২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫
`

হোদায়দা বন্দরে সৌদি জোটের হামলা ইয়েমেন যুদ্ধে সবচেয়ে বড় লড়াই শুরু

হোদায়দা বন্দরের বাইরে জড়ো হওয়া সৌদি জোটের সহায়তাপুষ্ট ইয়েমেনি বাহিনী :এএফপি -

ইয়েমেনের প্রধান বন্দর শহর হোদায়দায় গতকাল বুধবার থেকে সর্বাত্মক হামলা শুরু করেছে সৌদি নেতৃত্বাধীন সামরিক জোটের সৈন্যরা। এই ব্যাপক হামলা উপসাগরীয় আরব রাষ্ট্রগুলোর সঙ্গে ইরান সমর্থিত ইয়েমেনের হাউছি বিদ্রোহীদের গত তিন বছর ধরে চলা যুদ্ধে সবচেয়ে বড় লড়াইয়ের সূচনা করেছে।
লোহিত সাগরের এই বন্দরটির দখল নেয়ার জন্য ইয়েমেনি সৈন্যরা হোদেইদার দেিণ অবস্থান নিয়ে অভিযান শুরু করেছে, তাদের সমর্থন জোগাতে জোট বাহিনীর যুদ্ধবিমানগুলো ও যুদ্ধজাহাজগুলো শহরটির হাউছিদের অবস্থানগুলো ল্য করে হামলা শুরু করেছে। এক বিবৃতিতে এ কথা জানিয়েছে ইয়েমেনের আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত নির্বাসিত সরকারের গণমাধ্যম দফতর।
হোদায়দা বন্দরটি জোট বাহিনীর নিয়ন্ত্রণে ছেড়ে দেয়ার জন্য হাউছিদের একটি সময়সীমা বেঁধে দিয়েছিল সৌদি জোটের অন্যতম অংশীদার সংযুক্ত আরব আমিরাত; সেটি পার হওয়ার পরপর আক্রমণ শুরু করা হয়। ইয়েমেনের সবচেয়ে বড় বন্দর হোদায়দা হাউছিদের এলাকার মধ্যেই অবস্থিত। ইয়েমেনের বেশির ভাগ পণ্য এই বন্দর হয়েই দেশটিতে প্রবেশ করে।
দেশটির নির্বাসিত সরকার পৃথক আরেকটি বিবৃতিতে বলেছে, ‘বিদেশী এজেন্ডা বাস্তবায়নকারী মিলিশিয়াদের কবল থেকে ইয়েমেনকে পুনরুদ্ধারে আমাদের সংগ্রামের একটি মোড় ফেরানো ঘটনা হবে হোদায়দা বন্দরকে মুক্ত করা। এই বন্দর মুক্ত করার মধ্য দিয়ে হাউছি মিলিশিয়াদের পতন শুরু হবে, এর মাধ্যমে বাবুল মানদাব প্রণালীতে সামুদ্রিক জাহাজ চলাচল নিরাপদ হবে এবং ইরানের হাত কাটা পড়বে। এই দেশটি দীর্ঘ দিন ধরে ইয়েমেনকে অস্ত্রে ডুবিয়ে দিয়েছে যা ইয়েমেনিদের রক্ত ঝরাচ্ছে।’
২০১৫ সালে পশ্চিমা সমর্থিত আরব দেশগুলোর সামরিক জোট ইয়েমেনের গৃহযুদ্ধে যোগ দেয়ার পর থেকে এই প্রথম দেশটির সুরতি একটি প্রধান শহরের দখল নেয়ার উদ্যোগ নিয়েছে। এর মাধ্যমে রাজধানী সানা দখল করে রাখা হাউছিদের সরবরাহ লাইন বন্ধ করে দিয়ে তাদের আলোচনার টেবিলে বসতে বাধ্য করার ল্য জোট বাহিনীর।
এর আগে জাতিসঙ্ঘ হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেছিল, সৌদি আরব জোট ইয়েমেনের হোদায়দা বন্দর দখলের ল্েয হামলা চালালে আড়াই লাখ মানুষের প্রাণহানি হতে পারে। ইয়েমেনে জাতিসঙ্ঘের মানবিক ত্রাণ বিষয়ক সমন্বয়কারী লিস গ্রান্ডে এক বিবৃতিতে এ হুঁশিয়ারি জানান। তিনি বলেন, হোদায়দার ওপর সামরিক হামলা কিংবা অবরোধ সেখানকার লাখ লাখ নিরপরাধ মানুষের প্রাণকে বিপন্ন করে তুলবে। লিস গ্রান্ডে আরো বলেন, গোদাইদায় দীর্ঘ যুদ্ধ হলে সেখানকার ২ লাখ ৫০ হাজার মানুষ তাদের প্রাণসহ সর্বস্ব হারাবে।
সৌদি আরবের নেতৃত্বাধীন আরব জোটের মুখপাত্র গত মঙ্গলবার জানান, ওই জোটের সেনারা হোদায়দা বন্দর থেকে ২০ কিলোমিটার দূরে রয়েছে। তবে ওই জোট বন্দরটি দখলে নেয়ার জন্য এখনই হামলা চালাবে কি না তা ওই মুখপাত্র বলেননি। ওই দিনই জাতিসঙ্ঘের ইয়েমেনবিষয়ক মধ্যস্থতাকারী মার্টিন গ্রিফিথস হোদায়দা বন্দরে সৌদি নেতৃত্বাধীন জোটের হামলার ব্যাপারে সতর্ক করে দিয়েছিলেন।

 


আরো সংবাদ



premium cement