অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকার শ্বাসরোধের চেষ্টা এবার গ্যাস ও জ্বালানি বন্ধ করল ইসরাইল
- ডেইলি সাবাহ
- ১৮ জুলাই ২০১৮, ০০:০০
ইসরাইল গাজা উপত্যকায় জ্বালানি ও গ্যাস সরবরাহ বন্ধ করে দিয়েছে। ইসরাইলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী গত মঙ্গলবার জানান, হামাসের সাম্প্রতিক হামলার পাল্টা ব্যবস্থা হিসেবে গত রোববার থেকে এ সরবরাহ বন্ধ করে দেয়া হয়। এর আগে মিসরও গাজা সীমান্তে রাফাহ সীমান্ত বন্ধ করে দেয়ার ঘোষণা দেয়। ফলে গাজা বিশ্ব থেকে পুরোপুরি বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে।
রাফাহ সীমান্ত গেটের প্রেস অফিস এক বিবৃতিতে জানায়, মিসর বলেছে, তারা অনির্দিষ্টকালের জন্য এ সীমান্ত গেট বন্ধ করে দেবে।
গাজা ও ইসরাইলের মধ্যকার কারেম শ্যালোম ক্রসিংয়ে গত সপ্তাহেই ব্যবসা-বাণিজ্য বন্ধ করে দেয়া হয়। গত মঙ্গলবার থেকে গ্যাস ও জ্বালানি সরবরাহও বন্ধ করে দেয়া হয়। তবে ইসরাইলের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানায়, খাদ্য ও ওষুধের জন্য এটি খোলা থাকবে। গাজায় প্রায় ২০ লাখ ফিলিস্তিনি বাস করে থাকে। সেখানে ইতোমধ্যে জ্বালানি, বিদ্যুৎ ও পানির ঘাটতি দেখা দিয়েছে।
ইসরাইল হামাসের ভিন্নধর্মী কিছু হামলার কারণে বেশ ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। সম্প্রতি তার আগুনবহনকারী বেলুন ও ঘুড়ি উড়িয়ে ইসরাইলের বেশ ক্ষতি করেছে। এভাবে তারা ইসরাইলের প্রায় ২৫ মাইল পরিমাণ জায়গা পুড়িয়ে দেয়। তাদের ভয়ে ইসরাইলি জেলেরা ভীত হয়ে পড়েছে। গাজার মাছ ধরার সীমানা ছয় নটিক্যাল মাইল থেকে কমিয়ে তিন নটিক্যাল মাইলে নিয়ে এসেছে। ২০০৭ সাল থেকে গাজা নিয়ন্ত্রণ করে আসা হামাসকে চাপ দিতে তারা সাম্প্রতিক এই পদক্ষেপ নিয়েছে। এ সপ্তাহের শুরুর দিকে হামাস ও ইসরাইলের মধ্যে তুমুল লড়াই চলে। ইসরাইল জানিয়েছে, শুক্রবার রাত থেকে দুই পক্ষের মধ্যে দুই শতাধিক রকেট ও মর্টার গোলা বিনিময় হয়েছে।
সাম্প্রতিক সময়ে গাজাবাসী ইসরাইলের বিরুদ্ধে প্রচণ্ড বিক্ষোভ করেছে। গত কয়েক মাসে ইসরাইলিদের হামলায় ১৩০ জনের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে। ২০০৭ সালে হামাস গাজার নিয়ন্ত্রণ নেয়ার পর থেকে মিসর ও ইসরাইল গাজাকে প্রায় অবরুদ্ধই করে রেখেছে। গাজার সাতটি চেক পয়েন্ট রয়েছে। এর ছয়টি নিয়ন্ত্রণ করে ইসরাইল। আর রাফা সীমান্তটি নিয়ন্ত্রণ করে মিসর। ২০১৩ সালের জুলাইয়ে মিসরে অভ্যুত্থানের মাধ্যমে মুরসিকে সরিয়ে ক্ষমতা নেয়ার পর থেকে রাফা সীমান্তটি বেশির ভাগ সময়েই বন্ধ থাকে।
ইসরাইলি স্কুলে ফিলিস্তিনের সমর্থক সংগঠনগুলোর প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা
ফিলিস্তিনের মুক্তি আন্দোলনের প্রতি সহানুভূতিশীল সংগঠনগুলোকে ইসরাইলের স্কুলে প্রবেশ নিষিদ্ধ করতে একটি আইন পাস হয়েছে দেশটির পার্লামেন্টে। আইনটিকে গণতান্ত্রিক মূল্যবোধের পরিপন্থী আখ্যা দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। তারা মনে করেন, শিক্ষা ও সঠিক গণতন্ত্রের শিক্ষা দিতে হলে সবার কথাই শুনতে হবে শিশুদের।
ইসরাইলের স্কুলগুলোতে এতদিন ফিলিস্তিনের প্রতি সহানুভূতিশীল সংগঠন ও ব্যক্তিরা প্রবেশ করতে পারত। তারা বিভিন্ন বিষয়ভিত্তিক পাঠদানও করতে পারত। ১২০ আসনের নেসেটে (ইসরাইলি পার্লামেন্ট) এ প্রবেশাধিকার নিষিদ্ধের প্রস্তাব উঠলে পক্ষে ভোট দেন ৪৩ জন আর বিরোধিতা করেন ২৪ জন। ফলে স্কুলে ফিলিস্তিনের পক্ষের সংগঠনগুলোকে নিষিদ্ধ করার প্রস্তাবটি আইনে পরিণত হয়। এ আইন অনুযায়ী দেশটির শিক্ষামন্ত্রী নাফাতি বেনেট এখন চাইলেই যে কাউকে লেকচার দেয়া থেকে বিরত রাখার জন্য স্কুলগুলোকে নির্দেশ দিতে পারবেন। বিশ্লেষকেরা বলেছেন, এ আইনের মাধ্যমে গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ ক্ষুণœ হবে। বাক-স্বাধীনতা অনিশ্চিত হয়ে পড়বে।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা