২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫
`

ফুল চাষে আফগান নারীদের অবস্থার উন্নতি

আফগানিস্তানের হেরাত প্রদেশের কারুখ শহরের একটি বাগান থেকে ফুল তুলছেন আফগান নারীরা : ফাইল ছবি -

জালালাবাদের সরকারি বাগান পরিচর্যার মাধ্যমে আফগান নারীরা ঘরের বাইরে কাজ করার সুযোগ পাচ্ছেন। কট্টর রক্ষণশীল ও অস্থিতিশীল প্রদেশগুলোর জন্য এটা একটি বিরল ঘটনা। মাথা ও মুখের সম্পূর্ণ অংশ ঢেকে শুধু চোখ খোলা রেখে নারীরা পূর্বাঞ্চলীয় এই নগরীর সরকারি বাগান পরিচর্যা করছেন। তাদের পরনে উজ্জ্বল কমলা রঙের ঢিলাঢালা কাজ করা পোশাক। তাদের পুরুষ সহকর্মীরাও একই রঙের পোশাক পরেছেন।
জালালাবাদে প্রকাশ্যে আরো অল্প কিছু সংখ্যক নারী এ ধরনের পোশাক পরেন। এটি দেশটির ঐতিহ্যবাহী আকাশী নীল নতুন সংস্করণ। সপ্তাহে ছয় দিন এই নারী বাগান পরিচর্যাকারীরা গোলাপ ও ফলের গাছ পরিচর্যা করেন। তাদের সবাই হতদরিদ্র। এদের অনেকেই বিধবা। সারা দিন হাড়ভাঙা খাটুনির পরও এরা প্রতি মাসে মাত্র ১৩০ মার্কিন ডলার করে পান। দলপতি লাইলুমা শিরজাদ (২৬) বলেন, ‘পুরুষরা মনে করে নারীরা শুধু ঘরের কাজই করতে পারে। এটা করে আমরাও সবাইকে দেখিয়ে দিয়েছি সুযোগ পেলে নারীরা শুধু ঘরের কাজই নয়, বরং এর থেকেও অনেক বেশি কিছু করতে পারে।’ তার চোখ ছাড়া সম্পূর্ণ মুখ ঢাকা। নানগরহারে নারী কর্মীদের জন্য কাজ করা সহজ নয়। প্রদেশটি তোরা বোরা পাহাড়ের পাদদেশে অবস্থিত। যুক্তরাষ্ট্রের টুইন টাওয়ারে হামলার পর আলকায়েদা নেতা ওসামা বিন লাদেন এখানেই আশ্রয় নিয়েছিলেন। এখন এটি আইএসের ঘাঁটি। সেখানে আইএস আর তালেবানের মধ্যে প্রতিযোগিতা চলছে। জাতিসঙ্ঘর সংস্থা ইউএন হাবিট্যাট নারীদের জন্য এই উদ্যোগটি গ্রহণ করেছে। এর জন্য তাদের নারীদের কঠোর রক্ষণশীল পরিবারকে অনেক বুঝাতে হয়েছে। জালালাবাদে ইউএন-হ্যাবিট্যাটের ‘ক্লিন অ্যান্ড গ্রিন সিটি’ প্রকল্পের প্রধান কর্মকর্তা মোহম্মদ নাদের সারগান্দ বলেন, ‘অধিকাংশ নারীর জন্যই এটা বাড়ির বাইরে যাওয়ার প্রথম অভিজ্ঞতা।’ তিনি বলেন, আফগানিস্তানের পূর্বাঞ্চলীয় পশতু সংস্কৃতিতে জাতিগত গোষ্ঠীগুলো ‘ইসলাম বহির্ভূত বেশ কিছু বিধিনিষেধ নারীদের ওপর চাপিয়ে দিয়েছে।’ পুরুষ অভিভাবক ছাড়া নারীরা ঘরের বাইরে বের হতে দেয় না বলে তিনি জানান। নারী এবং যুদ্ধে বাস্তুচ্যুত লোকসহ ঝুঁকিপূর্ণ মানুষকে পুনর্বাসন করার লক্ষ্যে এবং আফগানিস্তানের প্রধান প্রধান নগরীতে পার্কগুলো দেখভাল ও পরিচর্যা করার জন্য ২০১৬ সালে এই কর্মসূচিটি শুরু হয়েছে। কাবুলসহ বেশ কয়েকটি প্রদেশে প্রায় আট হাজারের মতো মালিকে নিয়োগ দেয়া হয়েছে। এদের মধ্যে এক হাজার নারী। এদের মধ্যে ১০০ জনের বয়স ১৮ বছর থেকে ৬০ বছরের মধ্যে। এরা জালালাবাদে কাজ করছেন। বিশ্বব্যাংকের মতে, ২০১৭ সালে ১৯ শতাংশ আফগান নারী সরকারি চাকরিতে কর্মরত রয়েছে। সূত্র : এএফপি

 


আরো সংবাদ



premium cement