।

 


আরো সংবাদ



premium cement