২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫
`

সেতু তো নয়, যেন মরণ ফাঁদ

সেতু নয়, যেন মরণ ফাঁদ - ছবি : নয়া দিগন্ত

টাঙ্গাইলের নাগরপুর -আরিচা আঞ্চলিক মহাসড়কের বেশ কিছু বেইলি সেতু মরণ ফাঁদ হিসেবে দারিয়ে আছে। প্রতিদিন সেতুগুলোর ওপর দিয়ে যানবাহন চলাচল করছে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে। কখনো কখনো দুর্ঘটনা ঘটছে হরহামেশাই। বেইলি সেতুগুলোর জায়গায় স্থায়ী সেতু নির্মাণ এবং রাস্তাগুলো প্রশস্ত করা এখন সময়ের দাবি।

জানা যায়, উপজেলার প্রায় ২৮ কিলোমিটার দীর্ঘ নাগরপুর-আরিচা আঞ্চলিক মহাসড়কটির ১২ কিলোমিটার পড়েছে এ উপজেলা অংশে। বাকি ১৬ কিলোমিটার পার্শ্ববর্তী মানিকগঞ্জ জেলায়। নাগরপুর অংশে এলাসিন শামছুল হক সেতু থেকে সড়কটি শুরু হয়ে নাগরপুর উপজেলা সদর এবং মানিকগঞ্জের দৌলতপুর ও ঘিওর উপজেলা সদর হয়ে বরাংগাইল নামক স্থানে ঢাকা-আরিচা মহাসড়কে মিলিত হয়েছে। সড়কটি নির্মাণের সময় দুই দশক আগে নাগরপুর অংশেই আনুমানিক ১০টি বেইলি সেতু স্থাপন করা হয়।

উপজেলার খোরশেদ মার্কেট, ধলামাড়া, থানা মোড়, বারাপুষা, ভালকুটিয়া, তিরছা, টেংরীপাড়া, আড়রাকুমোদ, ধুবুড়িয়া ও চাষাভাদ্রায় এ ঝুঁকিপূর্ণ বেইলী সেতুগুলো দেখা যায়।

সরেজমিন দেখা গেছে, প্রতিদিন কয়েকশ’ সিএনজি জরুরী অপারেশনের রোগীসহ নাগরপুর-আরিচা আঞ্চলিক মহাসড়কে চলাচল করে। এছাড়া নাগরপুরে ব্যাপক ইটভাটা নির্মাণ হওয়ায় ট্রলি-ট্র্যাক্টরসহ অনুমোদনহীন যানবাহন অভার লোডসহ চলাচল বৃদ্ধি পেয়েছে। এতে ঝুঁকিপূর্ণ ওই বেইলি সেতুর দিয়েই মৃত্যুর ঝুঁকি নিয়ে প্রতিদিন চলাচল করছে লাখ লাখ মানুষ। বেইলি সেতুগুলোর অবস্থা খারাপ হওয়া প্রতিটি সেতুর সামনে সড়ক ও জনপথ বিভাগ ‘ঝুঁকিপূর্ণ সেতু সাবধানে পারাপার’ হওয়ার নির্দেশনা দিয়ে অস্থায়ী সাইন বোর্ড টাঙ্গানো ছিলো কিন্তু সেগুলো অজ্ঞাত কারণে এখন আর চোখে পড়ছে না। ফলে ঝুঁকি আরও বেড়ে গেছে। এছাড়া প্রতিটি বেইলি সেতুর স্টিলের পাটাতন ক্ষয় হয়ে গেছে, কিছু কিছু সেতুর পাটাতন ভেঙ্গেও গেছে।

উত্তর তিরছা গ্রামের শওকত আলীসহ একাধিক স্থানীয় জানান, কয়েক মাস আগেও একটি ট্রাক আটকে গিয়েছিল পাটাতনে। পরে সেতু মেরামত করা হয়। মোটর সাইকেলসহ হালকা যানবাহন প্রায়ই পিছলে দুর্ঘটনার শিকার হয়। সেতুগুলোতে ভারি যানবাহন উঠলেই কেঁপে উঠে, মনে হয় এই বুঝি ভেঙ্গে পড়ল । এর আগেও বেশ কয়েকবার সেতু ভেঙ্গে বড় গাড়ী নিচে পড়ে গেছে। এ রকম দুর্ঘটনা প্রায়ই ঘটছে। সেতু ভেঙ্গে চলাচলার ফলে ১০-১২ দিন গাড়ী চলাচল বন্ধ থেকেছে। এসব সেতুর কারণে সাধারণ মানুষের দূর্ভোগের শেষ নেই, এখানকার সেতু নয় যেন মরণ ফাঁদ।

পাঁচতারা গ্রামের সি এন জি চালক শাকিল জানান, যখন বড় কোন পণ্যবাহী ট্রাক সেতুতে উঠে তখন আমরা অপেক্ষা করি। কারণ সেতু তখন দুলতে থাকে। মৃত্যুঝুঁকি নিয়ে আমরা প্রতিদিন গাড়ী চালাই। তিনি অতিসত্ত্বর এই রাস্তায় স্থায়ী সেতু নির্মাণ করার দাবি জানান।

এ ব্যাপারে সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী আমিমুল এহসান জানান, টাঙ্গাইল-আরিচা সড়কের বেইলি সেতুগুলোর জায়গায় স্থায়ী সেতু নির্মাণ এবং এ সড়কের উন্নয়নের জন্য একটি প্রস্তাবনা পাঠানো হয়েছে। প্রস্তাবটি পাস হলেই উন্নয়ন কাজ দ্রুত শুরু করা হবে।

 


আরো সংবাদ



premium cement