২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫
`

কিমের সাথে শীর্ষবৈঠকে পিয়ংইয়ং গেছেন মুন

-

উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম জং উনের সাথে পারমাণবিক নিরস্ত্রীকরণ ও দুই কোরিয়ার মধ্যে যুদ্ধের আনুষ্ঠানিক সমাপ্তি নিয়ে আলোচনা করতে গতকাল মঙ্গলবার পিয়ংইয়ং পৌঁছেছেন দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট মুন জা ইন। এ নিয়ে চলতি বছর দুই নেতার মধ্যে তৃতীয় শীর্ষ বৈঠক অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। তিন দিনের শীর্ষ সম্মেলনে আনুষ্ঠানিকভাবে কোরীয় যুদ্ধে সমাপ্তি ঘোষণা করা হবে বলে আশা করা হচ্ছে।
এ ছাড়া যুক্তরাষ্ট্র ও উত্তর কোরিয়ার মধ্যে অচল হয়ে পড়া পরমাণু নিরস্ত্রীকরণ আলোচনা আবার শুরুর প্রক্রিয়া নিয়ে আলোচনা হবে। ১৯৫০ থেকে ১৯৫৩ সাল পর্যন্ত কোরীয় যুদ্ধ হয় এবং সে সময় যুদ্ধবিরতি হয় কিন্তু আজ পর্যন্ত আনুষ্ঠানিকভাবে যুদ্ধের সমাপ্তি ঘোষণা করেনি কোনো পক্ষ।
এ সফরে মূল তিনটি বিষয় নিয়ে আলোচনা হবে; এগুলো হলো দুই কোরিয়ার মধ্যে সম্পর্কের উন্নয়ন, উত্তর কোরিয়া ও আমেরিকার মধ্যে পরমাণু নিরস্ত্রীকরণ বিষয়ক আলোচনা এবং দুই কোরিয়ার মধ্যে সামরিক উত্তেজনার অবসান ঘটানো।
মঙ্গলবার স্থানীয় সময় সকাল ১০টায় উত্তরের রাজধানী পিয়ংইয়ংয়ে পৌঁছালে কিম, তার স্ত্রী রি সোল জু ও উত্তর কোরিয়ার অন্যান্য ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্টকে স্বাগত জানান। এ সময় হাসিমুখে মুনকে জড়িয়ে ধরেন উত্তর কোরিয়ার নেতা।
জড়িয়ে ধরার মুহূর্তে ও একে অপরের সাথে কথা বলার সময়ও দুই প্রেসিডেন্টের মুখে হাসি ছিল। বিমানবন্দরে স্যুট ও ঐতিহ্যবাহী কোরীয় পোশাক পরা উত্তর কোরিয়ার কয়েক শ’ নারী-পুরুষ কোরীয় উপদ্বীপ ও উত্তর কোরিয়ার পতাকা নেড়ে, ফুল হাতে দক্ষিণের প্রেসিডেন্টকে অভ্যর্থনা জানান। বিমানবন্দরে ‘পিয়ংইয়ং সফরে স্বাগতম প্রেসিডেন্ট মুন জে-ইন’ লেখা ব্যানারও শোভা পাচ্ছিল।
দুপুরের খাবারের পর দুই কোরিয়ার নেতা আনুষ্ঠানিক বৈঠকে বসেন; রাতের খাবারের আগে সঙ্গীত পরিবেশনার আয়োজন ছিল। মুনের সফরসঙ্গী হিসেবে বেশ কয়েকজন করপোরেট কর্তাও পিয়ংইয়ং গেছেন। এদের মধ্যে স্যামসাং ইলেকট্রনিকসের ভাইস চেয়ারম্যান জে ওয়াই লি এবং এসকে ও এলজি গ্রুপের প্রধানরা রয়েছেন। উত্তরের উপ প্রধানমন্ত্রী রি রিয়ং ন্যামের সাথে তাদের বৈঠকেরও কথা রয়েছে। ন্যাম উত্তর কোরিয়ার অর্থনৈতিক বিষয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত। উত্তেজনা কমানো ও সশস্ত্র সঙ্ঘাত এড়াতে সামরিক চুক্তির পাশাপাশি আজ বুধবার কিম ও মুন একটি যৌথ বিবৃতি দেবেন বলেও আশা করা হচ্ছে।
বৃহস্পতিবার মুনের উত্তর কোরিয়া ছাড়ার কথা রয়েছে। দুই কোরিয়ার এবারের শীর্ষ সম্মেলনকে কিম ও ট্রাম্পের মধ্যে সম্ভাব্য নতুন বৈঠকের ‘লিটমাস টেস্ট’ হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে।
জুনে সিঙ্গাপুরে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সাথে ঐতিহাসিক বৈঠকে কিম পারমাণবিক নিরস্ত্রীকরণের যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন সে বিষয়ে তিনি আন্তরিক কি না, মুনের সাথে বৈঠকে তার আঁচ পাওয়া যাবে বলেও ধারণা পর্যবেক্ষকদের। ট্রাম্প উত্তর কোরীয় নেতার সাথে তার আলোচনায় ‘প্রধান মধ্যস্থতাকারী’ হতে মুনকে অনুরোধ করেছেন বলে সম্প্রতি দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্টের ঘনিষ্ঠ ব্যক্তিদের বরাত দিয়ে জানিয়েছে আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম।

 


আরো সংবাদ



premium cement