১৮ এপ্রিল ২০২৪, ০৫ বৈশাখ ১৪৩১, ০৮ শাওয়াল ১৪৪৫
`

পরিবারের সবাইকে হারানো শিশু নাহিদের জ্ঞান ফিরেনি এখনো

দুর্ঘটনায় আহত শিশু নাহিদুজ্জামান নাহিদ - নয়া দিগন্ত

ময়মনসিংহের গৌরীপুরে মর্মান্তিক সড়ক দুর্ঘটনায় মা-বাবা-ভাই-বোনকে হারিয়ে অনেকটা অলৌকিকভাবে বেঁচে যাওয়া তিন বছরের শিশু নাহিদুজ্জামান নাহিদের এখনও জ্ঞান ফিরেনি। রাজধানী ঢাকার অ্যাপেলো হাসপাতালে নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) চিকিৎসাধীন শিশু নাহিদের অবস্থাও আশঙ্কাজনক। দুর্ঘটনায় আহত নাহিদের চোয়ালের হাড় ভেঙে গেছে।

শিশু নাহিদের নিকট আত্মীয় গোলাম মুক্তাদির বিলাস নয়া দিগন্ত অনলাইনকে জানান, সোমবার (১৯ আগস্ট) রাতে নাহিদের অস্ত্রোপচার করবেন চিকিৎসকরা। এ জন্য পরিবারের পক্ষ থেকে সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয়েছে।

নাহিদের চাচা নুরুজ্জামান জানান, নাহিদের শরীরে বিভিন্ন স্থানে ক্ষত হয়েছে। চিকিৎসকরা আমাদের ধৈর্য ধরতে বলেছেন। সবাই আমাদের নাহিদের জন্য দোয়া করবেন। সবাইকে হারানো নাহিদ এখন তার দাদা-দাদির তত্ত্বাবধানেই থাকবে। এদিকে প্রাইভেটকার চালক স্বপন মিয়া এখন ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন।

উল্লেখ্য, গত ১৬ আগস্ট সকাল সাড়ে ১০টার দিকে ময়মনসিংহ-কিশোরগঞ্জ মহাসড়কের গৌরীপুর উপজেলার রামগোপালপুর এলাকায় বাস-প্রাইভেটকার সংঘর্ষে নিহত হন ছোট্ট নাহিদের পরিবারের পাঁচ সদস্য। নিহতরা হলেন- নাহিদের মা-বাবা-ভাই-বোন আর মামা আশরাফ। তারা সবাই প্রাইভেটকারের যাত্রী ছিলেন। নরসিংদীর মাধবদীর বাংলা টেক্সটাইল মিলের মালিক নাহিদের বাবা রফিকুল ইসলাম সপরিবারে ঈদের ছুটিতে ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলার মধুপুরের তাজপাড়া গ্রামে শ্বশুরবাড়িতে এসেছিলেন। দুর্ঘটনার আগে শুক্রবার সকালে একটি বিয়ে অনুষ্ঠানে যোগ দিতে তারা নান্দাইলের তাজপাড়া গ্রাম থেকে টাঙ্গাইলের ঘাটাইলে যাওয়া পথে রামগোপালপুরে বাস চাপায় নিহত হন।

তাদের মধ্যে একই পরিবারের চারজন নরসিংদীর মাধবদীর বাংলা টেক্সটাইল মিলের মালিক রফিকুল ইসলাম (৪৫), তার স্ত্রী শামসুন্নাহার শাহানা (৩৫), কলেজপড়ুয়া ছেলে নাবিল ইসলাম (১৮) ও মেয়ে রওনক জাহানকে (১৩) গত ১৭ আগস্ট শনিবার সকাল ১১টায় নেত্রকোণার দুর্গাপুর উপজেলার সুসং দুর্গাপুরের চন্ডিগর গ্রামে জানাযা শেষে দাফন করা হয়। এর আগে ১৬ আগস্ট শুক্রবার রাত ১১টায় নান্দাইল উপজেলার বীরবেতাগৈর ইউনিয়নের মধুপুর এলাকার তাজপাড়া গ্রামে জানাযা শেষে আশরাফকে দাফন করা হয়।

দুর্ঘটনায় বেঁচে যাওয়া পরিবারের একমাত্র সদস্য ছোট্ট শিশু নাহিদকে মুমূর্ষু অবস্থায় প্রথম ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ও পরে উন্নতর চিকিৎসার জন্য শুক্রবার রাতেই ঢাকার আগারগাঁওয়ে নিউরো সায়েন্স হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। বর্তমানে শিশু নাহিদ রাজধানী ঢাকার অ্যাপেলো হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) চিকিৎসাধীন।

গৌরীপুর থানার ওসি কামরুল ইসলাম মিয়া জানান, শিশুটির চাচা নুরুজ্জামান বাদি হয়ে ঘাতক বাস চালককে (অজ্ঞাত) আসামী করে একটি মামলা দায়ের করেছেন। পুলিশ অভিযুক্ত আসামিকে গ্রেফতারের চেষ্টা চালাচ্ছে। দুর্ঘটনাকবলিত বাস ও প্রাইভেটকার থানায় আটক আছে।


আরো সংবাদ



premium cement