২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৭ বৈশাখ ১৪৩১, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫
`

আমাদের দেশের গণতন্ত্র নিয়ে পশ্চিমা মুনাফেকি দুঃখজনক

ব্রিটেনে অধ্যয়নরত তুর্কি ছাত্রের অভিমত
-

আগামী রোববার তুরস্কের লোকজন এই প্রজন্মের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ নির্বাচনে ভোট দিতে যাবেন। এ অবস্থায় একজন তুর্কি, যে ব্রিটেনে পড়াশুনা করছে, সে জানে, সন্ত্রাসের হুমকি ও বিশ্বব্যাপী অর্থনৈতিক অনিশ্চয়তার চ্যালেঞ্জ একটি জাতির স্থিতিশীলতাকে কতটুকু প্রভাবিত করতে পারে। দীর্ঘ দিন ধরেই তুরস্কের বিরুদ্ধে অস্থিতিশীলতা ও সহিংসতা-সংঘাতের অভিযোগ করা হচ্ছে। কিন্তু দেশটি ইতোমধ্যেই নিজেদের গণতন্ত্রকে সংহত করেছে, বিষয়টি প্রশংসা করার মতো।
রোববার অনুষ্ঠিতব্য নির্বাচনটি আসলে হওয়ার কথা ছিল ২০১৯ নভেম্বরে। কিন্তু প্রায় দেড় বছর এগিয়ে নির্বাচন দেয়া হয়।
তুর্কিদের কাছে বিষয়টি এ রকম যে বিরোধী পক্ষের অনুরোধ এবং অনিশ্চিত একটি পরিস্থিতি অতিক্রম করতে এ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে। কিন্তু এ নির্বাচন নিয়ে ব্রিটিশ ও ইউরোপিয়ান গণমাধ্যম যেভাবে খবর তৈরি করছে, তাতে আমি স্তম্ভিত হয়ে গেছি। তাদের দৃষ্টিতে এ নির্বাচন হচ্ছে, এরদোগানের ক্ষমতা কুক্ষিগত করার আরেকটি পদক্ষেপ। অথচ কিছুদিন আগেই যখন ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী আগাম নির্বাচনের ডাক দিলেন, তখন কেউ এ নির্বাচনের বৈধতা বা তার প্রধানমন্ত্রিত্ব নিয়ে কোনো প্রশ্ন তোলেনি।
২০১৭ সালে যখন প্রেসিডেন্ট নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয় তখন দুই বছর আগের প্যারিস হামলার কারণে সেখানে জরুরি অবস্থা চলছিল; কিন্তু সে সময় অর্গানাইজেশন ফর সিকিউরিটি অ্যান্ড কো-অপারেশন ইন ইউরোপ (ওএসসিই) বিবৃতিতে জানিয়েছিল, এ বিষয়টি নির্বাচনী পরিবেশ ও নির্বাচনে কোনো ধরনের প্রভাব ফেলবে না। অথচ সেই একই সংস্থা গণমাধ্যমের স্বাধীনতার কথা উল্লেখ করে তুরস্কের নির্বাচন নিরপেক্ষ হবে কি না তাই নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করছে। আর গণমাধ্যমের মালিকানার যে কথাটি বলা হচ্ছে, সে ক্ষেত্রে বলা যায়, ব্রিটেনে রুপার্ট মার্ডক ও লর্ড রথমেয়ার সেখানকার অর্ধেকের বেশি গণমাধ্যম নিয়ন্ত্রণ করেন। তারা উভয়েই রক্ষণশীল দলকে সমর্থন দেন। কিন্তু তখন বিষয়টি নিয়ে কোনো সমালোচনা হয়নি।
শুধু গত তিন বছরের কথা ধরলেও, তুরস্কের জনগণ জার্মানি, ফ্রান্স ও ব্রিটেনের চেয়ে বেশি গণতন্ত্র চর্চা করেছে। তুরস্কের নির্বাচনের যেখানে ৮৫ শতাংশ ভোটার অংশ নেয়, সেখানে ফ্রান্সে ৬৫, জার্মানিতে ৭৬ ও যুক্তরাষ্ট্রে মাত্র ৫৫ শতাংশ ভোটার ভোট দেন। যে তুরস্কের বিরুদ্ধে অগণতান্ত্রিকতার অভিযোগ করা হয়, সে তুরস্কেই অন্য দেশের চেয়ে বেশি গণতন্ত্রের চর্চা হয়। ৫২ শতাংশ ভোটারের বয়স ৪৫-এর নিচে হওয়ায় এটি প্রমাণিত হয় যে, দেশটির মানুষ বিশেষ করে নতুন প্রজন্ম গণতন্ত্র সচেতন। আর সবচেয়ে বড় কথা, দুই বছর আগেই একটি সামরিক অভ্যুত্থানকে ঠেকিয়ে দিতে এবং গণতন্ত্রের ধারাকে অব্যাহত রাখতে আমরা আমাদের জীবন দিতে প্রস্তুত ছিলাম।
আমরা এ নির্বাচন উপলক্ষে অনেকের সাক্ষাৎকার নিয়েছি। তাদেরকে জিজ্ঞেস করেছি, নির্বাচন কি অবাধ ও সুষ্ঠু হবে? সে ক্ষেত্রে বেশির ভাগেরই মত ছিল, আমাদের সমাজে গণতন্ত্র বিষয়টি এমনভাবে ঢুকে গিয়েছে যে, আমরা একটি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন ছাড়া আর কোনো কিছুই মেনে নেবো না। আন্তর্জাতিক একজন ছাত্র হিসেবে আমি নিজেকেও জিজ্ঞেস করেছি, একজন একনায়ক শাসকের অধীনে বসবাস করে আমি কেমন অনুভব করছি? হাস্যকর হলেও সত্য যে, এ নির্বাচনের খবরগুলো পড়ার আগে আমি কখনওই এ বিষয়টি অনুভব করিনি। আমি যখন আমার কয়েকজন বন্ধুর সাথে বিষয়টি আলাপ করি, তখন তাদের কাছেও আমি একই ধরনের জবাব পেয়েছি।
তাই তুর্কি একজন ছাত্র হিসেবে আমি পশ্চিমাদের জিজ্ঞাসা করতে চাই, কেন এই মুনাফেকি? আমি এখনো এ প্রশ্নের যথাযথ কোনো উত্তর পাইনি।
কুবরা ওজতুর্ক : লন্ডনের কিংস কলেজের যুদ্ধবিদ্যার ছাত্র


আরো সংবাদ



premium cement
থামছে না পুঁজিবাজারে পতন বিনিয়োগকারীদের আর্তনাদ ভারতের লোকসভা নির্বাচনে ভোট শুরু: নাগাল্যান্ডে ভোটার উপস্থিতি প্রায় শূন্য কারাগার এখন বিএনপি নেতাকর্মীদের স্থায়ী ঠিকানা: রিজভী আন্দোলনে ব্যর্থ বিএনপির হাল ধরার কেউ নেই : ওবায়দুল কাদের পাবনায় ভারতীয় চিনি বোঝাই ১২টি ট্রাকসহ ২৩ জন আটক স্বচ্ছতার সাথে সরকারি অনুদানের চলচ্চিত্র বাছাই হবে: তথ্য প্রতিমন্ত্রী মিয়ানমার বিজিপির আরো ১৩ সদস্য পালিয়ে এলো বাংলাদেশে শ্যালকের অপকর্মে দুঃখ প্রকাশ করলেন প্রতিমন্ত্রী পলক মন্দিরে অগ্নিসংযোগের অভিযোগ তুলে ২ ভাইকে হত্যা ইরানে ইসরাইলি হামলার খবরে বাড়ল তেল সোনার দাম যতই বাধা আসুক ইকামাতে দ্বীনের কাজ চালিয়ে যাবো : ডা: শফিকুর রহমান

সকল