১৮ এপ্রিল ২০২৪, ০৫ বৈশাখ ১৪৩১, ০৮ শাওয়াল ১৪৪৫
`
পাকিস্তানে নির্বাচন

সবার জন্য সমান সুযোগ দাবি ইসলামপন্থী জোটের

রাজনৈতিক কর্মীদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়ানোর অভিযোগ
সবার জন্য সমান সুযোগ দাবি ইসলামপন্থী জোটের - ছবি : সংগৃহীত

পাকিস্তানের সাধারণ নির্বাচনের পরিবেশকে আশঙ্কাজনক বলে অভিহিত করেছে পাঁচটি ইসলামপন্থী দলের জোট মুত্তাহিদা মজলিস-ই-আমল (এমএমএ)। আগামী ২৫ জুলাই দেশটিতে সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এমএমএ জোটের প্রধান মাওলানা ফজলুর রহমান আনাদোলুকে বলেন, রাজনৈতিক দলগুলোর কর্মীদের মধ্যে ভয় ছড়িয়ে দিতে মিটিং-মিছিলে সন্ত্রাসী হামলা হচ্ছে। অথচ সব প্রার্থীর নিরাপত্তা নিশ্চিত করা এবং নির্বাচনী প্রচারণার ক্ষেত্রে সব দলের জন্য সমান সুযোগ সৃষ্টি করা নির্বাচন কমিশন ও তত্ত্বাবধায়ক সরকারেরই দায়িত্ব।

তিনি বলেন, গত সপ্তাহে খাইবার পাখতুনখাওয়া ও বেলুচিস্তান প্রদেশে এমএমএ, আওয়ামী ন্যাশনাল পার্টি ও বেলুচিস্তান আওয়ামী পার্টির মিছিলে সন্ত্রাসী হামলায় দুই প্রার্থীসহ ১৬০ জন নিহত হয়েছেন। ইমরান খানের তেহরিক-ই-ইনসাফ পার্টির কথা উল্লেখ করে ফজলুর রহমান বলেন, এবারের নির্বাচনে এই একটি মাত্র দল মুক্তভাবে তার নির্বাচনী প্রচারণা চালাতে পারছে। বাকি সব দল নিরাপত্তা হুমকির মধ্যে রয়েছে।

জোটের উপপ্রধান ও জামায়াত-ই-ইসলামির প্রধান সিরাজুল হক বলেন, যদি এই রকম আশঙ্কাজনক পরিবেশেই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়, তাহলে দেশের ভেতরে ও বাইরে পুরো নির্বাচন প্রক্রিয়া প্রশ্নবিদ্ধ হবে। এমএমএ জোটে থাকা দল পাঁচটি হলোÑ জামাত-ই ইসলামি, জমিয়তে উলামা-ই ইসলাম, জমিয়তে উলামা-ই পাকিস্তান, তেহরিক-ই ইসলাম ও জমিয়তে আহলে হাদিস। ২০০২ সালে প্রতিষ্ঠিত এ জোট দেশটির পার্লামেন্টে তৃতীয় বৃহত্তম জোট হিসেবে নিজেদের প্রতিষ্ঠিত করেছে। ২০০২ সালের সাধারণ নির্বাচনে খাইবার পাখতুনখাওয়া ও বেলুচিস্তান প্রদেশে তারা সংখ্যাগরিষ্ঠতা লাভ করে। জোটটির নেতৃবৃন্দ দাবি করেন, যারা পাকিস্তানের ইসলামি পরিচিতিকে ক্ষতিগ্রস্ত করার পরিকল্পনা করছে, তাদের থেকে দেশকে মুক্ত করতে চায় তাদের জোট। নির্বাচনী ম্যানিফেস্টোতে এমএমএ জানায়, নির্বাচনে সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেলে তারা দেশে ইসলামি কল্যাণ রাষ্ট্র গঠন করবে, যেখানে পররাষ্ট্র, অভ্যন্তরীণ ও প্রতিরক্ষা নীতি গঠন করবে পার্লামেন্ট। তারা জনগণের জন্য বিনামূল্যে স্বাস্থ্য ও শিক্ষাসুবিধা নিশ্চিত করবে এবং প্রচলিত সুদি লেনদেন প্রথা বিলুপ্ত করা হবে।

সিরাজুল হক বলেন, রাজনীতিতে কিছু শক্তিশালী চক্র জড়িত হয়ে গেছে। ফলে রাজনীতি এখন অবরুদ্ধ হয়ে পড়েছে। আমরা কখনো পাকিস্তানে সুষ্ঠু ও অবাধ নির্বাচন দেখিনি। স্থানীয় প্রভাবশালীরাই নির্বাচনকে নিয়ন্ত্রণ করে এবং তাদের নিজেদের লোকদের মধ্যে আসন বণ্টন করে দেয়।
তুর্কি মডেলের উন্নয়ন
তুরস্কের সাম্প্রতিক নির্বাচন প্রসঙ্গে সিরাজুল হক বলেন, তুরস্কের জনগণ তাদের সৎ নেতৃত্বকে বেছে নিয়েছে। প্রেসিডেন্ট রজব তাইয়েব এরদোগানের নেতৃত্বে তুরস্ক এখন একটি অর্থনৈতিক শক্তিতে পরিণত হয়েছে। তিনি বলেন, তুর্কি ভোটাররা শিক্ষিত এবং তারা জানে কে তাদের প্রতি যতœশীল ও দায়িত্ববান; কিন্তু পাকিস্তানের পরিস্থিতি ভিন্ন। তারপরও তিনি আশা করেন, এ জাতি আসন্ন নির্বাচনে তাদের সৎ নেতৃত্বকে ভোট দিয়ে বিজয়ী করবে। তিনি বলেন, ক্ষমতায় এলে তারা দেশে তুর্কি মডেলে উন্নয়ন করবেন।
সেনাবাহিনীকে বিচারিক ক্ষমতাদান

রয়টার্স জানায়, পাকিস্তান নির্বাচন কর্তৃপক্ষ ২৫ জুলাইয়ের নির্বাচনে প্রভাবশালী সেনাবাহিনীকে ভোটকেন্দ্রগুলোতে বিচারিক ক্ষমতা প্রদান করেছে। নির্বাচন কর্তৃপক্ষের এ বিরল পদক্ষেপে রাজনৈতিক দল ও মানবাধিকার গ্রুপগুলো উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। ২৫ জুলাইয়ের নির্বাচনে মূল প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে সাবেক ক্রিকেটার ইমরান খান ও কারাদণ্ডপ্রাপ্ত সাবেক প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরীফের দলের মধ্যে। নওয়াজ শরীফ দাবি করছেন, সেনাবাহিনী ইমরান খানের অনুকূলে কাজ করছে। সংস্থাটি অবশ্য সব সময়ই এ অভিযোগ অস্বীকার করছে।

এবারের নির্বাচনের সময় পুরো দেশে তিন লাখ ৭১ হাজার সেনাসদস্য দায়িত্ব পালন করবে। ২০১৩ সালের তুলনায় সংখ্যাটি তিনগুণ বেশি। সম্প্রতি দেশটির নির্বাচন কমিশন সেনাবাহিনীকে ম্যাজিস্ট্রেসি ক্ষমতা প্রদান করে। এর ফলে তারা নির্বাচনী আচরণ ভঙ্গকারী যেকোনো ব্যক্তিকে তাৎক্ষণিক বিচার করে সাজা দিতে পারবে। এর আগের নির্বাচনগুলোতে সেনাবাহিনী কেবল নিরাপত্তার বিষয়টি নিশ্চিত করত।

বিষয়টিকে প্রথম ও নতুন বলে আখ্যায়িত করেন পাকিস্তান পিপলস পার্টির পার্লামেন্ট সদস্য ফারহাতুল্লাহ বাবর বলেন, ইতোমধ্যেই প্রশাসন, সমাজ ও রাজনীতি বিপজ্জনকভাবে সামরিকীকরণ হয়ে গেছে। তবে তেহরিক-ই ইনসাফ নতুন এই বিষয়টিকে স্বাগত জানিয়ে বলেছে, নির্বাচন কমিশন যে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন পরিচালনা করতে চায় এ পদক্ষেপটি তার আরেকটি নিদর্শন। পাকিস্তান সেনাবাহিনীর মুখপাত্র মেজর জেনারেল আসিফ গাফুর এ বিষয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, পাকিস্তান সেনাবাহিনীর দায়িত্ব হচ্ছে নির্বাচন কমিশনকে সহায়তা করা। তারা যে যে ক্ষেত্রে আমাদের সাহায্য চায় সেসব ক্ষেত্রে আমরা সংস্থাটিকে সাহায্য করি।

 

 


আরো সংবাদ



premium cement
বেসিস নির্বাচনে ওয়ান টিমের প্যানেল ঘোষণা চরফ্যাশনে স্কুল শিক্ষিকাকে কোপানো মামলার আসামি গ্রেফতার ফরিদপুরে মাইক্রোবাস-মাহেন্দ্র মুখোমুখি সংঘর্ষে নিহত ১, আহত ৫ ভেটো ছাড়াই ফিলিস্তিনের জাতিসঙ্ঘ সদস্যপদ ঠেকানোর চেষ্টায় যুক্তরাষ্ট্র সখীপুরে গলায় ওড়না পেঁচিয়ে গৃহবধূর আত্মহত্যা ভারী বৃষ্টিতে দুবাই বিমানবন্দরে চরম বিশৃঙ্খলা, দুর্বিসহ অবস্থা বেসিক ব্যাংক একীভূত করার প্রক্রিয়া বন্ধের দাবিতে রাজশাহীতে মানববন্ধন ভরিতে ২০৬৫ টাকা বেড়ে স্বর্ণের দামে নতুন রেকর্ড ইরানি জবাব নিয়ে ভুল হিসাব করেছিল ইসরাইল! কূটনীতিতে বাইডেনবিরোধী হতে চান ট্রাম্প পেনাল্টিতে সাফল্য রিয়ালের জয়ের মানসিকতার প্রমাণ

সকল