২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫
`

ফাঁদ

ফাঁদ - ছবি : সংগৃহীত

হ্যালো, আসসালামু আলাইকুম। আমি আন্ডালিংকের হেড অফিস থেকে বলছি। আপনি কি মিস্টার সুজন মিয়া।
সুজন মিয়ার মোবাইলে ওপার থেকে কল আসে।
সুজন মিয়া অপ্রস্তুত গলায় বলল,
- জি, আমিই সুজন মিয়া।
- ধন্যবাদ, জনাব। আমরা অত্যন্ত আনন্দের সাথে আপনাকে জানাচ্ছি, গতকালের লটারি বিজয়ী সাতজনের মধ্যে আপনিও একজন।
- কিসের লটারি? ঠিক বুঝতে পারলাম না।

- আপনার অবগতির জন্য জানানো যাচ্ছে, আন্ডালিংকের সর্বশেষ বিশেষ অফার ‘এক কলে লাখপতি’ সপ্তাহব্যাপী চলছে। প্রতিদিন সন্ধ্যা ৬টায় বিটিভির পর্দায় আড়ম্বর আয়োজনে আন্ডালিংকের সিম ব্যবহারকারীদের নম্বরের লটারির ড্র অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে গতকালের সাতজন সৌভাগ্যবানের মধ্যে আপনিও একজন। আপনাকে আন্ডালিংকের পক্ষ থেকে জানাই প্রাণঢালা শুভেচ্ছা। সেই সাথে আমরা আপনাকে পুরস্কার হিসেবে সাত লাখ টাকা প্রদান করব। এখন বলুন, আপনি কিভাবে এ পুরস্কারের অর্থ নিতে চান?
- আমি তো সিস্টেম জানি না।

- কোনো সমস্যা নেই। এ অর্থ আমরা দুইভাবে দিয়ে থাকি। আপনি চাইলে সরাসরি আমাদের হেড অফিসে এসে সংগ্রহ করতে পারেন, অথবা ঘরে বসে মোবাইলেও পেতে পারেন। এখন আপনিই সিদ্ধান্ত নিন কিভাবে নেবেন।
- আমি মোবাইলে পেতে চাই।
- ঠিক আছে। আপনাকে আবার কষ্ট করে আসতে হবে না। তবে এই টাকা পাঠানোর আগে আপনাকে প্রতিযোগিতার একটি শর্ত পূরণ করতে হবে। অন্যথায় এই পুরস্কার বাতিল বলে গণ্য হবে।
- কী শর্ত?

- শর্ত হলো এই পুরস্কারের অর্থ পাওয়ার আগে আপনাকে একটি মোবাইল নম্বর দেয়া হবে। আপনি সেই নম্বরে পাঁচ হাজার টাকা বিকাশ করবেন। তারপর তখনই ফিরতি মেসেজে আপনার অ্যাকাউন্টে জমা হবে সাত লাখ টাকা। তবে সাবধান আপনার অ্যাকাউন্টে সাত লাখ জমা হওয়ার আগে এ বিষয়টি নিয়ে কারো সাথে কোনো কিছু শেয়ার করবেন না। শেয়ার করলে আপনার পুরস্কৃত টাকা জালিয়াতি করে অন্যজন নিয়ে যেতে পারে। মনে রাখবেন, পাঁচ হাজার টাকা জমা দিয়ে নিবন্ধিত হওয়ার জন্য আপনার হাতে আর সময় আছে মাত্র ৩০ মিনিট।
এ কথা বলে আগন্তুক মোবাইলের সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেয়।
সুজন মিয়া বেশ চিন্তিত হয়ে পড়েন। তার মধ্যে লোভ কাজ করে। সে দ্রুত বাসায় ফিরে বৌয়ের কাছ থেকে তার কানের স্বর্ণের দুল চেয়ে নেয়। এরপর স্বর্ণ বন্ধক রেখে আগন্তুকের দেয়া মোবাইল নম্বরে পাঁচ হাজার টাকা বিকাশ করে সে। বিকাশে টাকা পাঠানোর পর প্রায় আধঘণ্টা পার হলো। কিন্তু ফিরতি কোনো কল আসছে না। সময় যতই গড়াচ্ছে সুজন মিয়ার টেনশনের পাল্লা তত ভারী হচ্ছে। এভাবে প্রায় একঘণ্টা সময় অতিবাহিত হলো। কোনো সাড়াশব্দ না পেয়ে চিন্তিত মনে আবার কল করে সে। মোবাইলটা কানের কাছে ধরতেই ওপার থেকে মেয়েলি কণ্ঠে ভেসে আসে, ‘দুঃখিত, এ মুহূর্তে সংযোগ দেয়া সম্ভব হচ্ছে না।’
সিইপিজেড়, চট্টগ্রাম


আরো সংবাদ



premium cement