২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০, ১৭ রমজান ১৪৪৫
`

করোনাভাইরাসের টিকা আবিষ্কার নিয়ে জটিলতা

ভ্যাকসিন আবিষ্কারে কাজ চলছে - ছবি : সংগৃহীত

বিশ্বজুড়ে উদ্বেগ তৈরি করা করোনাভাইরাস যার নাম এখন কোভিড-১৯। কেউ হয়তো আশা করছেন কোনো একটি ঔষধ কোম্পানি দ্রুত এর ভ্যাকসিন বা টিকা বা প্রতিষেধক বাজারজাত করে মিলিয়ন বা বিলিয়ন বিলিয়ন ডলার আয় করে নেবে। কিন্তু বাস্তবতা হলো এটা হচ্ছে না এখনই।

বৈশ্বিক ভ্যাকসিন বাজার চলতি বছরে ছয় হাজার কোটি ডলারে দাঁড়াবে বলে আশা করা হচ্ছে। তবে সেখানে বড় ধরণের লাভের কোনো নিশ্চয়তা নেই।

"একটি টিকা বা প্রতিষেধক সফলভাবে বের করে আনা বেশ জটিল কাজ। সাধারণত এর জন্য অনেক সময় ও অর্থ দরকার হয়," বলছিলেন যুক্তরাষ্ট্র ভিত্তিক বায়োটেকনোলজি বিনিয়োগকারী প্রতিষ্ঠান লংকার ইনভেস্টমেন্টের প্রধান নির্বাহী ব্রাড লংকার।

"কোম্পানিগুলোতে ভ্যাকসিন তৈরি করার মতো পর্যাপ্ত অর্থ বরাদ্দ নেই।"

বৈশ্বিক ভ্যাকসিন বা টিকা শিল্পে বড় নামগুলো যেমন পিফিজার, মার্ক, গ্লাক্সোস্মিথ, স্যানোফি এবং জনসন অ্যান্ড জনসন। গত বছর বিশ্বব্যাপী টিকা বিক্রি হয়েছিলো পাঁচ হাজার চার শ' কোটি ডলার যা ২০১৪ সালের দ্বিগুণ।

আর এ বৃদ্ধির মূল কারণ হলো ইনফ্লুয়েঞ্জা, সোয়াইন ফ্লু, হেপাটাইটিস ও ইবোলার মতো রোগগুলো।

"কেউ ভাবতে পারে যে এবারের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলার মতো অর্থ এই শিল্পের আছে। কিন্তু চারটি সেরা কোম্পানির কেউই এ বিষয়ে কোনো আগ্রহ দেখায়নি," বলছিলেন আমস্টার্ডমের ইউনিভার্সিটি মেডিকেল সেন্টার গ্রনিনজেনের মেডিসিন ল' অ্যান্ড পলিসি বিষয়ক পরিচালক ড: এলেন টি হোয়েন।

বড় কোম্পানিগুলোর বাইরে কিছু ছোটো ঔষধ কোম্পানি চেষ্টা করছে কোভিড-১৯ এর টিকা আবিষ্কারের জন্য, যে ভাইরাসে এরই মধ্যে প্রাণ হারিয়েছে এক হাজারের বেশি মানুষ।

জিলিড, যুক্তরাষ্ট্র ভিত্তিক বায়োটেক প্রতিষ্ঠান যারা এন্টি এইচআইভি ড্রাগ তৈরি করে তারা ঘোষণা করেছে যে তারা রেমডিসিভির নামে একটি ঔষধ নিয়ে পরীক্ষা নিরীক্ষা চালাবে।

অন্যদিকে কালেট্রা চীনে একজন রোগীকে নিয়ে গবেষণা করছে। তবে দুটি পরীক্ষাতেই বিদ্যমান ঔষধই ব্যবহার করা হচ্ছে।

"জিলিড বা অ্যাবভাই এর মতো বড় কোম্পানি চিকিৎসার অংশ হিসেবে বিদ্যমান ওষুধ ব্যবহার করবে কিন্তু এতে করে এসব বড় কোম্পানি স্টক মার্কেটে কতটা সুবিধা পাবে তা অনিশ্চিত," লংকার যোগ করেন।

কোভিড-১৯-এর জন্য টিকা খুঁজতে কোম্পানিগুলোকে উৎসাহিত করতে চ্যারিটেবল ডোনেশন ব্যবহার করা হচ্ছে।

এর মধ্যে একটি হলো অলাভজনক সংস্থা দা কোয়ালিশন ফর এপিডেমিক প্রিপেয়ারডসেন ইনোভেশন বা সিইপিআই।

এর যৌথ প্রতিষ্ঠাতাদের মধ্যে আছে নরওয়ে ও ভারত সরকার, বিল ও মেলিন্ডা গেটস ফাউন্ডেশন এবং দা ওয়েলকাম ট্রাস্ট। সিইপিআই ইনোভিও ফার্মাসিউটিক্যালস ও মডার্নার ভ্যাকসিন ডেভেলপমেন্ট কর্মসূচিতে সহায়তা করছে।

আর বড়দের মধ্যে জিএসকে তাদের হাতে থাকা প্রযুক্তি দিয়ে সিইপিআইকে সহযোগিতার কথা জানিয়েছে।

টিকার ক্ষেত্রে বিক্রির অনুমতি পাওয়ার আগে অনেক সময় লম্বা সময় ধরে হাজার মানুষের ওপর পরীক্ষার প্রয়োজন হয়।
যদিও ২০০২ ও ২০০৩ সালে সার্সের সময় কোনো টিকাই আনা যায়নি এবং সার্সের জন্য এখনো কোনো টিকা নেই।

ইবোলার ক্ষেত্রে প্রথম টিকা বাজারে এনেছিলো মার্ক এবং ২০১৫ সালে পশ্চিম আফ্রিকায় সেটি সফল হয়েছিলো।

তবে মার্কের ভ্যাকসিনকে যুক্তরাষ্ট্র গত বছর পর্যন্ত অনুমোদন দেয়নি। ২০১৯ সালে কঙ্গোতে ইবোলার আরেকটি ভ্যাকসিন এনেছেন জনসন অ্যান্ড জনসন।

যুক্তরাষ্ট্রের ইবোলা রেসপন্স কর্মসূচির সমন্বয়ক রোনাল্ড ক্লেইন বলছেন, "আমরা কোম্পানির জন্য কাজ করি না। তবে এটি সত্য যে তাদের অনেকে ইবোলার ভ্যাকসিন বের করতে গিয়ে অনেক লোকসানের মুখে পড়েছে"।

তবে ভ্যাকসিন আবিষ্কৃত হলেও রেগুলেটরির অনুমোদন পেতে অনেক সময় কয়েক বছর লাগে কারণ কর্তৃপক্ষ নিশ্চিত হতে চান যে এর কোনো পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া নেই।

তবে এটি অবশ্য অনুমোদিত ঔষধের ক্ষেত্রেও হতে পারে।

২০০৯-১০ সালে সোয়াইন ফ্লু'র সময় প্রায় ষাট লাখ মানুষকে গ্লাক্সোস্মিথক্লেইনের পানডেমরিক্স ভ্যাকসিন দেয়া হয়েছে।

পরে এমন কিছু সমস্যার জন্য বিপুল পরিমাণ ভ্যাকসিন বাজার থেকে উঠিয়ে নেয়া হয়েছিলো।

কারণ ভ্যাকসিনটি নেয়ার পর একজন মানুষ দিনে অনেক বার ঘুমিয়ে পড়তো অর্থাৎ স্লিপিং ডিজঅর্ডার সমস্যায় আক্রান্ত হতো।

ইউএস ন্যাশনাল ইন্সটিটিউট অব অ্যালার্জি অ্যান্ড ইনফেকশাস ডিজিজের ডিরেক্টর ড: অ্যান্থনি ফৌচি বলছেন, কোনো বড় কোম্পানিই এগিয়ে এসে বলেনি যে তারা কোভিড-১৯ এর ভ্যাকসিন তৈরি করবে।

"এটা খুব হতাশাজনক"।

তার মতে কোভিড-১৯-এর ভ্যাকসিন আসতে অন্তত এক বছর সময় লাগবে।

ওদিকে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা আশা করছে দেড় বছরের মধ্যে এ ভ্যাকসিন বাজারে আসবে।

ওষুধ কোম্পানিগুলো এর আগে জনস্বাস্থ্য সংকটের সময়ে ভ্যাকসিন তৈরি করতে এগিয়ে এসেছিলো।

"যখন আমরা ইবোলা নিয়ে কাজ করলাম তখন একটি এসেছিলো। কিন্তু এখন তারা নেই। এখন বড় কোম্পানি পাওয়া অনেক কঠিন হবে"।

লংকার বড় কোম্পানিগুলোর মানসিকতার ওপর দৃষ্টি দিয়ে বলেন, "অধিকাংশ কোম্পানি ও বিনিয়োগকারী দীর্ঘসময়ের জন্য এর মধ্যে থাকতে চায় না"।
সূত্র : বিবিসি

 


আরো সংবাদ



premium cement
নোয়াখালীতে ল’ইয়ার্স কাউন্সিলের ইফতার মাহফিল অনুষ্ঠিত ‘আইনের শাসন ও মানবাধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য ল’ ইয়ার্স কাউন্সিল কাজ করে যাচ্ছে’ পুকুরে পাওয়া গেল ১০০ ইলিশ অবন্তিকার আত্মহত্যা : জবির সহকারী প্রক্টর দ্বীন ইসলামের জামিন আবারো নামঞ্জুর পাথরঘাটায় বদর দিবস পালনে দেড় হাজার মানুষের ইফতারি আদমদীঘিতে ৭২ হাজার টাকার জাল নোটসহ যুবক গ্রেফতার সকলকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান মির্জা ফখরুলের জলবায়ু সহনশীল মৎস্যচাষ প্রযুক্তি উদ্ভাবনে পদক্ষেপ নেয়া হবে : মন্ত্রী গাজীপুরে গাঁজার বড় চালানসহ আটক ২ দুই ঘণ্টায় বিক্রি হয়ে গেল ২৫০০ তরমুজ ড. ইউনূসের ইউনেস্কো পুরস্কার নিয়ে যা বললেন তার আইনজীবী

সকল